মিজানুর রহমান বেলাল
একগুচ্ছ কবিতা
পৃথিবীর প্রামাণ্যচিত্র
চোখের ঘোড়া দাঁড়িয়ে আছে—শব্দহীন শহর।
সুখসোয়ারি খুঁজে দেখো পাবে ত্যাগের হ্রেষায়
কোথায় হারাবে নিজেকে সামান্য অজুহাতে
বিশাল বিলবোর্ডে আঁকা আছে মায়ার মুখ।
জেগে ওঠেছে মুনের মহুয়া; বিরত্ব গল্পগাঁথা
কালো নকশার খাঁজকাটা খাপ খুলে গেছে
দানবের সংসার ভেঙ্গে গেছে সেই কবেই,
তাই তো মান্য করি—পৃথিবী আমার দেশ।
আলো-আঁধারের নেই কোন সীমান্ত কাঁটাতার
পাখিদের ডানায় মুক্ত ওড়াউড়ির গুপ্তবাসনা,
বারুদবেদনা মুছে যাক—চাঁদে লেগেছে গ্রহণ
ঘোড়ার ক্ষুরে ধারালো হোক বিশ্বমানবতা।
ঢেকে যাক—রক্তের বুদবুদ ফণা; ক্ষমতাক্ষরণ
কেউ না মানলেও আমি মানি
পৃথিবীই হলো শান্তিপূজারি মানুষের সম্মেলন।
উপলদ্ধিবাজী
আকাশ দেখি না বলেই মেঘবতি আমার বান্ধবী
মাছির মতো কতো ছেলে ঠেলে—ধরলি তুই হাত
যে হাতে ফোটে ভালোবাসার উড়ন্ত নীলগোলাপ।
কেউ জানে না; কেউ কেউ জানে গোলাপ রহস্য
ভালোবাসার বিনিময়ে দিলাম চোখচন্দ্র সন্ন্যাস।
তোর বুকে লক্ষ-কোটি পুরুষ দৃষ্টির বুনোবৃষ্টি
ভিজিয়ে দেয়—মগ্নসুরের ভায়োলিন ভদ্রশহর
আমি বুঝলেও বুঝে না—খানকী মাগির পুত্র যতো;
কোন কোন বুনোপরুষের চোখ তোর কাছে—
হঠাৎ লাফিয়ে আসা অবৈধ গ্রেনেডের মতো!
বসন্তের মালাবদল
পাহাড়িপরি জুমিয়া—বুকে ধরেছে বুনোবসন্ত
ঘামফড়িং, নুননদী ও জ্বিনপ্রজাপতি বসন্তপ্রিয়।
পর্যটকের পরাণ যেনো এক প্রেক্ষাগৃহ
সেই গৃহে ঘামকাতুর শিকারির হাতে তীর-ধনু
নুনের নাগরও কী কারণে যে ঘামপূজারি;
ফুল ফোটার দিনে শিকার করে পরাণপাখি
ফুটপাতে ব্রা’র দোকান দেখে জুমিয়া বলে—
নগরে রমণীরা প্রকাশ্যে বসন্ত করে ফেরি...
তফাৎ
দ্বন্দের মহাশূন্যে যে যান উড়ে—সে যান বড্ড উড়নচণ্ডী
হাওয়া খায়; হাওয়ায় বাস; বড় করে ঢের রোবটশহর
সাটানো সফ্টওয়্যারের সূচ গিজগিজ চারিদিক
অসৎ সাফল্য আর অসতী মগজের কালো কারফিউ
সৎ আর সতীরা চির জীবনই বলে এসেছে প্রকাশ্যে
পরমাণুমনে মহাকাশ ও পৃথিবীকে দেখায় ক্ষুদ্রাকৃতি
ওহে! মনাকাশে মহাশূন্যবিদ নামধারী উড়নচণ্ডী শুনো—
আমার চোখে আকাশ দেখি বলেই—পৃথিবী আমার প্রতিবেশী...