শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সায়েন্স ফিকশন 

প্রাণী 

বিউন তার চশমাটা খুলে টেবিলের উপর রাখল। তারপর চেয়ারে হেলান দিয়ে ডুবে গেল গভীর চিন্তায়। এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে সে। আদৌ বিশেষ প্রাণীগুলো সে বিক্রি করবে, কি করবে না। আর বিক্রি করলে মূল্য কেমন চাইবে তা এখনো ঠিক করতে পারেনি। অত্যন্ত মূল্যবান আর প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতীর এই প্রাণী মহাবিশ্বে একমাত্র পৃথিবীর কেন্দ্রীয় প্রাণী সংরক্ষণাগারে সংরক্ষিত রয়েছে। তবে সবগুলোই ক্লোন, আর একারণে সবগুলোর চেহারা একই রকম। মহাবিশ্বের সকল গ্রহবাসী যেন অতি বুদ্ধিমান এই প্রাণীদের কখনো ভুলে না যায় সেজন্যই ক্লোনের মাধ্যমে এদেরকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে এদের সংরক্ষণের কোন উপায় নেই, কারণ এই প্রাণীর মেয়ে প্রজাতি অনেক আগেই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় প্রাণী সংরক্ষণাগারে এই প্রাণীদেরকে এক নজর দেখার জন্য বিভিন্ন গ্রহ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার গ্রহবাসীরা ভীড় করে। কমপক্ষে ছয় মাস পূর্বে ওয়েবসাইটে টিকিট কাটতে হয়। কেন্দ্রীয় প্রাণী সংরক্ষণাগারের নিরাপত্তা কর্মীদের দর্শনার্থীদের ভীড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। টিকিটের মূল্য তিনগুন করেও কোন লাভ হয়নি। বরং দিনে দিনে দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলছে। মহাবিশ্বে মৃত্যুর আগে সবাই অন্ত একবার এই অতি বুদ্ধিমান প্রাণীর দর্শন পেতে চায়, তা না হলে তাদের জীবন অপূর্ণ থেকে যাবে।

বিউন পেশায় একজন জীববিজ্ঞানী। পৃথিবী থেকে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের নিয়ে সে গবেষণা করে। এ জন্য তার বিশাল একটা প্রাণী গবেষণাগার আছে। এই প্রাণী গাবেষণাগারেই গোপন চেম্বারে সে গত এক বছর ধরে এই বিশেষ প্রাণীগুলোকে পর্যবেক্ষণ করছে। সে কখনো প্রাণীগুলোকে বিক্রি করতে চায়নি। সম্প্রতি মারাত্মক আর্থিক কষ্টে পড়ার কারণে তার বিকল্প কোন উপায় নেই। অবশ্য সে চারটি প্রাণীর মধ্যে দুটিকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কাজটা তাকে অত্যন্ত গোপনে করতে হচ্ছে। সে জানে এই প্রাণীদের কথা বাইরে প্রকাশ হলে কি হতে পারে। নিশ্চিত তার মৃত্যু হবে। তারপর এই প্রাণীগুলোকে প্রেরণ করা হবে কেন্দ্রীয় প্রাণী গবেষণাগারে যেখানে এদের দেহের উপর হাজারো নিষ্ঠুর আর নির্মম জৈবিক পরীক্ষা চালানো হবে। আর এ ঘটনা পৃথিবীর গত এক হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বিস্ময়কর সংবাদ হবে, কারণ এখন থেকে এক হাজার বছর পূর্বে এ ধরনের প্রাণীর সর্বশেষ অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। সেই প্রাণীর ক্লোনই এখন কেন্দ্রীয় প্রাণী সংরক্ষণাগারে সংরক্ষিত আছে।


বিউন আগেই ঠিক করেছে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য পৃথিবীতে কিংবা পৃথিবীর নিকটবর্তী কোন গ্রহে এই প্রাণীদের বিক্রি করবে না। তাইতো সে পৃথিবী থেকে অনেক দূরে অবস্থিত 'মিকিউ' গ্রহের ক্রেতা 'নিনন' এর কাছে প্রাণী দুটি বিক্রিতে সম্মত হয়েছে। নিনন কিছুক্ষণের মধ্যেই এখানে এসে পৌঁছাবে। নিরাপত্তার কারণে নিননের সাথে তার বিস্তারিত কথা হয়নি। এখানেই সকল কথা হবে। নিনন অবশ্য মিকিউ গ্রহের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি। মূলত মিকিউ গ্রহের প্রাণীরা তাদের প্রাণী সংরক্ষণাগারকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য এই প্রাণী দুটিকে ক্রয়ের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিউন অবশ্য আশাবাদী সে খুব ভালো মূল্য পাবে। কারণ সে যে প্রাণী মিকিউ গ্রহের নিনন এর কাছে বিক্রি করতে যাচ্ছে তা মহাবিশ্বে এক কথায় অমূল্য।


বিউনের চিন্তায় ছেদ পড়ল নিননের আগমনে। বিউন সামনের চেয়ারে নিননকে বসতে ইশারা করল। তারপর বলল, আমি আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি নিনন।

ধন্যবাদ বিউন। আমার হাতে সময় খুব কম। তাছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টা তো বুঝতেই পারছেন। তাই আমি চাচ্ছি অতি দ্রুত মিশন সম্পন্ন করতে।

আমিও তাই চাই। তবে আমি আপনাকে অনুরোধ করব নিরাপত্তার কারণে প্রাণীদের প্রজাতির নাম উচ্চারণ না করার জন্য। আমরা আমাদের আলোচনায় এই প্রাণীকে 'প্রাণী' বলেই সম্বোধন করব।

তাই হবে বিউন। এ

খন বলুন আপনার কাছে কি সত্যি এই প্রাণী আছে?

হ্যাঁ আছে। চারটি, দুটি মাঝ বয়সী এবং অন্য দুটি ওদের বাচ্চা। অর্থাৎ আপনার কাছে মেয়ে প্রাণীও আছে?

সন্দেহের চোখে বলল নিনন। হ্যাঁ আছে। একটি বড় মেয়ে, আর অন্যটি ছোট মেয়ে। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। পৃথিবীতে এই প্রাণীর যত ক্লোন রয়েছে সবই তো ছেলে। কোন মেয়ে তো নেই। হ্যাঁ তাই, কিন্তু আমার কাছে আছে। আপনি ওদেরকে পেলেন কিভাবে?আমি গবেষণার কাজে বনাঞ্চলে গিয়েছিলাম। সেখানেই মাটির নীচে আমি এদের ছোট্ট একটা এলাকার সন্ধান পাই। এক হাজার বছর ধরে বংশানুক্রমিকভাবে এরা এই এলাকায় বসবাস করে আসছিল। বনের মধ্যে হওয়ায় পৃথিবীর কেউ এই এলাকাটা খুঁজে পায়নি। এমনকি আমাদের নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরাও না। ঘটনাক্রমে এই এলাকাটি আমার নজরে পড়ে। সেখানেই এদের চারজনকে একটি ছোট্ট ঝোপের মধ্যে থেকে আটক করি।  তাহলে তো এরকম আরো প্রাণী থাকতে পারে। থাকতে পারে। তবে আমি পাইনি। অবিশ্বাস্য ব্যাপার! ওরা কি প্রতিহত করতে চেষ্টা করেনি?করেছিল। কিন্তু আমাদের সাথে পেরে উঠেনি। বুদ্ধির বিবেচনায় ওরা অতি উন্নত হলেও শক্তির বিবেচনায় আমাদের থেকে অনেক নিচে। যাইহোক, সেই থেকে প্রাণীগুলো আমার কাছে আছে। আমি অবশ্য সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে অতি যত্মে ওদের লালন পালন করছি। আপনি এই প্রাণীগুলোর শরীরে গবেষণার উদ্দেশ্যে কোন কৃত্রিম ওষুধ প্রবেশ করিয়েছেন কি?


না নিনন। প্রথমে আমি এদেরকে নিয়ে গবেষণাই করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেন যেন পারলাম না। প্রাণীগুলো এতো ভাল যে আপনাকে বোঝাতে পারব না। দেখলেই মায়া হয়। আর ওদের বাচ্চা দুটো কী ফুটফুটে! সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো ওদের অভ্যন্তরের ভালবাসা। ওরা নিজেরা একে অন্যকে খুব ভালবাসে। আমাদের মতো ওদের দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রণা, আনন্দ-বেদনা, সুখ-শান্তির অনুভূতি রয়েছে। আপনি দেখলে অবাক হবেন যে, ওরা আমাদের মতোই কাঁদতে পারে, কাঁদলে ওদের চোখ দিয়ে অশ্রু বের হয়।
আপনার সকল বক্তব্যই এই প্রাণীগুলোর মূল বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যাচ্ছে। ওরা কি নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলে?ওদের আচরণে মনে হয় ওরা আমাদের মতোই কথা বলে। আমি তো আর ওদের ভাষা বুঝি না। একবার ভেবেছিলাম ওদের শব্দগুলো রেকর্ড করে বাইরে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখব, আদৌ ঐ শব্দগুলো ওদের ভাষা কিনা? কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাহস পাইনি এই ভয়ে যে সকলে ওদের কথা জেনে যেতে পারে।


হ্যাঁ, বিউন আপনি ভালোই করেছেন। আর ওদের বুদ্ধিমত্তা কেমন?


চমৎকার, অসাধারণ। খুব দ্রুত ওরা সবকিছু শিখে নিতে পারে। এখানে নিয়ে আসার পর আমাকে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়নি, অল্পতেই সব কিছু শিখে নেয়। ওরা নিজেরাই নিজেদের যত্ম নেয়, নিজেদের প্রতি খেয়াল রাখে। ইতিমধ্যে আমার সাথেও চমৎকার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আমি ওদেরকে কি বলতে চাই সহজেই ওরা বুঝতে পারে। তাছাড়া প্রাণীগুলো বেশ পরিচ্ছন্ন, অন্যান্য প্রাণীর মতো নোংরা নয়। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, মহাবিশ্বের সকল প্রাণীর ওদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
বিউন আপনি ঠিকই বলেছেন। আপনাকে বুঝতে হবে এরা প্রকৃতিরই অংশ, এবং প্রকৃতি থেকেই আমরা সবচেয়ে বেশি শিক্ষা গ্রহণ করি। কাজেই এই প্রাণী থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার থাকতে পারে। যাইহোক, বিউন আমি আপনার বর্ণনায় সন্তুষ্ট। আমার মনে হচ্ছে আমরা যে প্রাণী খুঁজছি আপনার সংরক্ষিত প্রাণী সেই প্রাণীই হবে। তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি আপনার প্রাণীগুলো দেখতে চাই।


অবশ্যই দেখবেন। তার পূর্বে আমাদের মূল্য নির্ধারণের ব্যাপারটা চূড়ান্ত করতে হবে। প্রাণীগুলো দেখার পর করলে হয় না?


না হয় না। আমরা প্রথমে মূল্য ঠিক করব। যদি আপনার মূল্য আমার পছন্দ হয় তাহলেই আপনি প্রাণীগুলোকে দেখতে পাবেন। প্রাণী পছন্দ হলে আপনি ইলেকট্রনিক ট্রান্সফারের মাধ্যমে আমার একাউন্টে মূল্য পরিশোধ করবেন। একমাত্র তখনই আপনি প্রাণীগুলোকে নিয়ে যেতে পারবেন। তার আগে নয়।


আর যদি প্রাণীগুলোকে আমার পছন্দ না হয়?তাহলে আপনাকে মূল্য পরিশোধ করতে হবে না। আপনি সরাসরি আপনার গ্রহে চলে যাবেন। আমি চাই না প্রাণীগুলো দেখার পর প্রাণীর মূল্য নিয়ে আমাদের মধ্যে মত-পার্থক্যের সৃষ্টি হোক। আমি সবকিছু আগেই চূড়ান্ত করে নিতে চাই। বেশ গম্ভীরভাবে বলল বিউন। ঠিক আছে তাই হবে। এখন বলুন, বাচ্চা প্রাণী দুটির জন্য আপনাকে কত মূল্য দিতে হবে? আপনিই বলুন। বলল বিউন। না আপনি বলুন। প্রাণী আপনার, আপনিই এই প্রাণীগুলোর সঠিক মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন। বিউন একটু সময় নিল। তারপর বলল, পৃথিবীর মুদ্রা পিনির হিসাবে দশ ট্রিলিয়ন পিনি।


নিননের চোখ দুটো যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইল। সে বিস্মিত হয়ে বলল, এ আপনি কি বলছেন! এতো অসম্ভব! পৃথিবীর অনেক ব্যাংকেরওতো এতো পিনির সম্পত্তি নেই। এই পরিমাণ পিনি পেলে আপনি পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। আমি তো আপনাকে কিছুতেই এত মূল্য প্রদান করতে পারব না।


তাহলে আমি দুঃখিত। আমার কথা একটাই। আপনি আমাকে মূল্য বলতে বলেছেন, আমি বলেছি। আমি এর থেকে এক পিনি কমেও আপনার কাছে এই বিশেষ প্রাণী বিক্রি করব না। বিউন স্পষ্টভাবে কথাগুলো বলল।

আপনি একটু বুঝতে চেষ্টা করুন।


বিউন তার চশমা খুলে আবার চোখে পরল। তারপর টেনেে টনে বলল, এতে বুঝার কিছু নেই। আপনি মিকিউ গ্রহের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি। দশ ট্রিলিয়ন পিনি আপনার জন্য খুব কঠিন কোন ব্যাপার নয়। তাছাড়া আপনাকে প্রাণীগুলোর গুরুত্ব বুঝতে হবে। মাত্র বিশ বছরে এই প্রাণী প্রদর্শন করে আপনার দশ ট্রিলিয়ন পিনি উপার্জন করতে পারবেন। তাছাড়া আপনাদের কাছে মেয়ে প্রাণীও থাকবে যা মহাবিশ্বের অন্য কোন গ্রহে নেই। কাজেই দর্শনার্থীদের ভীড় আপনারা সামলে উঠতে পারবেন কিনা আমার সন্দেহ আছে। উপরন্তু আপনারা যদি ক্লোনের মাধ্যমে এই প্রাণী সৃষ্টি করে অন্যান্য গ্রহে বিক্রি বা রপ্তানী করেন তাহলে দশ ট্রিলিয়ন পিনি তুলে আনতে দুই বছরও লাগবে না। এখন বলুন আপনি রাজি কিনা?


নিনন একটু সময় নিল।

তারপর বলল, রাজি। তাহলে চলুন, আপনাকে প্রাণীগুলো দেখিয়ে নিয়ে আসি।


বিউন নিননকে আন্ডার গ্রাউন্ডে বিশেষ একটা কক্ষে নিয়ে এলো। সেই কক্ষের মাঝে মাঝারি আকৃতির একটি খাঁচার মধ্যে চারটি প্রাণী রাখা। এখানে আসার আগে নিনন এই প্রাণী সম্পর্কে প্রচুর পড়াশুনা করলেও আগে কখনো এই প্রাণীদের দেখেনি। শুধু ছবিতে দেখেছে। এই প্রথম বাস্তবে দেখছে। চারটি প্রাণীই তার দিকে অবাকভাবে তাকিয়ে আছে। বাচ্চা প্রাণী দুটি বোধহয় কিছুটা ভয় পেয়েছে। দুটিই এক কোণায় গুটিশুটি মেরে আছে। মাঝে মাঝে চোখ পিট্ পিট্ করে তাকাচ্ছে। 


প্রাণীগুলোকে দেখে নিননের মুখে এক রকম তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল। সে অস্পষ্ট উচ্চারণে বলল, প্রাণীগুলো উচ্চতায় আমাদের থেকে অনেক ছোট, সবচেয়ে বড় প্রাণীটা আমার দেহের তিন ভাগের এক ভাগ হবে। প্রাণীগুলোর দেহের আকারও ছোট। আমি বুঝতে পারছি না এত ছোট প্রাণী কিভাবে এত বুদ্ধিমান হয়? যাইহোক প্রাণীগুলোকে আমার পছন্দ হয়েছে। ২দু’দিন পর। মহাশূন্যে ছুটে চলছে স্পেসশীপ 'হিডিন'। 'হিডিন' মিকিউ গ্রহের স্পেসশীপ। গোপন এক মিশনে হিডিন পৃথিবীতে এসেছিল। সেই মিশন শেষে হিডিন এখন আবার মিকিউ গ্রহে ফিরে যাচ্ছে। এই গোপন মিশনটি ছিল বিশেষ এক প্রজাতির প্রাণী ক্রয় করা। হিডিনের ক্যাপ্টেন নিনন সেই প্রাণীগুলোকে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই ক্রয় করতে পেরেছে। প্রাণীগুলোকে হিডিনে গোপন একটি কক্ষে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে। এই অতিরিক্ত নিরাপত্তার বিশেষ যুক্তিও আছে। মহাবিশ্বে দুর্লভ এই প্রাণীর মেয়ে প্রজাতি শুধু তার কাছেই আছে। বিউনের প্রাণী গবেষণাগার ত্যাগ করার সময় কৌশলে সে সেখানে ছোট্ট একটা টাইম বোমা রেখে এসেছিল। বিউন প্রাণী বিজ্ঞানী হওয়ায় কিছুই টের পায়নি। বোমা স্থাপনের চব্বিশ ঘণ্টা পর অর্থাৎ গতকাল বিস্ফোরণ ঘটেছে বোমাটির। সাথে সাথে ধ্বংস হয়ে গেছে বিউনের প্রাণী গবেষণাগার। একই সাথে মৃত্যু হয়েছে বিউন এবং তার ওখানে অবশিষ্ট দুই দুর্লভ প্রাণীর।


নিনন ধীরে পায়ে গোপন কক্ষে প্রবেশ করল। প্রাণীগুলোকে গত দু’দিন ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। আজ ওদেরকে জাগান হয়েছে। তাও খুব সামান্য সময়ের জন্য। আবার ওদেরকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হবে। মিকিউ গ্রহে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত যত ঘুমাতে পারে ততই ওদের জন্য মঙ্গল। কারণ মিকিউ গ্রহে ওদের দিনগুলো হবে খুবই ভয়ঙ্কর। তখন ওরা আর ঘুমানোর সময় পাবে না। ওদের শরীরে হাজারো জৈবিক পরীক্ষা চালান হবে। দিন রাত, মাস-বছর যন্ত্রণায় ছটফট করলেও তখন মুক্তির আর কোন উপায় থাকবে না। ঘুমতো দূরের কথা, হয়তো সামান্য চোখ বুজারও সময় পাবে না ওরা। 


ছোট্ট একটা খাঁচার মধ্যে প্রাণী দুটিকে রাখা হয়েছে। দুটি প্রাণীই জেগে আছে। চোখে ভয় আর আতঙ্ক। প্রাণীগুলোর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে পড়াশুনা করার সময় এই প্রাণীগুলোর ভাষাও কিছুটা রপ্ত করেছিল নিনন। তাই তার ইচ্ছে এই ভাষা ব্যবহার করে এদের সাথে দু’একটা কথা বলা যায় কিনা তা চেষ্টা করে দেখা।


নিনন খাঁচার দরজায় মুখ রেখে হিস্ হিস্ করে উঠল। আর তাতে মেয়ে প্রাণীটা ভয় পেয়ে ছেলেটার আরো কাছে গিয়ে বসল। নিনন বেশ মজা পেল। সে আবারও মুখ দিয়ে হিস্ হিস্ শব্দ করল।

       প্রাণী  ভয় পেয়ে একে অন্যের আরো কাছে এলো।

      নিনন এবার মিষ্টি স্বরে বলল, এই প্রাণীরা, তোমরা ভয় পাচ্ছ কেন?

সাথে সাথে ফুঁসে উঠল ছেলে প্রাণীটা। মাথা উচু করে জোর গলায় ধমকে উঠে বলল, আমাদেরকে প্রাণী বলছ কেন? আমাদেরকে সম্মান করে কথা বলো। আমরা পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে বুদ্ধিমান জীব 'মানুষ'।

 

 (রচনাকাল,  ইংল্যান্ড-লেস্টার, ২২/০৭/২০০৬)

Header Ad
Header Ad

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে—লিওনেল মেসি কি খেলবেন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে? বারবারই আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এবারও তার কথায় সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে।

সম্প্রতি ‘সিম্পিলিমেন্টে ফুটবল’ নামক এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছেন এবং দলে থাকতে চান। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন নিজের শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস বিবেচনা করে।

“নিজের প্রতি সৎ থাকতে হবে আমাকে। আমি যদি দেখি যে বিশ্বকাপে খেলার মতো ফিট আছি, দলকে সাহায্য করতে পারব—তবেই সিদ্ধান্ত নেব। আমি কোনোভাবেই দলের বোঝা হতে চাই না।” — বললেন মেসি।

আগামী জুনে ৩৮ বছরে পা রাখবেন তিনি, আর ২০২৬ বিশ্বকাপে বয়স হবে ৩৯। এমন বয়সে বিশ্বকাপ খেলাটা সহজ নয়। তাই মেসি বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে যাচাই করে এগোচ্ছেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি ফিরেছেন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের কথায়ও, যেখানে আর্জেন্টিনা হেরে গিয়েছিল জার্মানির কাছে। এ প্রসঙ্গে কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নিজের একটি তুলনা টেনেছেন তিনি।

“এমবাপ্পে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে চার গোল করেও জিততে পারেনি। এটা অনেকটা আমার ২০১৪ সালের অনুভূতির মতো। যদিও তার কাছে ২০১৮ সালের একটি বিশ্বকাপ শিরোপা আছে, সেটা একটা সান্ত্বনা। কিন্তু ওই হার আমার জন্য মানসিকভাবে খুবই কষ্টদায়ক ছিল। এখনো ভাবলে মনে হয়, আমারও দুটি বিশ্বকাপ থাকতে পারত।”

তবে কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করছেন। তিনি বলেন, “আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। ফুটবলে যা কিছু অর্জন করা সম্ভব, আমি তা পেয়েছি। বিশ্বকাপটাই শুধু ছিল না, সেটাও এখন আছে। ঈশ্বরের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ—তিনি আমাকে সব দিয়েছেন।”

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট