মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫ | ১৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক

‘উরি আল্লাহ’ মুখ ফুটে বেরোনো কথাটাকে জিভ থেকে আবার টেনে পেটে নামাল নুহু। ওরা জানতে চায়ছে, আমরা রোহিঙ্গা কি না! তবে কি ওরা ভেক নিয়ে ছো মেরে বসে থাকা মায়ানমার-সেনা? লুন সানের ফৌজ?

রোহিঙ্গা! এই পরিচয়টার জন্যই আজ তাদের এই হাল। তাদের বেঁচে থাকাটাই লাটে উঠেছে। মাঝে মাঝে নুহুর মনে হয়, আল্লাহ তাদের এই রোহিঙ্গা না করে কোনো পোকামাকড় করে পাঠালেই পারতেন? কোনো বুনেঢ্যাঙর করেও পাঠাতে পারতেন। নুহু জানে, তাদের শরীরের হাড়ের কোনো দোষ নেই, তাদের শরীরের মাংসের কোনো দোষ নেই, তাদের নাক-চোখেরও কোনো দোষ নেই, যত দোষের মূলে হল এই একটাই পরিচয়, রোহিঙ্গা! এই রোহিঙ্গা পরিচয়টাকে কি গলা টিপে মারা যায় না? নুহু তার মনের এই ক্ষেদটা একবার বিড়ি টানতে টানতে সুং তান কে বলেছিল। সুং তান জেলে বৌদ্ধিষ্ট। নুহুদের পিঠাপিঠি জেলেপাড়ার লোক। নুহুর সাথে তার জব্বর পিরিত।

সুং তানরা গরীব জেলে। ‘খাটি খাই’ গোছের। দংখালীর এই জেলেপাড়াটায় সুং তানরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। নুহুরা বলে, বোদ্ধপাড়া। কেউ কেউ রসিকতা করে বলে, বুদ্ধুপাড়া। নুহুদের সঙ্গে সুংতানদের চিরদিনই দহরম-মহরম ভালো। চাল-ডাল, তেল-নুন ধার নেওয়ানেয়ির সম্পর্ক। এ সম্পর্কের হাড় শত শত বছরের পুরোনো। এই সেদিন পর্যন্তও হিংসার বিষাক্ত ফণা এখানে দাঁত বসাতে পারেনি। তাদের হক কথা, আমাদের আলাদা কোনো জাত নেই, আমরা এক সাথে খাটি, একসাথে খাই, এটাই আমাদের জাত। আমাদের জাত শ্রমে, ধর্মে নয়। তবুও নুহুরা টের পাচ্ছিল, ওপর তলার একটা অন্য গরম হাওয়া এখানেও দাঁত ফোটাতে শুরু করেছে। বিদ্বেষের একটা চোরা বিষ স্রোত মিহি করে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে এই গোব্যাচারি মানুষগুলোর মনে।

নুহু সুং তান কে বলেছিল, ‘আমাদের রোহিঙ্গা হয়ে জন্মানোটাই পাপ। আমরা যদি তোমাদের মতো বৌদ্ধ হতেম, তাহলে নিশ্চয় আমাদের ওপর এই জুলুম করত না মায়ানমার সেনা? যত দোষ মুখের দাড়ি আর মাথার টুপিতে!’

‘ধুর বোকা, এটা কোনো কথা হল? যে যে ধর্মেই জন্মাক না কেন, যে জাতিতেই জন্মাক না কেন, তাকে সেই ধর্ম বা জাতি নিয়েই গর্ব করা উচিৎ। কোনো জাতিই ছোট না। কোনো ধর্মও ছোট না। সব জাতিই সমান। সব ধর্মও সমান। এই পৃথিবীতে কত জাতি আর কত ধর্ম আছে বলো তো? শত শত, হাজার হাজার! একজন যদি আরেকজনকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লাগে, তাহলে তো পৃথিবীটাই ধংস হয়ে যাবে। একজন আরেকজনের মাথায় যদি কুঠার তোলে, তাহলে তো কোনো মানুষই বেঁচে থাকবে না। ধর্ম কুঠারে নয়, ধর্ম প্রেমে।’

‘তাহলে আমাদের কেন বেছে বেছে হত্যা করা হচ্ছে? ওই ধর্মের জন্যই তো?’

‘সব ধর্মেই, সব জাতিতেই কিছু খারাপ মানুষ থাকে, মন্দ মানুষ থাকে নুহু, আমাদের মধ্যেও তা আছে। আর এই খারাপ মানুষদের হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা চলে এলেই সর্বনাশ। সব ভেঙে তছনছ করে দেয়। আজ আমাদের দেশে সেটাই ঘটছে।’ ফদফদ করে বকে গেছিল তামাটে রঙের পাঁচ ফুটের বেঁটেখাট মানুষ সুং তান। তারপর জোরে শ্বাস ঠেলে বলেছিল, ‘আমি কিন্তু ভাই, ওসবের ধাড়ধারি নে। তুমিও যা আমিও তাই।’ কথাটা বলার সময় যেন সুং তান তার বুক চিড়ে নুহুকে দেখাতে চেয়েছিল যে, সে একজন সাধারণ মানুষ ছাড়া অন্য কিছুই নয়। তার ‘নির্বাণ’য়েই শান্তি। বুদ্ধ আজীবন শান্তির কথাই বলতে চেয়েছেন। জীবনে অহিংসা ভড় না করলে ‘নির্বাণ’ হবে কীভাবে? ‘নির্বাণ’ ছাড়া তো মুক্তি নেই। সেই যেন একই কথা, কোথাও যেন ‘নির্বাণ’ আর ‘ঈমান’এর একই ঘাটে এসে গলাগলি করা।

‘হ্যাঁ, আমরা রোহিঙ্গা, তো কী হয়েছে? কেটে পানিতে ভাসিয়ে দেবেন? জবেহ করবেন? আসুন, তাইই করুন।’

আচমকা যেন দুম করে বাঁশ ফাটল। ছইয়ের ভেতর থেকে ছ্যান ছ্যান করে উঠলেন হালেমা। হৃদপিন্ড ধড়াক করে উঠল মতির। আরিফার তো মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার জোগাড়। নুহুর হৃদস্পন্দন তখন চরমে। আতঙ্কের পারদ ধুকপুক করছে। আর রেহাই নেই! মরণ এবার দুয়ারে! মা কি সর্বনাশটাই না করল! মতিও মনে মনে তার মা’কে দুষতে লাগল, অ্যা ক্যামুন মা গো, পেটে ধরা ছেলেকে জেনেবুঝে জল্লাদের হাতে তুলে দিচ্ছে!

বলতে বলতে আগন্তুক নৌকাটা থেকেও একটা মেয়েলি কণ্ঠস্বর ভেসে এল। যেন হালেমার কথাটাই দেওয়ালে ধাক্কা লেগে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে এল। ঠান্ডায় বসে যাওয়া স্বর। যেন বহুত কষ্টে ঠেলেঠুলে গলা ফুঁড়ে বের হয়ে আসছে। গলার স্বরই জানান দিচ্ছে, মেয়েটি বৃদ্ধা এবং অসুস্থ। কথার মাঝে মাঝে গলা খিঁচে ধরা কাশিও জড় পাকিয়ে দিচ্ছে। নৌকাটার একেবারে পেট থেকে কথাটা ভেসে এল, ‘আমরাও তো তাই! হাতে জান নিয়ে পানি পানি ঘুরে বেড়াচ্ছি।’

‘বাপ রে, বাঁচলাম’। ধড়ে প্রাণ ফিরে এল মতির। ‘আমি তো বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।’ ঠোঁট নড়ল নুহুর। ভয়ের মেঘ কেটে মনের আকাশে এখন খুশির ঘুড়ি উড়তে শুরু করে দিয়েছে। নুহু এবার বৈঠাটাকে স্যাৎ স্যাৎ করে পাক মেরে মেহমান নৌকাটার দিকে টান মারল। মতিও দাঁড়টাকে বেঁকিয়ে ধরল। ‘কট’ করে উঠল নৌকাটা। মতি যখন গায়ের শক্তিটাকে একেবারে নিংড়ে দিচ্ছে, তখন তার দুবলা পাতলা শরীরটাও ধনুকের মতো বেঁকে যাচ্ছে। মতি ভাবছে, যাক একটা সাথী নৌকা তো পাওয়া গেল। আপদ-বিপদে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়া যাবে। কিন্তু ওরা উচিপুরংএর দিক থেকে আসছে কেন! ওরা যদি আমাদের মতো পালিয়েই যাবে, তাহলে তো ওরা উচিপুরংএর দিকে যেত? কিন্তু এ তো দেখছি ঘুরে আকিয়াবের দিকেই যাচ্ছে! খটকা বাঁধল মতির। ব্যাপারটা কি? তবে কি উচিপুরংএর দিকেও বার্মিজ সেনারা ডেরা বেঁধে আছে! মতি একবার ভাবল, ব্যাপারটা নুহুর সঙ্গে আলোচনা করি। আবার পরক্ষণেই ভাবল, না থাক, সরাসরি ওদের সঙ্গেই কথা বলি। নৌকাটা একেবারে আগন্তুক মেহমান নৌকাটার ঘাড় ঘেঁষে ভিড়ল। আলতো করে দুই নৌকার খোলের সঙ্গে ঠোকাঠুকিও লাগল। দুই নৌকাই দুলে উঠল। দুই নৌকার এই প্রেমময় টোকাতে নদীর জলও ছলাৎ করে কোমর দুলিয়ে উঠল। তার নীল-কালো জলের গালে মিহি করে টোলও পড়ল। নুহুদের নৌকাটা কাছে ভিড়তেই, আগন্তুক নৌকাটা থেকে পিলপিল করে গুচ্চের মানুষ বেরিয়ে এল! ফিক করে একটা কুপিও জ্বলে উঠল। নৌকার ওপরে গেঁড়ে বসে থাকা কালো ঘুটঘুটে ছায়াটা দুদ্দাড় করে নদীতে নেমে গেল। ছায়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝিম মেরে থাকা নৈশব্দটাও নেমে গেল। একটা ফিনফিনে তামাটে আলো নৌকাটায় ছড়িয়ে গেল। এই আলোতে নুহু চোখ ফেড়ে দেখল, দশটা মানুষের মাথা! মাঝবয়সী দুজন মেয়ে। সঙ্গে দুটো বাচ্চা। আর পাঁচজন পুরুষ। তার মধ্যে একজন বৃদ্ধ। ছইয়ের ভেতরে কাঁথা মুড়ি দিয়েও কেউ একজন বসে আছেন। ‘খক’ ‘খক’ করে কাশছেন। সম্ভবত সেই বৃদ্ধা মেয়েটিই হবে, যিনি একটু আগেই কাশতে কাশতে কথাগুলো বলছিলেন।

 আপনারা রোহিঙ্গা তো আকিয়াবের দিকে যাচ্ছেন কেন?’ মনের খুঁতখুতিটা উগলালো মতি। সে এতক্ষণে দাঁড়টা ধরে খাড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘আমরা উচিপুরংএর দিকেই যাচ্ছিলাম। কিন্তু ওদিকে বিজিবি যেতে দিচ্ছে না। তারা ধরে আবার এদিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে।’ চুল কোঁকড়ানো একটা ছিপছিপে চেহারার মাঝবয়সী লোক কথাগুলো বলল।

‘হাই আল্লাহ!’ আঁতকে উঠল আরিফা। ভাবল, এবার কী হবে! ভদ্রলোকের কথাটা শুনে মতিরও বুক চিনচিন করতে শুরু করে দিয়েছে। সে আফসোস করল, যাহ শালা, যে আশা নিয়ে এগোচ্ছিলাম, তাও জলে ভেসে গেল! বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড আবার এমন কেন করছে! তারা তো রোহিঙ্গাদেরকে এতদিন আশ্রয় দিচ্ছিল। হঠাৎ কী এমন হল যে, তারা মুখ ফিরিয়ে নিল! মতিরা শুনেছে, তাড়া খাওয়া, ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের বড় আশ্রয়দাতা হল বাংলাদেশ। তাদের মানবিক মুখের জন্যেই হাজার হাজার রোহিঙ্গারা এখনও জীবনে বেঁচে আছে। টিকে আছে দুনিয়াদারি। বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার বিভিন্নপ্রান্তে শরণার্থী শিবিরগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কুতুপালং, নয়াপাড়া, থাংখালী, উচিপুরং ক্যাম্পগুলোই আজ রোহিঙ্গাদের ঠিকানা। এগুলোর কোত্থাও আমাদের ঠিকানা হল না! এতটুকু মাথা গোঁজার ঠাঁই হল না! হুহু করে উঠল মতির হৃদয়। হাই আল্লাহ, আব্বার কী হবে! ও যে যেকোনো সময় ইন্তেকাল করবে! তার দাফন করার মাটিটুকু পাব কোথায়! আব্বার স্বপ্নাদেশ তবে কি বিফল হয়ে যাবে!

কষ্ট দলা পাকিয়ে উঠছে মতির। হৃদয়টা টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে যাচ্ছে। আর কত সহ্য করবে! সে যে কাঠ-পাথর লোহা-ইস্পাত দিয়ে তৈরি নয়? সেও যে একজন রক্ত-মাংসের মানুষ।

‘তাহলে এখন কী করবে? কোন দিকে যাবে?’ কথা তো নয়, যেন একদলা কষ্ট টং করে গলা থেকে বেরিয়ে এল নুহুর। সঙ্গে দিক হারা পথ হারা মানুষের আকুতি।

‘আরে আলোটা!’ চমকে উঠল মতি। তারা যে এসব ঝুট-ঝামেলায় পড়ে ধেয়ে আসা লাল আলোটার কথা ভুলতেই বসেছিল।

‘আরে তাই তো!’ ঘাড় ঘোরালো নুহু। সে লম্বা দৃষ্টি ফেলল বঙ্গোপসাগরের দিকে। ঝাপসাতে যতদূর দৃষ্টি যায়, ভালো করে জরিপ করল। ‘কই, কোথায় গেল! আর তো দেখা যাচ্ছে না!’ বিস্ময় প্রকাশ করল নুহু। চোখের পাতায় অদ্ভুত সারল্যতা। ঠোঁটে একটা আত্মতৃপ্তির প্রশান্তি। কিন্তু মাথা চুলকালো মতি, ‘লেডা ক্যাম্পের দিকে যাব নাকি।’

‘তা গেলে হয়, তবে ওখানকার বিজিবি আবার চরে উঠতে দেবে? রাইফেল নিয়ে তাড়া করবে না তো!’ আশঙ্কা প্রকাশ করল নুহু।

‘হ্যাঁ, ওরাও ঢুকতে দিচ্ছে না। আমরাও খবর নিয়েছি।’ আগন্তুক নৌকা থেকে কথাটা ভেসে এল। চুল কোঁকড়ানো লোকটা গলা ঝেড়ে কথাগুলো বলল। সে আরও জানাল, ‘তবে শুনলাম, বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের ঘুমধুম সীমান্ত চৌকির স্টেশন প্রধান লেফটানেন্ট জেনারেল আলি কাদের খুব ভালো লোক। খুবই মানবিক। দরদী মানুষ। তিনি নাকি রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাচ্ছেন না। তিনি রোহিঙ্গাদের ট্রলারে করে নিয়ে গিয়ে টেঙ্গার চরে রেখে আসছেন। একটু দূর হলে কী হল, মানুষগুলো বেঁচেবর্তে তো থাকছে? আপাতত একটা ঠাঁই তো পাচ্ছে?’

‘টেঙ্গার চর বলতে মেঘনা………।’ মতি ফট করে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল অমনি তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে লোকটা ভড়ভড় করে বলতে লাগল, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ, ওই যে মেঘনা নদীর পলি জমে যেটা নতুন গড়ে উঠেছে, ওটাই টেঙ্গার চর।’

‘তা আপনারা ওখানে গেলেন না কেন?’ হুট করে বেখাপ্পা প্রশ্ন করল নুহু।

‘ওখানে তো সরাসরি যাওয়া যাবে না। সে তো অনেক দূর। ঢেরখানি পশ্চিমে। বিজিবির লোকেরাই অন্যান্য ক্যাম্প থেকে ট্রলারে করে ওখানে নিয়ে যাচ্ছে। ওখানে সরাসরি যাওয়ার ফুরসত থাকলে কি আর বলতে হত, ঠেলেঠুলে ঠিকই চলে যেতাম।’ একজন খোকলা দাঁতের লোক ত ত করে তোতলালো। সঙ্গে কোঁকড়ানো চুলের লোকটি যোগ করল, ‘টেঙ্গার চরে ওরা বেশিদিন রাখছে না। কিছুদিন রাখার পর আবার নাকি নয়াপাড়া অথবা কুতুপালং ক্যাম্পে সরিয়ে নিচ্ছে। টেঙ্গার চর যে জোয়ারের সময় তিন-চার ফুট পানির তলে ডুবে যায়।’

‘বলছেন কী!’ ভ্রূ কুঁচকে উঠল মতির। যেন এক বুক আশার মধ্যে কেউ জল ঢেলে দিল।

‘হ্যাঁ, তাইই তো শুনলাম। আমাদের পাশের বাড়ির কামালরা ওখানেই আছে।’ কোঁকড়ানো চুলের লোকটি এবার গলা দঢ় করে বলল। মতি বলল, ‘এ তো পেটে না মেরে ভাতে মারা!’

‘ওই আর কি, আজ না মেরে সাতদিন পরে মারা।’

‘তাহলে এখন উপায়?’ অন্ধকারে পথ হাতড়ায় মতি।

‘আপাতত পথ বলতে গেলে তো এখন একটাই পথ বাকি।’

‘কোন পথটা বলুন তো!’ উৎসুক হয়ে উঠল মতি। মনের মধ্যে তখন এক চিলতে ঠাঁই ফিরে পাওয়ার প্রবল আকুতি উছাল মারছে। 

‘নয়াপাড়া ক্যাম্প।’ লোকটা আলগোছে বললেন। তারপর সুখের কথা শোনালেন, ‘নয়াপাড়া ক্যাম্প বড় ক্যাম্প। ওখানে বিজিবি ঢুকতে দিচ্ছে না, এখন পর্যন্ত এরকম কোনো খবর নেই।’

‘তাহলে আর দেরি কেন? চলুন একসঙ্গেই যাই।’ তড়াক করে উঠল মতি। ঘাড়ের গামছাটাকে ঝেরে কোমরে বাঁধল। লোকটাও কোমর হেলাল, ‘হ্যাঁ, চলুন, তবে লেডা বর্ডার ঘেঁষেই যেতে হবে, তানাহলে আবার মায়ানমার সেনার খপ্পরে পড়ে যেতে পারি!’

‘তো, তাইই চলুন।’ তাড়া লাগাল মতি। সে এমন করছে যেন পারলে উড়ে চলে যাবে। নদী তার কাছে আর ভালো লাগছে না। অসহ্য হয়ে উঠছে। একটুখানি মাটি দেখার জন্যে তার মন ছু ছু করছে। 

‘আপনাদের বাড়ি কোথায় ছিল?’ জানতে চায়ল নুহু।

চলবে... 

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ

 

Header Ad
Header Ad

টঙ্গিবাড়ীতে ঈদের দিনে ১০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি, উপকৃত ৪২০ পরিবার

ছবি: সংগৃহীত

ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিক্রমপুর মানবসেবা ফাউন্ডেশন মাত্র ১০ টাকায় ৪২০টি পরিবারের মাঝে গরুর মাংস বিতরণ করেছে।

সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে কামারখাড়া হাই স্কুল মাঠে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের মাধ্যমে অসহায় ও দুস্থ পরিবারগুলোকে ১০ টাকায় ১ কেজি গরুর মাংস দেওয়া হয়।

বিক্রমপুর মানবসেবা ফাউন্ডেশন শুধু ঈদের দিনেই নয়,প্রতিবছর রমজানে বিনামূল্যে ইফতার বিতরণ, মেধাবৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন এবং অসহায়দের জন্য নানা সহযোগিতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

১০ টাকায় গরুর মাংস কিনতে আসা খালেদা বেগম বলেন, "১০ টাকা আজকাল বাচ্চারাও নিতে চায় না, অথচ আমরা এখানে ১০ টাকায় ১ কেজি গরুর মাংস পাচ্ছি। যারা এই আয়োজন করেছেন, আল্লাহ তাদের ভালো রাখুক।"

একইভাবে বৃদ্ধ মো. ফজল বলেন, "বাজারে গরুর মাংসের যে দাম, ভাবছিলাম ঈদের দিন মাংস খেতে পারব না। কিন্তু বিক্রমপুর মানবসেবা ফাউন্ডেশনের জন্য ঈদের দিনেও মাংস খেতে পারছি, এ জন্য আমি খুব খুশি।"

বিক্রমপুর মানবসেবা ফাউন্ডেশনের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক (হিরা) বলেন, "এটি আমাদের চতুর্থবারের মতো আয়োজন। আমরা চাই, সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষও যেন ঈদের দিনে মনে করে তারা নিজের টাকায় গরুর মাংস কিনে খেতে পারছে। এই চিন্তা থেকেই আমাদের এই উদ্যোগ।"

এই মানবিক উদ্যোগ স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

Header Ad
Header Ad

ঈদের দিনেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত, এক বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী, পাবনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, ঢাকা, ফরিদপুর, পটুয়াখালী ও রাঙামাটি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার (৩১ মার্চ) প্রকাশিত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, সিলেট বিভাগের দু-একটি স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আগামীকাল মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

এছাড়া, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে গরমজনিত অসুস্থতা বাড়তে পারে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের পর্যাপ্ত পানি পান এবং সরাসরি রোদ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

যশোরের শার্শা সীমান্তে যুবকের লাশ উদ্ধার, আটক ১

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

যশোরের শার্শা উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে জামাল হোসেন (২৫) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত যুবক সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার কাদপুর গ্রামের আইয়ুব হোসেনের ছেলে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ একজনকে আটক করেছে।

রোববার (৩০ মার্চ) রাতে উপজেলার গোগা ইউনিয়নের ইছাপুর গ্রামের শফি ইটভাটা সংলগ্ন সেতাই-বালুন্ডা সড়কের পাশে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে শার্শা থানার ওসি কে এম রবিউল ইসলাম নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

ওসি কেএম রবিউল ইসলাম জানান, "লাশের পাশে একটি অ্যাপাচি ৪ভি কালো রঙের মোটরসাইকেল এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত কিছু মেহগনি গাছের চলাকাঠ পাওয়া গেছে। নিহতের মুখ ও মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।"

প্রাথমিকভাবে নিহতের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, নিহত জামাল হোসেন মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া সীমান্ত এলাকা থেকে ফেনসিডিল বহন করে শার্শা ও বেনাপোল পোর্ট থানার বিভিন্ন মাদক কারবারিদের কাছে সরবরাহ করতেন।

পুলিশের সন্দেহভাজন তালিকায় থাকা কাদপুর গ্রামের আলী হোসেন খাঁর ছেলে জাহিদ হাসানকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

এদিকে, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের কারণ ও এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

টঙ্গিবাড়ীতে ঈদের দিনে ১০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি, উপকৃত ৪২০ পরিবার
ঈদের দিনেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত, এক বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
যশোরের শার্শা সীমান্তে যুবকের লাশ উদ্ধার, আটক ১
চীনে বিশাল তেলক্ষেত্র আবিষ্কার, মজুদ ১০ কোটি টনের বেশি
রাজধানীতে সুলতানি আমলের আদলে ঈদ আনন্দ মিছিল
গাজীপুরে বাসচাপায় শিশুসহ দুই যাত্রী নিহত, আহত ৪
টাঙ্গাইলে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল জামাত অনুষ্ঠিত
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: পরমাণু চুক্তি না হলে ইরানে বোমা হামলা ও নিষেধাজ্ঞা
লোহাগাড়ায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত
বাধা সত্ত্বেও নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার
ঈদের সকালেও নাড়ির টানে ছুটছে মানুষ
ঈদের দিন ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬৪ ফিলিস্তিনি
দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস
টাঙ্গাইলে ঈদের মাঠে সংঘর্ষের শঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি
বছর ঘুরে এলো খুশির ঈদ, আজ দেশজুড়ে উদযাপন
যুক্তরাষ্ট্রে ৩ হাজারের বেশি ঈদ জামাত, প্রবাসীদের মাঝে উৎসবের আমেজ
মায়ের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের ছবি শেয়ার করে যা বললেন তারেক রহমান
ময়মনসিংহে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার নারী-শিশুসহ নিহত ৪
ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান
ঈদের আগের দিন গাজীপুরে বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযান