সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ

কয়েকদিন ধরে এই অচেনা নম্বর থেকে ফোনটা আসছে। ধরলেই নিঃশব্দে কেটে দিচ্ছে। আজকে অফিসে যাওয়ার পথে গাড়িতে আবার রিং বাজতে শুরু করলে, ‘ধরব না’ ‘ধরব না’— ভাবতে ভাবতেই শেষ পর্যন্ত ফোনটা ধরে শবনম। ওই পাশে কারো গভীর নিশ্বাসের শব্দ তার কানে এসে বাড়ি খায়।
‘কে বলছেন?’
‘জ্বি, আমাকে আপনি চিনবেন না। .. কি যদি অভয় দেন একটা কথা বলতে চাই। .. আসলে অনেক দিন ধরেই বলতে চাচ্ছি, কিন্তু কীভাবে বলব, ঠিক বুঝতে পারছি না। মানে সাহস পাচ্ছি না।’

ওই পাশের ভণিতা শুনে শবনম অস্ফুট পুরুষ কণ্ঠের বয়স আন্দাজ করার চেষ্টা করে। মনে হচ্ছে অল্পবয়সী একটা ছেলে। যার কথা বলার ভঙ্গীতে নার্ভাস ভাব স্পষ্ট। যেন, ‘বলবো কি বলবো না’- এমন লজ্জ্বা ও দ্বিধায় দোদুল্যমান এক নবীন কিশোর।
‘আসলে আমি জানি, আপনি আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড় হবেন, তবু তবু আপনাকে আমার ভাল লাগে, এই কথাটা জানাতে চাই।’
শবনম হাসবে, না রাগ করবে, ভেবে পায় না।
‘মানে, আমি কি মাঝে মাঝে আপনাকে ফোন করতে পারি, যদি অনুমতি দেন, মানে আপনার বন্ধুত্ব ..’

এবার আর পুরোটা শোনার প্রয়োজন মনে করে না শবনম, ওই পাশের বাক্য সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই বেরসিকের মতো কড়া গলায় বলে,
‘না। শোনো, আর কোনদিন আমাকে ফোন করবে না। এত সাহস হয় কি করে? আচ্ছা, এই কে তুমি, বলো তো, কি নাম তোমার?’
ফোনটা তখনই কেটে যায়। অথবা ওই পাশ থেকে কেটে দেওয়া হয়।

ব্যাগের পকেটে নিজের ফোন সেট রাখতে গিয়ে ঠোটের কোণায় মৃদু একটা হাসি ফুটে ওঠে মিলিয়ে যায় শবনমের। ‘যৌবনের শেষে শুভ্র শরৎকালের’ মতো এই উনপঞ্চাশ বছর বয়সেও নতুন বন্ধুত্বের প্রস্তাব! তার মানে কি এই, যে তার আকর্ষণ বা আবেদন একেবারে ফুরিয়ে যায়নি? (তারেক শুনলে হয়তো গত রাতের উদাহরণ টেনে বলবে, তুমি যে অনন্তযৌবনা, সে তো আমি চিরকালই জানি!) তবে এই ভাবনায় এবার নিজেই নিজের উপর বিরক্ত হয় শবনম। যে যাই বলুক তার নিজের চেয়ে আর কে বেশি জানে যে, এই শরীর ও মনে দিনের শেষে মন্দমন্থর পায়ে দিন শেষে সন্ধ্যা নামছে। এখন নতুন পরিচয়, নতুন সম্পর্কের এইসব আশ্বাস বার্তা বৃথা। এইক্ষণে আর কোনোভাবেই ‘নতুন প্রণয়ের মুগ্ধ দৃষ্টি আকর্ষণ করা’ সম্ভব নয়, এখন ধীরে ধীরে সমস্ত বাসনা ও আকাঙ্ক্ষার অবসান ঘটানোর সময়। আহা, ওই মোহগ্রন্থ’ নওল কিশোর বা যুবক জানে না, এইসব অকিঞ্চিতকর অনুভূতি ভাসতে থাকা ধোঁয়ার মতো, বাস্তবের প্রবল বাতাস এসে এক ধাক্কায় এই কোমল হৃদয়াবেগ ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়ে যায়।

শবনমের সেই কিশোরী বয়সে প্রথম প্রেমের চিঠি পাওয়ার থরো থরো কম্পিত দিনগুলির কথা মনে পড়ে। পাপড়ি মুখরিত রঙিন ফুলের জলছাপ দেওয়া হাল্কা নীল রঙের প্যাডে সবুজ কালির বলপেন দিয়ে খুব যত্ন করে লেখা ছিল সেই চিঠি। ভালবাসার বাসনা প্রকাশের পাশাপাশি অনেকগুলো প্রচলিত বাংলা সিনেমার গানের কলি উদ্ধৃত করেছিল পত্রলেখক। শবনমের এখনো মনে আছে সেই লাইনগুলো-
‘এ আকাশকে সাক্ষী রেখে, এ বাতাসকে সাক্ষী রেখে তোমাকে বেসেছি ভালো, তুমি মোর নয়নেরই আলো’
আরেকটা গানের উল্লেখ ছিল চিঠিতে, আরও আগ্রাসী মনোভাবের, সিনেমাতে সম্ভবত নায়ক ফারুক লিপসিং করে প্রেমিকার উদ্দেশে গাইতো গানটি- ‘মরণের পরে যদি জীবন থাকে, সে জীবনে প্রিয়া তুমি আমার হবে’

ইহজীবনে প্রেমিকাকে পাওয়ার আশাবাদ দিয়ে মৃত্যু পরবর্তী জীবনে তাকে কেনো কাছে পাওয়ার প্রত্যাশা করেছিল সেই কিশোর, কে জানে! অবশ্য তার তো ওই চিঠি পাঠানো পর্যন্তই সার, তারপর সে কোথায় যেন লুকিয়ে পড়েছিল। কখনোই প্রকাশ্যে সামনে এসে দাঁড়ায়নি সেই পত্র লেখক। হয়ত সাহস সঞ্চয় করে উঠতে পারেনি, হয়ত সংকোচ কাটাতে পারেনি, হয়ত দ্বিধা আর লজ্জ্বা তাড়াতে পারেনি। হয়ত সেজন্যই মৃত্যু পরের অনিশ্চিত জীবনের প্রতিই আস্থা রেখেছিল সে!

মৌসুমি যেমন একবার বলেছিল, কৈশোর যৌবনের প্রেম হচ্ছে এক ধরনের মায়া, ভ্রান্তি , ইলিউশান। ইলেকট্রিক শক খাওয়ার মতো হঠাৎ একটা ধাক্কা। বিনা মেঘে আসা বৃষ্টির মতো আকস্মিক আর গভীর ঘুমের মধ্যে দেখা স্বপ্নের মত তীব্র কিন্তু ক্ষণস্থায়ী।

ফোনটা আবার বাজে। আবার কি ওই ছেলেটা নাকি? না, এবার কি আশ্চর্য ফোন করেছে মৌসুমী।
‘তোমার কথাই ভাবছিলাম দোস্ত, একটা কারণে..’
কিছুক্ষণ আগে অপরিচিত যুবকের ফোন কলের বিষয়টি হাসতে হাসতে মৌসুমীকে জানায় শবনম।

‘আরে, এটাতো হাসির বিষয় না। এই বয়সে কেউ যদি তোমার প্রতি আকর্ষণ বোধ করে তাহলে বুঝতে হবে, সে তোমার রূপের না, তোমার গুণ বা ব্যক্তিত্বের প্রেমে পড়েছে। আবেগের চেয়ে এই ধরনের সম্পর্কে শ্রদ্ধা, সম্মান, একটা শান্ত সমাহিত ভাব বিরাজ করে। আর কৈশোর যৌবন কোনো ব্যাপার না, প্রেম যেকোনো বয়সেই হতে পারে..’
‘থাক থাক ! বহুত বলছো, আমি কাঠখোট্টা মানুষ, ওসব আমার পোষাবে না।’
‘আচ্ছা, ঠিকাছে, যে জন্য ফোন করছি, কালকে সকালে প্রেস ক্লাবে আমরা কয়েকটা নারী সংগঠন মিলে একটা সমাবেশ করবো। ইস্যু হচ্ছে, ওই যে এখনকার মি টু কে কেন্দ্র করে কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি.. তো তুমি পারবা নাকি আসতে? অনেককেই ডাকছি আমরা, তুমি তো ভাল পজিশনে আছো, একজন সফল নারী। তুমি এসে কয়েকটা কথা বললে ভাল হয়।’
মৌসুমী এক নিশ্বাসে বলে যায়।
‘ইস্যুটা তো খুবই ভাল, দরকারি, কিন্তু আমার সমস্যা আছে। আমাদের অফিসেও কিছুদিন আগে এরকম একটা কেস ঘটেছে..’
‘হ্যাঁ, জানি তো, সেজন্যই তো বলছি।’
মৌসুমী বেশ জোর দিয়ে বললে শবনম একটু ইতস্তত করে,
‘দেখো বন্ধু জলে বাস করে কুমিরের সাথে দ্বন্দ্ব করা কী সম্ভব? এমনিতেই অফিসে আমার বিরোধী একটা গ্রুপ গুজব ছড়াচ্ছে যে আমি নাকি ওই মেয়েদের দিয়ে সিইওর বিরুদ্ধে এসব করিয়েছি, এখন যদি আবার তোমাদের সাথে যোগ দেই, আর যদি সেসব নিউজ হয়, হবে তো বটেই, তখন বুঝতে পারছো, ওরা আমার বিরুদ্ধে রং চড়িয়ে আরও নানা কথা ছড়াবে। এই মুহূর্তে আসলে আমি ঝামেলাটা নিতে চাচ্ছি না..’
‘কী যে বলো, ঝামেলা কেনো হবে! তোমার নিজস্ব মতামত, স্বাধীন একটা অবস্থান থাকতে পারে না! চাকরি করো মানে কি দাসখত দিয়ে বসছো নাকি? খারাপ লোকেরা উল্টা পাল্টা কথা বলবেই, তাতে দমে গেলে চলবে? প্রতিবাদ করতেই হবে, পিছিয়ে আসার কোনো সুযোগ নাই। নইলে অপরাধীরা প্রশ্রয় পেয়ে যাবে!’

বিপ্লবী নেতার মতো ফোনের অন্য প্রান্তে মৌসুমী জোরালো বক্তৃতা ঝাড়ে। ওকে বাস্তব অবস্থাটা বোঝানোর চেষ্টা বৃথা শবনম বুঝতে পারে। বাস্তব বিবেচনাবোধের চাইতে এখন ন্যায়ের প্রশ্নে অনড় তার অবস্থান, ফলে শিশুকে প্রবোধ দেওয়ার মতো শবনম তার কথায় সায় দেয়।
‘তাতো ঠিকই বলেছ। দেখি, আমি আসব সুযোগ পেলে, জরুরি মিটিং সিটিং না থাকলে.. চলে আসব।’

মৌসুমী এবার সন্তুষ্ট হয়। কিন্তু শবনম জানে, এই সমাবেশে যোগ দিলে অফিশিয়ালি সেটা তার জন্য আত্মঘাতী হতে পারে। সমাবেশে নিশ্চয়ই নির্ঝর চৌধুরীর ঘটনাটাও আলোচনায় আসবে। স্বাভাবিকভাবে কোম্পানির নাম ধামও তখন সামনে আসবে। এইসব জায়গায় কেউ তো আর রেখে ঢেকে কথা কইবে না। সুযোগসন্ধানীরা তখন হয়ত এটাকেই পূঁজি করবে। শত্রুতা করে ম্যানেজমেন্টকে গিয়ে জানিয়ে আসবে যে শবনমই ওই সমাবেশের মূল হোতা। ইচ্ছাকৃতভাবে কোম্পানির ভাবমূর্তি নষ্ট করছে সে। দুষ্ট লোকেরা কে যে কোনদিকে বসে কী ঘোট পাকাচ্ছে কে জানে? অনেকের কাছে মনে হতে পারে এসব শবনমের অতিভাবনা বা অতি সতর্কতা, কিন্তু শবনম তো জানে প্রতিনিয়ত এরকম সতর্ক পদক্ষেপই তাকে এখনকার পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছে।

মাঝে মাঝে তার প্রাণ মন যে একসঙ্গে বিদ্রোহ করে না, তা তো নয়, অসহায়ও লাগে, রাগ হয় অবস্থার ওপর, বিরক্তি আসে নিজের অতি সাবধানী মনের উপর। কিছু একটা করতে চায় সে, সহবন্ধুদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে প্রতিবাদ করতে চায় কিন্তু আবার মনে হয় এতদিন ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা তার ক্যারিয়ার একটা সামান্য ভুল পদক্ষেপে ধসে পড়লে এই সমাজে তার পাশে এসে দাঁড়াবার মত কেউই থাকবে না। তার এতদিনের অর্জিত সুনামের কোনো মূল্যায়নই হবে না। আজ উচ্চ পদে ভাল অবস্থানে থেকে স্বাবলম্বী ও আত্মনির্ভরশীল হতে পেরেছে বলেই না এই নিষ্ঠুর সমাজে সম্মানের সঙ্গে মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে টিকে আছে। শবনমের ভেতর থেকে আরেকটা মন চোখ রাঙিয়ে প্রশ্ন করে, নিরাপদ বৃত্তের ভেতরে এভাবে আটকে থাকা তোমার কাছে সম্মানের হলো? এটা তো পরিস্থিতির সামনে কোনো আপত্তি না তুলে বোবা হয়ে, হাত পা ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ।

‘না, না, এভাবে বিষয়টা ব্যাখ্যা করা যাবে না। প্রতিবাদেরও নানা ধরণ আছে, সব সময় যে মাঠে গিয়ে সভা সমাবেশ করে প্রতিবাদ করতে হবে হবে এমন তো নয়.. ‘শবনম তার ভেতরের মনটার সঙ্গে অবিরাম তর্ক চালিয়ে যায়। ‘আমি সবসময়ই সব ধরনের নিপীড়ন নির্যাতনের বিরোধী। অফিসের ভেতরেও তো এক ধরনের সংগ্রাম আমি এককভাবে করেই যাচ্ছি। করছি না? এই যে আমি এত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে টিকে আছি, সেটাও তো এক ধরনের প্রতিবাদ। এখন হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে অযথা বিপদে পড়লে কে আমাকে উদ্ধার করবে, কে এসে পাশে দাঁড়াবে? কেউ না।
হ্যাঁ, অনেকেই হয়ত এটাকে আপোষ বলবে, বলবে ক্যারিয়ার বাঁচানোর ধান্দা। কিন্তু শবনম জানে, লড়াইয়ের মাঠে সম্মুখ সমরে নামার যোগ্যতা সবার থাকে না। কেউ কেউ আছে যুদ্ধের মাঠে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে জেনেও বুক চিতিয়ে সামনে এগিয়ে যায়। তারাই হয়ত প্রকৃত বীর, তারাই পরিবর্তনের নায়ক, তারাই নমস্য। তাদের জন্য শবনমের শ্রদ্ধা ও সালাম অশেষ। নিজের এই না-পারা টুকু, এই সীমাবদ্ধতাটুকু অতিক্রমের সুযোগ তার এই জীবনে কোনোদিন আসবে কি না জানে না শবনম।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে বরুড়া ও মুরাদনগরে পৃথক দুইটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।

জানাযায়, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে সোমবার দুপুরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। মৃত দুইজন বড়হরিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন পয়ালগছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান বিপ্লব।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে হালকা মেঘের মধ্যে শিশুরা মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হয়। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহত কিশোর দুজন হলেন পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন(১৩) এবং আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন (১৩)।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে দু স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে একজন। হাসপাতাল থেকে নিহত দুজনের লাশ স্বজনরা বাড়িয়ে নিয়ে যান।

অপরদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরে জমির ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার সকালে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামের মৃত বীরচরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬৪) ও আন্দিকুট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসীম উদ্দীন ভুইয়ার ছেলে জুয়েল ভুঁইয়া (৩০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত নিখিল দেবনাথ ও জুয়েল ভূঁইয়া কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে পাশাপাশি জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতের শিকার হয়। পরে তাদেরকে আশেপাশের লোকজন এসে উদ্ধার করে দেখে তারা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বর্তমানে দুজনের মরদেহ নিজ নিজ বাড়িতে আছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনে তারা ঘটনাটি জানতে পারেন। এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা