বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস,পর্ব: ৫

অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব: ৫

রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে কয়েকজন ছেলে হল্লা করছে। অযথায়। রাত দশটা কী সোয়া দশটা বাজে। সাড়ে দশটাও হতে পারে। গলির ভেতর পুরোটা জুড়ে অন্ধকার। আবছা ছোপ ছোপ অন্ধকার। দোকানগুলো বন্ধ করেছে আজ আগেভাগে। জোর বৃষ্টি নেমেছে। উথালপাতাল বৃষ্টি, সঙ্গে বেশ বড়ো বড়ো শিল পড়েছে।

ক্লাসের গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্টের প্রিপারেশন শেষ করে বান্ধবীর বাসা থেকে রাস্তায় বেরুতে তুরি পড়ল শিলাবৃষ্টির কবলে। রিকশা পাব পাব করে খানিকদূর হেঁটে আসতে মাতাল বৃষ্টি ঝাঁপিয়ে পড়ল। তুরি দৌড়ে রাস্তার পাশে দোকানের সরু একফালি করোগেটেড টিনের ছাউনির নিচে গিয়ে দাঁড়াল। কিন্তু বৃষ্টির ঝাঁপটা থেকে নিজেকে ঠেকাতে পারল না।

বৃষ্টির প্রবল ঝাঁপটায় বেকায়দায় পড়া তুরির একবারের জন্যও মনে হয়নি, এমন খ্যাপাটে বৃষ্টির ভেতর বাসায় ফিরবে কেমন করে। শুধু মনে হয়েছে, ইস্ যদি ভেজা যেত এই ঝমঝমে বৃষ্টিতে! সেই ছোটোবেলার মতো শিল কুড়ানো। বড়ো’পা গিয়ে মাকে নালিশ করত আর মা বকতেন, ‘শিগগির উঠে আয়, ঘরে ওঠ। জ্বর-জারি বাঁধালে কিন্তু আমি দেখতে পারব না। তোর বাবাকে বলিস তখন।’ মায়ের বকুনিতে জোর ছিল না। কেমন যেন সুখ ছিল। কাঁচামিঠে আমের মতো সুখ। না! শীতের সকালের ওম ওম রোদ্দুরের মতো সুখ। আদতে কোনোকিছুর সঙ্গেই সেই সুখ তুলনা করা যায় না। আজ রাস্তায় নেমে পড়লে মা কি দেখতে পাবেন?

মায়ের কথা মনে পড়ে আবেগে আচ্ছন্ন হয়ে গেল তুরি। ভাবল, মা কি দেখতে পান ওকে? মা কি সত্যিই ওর আশপাশে কোথাও থাকেন সবসময়! তুরির বুকের ভেতর জমাট কান্না আটকে গিয়ে মনে হয়, মা কেন মরে গেলেন!

বাসার সামনের রাস্তার খোঁড়াখুঁড়ির কাজটা বুঝি এ জনমে কোনোদিন শেষ হবে না। বৃষ্টিতে খানাখন্দে ভরা পানি থইথই করছে। তুরিও কাদাপানিতে মাখামাখি হয়ে ভিজে একশা।

বৃষ্টি খানিকটা থেমে এসেছে। তুরি দোকান থেকে বেরিয়ে এলো। তখুনি বুঝতে পারল অবস্থা যথেষ্ট খারাপ। রাস্তায় কোনো রিকশা নেই। যাওবা দু-একটা আসছে, তাতেও যাত্রী। খালি রিকশা সহসা দেখা গেলেও বাসার এদিকে আসতে রাজি হচ্ছিল না কেউ।

রাস্তা ধরে বেশ খানিকটা হেঁটে আসার পর এক রিকশাওয়ালা ৪০ টাকার ভাড়া ৬৫ টাকায় রাজি হলো। বাসার গলির মোড়ে পৌঁছানোর আগে এক চাকার টিউব চুপসে গিয়ে রিকশা আর নড়ল না। অগত্যা তুরিকে হেঁটে বাকি পথটুকু ফিরতে হলো।

রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে যে ছেলেগুলো হল্লা করছে তাদের তুরি আগে এখানে দেখেছে বলে মনে করতে পারল না। কখনো-সখনো বাসায় ফিরতে তুরির একটু-আধটু রাত হয় বটে। অন্যদিন মোড়ের দোকান খোলা থাকে, রাস্তায় আলো থাকে, লোক চলাচলও থাকে বেশ। তাই হয়তো আলাদা করে ছেলেগুলোকে চোখে পড়েনি।

আজ চোখে পড়ল ছেলেগুলো হল্লা করছিল বলেই বুঝি। তুরি সরাসরি একবার তাকিয়ে দেখল ওদের। বয়স টেনেটুনে ২৪/২৫ বছর হবে। তুরির চেয়ে ২ বা ৩ বছরের বড়ো, কি তারচেয়ে একটু বেশি। প্রায় সকলের পরনে থ্রিকোয়ার্টার প্যান্ট। গায়ে টি শার্ট কিংবা গেঞ্জি। বেশিরভাগ ছেলের হাতে সিগারেট জ্বলছে। মাঝেমাঝে তারা সিগারেটে টান দিয়ে অন্ধকারে ধূঁয়া ছাড়ছে। সিগারেটের সাদা ধোঁয়া অন্ধকারে মিলিয়ে যাওয়ার আগে স্পষ্ট হয়ে উঠছে বারবার।

ছেলেগুলো আশপাশের অ্যাপার্টমেন্টেই থাকে বলে মনে হলো। খুব রিল্যাক্স মুডে গল্প করছে আর আচমকা হল্লা করে উঠছে। ছেঁড়াফাটা ওদের দু-একটা কথা যা কানে ভেসে এলো তাতে তুরি বুঝতে পারল ওরা নিজেদের মধ্যে কমিউনিকেট করছে ইংরেজিতে। এক ছেলে আচমকা খানিকটা চিৎকার করেই ‘লিনকিন পার্ক’-এর গান গেয়ে উঠল। ‘সামথিং হ্যাজ বিন টেকেন ফ্রম ডিপ ইনসাইড অব মি, আ সিক্রেট আ’হ্যাভ কেপ্ট লকড অ্যায়ে, নো ওয়ান ক্যান এভার সি।’

তুরির মনে হলো ছেলেটা গান গাওয়ার জন্য গান গেয়ে ওঠেনি, গানের কথাগুলো ওর দিকে ছুঁড়ে দেওয়া ওদের আসল উদ্দেশ্য।
খুব অস্বস্তিতে পড়ে গেছে তুরি। দ্রুত জায়গাটুকু পার হওয়া দরকার। দ্রুত পার হওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় পানি জমে গেছে। অন্ধকার। পুরো রাস্তা গর্ত হয়ে আছে। পা মচকে পড়ে যেতে পারে।
ছেলেগুলোর ভেতর থেকে একজন পায়ের ওপর ইটের টুকরা তুলে নিয়ে ঠিক তুরির সামনে গর্তের ভেতর ছুঁড়ে ফেলল। কাদাপানি ছিটকে পড়ল তুরির গায়ে।

বিস্মিত হয়ে গেছে তুরি। এমন ঘটনা ঘটতে পারে সে ভাবেনি। তারওপর তাদের বাসার রাস্তায়! সাধারণত নিজ মহল্লার ছেলেরা সেই মহল্লার মেয়েদের বিরক্ত করে না। অন্য মহল্লা থেকে এসে কেউ বিরক্ত করার চেষ্টা করলে তাদের শাসিয়ে দেয়। এরা অন্য মহল্লার ছেলে কিনা তুরি বুঝতে পারছে না।

থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছে তুরি। সাঁ করে ঘুরে তাকাল ছেলেগুলোর দিকে। খুব ধীর ঠান্ডা গলায় জিগ্যেস করল, ‘ইটের টুকরো ছুঁড়েছে কে?’
কেউ কথা বলছে না। তুরি একই প্রশ্ন করল ইংরেজিতে।
ছেলেগুলোর হইহল্লা হঠাৎ থেমে গেল। কোনো ব্যাপারে তারা ভয় পেয়েছে। কেউ কোনো কথা বলছে না।
ছেলেগুলো পিছিয়ে ধীরপায়ে গলির মোড় থেকে বড়ো রাস্তার দিকে চলে গেল। একজন গেল না। সে দাঁড়িয়ে আছে। তুরির সামনে অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকল ছেলেটি।
তুরির মেজাজ খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে এই বেয়াদব ছেলেগুলোকে পিটিয়ে মাংস থেঁতলে হাড় গুঁড়া করে দিতে পারলে ভালো হতো। সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটির দিকে তীব্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে তুরি বলল, ‘রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে অসভ্য বিহেভ করেন, লজ্জা করে না?’
ছেলেটি কিছু বলল না। ওরকমভাবে দাঁড়িয়ে থাকল মাথা নিচু করে।
তুরি গলার স্বর আরও কঠিন করে ফেলল। বলল, ‘কী! ক্ষমা চাইবেন এখন? বলবেন স্যরি, ভুল হয়ে গেছে!’
ছেলেটি তাও কিছু বলল না। দাঁড়িয়ে থাকল।
তুরির মেজাজ কেন জানি থিতিয়ে এলো। ছেলেটিকে ভালো করে দেখল। এই ছেলেটিকে ওদের আর-সবার থেকে আলাদা মনে হচ্ছে। পরনে জিনসের প্যান্ট। গায়ে সাদা ফুলহাতা শার্ট। শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত গোটানো। পায়ে চমৎকার শু। পরিপাটি করে আঁচড়ানো মাথা ভর্তি চুল।
ছেলেটি ব্যথিত গলায় বলল, ‘ওরকম করা ওদের ঠিক হয়নি। আপনি কিছু মনে করবেন না। ওদের হয়ে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি।’
তুরি কিছু বলল না। বাসার দিকে রওনা হলো। তুরির মনে হলো ছেলেটি সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। সে ঘুরে পেছনে তাকাল। ছেলেটি ভীষণ মলিন চোখে ওর চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে আছে।

 

পরদিন ছেলেটির সঙ্গে আবার দেখা হলো তুরির। বাসায়।
ড্রয়িংরুমের সোফার ওপর পা মুড়ে বসে তুরি বই পড়ছিল। ডোর বেল বাজতেই বইয়ের পাতার মাঝে পেজ মার্কার রেখে বই বন্ধ করে উঠে দাঁড়াল।
দরজা খুলে তুরি থ’। গতরাতে দেখা সেই ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে। গতরাতের মতো সে দাঁড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে।
তুরি ছেলেটিকে দেখে চমকাল বটে তবে প্রকাশ করল না। অবাক গলায় বলল, ‘আপনি?’
ছেলেটি কিছু বলল না। মুখ তুলে তাকাল তুরির দিকে। তার দাঁড়ানোর ভঙ্গি অসম্ভব বিনয়ী।
ভেতর থেকে বড়ো আপা জানতে চাইলেন, ‘কে এসেছে, তুরি?’
তুরি বলল, ‘পাশের অ্যাপার্টমেন্টে থাকে। আমার পরিচিত।’
বড়ো আপাকে কেন এ কথা বলল তা তুরির নিজের কাছে বিস্ময় হয়ে থাকল।
তুরি ছেলেটিকে বলল, ‘ভেতরে আসুন।’

ছেলেটি ড্রয়িংরুমের দরজা মাড়িয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকল।
তুরি জিজ্ঞেস করল, ‘কী ব্যাপার বলুন তো?’
ছেলেটি বুক পকেট থেকে কলম বের করে এগিয়ে ধরল। শান্ত গলায় বলল, গতরাতে পড়ে গিয়েছিল। আপনার কলম।
তুরি দেখল ছেলেটির হাতে ধরা ওর কলম। এমন আহামরি কিছু না যে ফেরত পেতে হতো। তবুও ভালো লাগছে তুরির। কেন জানি নির্মল হাসি পাচ্ছে। মনে মনে হাসল।
ছেলেটি তখনো দাঁড়িয়ে আছে। খানিকটা দূরত্ব বজায় রেখে বিনম্র ভঙ্গিতে।
তুরি বলল, ‘আরে! দাঁড়িয়ে আছেন কেন, বসুন।’
ছেলেটি ঘুরে তুরির পাশ কাটিয়ে ওপাশের সিঙ্গেল সোফায় গিয়ে বসল। হাতের কলম বাড়িয়ে দিলো তুরির দিকে।
তুরি হাত বাড়িয়ে কলম নিয়েছে। পাশের সোফায় বসতে বসতে বলল, ‘শুধু শুধু কষ্ট করলেন। এটা তো আমি হারিয়েই ফেলেছিলাম।’
চোখ তুলে ছেলেটি তাকাল তুরির দিকে। অপলক চোখে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল। ছেলেটির মনে হলো এমন সুন্দর কাউকে এর আগে এই জীবনে তার দেখা হয়নি।
তুরি জিগ্যেস করল, ‘আপনার নামটা! যদি কিছু মনে না করেন।’
‘আমার নাম শাবিন রহমান।’
‘বাহ্। সুন্দর নাম আপনার। মা বুঝি শাবিন বলেই ডাকেন?’
‘মা ডাকেন সাবু।’

অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে সন্তানকে সব মা আলাদা নিজস্ব নামে ডাকেন। বেশিরভাগ সময় মায়ের ডাকা সেই নামটি পরে হারিয়ে যায়।
তুরির গলায় বিষণ্নতা। তাকে নির্লিপ্ত আর উদাসীন দেখাচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে সে অতি দুঃখী একজন মানুষ।
তবু তুরির সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগছে। কেমন স্নিগ্ধ শান্ত কমনীয় কণ্ঠস্বর। স্পষ্ট উচ্চারণ।
শাবিন কী বুঝল কে জানে, হাসল। তার হাসি সুন্দর। অমায়িক এবং আন্তরিক। আগের কথার রেশ ধরে বলল, ‘আপনার নামটাও সুন্দর, তুরি। ‘
‘আমার নাম জানলেন কীভাবে!’
‘ম্যাজিক। ’
‘তুরিন থেকে তুরি। তবে তুরিনের কোনো অর্থ নেই। তুরি হচ্ছে একধরনের বাদ্যযন্ত্র, শঙ্খের মতো। ফুঁ দিয়ে বাজাতে হয়।‘

মুখে মিষ্টি ভঙ্গি করল তুরি। বলল, ‘আপনি কথা বলেন খুব সুন্দর। অন্যকে মুগ্ধ করার মতো। বুদ্ধিও অনেক। আমাকে অবাক করে দিতে চেয়েছেন। আমি অবাক হয়েছি। তবে কী জানেন, অতি বুদ্ধিমান মানুষরাও মাঝেমাঝে খুব সাধারণ ভুল করে। আপনি ‘ডক্টর জেকিল অ্যান্ড মিঃ হাইড’ পড়েছেন? ডক্টর জেকিল ছিলেন খুব বুদ্ধিমান। কিন্তু শুরুতে নিজের ভুল ধরতে পারেননি। যেমন এখন আপনি করলেন। আমার নাম তুরিন না। শুধু তুরি। বসুন, আপনার জন্য চা নিয়ে আসি।’

শাবিন আগ্রহ নিয়ে তুরির কথা শুনছিল। কেবলই মনে হচ্ছিল মেয়েটি দেখতে যেমন অপরূপ সুন্দর, কথাও বলে তেমনি সুন্দর করে। কথা বলার সময় চোখ দুটো হাসিতে উছলে ওঠে।
তুরি ভেতরে গেলে শাবিন উঠল। অন্য সোফার ওপর একটা বই উলটো করে রাখা। পড়তে পড়তে উলটে রেখেছে। হয়তো তুরি পড়ছিল। বইটা তুলে হাতে নিল। আর্নেস্তো চে গুয়েভারা’র ‘দ্য মোটর সাইকেল ডায়েরি’। শাবিন একটা একটা করে বইয়ের পৃষ্ঠা ওলটাতে থাকল।

ট্রেতে কমলা, কলা, বিস্কিট, চা আর পানি নিয়ে ফিরে এলো তুরি।
হাতের বই দেখিয়ে শাবিন জানতে চাইল, ‘আপনি অনেক বই পড়েন!’
তুরি বলল, ‘যখন অলস সময় কাটাই। যেমন এখন। পড়াশোনার চাপ কম। হাত পা ছড়িয়ে বই পড়ছি। আপনি?’
ম্লান হাসল শাবিন। সোফার ওপর বই রেখে দিলো।
তুরি ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে বলল, ‘নিন।’
শাবিন রোদের তাতে মিইয়ে যাওয়া লাউয়ের ক্লান্ত পাতার মতো নুইয়ে গেল। খুব ধীরে সোফায় বসে পড়ল।

(চলবে)

 

পর্ব ৪: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৩: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ২: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ১: অঘ্রানের অন্ধকারে

Header Ad
Header Ad

মধুর ক্যান্টিনে হামলায় আহতদের খোঁজ নিতে হাসপাতালে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনায় আহতদের শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজ নিতে হাসপাতালে যান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা আহতদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজখবর নেন।

 

এ সময় ছাত্রদল নেতারা অভিযোগ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। নতুন ছাত্র সংগঠন গঠনের প্রক্রিয়ায় তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং এর প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসা ও ন্যায়বিচারের দাবি জানান তারা।

এর আগে, বিকেলে মধুর ক্যান্টিনে নতুন ছাত্র সংগঠনের ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মিশু আলি ও আকিব আল হাসানসহ কয়েকজন আহত হন। আহতদের মধ্যে দুইজনকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

হাঁসের মাংস ও রুটি খেয়ে ১২ জন অসুস্থ, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে হাঁসের মাংস ও রুটি খেয়ে এক পরিবারের ১২ জন সদস্য অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, খাবারের সঙ্গে কেউ নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে দিয়েছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অরুপ পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার রাতে কমলনগর উপজেলার চর ফলকন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাহান মৃধার বাড়িতে রান্না করা হাঁসের মাংস ও রুটি খেয়ে পরিবারের সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন মো. শাহজাহান মৃধা (৭০), নুর ভানু (৬৫), পান্না আক্তার (২৭), আকলিমা বেগম (২০), আরমান হোসেন (১০), ইমরান হোসেন (৪), নুসরাত (৪), মরিয়ম (৪), পলি আক্তার (১৬), পিংকি বেগম (২৫) ও মো. নিশান (২৮)।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পলি আক্তার জানান, সন্ধ্যায় পরিবারের সবাই বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। ফিরে এসে রান্না করা হাঁসের মাংস ও রুটি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। খাওয়ার পরপরই দুই শিশু বমি করলেও তখন বিষয়টি কেউ গুরুত্ব দেয়নি। পরে জ্ঞান ফিরে দেখেন, তারা হাসপাতালে। পরিবারের সদস্যদের ধারণা, তাদের অনুপস্থিতির সুযোগে দুর্বৃত্তরা রান্না করা খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক মিশিয়ে দেয়। ওই খাবার খেয়ে পরিবারের তিনটি পরিবারের ১২ জন সদস্য অচেতন হয়ে পড়েন। রাতে অন্য সদস্যরা বাড়ি ফিরে ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে সবাইকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে ঘরে কোনো মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়েছে কিনা, তা তারা নিশ্চিত করতে পারেননি।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অরুপ পাল জানান, শিশুসহ ৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং খাবারের সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ক্যাম্প শুরুর আগেই বাদ ৮ ফুটবলার, ১৮ মার্চ ঢাকায় যোগ দেবেন হামজা

হামজা চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ভারত ম্যাচের জন্য ৯ ফেব্রুয়ারি ৩৮ সদস্যের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তবে আগামী শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া ক্যাম্পে ৩০ জন ফুটবলারকে ডেকেছেন কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা। ফলে ৮ জন ফুটবলার ক্যাম্প শুরুর আগেই বাদ পড়েছেন।

৩৮ জনের তালিকায় পাঁচজন গোলরক্ষক ছিলেন। নতুন তালিকায় দুই গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো ও সাকিব আল হাসান বাদ পড়েছেন। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নামের মিল থাকায় আলোচনায় আসা মোহামেডানের দ্বিতীয় গোলরক্ষক সাকিবও জায়গা পাননি।

এবারই প্রথম ব্যতিক্রমভাবে ক্যাম্প শুরুর দুই সপ্তাহ আগে বড় প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছিল বাফুফে। নতুন ফুটবলাররা জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখলেও ক্যাম্পে সুযোগ না পাওয়ায় তারা হতাশ। এ নিয়ে জাতীয় দলের ম্যানেজার আমের খান বলেন, "কোচ বিচার-বিবেচনা করে এই তালিকা তৈরি করেছেন। বাদ পড়া ৮ জন বিকল্প হিসেবে থাকবেন। ইনজুরির কারণে প্রয়োজন হলে তাদের ডাকা হবে।"

আগামী শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে ২৮ জন ফুটবলার ক্যাম্পে যোগ দেবেন। পরদিন বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অনুশীলন শুরু হবে।

৫ মার্চ সৌদি সফরে যাবে বাংলাদেশ দল। সৌদি আরবে প্রায় দুই সপ্তাহ অনুশীলন করবে দল এবং অন্তত একটি বা একাধিক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা রয়েছে বাফুফের।

গত বছরও সৌদি ক্যাম্প করেছিল বাংলাদেশ। তখন সুদান দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল তারা। এবারও স্থানীয় ক্লাব বা অন্য কোনো দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা রয়েছে।

৩০ জনের প্রাথমিক তালিকায় রয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলার হামজা চৌধুরি ও ইতালিয়ান লিগের ফাহমিদুল।

বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার আমের খান জানান, হামজা ১৮ মার্চ বাংলাদেশে আসতে পারেন। সৌদি ক্যাম্প শেষে দলের সঙ্গে অনুশীলন করে ভারত ম্যাচ খেলবেন তিনি।

অন্যদিকে, ফাহমিদুল ইতালি থেকে সরাসরি সৌদি আরবে ক্যাম্পে যোগ দেবেন।

প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকা শেখ মোরসালিনের বিরুদ্ধে আজ যৌতুকের মামলা হয়েছে। তবে জাতীয় দলে তার অংশগ্রহণ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন আমের খান।

তিনি বলেন, "এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়। বাফুফের কাছে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ এলে তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

৩০ জনের প্রাথমিক স্কোয়াড:

গোলরক্ষক: মিতুল মারমা, সুজন হোসেন, মেহেদী হাসান শ্রাবণ।

ডিফেন্ডার: রহমত মিয়া, শাকিল হোসেন, ইসা ফয়সাল, তাজ উদ্দিন, কাজী তারিক রায়হান, তপু বর্মন, সাদ উদ্দিন, সুশান্ত ত্রিপুরা।

মিডফিল্ডার: মোহাম্মদ হৃদয়, পাপন সিং, সৈয়দ শাহ কাজেম কিরমানি, সোহেল রানা, সোহেল রানা জুনিয়র, চন্দন রায়, মজিবুর রহমান জনি, জামাল ভূঁইয়া, শেখ মোরসালিন, হামজা চৌধুরি।

ফরোয়ার্ড: ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, রাকিব হোসেন, শাহরিয়ার ইমন, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, আরিফ হোসেন, আল আমিন, পিয়াস আহমেদ নোভা, ফাহামেদুল ইসলাম।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মধুর ক্যান্টিনে হামলায় আহতদের খোঁজ নিতে হাসপাতালে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা
হাঁসের মাংস ও রুটি খেয়ে ১২ জন অসুস্থ, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
ক্যাম্প শুরুর আগেই বাদ ৮ ফুটবলার, ১৮ মার্চ ঢাকায় যোগ দেবেন হামজা
শিবিরের গুপ্ত রাজনীতির কারণে অসংখ্য শিক্ষার্থী নির্যাতিত হয়েছে: ছাত্রদল সভাপতি
ছাত্রদের নতুন সংগঠনের মারামারিতে ২ সমন্বয়ক হাসপাতালে
নতুন ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’-এর আত্মপ্রকাশ, নেতৃত্বে আছে যারা
নিরপেক্ষভাবে কাজ করার চেষ্টা করছি: দুদক চেয়ারম্যান
নতুন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
ডেভিল হান্টে বড় অপরাধীদের ধরার আহ্বান জয়নুল আবদিনের
প্রথম প্রেমিককে প্রাক্তন মনে করি না, সে আমার শত্রু: প্রভা
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের নতুন নির্দেশনা
ডাকসু নির্বাচন করতে চাই, এতে কোনো সন্দেহ নেই: ঢাবি ভিসি
নতুন ছাত্রসংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘিরে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ, উত্তাল ঢাবি
টাঙ্গাইলে ক্ষুদে শিশুদের পুতুল নাচে মুগ্ধ দর্শক
নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ, নাম ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’
চেষ্টা সত্ত্বেও কিছু ব্যাংক রক্ষা করা সম্ভব নয়: গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর
বিরামপুরে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার
কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
রমজানে ঢাবির ক্যান্টিনে খাবারের মান বৃদ্ধিতে মনিটরিং সেল গঠনে ছাত্রদলের আবেদন