আল মামুন
একগুচ্ছ কবিতা
ফিলিস্তিন
রোদের পাশে শোয়ায়ে রাখি মাটি
গুলিয়ে ফেলি ভোরের সূর্যটাকে
যাবার আগে রাখবো কিছু জমা
টুকরো ব্যথা ভীষণ দুর্বিপাকে।
দাঁড়িয়ে যায় রাত্রি ফেরার শোক
জমাট বাঁধে অধিক জীর্ণ ঋণ
আলো পোড়ার গন্ধে নুয়ে পড়ে
জেরুজালেম এবং ফিলিস্তিন।
ভেতর খুলে বেরিয়ে গেলে ছায়া
ফেরত আসে তীব্র দ্রোহের হৃদে
রোদ শুকিয়ে ভিজছে জল-চাঁদ
ঢাল হবে কে মানুষের বিপদে!
শোকের শিসে পৃথিবী তোলে মাথা
সম্মুখে তার অভুক্ত এক শিশু
রক্ত-দাগের নকশা দেখে দেখে
এ মাটিতেই নেমে আসুক যীশু।
ঋণ
তোমার মাঝে উপচে পড়ি আমি
সময় বুঝে ওজন মেপে দেখো
দূরের পথে সুদূর চলে গেলে
সেটা না হয় মনের গায়ে মেখো।
দেহ-পাশে আটকালে সেই ছায়া
আঁচড় কাটে মন বাড়ানো রোদ
একলা লাগে ভীষণ অনুভব
জুড়িয়ে যায় প্রবল প্রতিরোধ।
আঁধার খুলে জল গড়ানো পথে
ক্রমেই হাঁটে বয়স ছোঁয়া বাড়ি
ফিরে আসার খিড়কি খোলা নেই
নিজের কাছে ফেরত গিয়ে হারি।
দিলাম এঁকে উড়ো চিঠির ছক
মেঘের কোলে কান্না ঝরার দিনে
আমায় ভেঙে টুকরো করি শত
এই আমাকে জমা রাখার ঋণে।
সাতকাহন
কুয়াশার কফিনে বন্দি মেঘ ছুঁয়ে
ফড়িংয়ের চোখে ঝরে এলোকেশী মাঠ
ভেজা তলপেটের অলিন্দে
চুল শুকোয়... কৃষ্ণপক্ষ শীতকাল।
ছায়া কেটে মানুষ বানানো ঘরে, নেই
হৃৎপিণ্ডের ক্যানভাস।
মুক্তির তলদেশে ডলফিনের জিভ;
স্পর্শ গুণে গুণে সিঁধ কাটে দুগ্ধবতী বক্ষ।
বাহুল্য ফিরে এলে
নড়ে উঠি কামের কান্নায়
সুখের মুঠি ধরে, ক্রীড়াবালিকার হাতে তুলে দিই
কেঁদে ওঠা রক্তের জল।
শ্রাদ্ধের উনুন বেয়ে হাঁটে লোকালয়
গড়িয়ে পড়া সাঁকোর অন্ধকারে
একটা হাড়ে আরেকটা হার লুকোয়
যার অতলে তলিয়ে ভাসে
সফেদ শাড়ির সাতকাহন।