শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ

এমনিতে শ্রাবণ বেশ সাদাসিধেভাবেই থাকতে পছন্দ করে। সাজগোজ যে একেবারে করে না তা নয়, তবে সেটা কখনো মাত্রা ছাড়ায় না। রুচিসম্মত পরিমিত সাজেই তাকে অপূর্ব দেখায়। কিন্তু আজ সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে শ্রাবণের নবরূপ দেখে প্রাথমিকভাবে বিশাল একটা ধাক্কা সামলায় শবনম। ওর এক মাথা ভর্তি মেঘবরণ কুচকুচে কালো চুলের জায়গায় ফর্সা গোলগাল মুখটা ঘিরে রঙধনুর সাত সাতটা রঙ সমস্ত উজ্জ্বলতা নিয়ে ঝলমল করছে। ওকে দেখাচ্ছে রঙচঙে জিপসিদের মতো। শবনমের মনটা বেদনায় ক্ষোভে হাহাকার করে উঠল, হায়, হায়, করছে কী মেয়েটা? এত সুন্দর চুলগুলো মানুষ এভাবে নষ্ট করে? এটা কোনো ষ্টাইল হলো? কী বেখাপ্পা লাগছে! শ্রাবণ তার চুল খুলে মায়ের সামনে টেলিভিশনে শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপন করা আহ্লাদি মেয়েদের মতো হাসি মুখে মাথাটা হেলিয়ে রঙিন চুলগুলো ডানে বামে ঝাঁকায়,

‘কেমন লাগছে, আম্মু ? .. সুন্দর না, বলো ? .. বকা দিও না প্লিজ .. এটা কিন্তু এখনকার ট্রেন্ড .. ’
শবনম যেন এই মুহূর্তে কিছু বলার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছে। এই আজব মেয়ের গজব কাণ্ড দেখে কী বলবে সে? এমন একটা দুঃসাহসী অদ্ভুত সিদ্ধান্ত শ্রাবণ একা একা কীভাবে নিতে পারল? নাহ বেশি স্বাধীনতা পেয়ে মেয়েটা একদম বখে গেছে। এত বড় একটা কাজ করার আগে মাকে একবার জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করল না পর্যন্ত। অথচ ছাত্রী জীবনে এমনকি সামান্য চুলের আগা দুই ইঞ্চি বেশি কাটলেও মায়ের অনুমতি নিতে হয়েছে শবনমকে।
‘তোর একটুও মায়া লাগল না? এত সুন্দর চুলগুলোকে এইভাবে রং লাগিয়ে নষ্ট করলি?’
‘ওহ মা, নষ্ট করলাম কই? এটা নিউ লুক, চেহারায় কত চেঞ্জ আসছে দেখো, তোমার ভাল লাগছে না?’
সাজ পোষাকে শবনমের বরাবরই বাঙালিয়ানার দিকে ঝোঁক। পয়লা ফালগুনে লাল সবুজ পাড়ের হলুদ শাড়ি, খোপায় গাঁদা ফুল, বর্ষার প্রথম দিন নীল বা মেঘরঙের শাড়ি, পয়লা বৈশাখের লাল সাদা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে এখনো মনে করে আলমারি খুঁজে বের করে পরে সে। ছোটবেলা থেকেই ওয়েষ্টার্ণ পোষাকের দিকে শ্রাবণের ঝোঁক বেশি থাকলেও শাড়ি, সালোয়ার কামিজ যে একেবারে পরে না, তা নয়। ওর চুলের স্বাস্থ্য সবসময়ই খুব ভাল, ঘন কালো আর ধরন ধারণ সিল্কি মসৃণ বলে বরাবরই কাঁধ ছাড়ানো লম্বা চুল রেখেই অভ্যস্থ সে। অথচ এই মুহূর্তে শ্রাবণের এই লম্বা রংচঙে চুলকে শবনমের মনে হচ্ছে রঙিন উল সুতায় তৈরি স্রেফ একটা পরচুলা। হাস্যকর, উদ্ভট আর খাপছাড়া।
‘বাবা কিন্তু দেখে ভালই বলছে, বলছে আমাকে নাকি চেনাই যাচ্ছে না। ’

শ্রাবণ তার রঙিন চুলে হাত বুলিয়ে বলে। শবনমের মনে হলো, এই মেয়েকে তো সে নিজেও চিনতে পারছে না। যেন শ্রাবণ তার পেট থেকে জন্ম নেয়নি, যেন বহু দূরের কেউ। এই তো মাত্র কদিন আগে কাউকে কিছু না বলে হুট করে বাঁ হাতের বাহুতে একটা উড়ন্ত প্রজাপতির ট্যাটু আঁকিয়ে নিয়ে এলো শ্রাবণ। সুই দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে যেভাবে ট্যাটু আঁকা হয়, সেটা শুনেই তো আঁতকে উঠেছিল শবনম।

‘প্রথমে একটু ব্যথা লাগছিল, চামড়া কাটলে যেমন লাগে তেমন হাল্কা তারপর আর ব্যথা লাগে নাই, আসলে চামড়ার দ্বিতীয় স্তর পর্যন্ত ওরা কালিটা লাগায়...অনেক দিনের একটা শখ ছিল, তাই করে ফেললাম। আমার বন্ধুরাও করেছে। বুশরা ওর ঘাড়ে একটা টিকটিকি আঁকিয়েছে, জানো?’

মেয়ের সামনে নিজের প্রচণ্ড বিরক্তি আর রাগ ক্ষোভ চেপে রেখে শবনম একটা কাষ্ঠং শুষ্কং অপ্রসন্ন হাসি ঠোটে ঝুলিয়ে বলে, ‘আামার মা হলে বেত দিয়ে পিটিয়ে আমাকে ঘর থেকে বের করে দিত যদি তোমার মতো এসব কাণ্ড কারখানা করতাম।’

হে, হে, হে করে দাঁত বের করে শিশুদের মতো হাসে শ্রাবণ। বলে, ‘ভাগ্যিস, তুমি নানুর মতো এতটা রক্ষণশীল চরমপন্থী না, ভেতরের রাগটা মনের মধ্যে চেপে রেখে দিব্যি আমার সঙ্গে সাথে স্বাভাবিকভাবে কথা বলছ, যদিও তোমার চোখে মুখে ব্যাপক অসন্তুষ্টির ছাপ আমি ধরে ফেলেছি ..’
শবনম এবার একটু গম্ভীর হয়।

‘আসলে তোর সমস্যাটা কী, বলত, কেন এ রকম করছিস? মানে তুই তো এমন আলট্রামডার্ন ছিলি না কখনো, হঠাৎ এমন ট্যাটু, চুলে এমন বাহারি রং, আমি না বুঝতে পারছি না, সমস্যাটা কোথায়...!

‘কোনো সমস্যা না, মা। আসলে তোমাদের ভদ্র সমাজের তথাকথিত নিয়ম ভাঙলাম। এমন ছিলাম না বলে এমন কিছু করতে পারব না, তা কি কেউ বলেছে? আমি খুব সচেতনভাবে, ভেবে-চিন্তে এই কালার করেছি, যাতে তোমাদের চোখ বৈচিত্র্য দেখতে অভ্যস্ত হয়। ডাইভারসিটি একসেপ্ট করে, সব কিছু এক ছাঁচে ফেলে দেখার পুরনো অভ্যাসটা বদলায়...’

এই মেয়ের সঙ্গে বৃথা তর্ক করে লাভ নেই, বুঝল শবনম। কাঁচের চুড়ি ভাঙার মতো নিয়ম ভাঙার ভূত চেপেছে ওর মাথায়। শবনম দেখেছে, তরুণ বয়সে তার অনেক সহপাঠি মেয়ে বন্ধু ছেলেদের মতো শার্ট প্যান্ট পরে বা ধুমপান করে সমাজের প্রচলিত প্রথাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে চাইত। ধাক্কা দিতে চাইত বদ্ধ সমাজকে। বিদ্রোহী, প্রথাবিরোধী হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে চাইত। তবে শবনমের ধারণা, প্যান্ট শার্ট পরে হাতে জ¦লন্ত সিগারেট নিয়েও যে অনেক সময় সমাজ বদলানো যায় না আবার প্রচলিত পোষাক পরে ধূমপান না করেও নিঃশব্দে সমাজের অনেক কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব সেই সত্যটা হয়তো আরও অনেক পরে তারা উপলব্ধি করেছিল। থ্যাংকস গড, শ্রাবণ এখনো ধূমপানের বদঅভ্যাসটা ধরেনি। (অবশ্য ধরতে কতক্ষণ? আর মা হিসেবে তখন কি করবে সে? ভাবতেই ভয় লাগে) পেছন ফিরে নিজের তরুণ বয়সটা দেখার চেষ্টা করে শবনম। বাবা মায়ের কঠোর শাসন অনুশাসনের মধ্যে বেড়ে ওঠা হাত পা বাঁধা জীবন তার। সেই বয়সে সন্ধ্যার পর ঘরে ফেরা কিংবা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা দেখাই ছিল নিয়ম ভাঙার নামান্তর। নিজের মায়ের মতো অত কঠোর মা হতে পারেনি শবনম। সময় পায়নি, আবার খবরদারি করার ইচ্ছাও জাগেনি। কারণ, নিজেকে দিয়েই জানে সে, শাসনের বেড়াজাল মানুষকে ছোট করে রাখে। পূর্ণ মানুষ হতে দেয় না। তাকে ভঙ্গুর আর হীনমন্য করে তোলে। পরে যখন শাসন থেকে মুক্তি পায় তখন সব কিছুতেই বাড়াবাড়ি করে ফেলে। এসব কিছু ভেবেই বলতে গেলে কোনো নজরদারি ছাড়াই মুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠেছে শ্রাবণ। তারপরও তার এই বিদ্রোহী মনোভঙ্গী কেন ভেবে পায় না শবনম। এ কি শুধুই তারুণ্যের নিরীক্ষাপ্রবণতা, কে জানে!

ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারে উঠেই শ্রাবণ বায়না ধরল বন্ধুদের সঙ্গে বান্দরবানের পাহাড়ে ট্র্যাকিং করতে যাবে। থাকবে পাঁচ রাত। অল্পবয়সী ছেলে মেয়েরা একা একা এত দুর্গম জায়গায় গেলে, উদ্বেগ হয় না? তা ছাড়া, ওসব এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কও থাকে না। পথঘাটের কী পরিস্থিতি, অজানা অচেনা জায়গায় কোনো বিপদে পড়ে কি না, দুর্ঘটনার আশংকা আছে কি না, কত শত প্রশ্ন মাথায় আসে। দুঃশ্চিন্তায় মন আচ্ছন্ন হয়ে যায়। শবনম তো বাপ মায়ের বাধায় থার্ড ইয়ারে উঠেও ডিপার্টমেন্টের স্টাডি ট্যুরে ইন্ডিয়া যেতে পারেনি, মানে যাওয়ার অনুমতি পায়নি। কিন্তু শ্রাবণ অদম্য, অপ্রতিরোধ্য। বলেছে যখন তখন যাবেই, যাবে। শেষ পর্যন্ত গিয়েওছিল, বন্ধুদের সঙ্গে হেসে খেলে মজা করে নিরাপদে ফেরৎ ও এসেছে। কিন্তু তবু চিরায়ত মায়েদের মত আশঙ্কা উৎকন্ঠায় সারাটাক্ষণ বুক কেঁপেছে শবনমের। তারেক তাকে বোঝায়, ‘আহা তুমি এত সিরিয়াস হইলা কেন? এইসব তো এক্সপেরিমেন্ট, অল্পবয়সে সবাই এমন একটু আধটু করে। বয়স বাড়ুক, দেখবা সব ঠিক হয়ে যাবে।’

‘ওকে কেমন অদ্ভুত দেখাচ্ছে বলো.. কি দরকার ছিল ..’
‘দেখো, আমাদের সঙ্গে ওদের রুচির ব্যবধান তো থাকবেই। ওর সব কাজ কারবার আমাদের পছন্দ না হওয়াটাই স্বাভাবিক, কিন্তু মেনে নিতে হবে। করতে দাও যা করতে চায়। তারুণ্যের ধর্মই তো এমন ..’
‘ও আমাকে কি বলছে জানো? বিয়ে করবে না, জরায়ু কেটে ফেলে দেবে আর একটা বাচ্চা দত্তক নিয়ে পালবে। এইসব ট্রাডিশনাল ফ্যামিলি প্রথায় ওর নাকি বিশ্বাস নাই।’
তারেক দাড়ি নাড়িয়ে হো হো করে হাসে। বলে, ‘আমিও তো ভাবছিলাম, জীবনেও বিয়ে শাদি করব না। সংসার থেকে শত হাত দূরে থাকব। সন্ন্যাসী হয়ে পথে পথে ঘুরব। সেই আমিও তো তোমাকে দেখে মত পাল্টাইলাম। সুড় সুড় করে লাইনে আসলাম।’

শবনম বুঝল তারেককে কিছু বলে লাভ নাই। বরাবরের মতোই মেয়েকে সে প্রশ্রয় দিয়েই যাবে। হয়তো সেজন্যই শ্রাবণ অনেক ব্যাপারেই মায়ের চেয়ে বাবার সঙ্গে শেয়ার করতে পছন্দ করে। একটাই কারণ, বাবা মাথা ঝাঁকিয়ে চুপচাপ মেয়ের কথা শুনে যায়, কোনো পরামর্শ বা মতামত দেয় না।

কলেজে পড়ার সময় একবার বিড়াল পোষার বায়না ধরলো শ্রাবণ। ফ্লাটবাড়িতে বিড়াল পোষা কি সহজ ব্যাপার? তা ছাড়া, বিড়ালকে খাওয়ানো দাওয়ানো, পটি করানো, সময়ে অসময়ে পশু ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া-ঝক্কি কি কম? শবনম মেয়েকে নানা ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওই যে মাথায় ঝোঁক চেপেছে, কোনো কিছুতেই সে বুঝ মানে না। বরং উল্টো মাকে বোঝায়, ‘বিড়াল খুব কিউট একটা প্রাণী মা, আমার তো ভাইবোন নাই। ও আমার ছোট ভাইবোনের মত থাকবে। তোমার কিছু করতে হবে না, সব কাজ আমি করব। বাবা বলেছে আমাকে হেল্প করবে।’

বাবার সমর্থন পাওয়ার পর শবনমের আপত্তি আর ধোপে টিকলো না। বাপ বেটি মিলে বেশ দাম দিয়ে একটা জিনজার কালারের গোমড়ামুখি পারশিয়ান বিড়াল কিনে নিয়ে এলো। ‘লীলাবতী‘ নামের সেই আহ্লাদি বিড়াল এখন পরিবারের সদস্য হিসেবে গত কয়েকবছর ধরে আরাম আয়েশ করে বহাল তবিয়তে টিকে আছে। শ্রাবণ ঠিকই বলেছিল, এখন সে পরিবারের আরেকটি সন্তান।
চলবে...

Header Ad

নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের আড়াই মাস যেতেই অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে বেছে নেওয়া হয়েছে নতুন নির্বাচন কমিশন। আগামী রোববার শপথ নিতে যাচ্ছে এ কমিশন।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নতুন নির্বাচন কমিশন বেছে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এ তথ্য জানান সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।

সিদ্ধান্ত মোতাবেক রোববার (২৪ নভেম্বর) বেলা দেড়টায় নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনারকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করে হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এর আড়াই মাস যেতেই এবার অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ভার ন্যস্ত থাকবে এ কমিশনের ওপর।

নতুন নির্বাচন কমিশনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন ছাড়াও কমিশনার হিসেবে থাকছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা বিধান অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করার পর ওই কমিটির প্রস্তাবিত ১০ নামের তালিকা থেকে এই নির্বাচন কমিশন বেছে নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশের চতুর্দশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাসির উদ্দীনক স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার।

নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দীন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা তা করব, ইনশাআল্লাহ। যে দায়িত্ব এসেছে, তা আমাদের সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে সবার সহযোগিতা নিয়ে।

Header Ad

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার

ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭১ জন নিহত হয়েছেন। এতে চলমান যুদ্ধে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়ে গেল।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে আনাদোলু এজেন্সি জানায়, দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৪৪ হাজার ৫৬ জন নিহত এবং ১ লাখ ৪ হাজার ২৬৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বোমা ও গুলিতে ৭১ জন নিহত এবং ১৭৬ জন আহত হয়েছেন।

তবে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে এবং সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়।

এদিকে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি এক্স পোস্টে বলেছেন, গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশই এখন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। ওইসব এলাকার মানুষেরা নিরাপত্তা ও অস্তিত্বহীনতার মধ্যে বসবাস করছেন।

অনিরাপদ রুটের কারণে গাজাজুড়ে সামান্য ত্রাণ সরবরাহ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে জানিয়ে ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে মানুষ কঠোর অবরোধের মধ্যে রয়েছে। যুদ্ধের দুষ্টচক্রে পড়ে তারা জীবন বাঁচাতে ছুটাছুটির মধ্যে রয়েছেন। ৪০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ওই অঞ্চলটি মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। উপত্যকায় নাগরিক শৃঙ্খলা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেডের দীর্ঘদিনের নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

আইসিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আদালত দুই ব্যক্তি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং ৮ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে ২০ মে, ২০২৪ পর্যন্ত সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছে।

বিবৃতি অনুযায়ী, নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ত ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ও জ্ঞাতসারে গাজার বেসামরিক জনগণকে খাদ্য, পানি, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের পাশাপাশি জ্বালানি ও বিদ্যুৎসহ তাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য বস্তু থেকে বঞ্চিত করেছেন বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে’।

পৃথক এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত জানায়, দেইফ, পুরো নাম মোহাম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম আল-মাসরিও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি। বিবৃতি মতে, আদালত ‘সর্বসম্মতভাবে’ তার বিরুদ্ধে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দেইফের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে আরও রয়েছে- ইসরাইলি ভূখণ্ডে রকেট নিক্ষেপ এবং ৭ অক্টোবর হামলা চালানো হামলায় সহস্রাধিক ইসরাইলি নিহত হয়। তবে৭ অক্টোবর হামলার কয়েক মাস পর চলতি বছরের জুলাইয়ে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেডের দীর্ঘদিনের নেতা দেইফকে এক বিমান হামলায় হত্যার দাবি করেছে ইসরাইল। বিমান হামলাটি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাঁবুতে এবং একটা পানি শোধনাগারে আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে ৯০ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়।

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী