শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক

‘উরি আল্লাহ’ মুখ ফুটে বেরোনো কথাটাকে জিভ থেকে আবার টেনে পেটে নামাল নুহু। ওরা জানতে চায়ছে, আমরা রোহিঙ্গা কি না! তবে কি ওরা ভেক নিয়ে ছো মেরে বসে থাকা মায়ানমার-সেনা? লুন সানের ফৌজ?

রোহিঙ্গা! এই পরিচয়টার জন্যই আজ তাদের এই হাল। তাদের বেঁচে থাকাটাই লাটে উঠেছে। মাঝে মাঝে নুহুর মনে হয়, আল্লাহ তাদের এই রোহিঙ্গা না করে কোনো পোকামাকড় করে পাঠালেই পারতেন? কোনো বুনেঢ্যাঙর করেও পাঠাতে পারতেন। নুহু জানে, তাদের শরীরের হাড়ের কোনো দোষ নেই, তাদের শরীরের মাংসের কোনো দোষ নেই, তাদের নাক-চোখেরও কোনো দোষ নেই, যত দোষের মূলে হল এই একটাই পরিচয়, রোহিঙ্গা! এই রোহিঙ্গা পরিচয়টাকে কি গলা টিপে মারা যায় না? নুহু তার মনের এই ক্ষেদটা একবার বিড়ি টানতে টানতে সুং তান কে বলেছিল। সুং তান জেলে বৌদ্ধিষ্ট। নুহুদের পিঠাপিঠি জেলেপাড়ার লোক। নুহুর সাথে তার জব্বর পিরিত।

সুং তানরা গরীব জেলে। ‘খাটি খাই’ গোছের। দংখালীর এই জেলেপাড়াটায় সুং তানরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। নুহুরা বলে, বোদ্ধপাড়া। কেউ কেউ রসিকতা করে বলে, বুদ্ধুপাড়া। নুহুদের সঙ্গে সুংতানদের চিরদিনই দহরম-মহরম ভালো। চাল-ডাল, তেল-নুন ধার নেওয়ানেয়ির সম্পর্ক। এ সম্পর্কের হাড় শত শত বছরের পুরোনো। এই সেদিন পর্যন্তও হিংসার বিষাক্ত ফণা এখানে দাঁত বসাতে পারেনি। তাদের হক কথা, আমাদের আলাদা কোনো জাত নেই, আমরা এক সাথে খাটি, একসাথে খাই, এটাই আমাদের জাত। আমাদের জাত শ্রমে, ধর্মে নয়। তবুও নুহুরা টের পাচ্ছিল, ওপর তলার একটা অন্য গরম হাওয়া এখানেও দাঁত ফোটাতে শুরু করেছে। বিদ্বেষের একটা চোরা বিষ স্রোত মিহি করে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে এই গোব্যাচারি মানুষগুলোর মনে।

নুহু সুং তান কে বলেছিল, ‘আমাদের রোহিঙ্গা হয়ে জন্মানোটাই পাপ। আমরা যদি তোমাদের মতো বৌদ্ধ হতেম, তাহলে নিশ্চয় আমাদের ওপর এই জুলুম করত না মায়ানমার সেনা? যত দোষ মুখের দাড়ি আর মাথার টুপিতে!’

‘ধুর বোকা, এটা কোনো কথা হল? যে যে ধর্মেই জন্মাক না কেন, যে জাতিতেই জন্মাক না কেন, তাকে সেই ধর্ম বা জাতি নিয়েই গর্ব করা উচিৎ। কোনো জাতিই ছোট না। কোনো ধর্মও ছোট না। সব জাতিই সমান। সব ধর্মও সমান। এই পৃথিবীতে কত জাতি আর কত ধর্ম আছে বলো তো? শত শত, হাজার হাজার! একজন যদি আরেকজনকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লাগে, তাহলে তো পৃথিবীটাই ধংস হয়ে যাবে। একজন আরেকজনের মাথায় যদি কুঠার তোলে, তাহলে তো কোনো মানুষই বেঁচে থাকবে না। ধর্ম কুঠারে নয়, ধর্ম প্রেমে।’

‘তাহলে আমাদের কেন বেছে বেছে হত্যা করা হচ্ছে? ওই ধর্মের জন্যই তো?’

‘সব ধর্মেই, সব জাতিতেই কিছু খারাপ মানুষ থাকে, মন্দ মানুষ থাকে নুহু, আমাদের মধ্যেও তা আছে। আর এই খারাপ মানুষদের হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা চলে এলেই সর্বনাশ। সব ভেঙে তছনছ করে দেয়। আজ আমাদের দেশে সেটাই ঘটছে।’ ফদফদ করে বকে গেছিল তামাটে রঙের পাঁচ ফুটের বেঁটেখাট মানুষ সুং তান। তারপর জোরে শ্বাস ঠেলে বলেছিল, ‘আমি কিন্তু ভাই, ওসবের ধাড়ধারি নে। তুমিও যা আমিও তাই।’ কথাটা বলার সময় যেন সুং তান তার বুক চিড়ে নুহুকে দেখাতে চেয়েছিল যে, সে একজন সাধারণ মানুষ ছাড়া অন্য কিছুই নয়। তার ‘নির্বাণ’য়েই শান্তি। বুদ্ধ আজীবন শান্তির কথাই বলতে চেয়েছেন। জীবনে অহিংসা ভড় না করলে ‘নির্বাণ’ হবে কীভাবে? ‘নির্বাণ’ ছাড়া তো মুক্তি নেই। সেই যেন একই কথা, কোথাও যেন ‘নির্বাণ’ আর ‘ঈমান’এর একই ঘাটে এসে গলাগলি করা।

‘হ্যাঁ, আমরা রোহিঙ্গা, তো কী হয়েছে? কেটে পানিতে ভাসিয়ে দেবেন? জবেহ করবেন? আসুন, তাইই করুন।’

আচমকা যেন দুম করে বাঁশ ফাটল। ছইয়ের ভেতর থেকে ছ্যান ছ্যান করে উঠলেন হালেমা। হৃদপিন্ড ধড়াক করে উঠল মতির। আরিফার তো মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার জোগাড়। নুহুর হৃদস্পন্দন তখন চরমে। আতঙ্কের পারদ ধুকপুক করছে। আর রেহাই নেই! মরণ এবার দুয়ারে! মা কি সর্বনাশটাই না করল! মতিও মনে মনে তার মা’কে দুষতে লাগল, অ্যা ক্যামুন মা গো, পেটে ধরা ছেলেকে জেনেবুঝে জল্লাদের হাতে তুলে দিচ্ছে!

বলতে বলতে আগন্তুক নৌকাটা থেকেও একটা মেয়েলি কণ্ঠস্বর ভেসে এল। যেন হালেমার কথাটাই দেওয়ালে ধাক্কা লেগে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে এল। ঠান্ডায় বসে যাওয়া স্বর। যেন বহুত কষ্টে ঠেলেঠুলে গলা ফুঁড়ে বের হয়ে আসছে। গলার স্বরই জানান দিচ্ছে, মেয়েটি বৃদ্ধা এবং অসুস্থ। কথার মাঝে মাঝে গলা খিঁচে ধরা কাশিও জড় পাকিয়ে দিচ্ছে। নৌকাটার একেবারে পেট থেকে কথাটা ভেসে এল, ‘আমরাও তো তাই! হাতে জান নিয়ে পানি পানি ঘুরে বেড়াচ্ছি।’

‘বাপ রে, বাঁচলাম’। ধড়ে প্রাণ ফিরে এল মতির। ‘আমি তো বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।’ ঠোঁট নড়ল নুহুর। ভয়ের মেঘ কেটে মনের আকাশে এখন খুশির ঘুড়ি উড়তে শুরু করে দিয়েছে। নুহু এবার বৈঠাটাকে স্যাৎ স্যাৎ করে পাক মেরে মেহমান নৌকাটার দিকে টান মারল। মতিও দাঁড়টাকে বেঁকিয়ে ধরল। ‘কট’ করে উঠল নৌকাটা। মতি যখন গায়ের শক্তিটাকে একেবারে নিংড়ে দিচ্ছে, তখন তার দুবলা পাতলা শরীরটাও ধনুকের মতো বেঁকে যাচ্ছে। মতি ভাবছে, যাক একটা সাথী নৌকা তো পাওয়া গেল। আপদ-বিপদে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়া যাবে। কিন্তু ওরা উচিপুরংএর দিক থেকে আসছে কেন! ওরা যদি আমাদের মতো পালিয়েই যাবে, তাহলে তো ওরা উচিপুরংএর দিকে যেত? কিন্তু এ তো দেখছি ঘুরে আকিয়াবের দিকেই যাচ্ছে! খটকা বাঁধল মতির। ব্যাপারটা কি? তবে কি উচিপুরংএর দিকেও বার্মিজ সেনারা ডেরা বেঁধে আছে! মতি একবার ভাবল, ব্যাপারটা নুহুর সঙ্গে আলোচনা করি। আবার পরক্ষণেই ভাবল, না থাক, সরাসরি ওদের সঙ্গেই কথা বলি। নৌকাটা একেবারে আগন্তুক মেহমান নৌকাটার ঘাড় ঘেঁষে ভিড়ল। আলতো করে দুই নৌকার খোলের সঙ্গে ঠোকাঠুকিও লাগল। দুই নৌকাই দুলে উঠল। দুই নৌকার এই প্রেমময় টোকাতে নদীর জলও ছলাৎ করে কোমর দুলিয়ে উঠল। তার নীল-কালো জলের গালে মিহি করে টোলও পড়ল। নুহুদের নৌকাটা কাছে ভিড়তেই, আগন্তুক নৌকাটা থেকে পিলপিল করে গুচ্চের মানুষ বেরিয়ে এল! ফিক করে একটা কুপিও জ্বলে উঠল। নৌকার ওপরে গেঁড়ে বসে থাকা কালো ঘুটঘুটে ছায়াটা দুদ্দাড় করে নদীতে নেমে গেল। ছায়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝিম মেরে থাকা নৈশব্দটাও নেমে গেল। একটা ফিনফিনে তামাটে আলো নৌকাটায় ছড়িয়ে গেল। এই আলোতে নুহু চোখ ফেড়ে দেখল, দশটা মানুষের মাথা! মাঝবয়সী দুজন মেয়ে। সঙ্গে দুটো বাচ্চা। আর পাঁচজন পুরুষ। তার মধ্যে একজন বৃদ্ধ। ছইয়ের ভেতরে কাঁথা মুড়ি দিয়েও কেউ একজন বসে আছেন। ‘খক’ ‘খক’ করে কাশছেন। সম্ভবত সেই বৃদ্ধা মেয়েটিই হবে, যিনি একটু আগেই কাশতে কাশতে কথাগুলো বলছিলেন।

 আপনারা রোহিঙ্গা তো আকিয়াবের দিকে যাচ্ছেন কেন?’ মনের খুঁতখুতিটা উগলালো মতি। সে এতক্ষণে দাঁড়টা ধরে খাড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘আমরা উচিপুরংএর দিকেই যাচ্ছিলাম। কিন্তু ওদিকে বিজিবি যেতে দিচ্ছে না। তারা ধরে আবার এদিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে।’ চুল কোঁকড়ানো একটা ছিপছিপে চেহারার মাঝবয়সী লোক কথাগুলো বলল।

‘হাই আল্লাহ!’ আঁতকে উঠল আরিফা। ভাবল, এবার কী হবে! ভদ্রলোকের কথাটা শুনে মতিরও বুক চিনচিন করতে শুরু করে দিয়েছে। সে আফসোস করল, যাহ শালা, যে আশা নিয়ে এগোচ্ছিলাম, তাও জলে ভেসে গেল! বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড আবার এমন কেন করছে! তারা তো রোহিঙ্গাদেরকে এতদিন আশ্রয় দিচ্ছিল। হঠাৎ কী এমন হল যে, তারা মুখ ফিরিয়ে নিল! মতিরা শুনেছে, তাড়া খাওয়া, ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের বড় আশ্রয়দাতা হল বাংলাদেশ। তাদের মানবিক মুখের জন্যেই হাজার হাজার রোহিঙ্গারা এখনও জীবনে বেঁচে আছে। টিকে আছে দুনিয়াদারি। বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার বিভিন্নপ্রান্তে শরণার্থী শিবিরগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কুতুপালং, নয়াপাড়া, থাংখালী, উচিপুরং ক্যাম্পগুলোই আজ রোহিঙ্গাদের ঠিকানা। এগুলোর কোত্থাও আমাদের ঠিকানা হল না! এতটুকু মাথা গোঁজার ঠাঁই হল না! হুহু করে উঠল মতির হৃদয়। হাই আল্লাহ, আব্বার কী হবে! ও যে যেকোনো সময় ইন্তেকাল করবে! তার দাফন করার মাটিটুকু পাব কোথায়! আব্বার স্বপ্নাদেশ তবে কি বিফল হয়ে যাবে!

কষ্ট দলা পাকিয়ে উঠছে মতির। হৃদয়টা টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে যাচ্ছে। আর কত সহ্য করবে! সে যে কাঠ-পাথর লোহা-ইস্পাত দিয়ে তৈরি নয়? সেও যে একজন রক্ত-মাংসের মানুষ।

‘তাহলে এখন কী করবে? কোন দিকে যাবে?’ কথা তো নয়, যেন একদলা কষ্ট টং করে গলা থেকে বেরিয়ে এল নুহুর। সঙ্গে দিক হারা পথ হারা মানুষের আকুতি।

‘আরে আলোটা!’ চমকে উঠল মতি। তারা যে এসব ঝুট-ঝামেলায় পড়ে ধেয়ে আসা লাল আলোটার কথা ভুলতেই বসেছিল।

‘আরে তাই তো!’ ঘাড় ঘোরালো নুহু। সে লম্বা দৃষ্টি ফেলল বঙ্গোপসাগরের দিকে। ঝাপসাতে যতদূর দৃষ্টি যায়, ভালো করে জরিপ করল। ‘কই, কোথায় গেল! আর তো দেখা যাচ্ছে না!’ বিস্ময় প্রকাশ করল নুহু। চোখের পাতায় অদ্ভুত সারল্যতা। ঠোঁটে একটা আত্মতৃপ্তির প্রশান্তি। কিন্তু মাথা চুলকালো মতি, ‘লেডা ক্যাম্পের দিকে যাব নাকি।’

‘তা গেলে হয়, তবে ওখানকার বিজিবি আবার চরে উঠতে দেবে? রাইফেল নিয়ে তাড়া করবে না তো!’ আশঙ্কা প্রকাশ করল নুহু।

‘হ্যাঁ, ওরাও ঢুকতে দিচ্ছে না। আমরাও খবর নিয়েছি।’ আগন্তুক নৌকা থেকে কথাটা ভেসে এল। চুল কোঁকড়ানো লোকটা গলা ঝেড়ে কথাগুলো বলল। সে আরও জানাল, ‘তবে শুনলাম, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের ঘুমধুম সীমান্ত চৌকির স্টেশন প্রধান লেফটানেন্ট জেনারেল আলি কাদের খুব ভালো লোক। খুবই মানবিক। দরদী মানুষ। তিনি নাকি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাচ্ছেন না। তিনি রোহিঙ্গাদের ট্রলারে করে নিয়ে গিয়ে টেঙ্গার চরে রেখে আসছেন। একটু দূর হলে কী হল, মানুষগুলো বেঁচেবর্তে তো থাকছে? আপাতত একটা ঠাঁই তো পাচ্ছে?’

‘টেঙ্গার চর বলতে মেঘনা………।’ মতি ফট করে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল অমনি তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে লোকটা ভড়ভড় করে বলতে লাগল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, ওই যে মেঘনা নদীর পলি জমে যেটা নতুন গড়ে উঠেছে, ওটাই টেঙ্গার চর।’

‘তা আপনারা ওখানে গেলেন না কেন?’ হুট করে বেখাপ্পা প্রশ্ন করল নুহু।

‘ওখানে তো সরাসরি যাওয়া যাবে না। সে তো অনেক দূর। ঢেরখানি পশ্চিমে। বিজিবির লোকেরাই অন্যান্য ক্যাম্প থেকে ট্রলারে করে ওখানে নিয়ে যাচ্ছে। ওখানে সরাসরি যাওয়ার ফুরসত থাকলে কি আর বলতে হত, ঠেলেঠুলে ঠিকই চলে যেতাম।’ একজন খোকলা দাঁতের লোক ত ত করে তোতলালো। সঙ্গে কোঁকড়ানো চুলের লোকটি যোগ করল, ‘টেঙ্গার চরে ওরা বেশিদিন রাখছে না। কিছুদিন রাখার পর আবার নাকি নয়াপাড়া অথবা কুতুপালং ক্যাম্পে সরিয়ে নিচ্ছে। টেঙ্গার চর যে জোয়ারের সময় তিন-চার ফুট পানির তলে ডুবে যায়।’

‘বলছেন কী!’ ভ্রূ কুঁচকে উঠল মতির। যেন এক বুক আশার মধ্যে কেউ জল ঢেলে দিল।

‘হ্যাঁ, তাইই তো শুনলাম। আমাদের পাশের বাড়ির কামালরা ওখানেই আছে।’ কোঁকড়ানো চুলের লোকটি এবার গলা দঢ় করে বলল। মতি বলল, ‘এ তো পেটে না মেরে ভাতে মারা!’

‘ওই আর কি, আজ না মেরে সাতদিন পরে মারা।’

‘তাহলে এখন উপায়?’ অন্ধকারে পথ হাতড়ায় মতি।

‘আপাতত পথ বলতে গেলে তো এখন একটাই পথ বাকি।’

‘কোন পথটা বলুন তো!’ উৎসুক হয়ে উঠল মতি। মনের মধ্যে তখন এক চিলতে ঠাঁই ফিরে পাওয়ার প্রবল আকুতি উছাল মারছে। 

‘নয়াপাড়া ক্যাম্প।’ লোকটা আলগোছে বললেন। তারপর সুখের কথা শোনালেন, ‘নয়াপাড়া ক্যাম্প বড় ক্যাম্প। ওখানে বিজিবি ঢুকতে দিচ্ছে না, এখন পর্যন্ত এরকম কোনো খবর নেই।’

‘তাহলে আর দেরি কেন? চলুন একসঙ্গেই যাই।’ তড়াক করে উঠল মতি। ঘাড়ের গামছাটাকে ঝেরে কোমরে বাঁধল। লোকটাও কোমর হেলাল, ‘হ্যাঁ, চলুন, তবে লেডা বর্ডার ঘেঁষেই যেতে হবে, তানাহলে আবার মায়ানমার সেনার খপ্পরে পড়ে যেতে পারি!’

‘তো, তাইই চলুন।’ তাড়া লাগাল মতি। সে এমন করছে যেন পারলে উড়ে চলে যাবে। নদী তার কাছে আর ভালো লাগছে না। অসহ্য হয়ে উঠছে। একটুখানি মাটি দেখার জন্যে তার মন ছু ছু করছে। 

‘আপনাদের বাড়ি কোথায় ছিল?’ জানতে চায়ল নুহু।

চলবে... 

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ

 

Header Ad

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে এবার জুটি বাধলেন বাংলাদেশের তারকা অভিনেত্রী আফসানা মিমি। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তর জীবনকাহিনি নিয়ে এই সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মানসমুকুল পাল।

জানা গেছে, হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাসকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানাবেন নির্মাতা মানসমুকুল পাল। আগামীতে সেই সিনেমাতেই দেখা যাবে মিঠুনকে। শোনা যাচ্ছে, অভিনেতার বিপরীতে দেখা যেতে পারে বাংলাদেশি অভিনেত্রী আফসানা মিমিকে। যদিও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি নির্মাতা। তবে ভারতের জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই পরিচালক চিত্রনাট্য লেখার আগে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন।

মূলত সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার আগে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসে থাকা জায়গাগুলো নিজে ঘুরে দেখতে চান মানসমুকুল। ভারতীয় গণমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করছি তাতে বাংলাদেশের একাধিক জায়গার উল্লেখ রয়েছে।

তাই ঢাকা, কিশোরগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার কথা আছে। সেই জায়গাগুলো নিজে দেখলে উপলব্ধি থাকবে, আর তাতে চিত্রনাট্য লেখার কাজও সহজ হবে।

শুধু জায়গা পরিদর্শন নয়, বাংলাদেশে এসে অভিনেত্রী আফসানা মিমির সঙ্গেও দেখা করবেন মানসমুকুল। তিনি এ-ও জানান, সিনেমার অধিকাংশ শুটিং বাংলাদেশে হবে। কিন্তু এখনই নয়। বর্তমানে মানসমুকুলের হাতে ৩টি সিনেমার কাজ রয়েছে। সেসব চলচ্চিত্র শেষ করে তবেই তিনি এই সিনেমার কাজ শুরু করবেন।

Header Ad

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যেতে নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ২ বছর আগে সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে, আরেকজন টেনে নিয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে, জনগণ তবেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এর ফলে সংসদের যারা জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে আসবে, তারা সংসদে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায়। সকল সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আশপাশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। যদি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা যায়, তবেই মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দিবে, অন্যথায় দ্বিতীয়বার ভাববে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান