শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ

মায়ের মৃত্যু শোক এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারেক। মাতৃবিয়োগের যে প্রচণ্ড শক আর শোক, এক জীবনে তার হয়ত কোনো সান্ত্বনাও হয় না। মা চলে যাবার পর থেকে একটা গভীর শূন্যতার হাহাকার যেন প্রচণ্ডভাবে ঘিরে ধরেছে তাকে। যেন এক ঘোর, এক মায়া, এক অদ্ভুত তমসায় সে অনবরত ঘুরপাক খাচ্ছে। মা ছিল, এখন নেই, মানে আর কখনোই তাকে পাওয়া যাবে না, ছোঁয়া যাবে না, দেখা যাবে না, শোনা যাবে না। মা এখন শুধুই কিছু স্মৃতি আর ছবির সমাহার। আগে থেকেই বিশ্বাসী মানুষ তারেক, এখন নিয়মিতই নামাজ পড়ে, সময় মত মসজিদে গিয়ে যেন ভুলে থাকতে চায় মা হারানোর কষ্ট, সেই সঙ্গে দৈনন্দিন ইহলৌকিক কাজ কর্ম। তেমন বৈষয়িক সে আগেও ছিল না, এখন যেন আরও উদাসীন।

দাড়ি কামানোর মত প্রাত্যহিক কর্মটাও ইদানিং ছেড়ে দিয়েছে সে। ফলে এই পনের দিনেই সাদা পাকা অবিন্যস্ত দাড়ি আঙ্গুরলতার মত কয়েক ইঞ্চি বেড়ে নিচের দিকে নেমে এসেছে।
‘দাড়িটা রেখেই দেই, কি বলো?’
পাঁচ আঙ্গুলে বাড়ন্ত দাড়িতে বিলি কাটতে কাটতে শবনমকে উদ্দেশ করে বলে সে।
‘রাখতে চাইলে রাখো। তোমার ইচ্ছা-অনিচ্ছা নিয়ে আমি কোনো কথা বলেছি কখনো?’
‘না, তা বলোনি। তবু তোমার মতামতটা শুনি.. ’
তারেক ঘরের কোণায় রাখা ড্রেসিং টেবিলের লম্বাটে আয়নার কাছে গিয়ে ডানে বামে সামনে পেছনে ঘাড় নাড়িয়ে বিভিন্নভাবে নিজেকে দেখে।
‘দাড়িতে আমাকে কেমন লাগবে, মানাবে কিনা, আবার বেশি বুড়ো বুড়ো দেখাবে কি না .. ’

সাতান্ন বছর বয়সী তারেকের এই সৌন্দর্য সচেতনতায় শবনমের ঠোটের কোণায় মৃদু হাসি ফুটে উঠে মিলিয়ে যায়। অফিস থেকে ফিরে কাপড় বদলে সে বিছানায় কাত হয়ে শুয়ে টিভি দেখছিল। এবার উঠে বসে বলে,
‘তা ওরকম সাদা দাড়ি রাখলে আগের চাইতে একটু বয়স্ক তো দেখাবেই, খানিকটা ভার ভারিক্কীও লাগবে অবশ্য.. আগে তো মানুষ চাচা ডাকতো এবার দাদাজানও ডাকতে পারে। ভেবে দেখো..’
এবার তারেকের ধর্ম বোধের কাছে সৌন্দর্য বোধ হার মানে। আয়নায় চোখ রেখেই সে বলে,
‘নবিজীর সুন্নত। রেখে ফেলছি যখন, তখন আর ফেলি না, থাকুক।’
শবনম আর কোনো মন্তব্য না করে আবার কাত হয়ে শুয়ে টিভি দেখায় মনযোগ দেয়।
‘ভাবছি, আগামী বছর হজে গেলে কেমন হয়?’
আয়নার সামনে থেকে সরে এসে খাটের উপর আধ শোয়া শবনমের পাশে এসে বসে তারেক। শবনম নিউজ দেখছিল বলে তারেকের কথাটা ভাল করে শুনতে পায়নি। তাই রিমোট টিপে টিভির সাউন্ড কমিয়ে আবার জানতে চায় সে।
‘হুম? কি বললা?’
এবার সরাসরি সিদ্ধান্তটাই জানায় তারেক।
‘ওইতো, বললাম, আগামী বছর হজে যাওয়ার নিয়ত করেছি আমি।’
তারপর লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ‘কয় দিনের আর দুনিয়া বলো! আজ আছি কাল নাই! তুমি যদি যেতে চাও বলো, তাহলে দুজন মিলে হজটা করে আসতে পারি। ভাল প্যাকেজ আছে।’

শবনম এবার টিভিটা বন্ধ করে উঠে বসে তারেকের মুখোমুখি হয়। তার দাড়িশোভিত বুড়িয়ে যাওয়া মুখমণ্ডল আর সরল চোখ দুটিতে চোখ রাখে। একটু ইতস্তত করে বলে, ‘আসলে ওইরকম কিছু তো ভাবি নাই। হঠাৎ করে কী বলবো!.. অফিস.. ছুটি নেওয়া ..আপাতত না হয় তুমি একাই করে এসো, আমি দেখি, পরে..’
তারেক আর কথা বাড়ায় না। টুপি মাথায় মসজিদে চলে যায় এশার নামাজ আদায় করতে।
শ্রাবণের ঘরের দরজা লাগানো, ওর কয়েকজন বান্ধবী আজ রাতে থাকতে এসেছে, কি নাকি গ্রুপ স্টাডি করবে সবাই মিলে। ঘরের দরজা ভেদ করে মাঝে মাঝে ওদের হৈ হুল্লোড়ের চাপা অস্পষ্ট শব্দ ভেসে আসছে। কী সুন্দর, ঝলমলে চিন্তাহীন একটা সময় পার করছে ওরা!

বাসার বাধা কাজের লোক রান্নাঘরের পাশে তার নিজস্ব ছোট্ট রুমে ভারতীয় সিরিয়াল দেখায় ব্যস্ত। শবনম একটা হাই তোলে। এটা এমন একটা সময় যখন তার আসলে কিছুই করার থাকে না। এসময় মনের মধ্যে বৈরাগ্য চিন্তা ভর করে। মনে হয় জীবন এক টুকরা মায়া, একটা হঠাৎ দেখা স্বপ্ন, জলের উপর ফুটে ওঠা স্বল্পস্থায়ী বুদ বুদ, মিলিয়ে যাওয়ার মতো একটা করুণ হাল্কা ছায়া। মনে হয় এই জীবনে কিছুই চিরস্থায়ী নয়, কারো উপর রাগ করার কিছু নাই, ঝগড়া বিবাদের কিছু নাই। যেন তার জন্য কোথাও কেউ নাই, কিছু নাই। সমস্তই অনিত্য অস্থায়ী। রুটিন মেনে প্রতিদিন বেলা আসে বেলা যায়, ভাবনার গভীরে, ভেতরে বাইরে মানুষও ধীরে ধীরে নাই হয়ে যায়। একটা অচেনা ধু ধু প্রান্তরে একদম একা দাঁড়িয়ে থাকার মতো অনুভূতি হয় শবনমের। বিচ্ছিন্ন, একাকী, বিষণ্ন। এটা কি তবে মধ্য বয়সের সংকট? মিড লাইফ ক্রাইসিস? এখন যে বয়সে এসে সে দাঁড়িয়েছে সেটা বার্ধক্য নয়, আবার তারুণ্যও নয়। দুয়ের মাঝখানে একটা বয়ঃসন্ধিকাল। যেখান থেকে পালানোর কোনো সুযোগ নেই। নিজের কর্মোদ্যমে ভরা যৌবনকে পেছনে ফেলে এখন অবধারিতভাবে এগিয়ে যেতে হবে বার্ধক্যের দিকে। চাই বা না চাই যৌবনকে বিদায় জানিয়ে এখন গ্রহণ করতে হবে প্রৌঢ়ত্ব কিংবা বার্ধক্যকে। সকলেই তাই করে। শবনমের মা, নানী, নানীর মা সবাই, পৃথিবীর সব মানবীই এই স্তর পেরিয়ে অনন্তে চলে গেছেন। সরল আর স্বাভাবিকভাবেই তো তারা গ্রহণ করেছেন পরিবর্তনকে! মেনে নিয়েছেন। না মেনে নিস্তার নেই বলে?

সেই যে স্নানঘরে, বার্ধক্যের প্রথম চিহ্ন দেখে চমকে উঠেছিল শবনম, সেটা কি ভয়ে, না বিস্ময়ে? নাকি পরিবর্তনের আভাসকে মানতে না পারার বেদনায়! সময় চক্ষুহীন নিষ্ঠুর, সময় ক্ষমাহীন, রুদ্র কঠিন। সময়ের হাত ধরে আমাদের ভেসে যেতে হয় জীবনের প্রতিটি ধাপে।

এই যে ইদানিং এক নতুন উপদ্রব শুরু হয়েছে মাঝরাতে হঠাৎ ভয়ানক গরম লাগা, গলা, বুক, পিঠ অচেনা ঘামে ভিজে যাওয়া, অকস্মাৎ ঘুম ভেঙে বুক ধড়ফড় করে ওঠা, ভীষণ অস্থির লাগা এও তো মধ্যবয়সের এক অস্বস্তিকর লক্ষণ, বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দেওয়া। সুন্দর করে বললে, জীবনের আরেকটি অধ্যায়ে পা রাখার সূচনা হলো তোমার শবনম। ফুল্লকোমল বসন্ত শেষ আসছে হিম আচ্ছাদিত শীতকাল। জীবনের প্রতিটি সম্পর্কের কাছে প্রত্যাশা এবার কমিয়ে আনো, নৈর্ব্যক্তিক হও, নয়তো অযথাই দুঃখ পাবে।

তারেক এরই মধ্যে মসজিদ থেকে ফিরে এসেছে। ডাইনিং টেবিলে খাবার সাজানোর টুংটাং শব্দ হচ্ছে। একটু পরেই শ্রাবণ আর তার বন্ধুদের কলকল্লোলের আভাস পাওয়া গেল। হৈ হৈ করে রাতের খাবার খাচ্ছে ওরা। সামান্য কথায় হিল্লেলিত ঝর্ণার মতো হেসে ভেঙে পড়ছে। ওদের দেখলে কেন যেন তরতর করে বেড়ে ওঠা কচি সবুজ লাউ ডগার উপমাই মনে আসে শবনমের। ওরা যেন কলির মোড়ক সরিয়ে সদ্য মুখ বের করা এক দল আলোময় ফুল। যেন লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ, বর্ষায় স্নাত সবুজ পাতা। শবনম হাসি হাসি মুখে ডাইনিং এ এসে দাঁড়ায়।
‘ভালভাবে খাও মেয়েরা .. সাদমা, তোমার প্লেট খালি কেনো? রুম্পা, তুমি আরেক পিস চিকেন নাও।’
‘জি, আন্টি..’
মেয়েগুলো বিনীত ভঙ্গীতে বলে। শবনমের উপস্থিতিতে তাদের স্বতঃস্ফূর্ততায় সম্ভবত বাঁধা তৈরি করে। এতক্ষণের কলরব থামিয়ে তারা প্লেটে ঝুঁকে খাওয়ায় মনোযোগী হয়।
‘আমরা আমাদের মতো নিয়ে খাচ্ছি মা, চিন্তা করো না।’
শ্রাবণ মুখ তুলে বলে। তবু দুয়েকটা ভদ্রতাসূচক বাক্য বলে শবনম নিজের ঘরে ফিরে আসে। করুক, এবার ওরা প্রাণ খুলে কোলাহল করুক। মেতে থাকুক নিজেদের আনন্দে। কয় দিনের আর এই নির্মল আনন্দ কোলাহল!

তারেক শুয়ে পড়েছিল আগেই। সংসারের খুটিনাটি তদারকি সেরে প্রায় আধঘণ্টা পর একটা ঢিলেঢালা সুতির ম্যাক্সি পড়ে শুতে এলো শবনম। ভেবেছিল তারেক বুঝি ঘুমিয়ে গেছে। আসলে যে ঘুমায়নি, শবনম সেটা বুঝলো তারেক যখন পেছন থেকে দুই হাত বাড়িয়ে তাকে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরল। এই স্পর্শ ও আলিঙ্গন একটা গভীর সংকেত, একটা গূঢ় ইঙ্গিত, কয়েক বছর আগেও এই ইঙ্গিত শবনমের সমস্ত শরীরে একটা অন্যরকম শিহরণ ছড়িয়ে দিতো কিন্তু ইদানিং কি হয়েছে, সেই আবেশটা আর শরীরে জাগে না। বরং তারেক হাত বাড়ালেই কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনীহা, অস্বস্তি আর অবসাদের সঙ্গে একটা সূক্ষ্ম বিরক্তি ছড়িয়ে পড়ে তার সমস্ত শরীরে মনে। কপালটা অজান্তেই একটু কুঁচকে যায়। তারেক এবার আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে আসে। শবনমের ঘাড়ে তার ঘন উষ্ণ নিশ্বাসের আঁচ এসে লাগে। ঘরের মৃদু আলোতে শবনমের অনিচ্ছুক চেহারা চোখে পড়ে না তারেকের। তার ভালবাসার দীর্ঘ হাত বরাবরের মতো শবনমের দেহরেখা ধরে আরও বিবিধ পথে অগ্রসর হতে চায়। এবার আস্তে করে তারেকের হাতটা নামিয়ে রেখে সামান্য ধাক্কা দিয়ে ওকে সরিয়ে দেয় শবনম।
‘উহু! না.. আজকে থাক প্লিজ.. ’
‘কেনো?’
তারেক নিজেকে সামলে নিয়ে নরম গলায় জানতে চায়, ‘কোনো সমস্যা?’
‘না, কেমন যেন ড্রাই লাগে, বুঝছো, মানে, ঠিক.. কি বলবো! জ্বালা পোড়া হয়! প্রিমেনোপজ সিনড্রম কিনা!’
তারেক এবার হাতটা গুটিয়ে নেয়। পাশ ফিরে চিৎ হয়ে শুয়ে একটা লম্বা হাই তুলে বলে,
‘এখন অনেক রকম লুব্রিকেন্ট পাওয়া যায়। নেটে দেখে নিও। আমরা কিন্তু ট্রাই করতে পারি।’
‘হুম.. একটা আর্টিকেলে ন্যচারাল অয়েলের কথা পড়েছিলাম..’
‘উন্নত দেশে অনেকে পঞ্চাশের পর বিয়ে করে জানো তো! মানসিক প্রস্তুতিটাই আসল। মনের দুয়ারটা আগে খুলে দাও, বন্ধ করে রেখো না.. ’

তারেক সাইকোলোজিস্টের সাইকো থেরাপি দেওয়ার মতো ভঙ্গী করে বলে। বহুদিন পর তারেকের পক্ষ থেকে আসা আহ্বান অগ্রাহ্য করে শবনমের একটু খারাপই লাগে। এবার সেই পাশ ফিরে তারেককে জড়িয়ে ধরলে তারেক অন্য হাতে তাকে বুকে টেনে নেয়। ঘোর লাগা গলায় বলে,
‘শোনো, তুমি তো বুড়ি হয়ে যাও নাই। এখনো অনেক ফিট আছো। মনের বাধাটা সরিয়ে দেও, তারপর দেখো কি হয়, সব বরফ গলে যাবে, ষাট বছরের পর মধ্য বয়সের শুরু বুঝলে?’
শবনম উত্তরে কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলো কিন্তু তারেকের ভেজা মোটা ঠোঁট দুটো, তার দাড়িবহুল মুখখানি শবনমের ঠোটের উপর চেপে বসলে সে আর কথা বলতে পারে না। কথা বলার দরকারও পড়ে না। জমাট বাধা হিম বরফ কোনো শব্দ না করেই গলতে থাকে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি