রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

কেমন আছো মৌমিতা

এত সুন্দর ভোর মৌমি কখনো দেখেনি! ফজরের আযানের পর আকাশ পরিষ্কার হতেই মৌমি হাঁটতে বের হবে। মৌমি মনে মনে ঠিক করে রেখেছে, এখানে প্রতিদিন ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠবে। ঘাঁসের বুকে হেটে বেড়াবে। পদ্মদীঘির পাড়ে গিয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকবে। সবুজ দেখে চোখ জুড়াবে। আরও কতশত ভাবনা মন জুড়ে।

মৌমি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনোমিক্সের শেষ বর্ষের ছাত্রী। পরীক্ষা পরবর্তী ছুটিতে দেশে বেড়াতে এসেছে। চলে যাওয়ার সময় প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। পরশু সন্ধ্যায় মৌমির ফ্লাইট। তাই ফিরে যাবার আগে বন্ধুদের নিয়ে কয়েকদিনের জন্য বেড়াতে এসেছে শ্বশুড়ের নতুন বাংলোতে। আবার কবে কখন দেখা হবে সবার সাথে জানা নেই। সেজন্যই এই আয়োজন।

মৌমি নিচে নেমে এল। পীতাভরঙ শাড়িতে কালো টিপ পড়লে যে কাউকে এত মায়াবী লাগে, আজ ভোরে মৌমিকে না দেখলে কেউ জানতো না কোনদিন। গেট পেরিয়ে বাইরে পা রাখতে যাবে, এমন সময় পেছন থেকে ডাক শুনতে পেলো মৌমি।

-কোথায় যাচ্ছিস? সোমা এগিয়ে এসে বলল।
-ও তুই! ঘুম ভেঙ্গেছে?
-হু, রাতে খুব ভালো ঘুম হয়েছে। কোথায় যাচ্ছিস?
-খুব হাটতে ইচ্ছে করছে বনের ভেতর ভোরের বাতাসে ।
চল আমি ও যাবো। কালো টিপে তাকে অসাধারণ লাগছে! খুব মায়াবতী লাগছে তোকে।
- সাহেব ঘুমাচ্ছে বুঝি? হেসে জিজ্ঞেস করলো মৌমি।
-হাসি ফিরিয়ে দিয়ে সোমা বলল, হ্যাঁ, এখনও ঘুমাচ্ছে।
-ঠিক আছে, চল।
দুই বান্ধবী হাঁটতে হাঁটতে বনের ভিতর ঢুকে গেলো। অজস্ৰ বকুল বিছিয়ে আছে মাটিতে। ওরা বকুল কুড়াতে লাগলো সেই ছেলেবেলার মতো ।

আচ্ছা মৌ, তোর শ্বশু্রতো অর্থমন্ত্রী তাই না।
- হু, মৌমি একমনে বকুল কুড়াচ্ছে।
- আশ্চর্য! আমি শুনেছি, মন্ত্রীদের হৃদয় বলে কিছু থাকে না। কিছুদিন মন্ত্রীত্ব করলে সুখ দুঃখ হাসি কানা সব নাকি শেষ হয়ে যায়। মানে আবেগ শূন্য হয়ে যায় তারা। কিন্তু তোর শ্বশুরতো ভয়াবহ কাণ্ড করে বসে আছেন। কোন মন্ত্রী এত টাকা পয়সা খরচ করে প্রকৃতিকে এভাবে বাচিয়ে রেখেছে না দেখলে আমি বিশ্বাস করতাম না কিছুতেই।

তুই কি বিশ্বাস করতি?
-আমি ভাবতাম মন্ত্রী হবার শর্তই হচ্ছে নিজের আত্মা আর বিবেককে অকেজো করে দেয়া। এরা পতাকা বাহিত গাড়িতে উঠে বসে। পতাকা উড়িয়ে এদের কোথায় যে নিয়ে যায়, কেনইবা নিয়ে যায় এরা জানে না। জানবে কি করে? সবতো অকেজো।

সোমার কথার ধরনে খুব হেঁসে উঠে মৌমি। দারুনতো!
কি?
তুই যা বললি। এখন কি তোর ভাবনা বদল হয়েছে?
তোর শ্বশুরের লাগানো বকুল গাছের বকুল ফুল হাতে নিয়ে আছি। কি করি বলতো?
হাত থেকে বকুল ফুল ফেলে দে।
. অসম্ভব, পারবো না। মরে গেলেও না।
. তাহলে যে তোর ভাবনা অদল বদল হয়ে যাবে।
. আচ্ছা তোর শ্বশুর কেমন মানুষ?
মানে?
ভাল না কি মন্দ?
.জানিনা। শ্বশুর শ্বশুরের মতো। তবে আমার মনে হয় তিনি একজন ভালো মানুষ।
আর তোর শ্বাশুরি?
-আমি তার থেকে ভালো কিছু শিখতে পারিনি। বুঝলি?
- হু, বুঝলাম। প্রসঙ্গ পাল্টে সোমা বলল- সত্যিই বিশ্বাস কর,এত সবুজ আমি কোনদিন দেখিনি। মৌমির দিকে তাকিয়ে হাসলো সোমা। তোর জন্য দেখতে পেলাম। থ্যাঙ্কু।
-মৌমি ও সোমা বনের ভেতর বসার মতো একটা জায়গা দেখে সেদিকে এগিয়ে গিয়ে বসলো। চুপচাপ ভাবছিল মৌমি।
এত কি ভাবছিস আনমনে হয়ে?
চোখ ফিরিয়ে সোমাকে দেখে মৌমি। তারপর বলে, সোমা আজ তোকে আমি একটি গল্প বলবো।
-কি গল্প?
-রূপকথার গল্প । মৌমি হেসে উঠে।
-রূপকথার গল্প ?
আচ্ছা, আগে গল্পটা শুনে নে। তারপর বলবি।
-আচ্ছা বল।

-একটি মেয়ে। মায়ের লক্ষ্মী মেয়ে। পড়াশোনায় খুব ভালো। ভালো ঘর আর ভালো বর দেখে মা তাকে বিয়ে দেয়। মেয়েটি তার স্বামীকে ভালবাসে। কিন্তু বিয়ের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই গুণধর সামীটির মুখোশ ধরা পড়ে যায়। মেয়েটির স্বামী ছিল মাতাল । নারী মন নয়, নারী শরীরের প্রতি লোভী ছিল সে। মনে মনে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয় মেয়েটি। ঠিক করে ফেলে সে আর পরাজিতার মতো সংসার করবে না । নিজের পথ নিজে বেছে নেবে। যদিও একসময় সবার চেষ্টায় মেয়েটির স্বামী ঘরে ফিরে আসে। প্রচণ্ডভাবে ভালবাসতে শুরু করে মেয়েটিকে। আর মেয়েটিও নিজের জীবন নিজের নিয়তিকে মেনে নিতে চেষ্টা করে। অন্য সবার মতো সুখী হতে চেষ্টা করে মেয়েটি। কিন্তু আরও একটি কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছিলো যেন ওর জন্য। পড়াশোনার পরীক্ষাগুলো্তে মেয়েটি যত সহজে উতরে যায়, জীবনের পরীক্ষাগুলোতে সে ততটাই বিচলিত হয়ে পড়ে। সহজ পথের মেয়ে জটিলতায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা যেন কিছুতেই।
এবার মৌমি একটু থামে।

তারপর?

মৌমি আবারও বলতে শুরু করে। একসময় তার জীবনে আসে অন্য পুরুষ। ওর শৈশবের খেলার সাথী। মেয়েটির প্রতি তার ভালোবাসা বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ কিংবা জাগ্রত সমুদ্রের মতো কিংবা বলা যায় সুবিশাল নীলাকাশের মতো। মেয়েটি তা টের পায় নিজের হৃদয় দিয়ে। মেয়েটি তার বয়ে যাওয়া জীবনকে নিয়েই যেমন পথ চলতে চায়, তেমনি সেই বন্ধুটি যেন তাকে মনে মনে ডাকে!

হঠাৎ সোমা মৌমিকে থামিয়ে দিয়ে বলল,
এই গল্পের মেয়েটি কি তুই?
-মৌমি চুপ করে থাকে।-তারপর চোখ তুলে সোমার দিকে তাকিয়ে বলে হ্যাঁ, আমিই সেই মেয়ে।
-এবার তুই আমাকে বল, আমি কি করবো।
-তার আগে তুই আমাকে বল, তোর সেই বন্ধুটি নিশ্চয়ই বিজয়!
-মৌমি খুব অবাক হয়। তারপর বলে, তুই কি করে জানলি?
-সত্যি কিনা বল।
হ্যাঁ, বিজয়! মৌমি অকপটে স্বীকার করে।
-সোমা হাসে।
-হাসছিস যে, আমি কি হাসির কিছু বলেছি?
-মৌমি,আমরা সবাই জানতাম বিজয় তোকে ভালবাসে। কিন্তু;
-কিন্তু কি?
কিন্তু তোরা কেউ জানতিস না আমি মনে মনে বিজয়কে ভালোবাসতাম! বিজয় কিন্তু জানতো। সোমা হাসে।
-বিজয়ও কি তোকে...
না, না। ওর ধ্যান জ্ঞানে জড়িয়ে ছিলি শুধু তুই। মৌমিতা মেহজাবিন।

আমার অবস্থা এমন হয়ে ছিল যে, আমি সবসময় সবকিছুতে যেন বিজয়কে দেখতে পেতাম। অনেকটা মরীচিকার মতো মনে হতো বুঝলি! আই ফিল থার্সট ইন মাই হার্ট ফর হিম। অলওয়েজ। কি কঠিনভাবে ফিল করতাম ওকে! কতটা পাগল ছিলাম আমি সেই সময়ে বিজয়ের জন্য। ভাবলে এখনও শিউরে উঠি! সেসব আর বলতে ইচ্ছে করছে না। খুব কষ্টে গিয়েছে সেই দিন গুলিরে!
সোমার কথাগুলো যেন অনেক দূর থেকে ভেসে আসতে লাগলো মৌমির কানে।
অথচ দেখ! আমিতো দিব্বি রুহানের সংসার করছি। আমরা ভালোও আছি। আমার সামনে পিছনে ভিতরে বাইরে কোথাও বিজয়কে পাই না আর।

মৌমি চুপচাপ সোমার দিকে তাকিয়ে থাকে।
- সোমা বলে, মৌ ভালোবাসা জোয়ার ভাটার মতো। নিজের জন্যই কখনো সেটা আকাশ ছুঁতে চায়। আবার নিজের জন্যই কখনো সেটা হৃদয় থেকে মুছে যায়। এর বেশি কিছু না।
- তোর ভিতর বাইরে বিজয় কি সত্যিই নেই সোমা!
- নাহ, নেই। একফোঁটাও নেই আজ। আমি ভুলে গিয়েছে। আমি সব ভুলে গিয়েছি। সোমা আনমনে বলতে থাকে কথাগুলো। সোমা আরও বলে, মৌ, শোন।
মৌমিতা সোমার দিকে এমনভাবে তাকায়, যেন সোমা তার মনের কথাটিই বলবে।
তুইতো বিজয়কে সুখী করতে পারবিনা, মৌ। তুই একজন বিবাহিতা। এটা কাটা হয়ে বিধবেই তোদের জীবনে।আমি কি মিথ্যা বলছি?
ঠিকই বলেছিস তুই। মৌমি দূরের দিগন্তে তাকিয়ে থাকে চুপচাপ।
-মৌমি যা কিছু তোর নিজের তা নষ্ট করিস না। ভুল করবি। আর শোন, পড়ালেখা শেষ হলেই তুই একটা বাবু নিয়ে নিবি বুঝলি। সন্তান ছাড়া সংসার সুবাস ছাড়া ফুলের মতো পানসে লাগে।
তুই নিচ্ছিস না কেন?
-ভাবছি। আচ্ছা বলতো কোন জিনিসগুলো খুব সত্য আর মূল্যবান মানুষের জীবনে।
-জানিনা।
-অশ্রু, আনন্দ, সন্তান, সময় আর মানুষের মন। যখন এগুলো তোর দখলে তখন পৃথিবীটা তোর। বুঝলি?
-মৌমিতা সোমা প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে চুপচাপ বেঞ্চটাতে বসে রইলো। অনেকক্ষণ কেউ কোন কথা বলল না ওরা।

একসময় মৌমি রাজন কে ভালোবেসেছিলো। কিন্তু ভালোবাসার গভীরতা অনুভব করেনি সেভাবে। রাজনের ভালোবাসা অনেকটা সাদা ভাতের মতো, যা বেঁচে থাকার জন্য হয়তো প্রয়োজনীয়। কিন্তু বিজয়কে দেখে মৌমি শিখেছিল প্রকৃত ভালোবাসার অনুভূতি, ভালোবাসার সৌন্দর্য। মৌমি অবাক হয়েছিলো বিজয়ের ভালোবাসার সুক্ষ্মটানকে নিজের ভেতর অনুভব করে। মৌমি ছাড়া যে কেউ এই ভালোবাসার টানে নিশ্চয়ই ভেসে যেতো, হারিয়ে যেতো। কিন্তু কিছুটা সময়ের জন্য টালমাটাল হলেও মৌমি ফিরে এসেছে নিজের কাছে। সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াতে ভয় পায়নি। মৌমি খুব বুদ্ধিমতী আর খুব বেশি আত্মসচেতন মেয়ে বলেই হয়তো।

মৌমির লুসিয়ার কথা মনে পড়ে। লুসিয়ার কথা হলো যে ওকে এমন হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দেবে, ও তার কাছেই ফিরে যাবে। এ জীবনের জন্য ভালোবাসা ছাড়া আর সবকিছুই মূল্যহীন ওর কাছে। কিন্তু সোমা বলল ভিন্ন কথা। সোমার কথা হলো, জীবনের প্রয়োজনেই ভালোবাসা, ভালোবাসার জন্য জীবন নয়। যা হওয়া উচিত তাই করা উচিত। বাস্তববাদী কথা ওর।

মৌমিতা ভাবে আচ্ছা, আমার মনের কথাটি কি তবে? আমি চাই সময়ের হাত ধরে পথ চলতে। আর পিছনে ফিরে তাকাতে চাই না। বিজয়কে চিনতে না পারার ভুলের মাসুল দিতে গিয়ে নতুন কোন ভুলের পথিক হতে চাইনা আমি ।

মৌমিতা শোন, তুই খুব নরম মনের মানুষ, তাই এত ভাবছিস। কিন্তু তুই কখনো ভেবে দেখেছিস, তুই অন্য আরেকজনের হাত ধরে আছিস। তার সাথে জড়িয়ে আছে তোর ঘরের সুখ। অনেকগুলো মুখের সুখ। ভুল করা সহজ কিন্তু ভুলগুলোকে শুধরানো এত সহজ নয়। রাজন নিজেকে শুধরে নিয়েছে। সে তোকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। এটাই তোর জীবন, এটাই তোর সংসার। বিজয় পথিক। মাঝে মাঝে দেখা হলে হাসি মুখে কথা বলা ছাড়া আর কোন সম্পর্ক রাখার মানে কি জানিস?

কি?
শখ করে কস্ট কিনে বয়ে বেড়ানো।ভুল করিস না মৌমি, সোমা বলে।

মৌমি সোমার কথাগুলি বুঝতে চেস্টা করে। নিখাদ ভালোবাসাকে লালন করার জন্য মন ও শরীর দুটিই নিখাদ হওয়া প্রয়োজন। সোমা ঠিকই বলেছে। যে দিকে কোন পথই নেই সেদিকে মন পছন্দে পথ তৈরি করা শখ করে কষ্ট কেনার মতোই। শুরুতেই সে পথ বন্ধ করে দেয়া উচিত। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, রাজনের সব কিছু খুব ফরমাল। অনেক বেশি আবেগ তার নেই। কিন্তু এটিও সত্য যে, আমার সাথে রাজনের সম্পর্কে আজ আর কোন মিথ্যা নেই। সে আমাকে ভালোবাসে,মৌমিতা ভাবে।আমি বাস্তবতাকে এড়াতে পারবো না।
-এক সময় মৌমি বলে উঠে চল, এবার উঠি।
- হ্যাঁ, চল।
-হাঁটতে হাঁটতে মৌমিতা বলে, জানিস, লুসিয়া বলেছিল এমন ভালোবাসা পেলে সে এই জীবনে আর কিছু চাইতো না।
লুসিয়া কে?
আমার সাথে পড়ে। কালো কিন্তু বেশ মিষ্টি একটা মেয়ে। খুব ডেসপারেট।
হু, বুঝলাম । কিন্তু তুইতো লুসিয়া না। তুই মৌমিতা।

মৌমিতার বিজয়ের কথা মনে পড়ে। বিজয় বলেছিল ,আজন্ম আমি তোমায় ভালবেসেছি।আমার মানসপটে তোমাকে আমার রানী করে রেখেছি। তোমার যোগ্য করে নিজেকে গড়তে চেয়েছি। কি না করেছি আমি তোমার জন্য মৌমিতা? অথচ দেখো, এত কিছুর পরেও আমি একজন ব্যর্থ মানুষ।

এ কথা বলছ কেন? মৌমিতা জানতে চেয়েছিল ।

তোমাকে পাওয়া হলো না আমার এ জীবনের জন্য!

উত্তরে মৌমিতা বিজয়ের দিকে তাকিয়ে বলেছিল, তুমিতো সাধক বিজয়। যে সাধনা করে সে কি বিনিময় আশা করে বলো? যেন মৌমিতা নয়, মৌমিতার ভিতর থেকে অন্য কেউ বলেছিল, বিজয়ের দুঃখ তাকে খুব বেশি স্পর্শ করেছিল বলেই হয়তোবা। 

কিন্তু আমিতো সাধক হতে চাই নি। আমি তোমাকে পাশে পেতে চেয়েছিলাম মৌমিতা!

বিজয়ের সেই প্রশ্নের উত্তর মৌমিতা সেদিন দিতে পারেনি। তবে সব প্রশ্নের উত্তর যে সত্যিই হয় না মৌমিতা আজ তা জানে।

 মৌমিতা সোমার দিকে তাকিয়ে বলল হ্যাঁ, সেটাই। তুই ঠিকই বলেছিস। আমি লুসিয়া নই। আমি মৌমিতা। তবে লুসিয়ার মতো হলেই জীবনটা সহজ হতো মনে হয়। মৌমিতা ওর দীর্ঘশ্বাস গোপন করতে চেষ্টা করলো না।

-মৌমি ও সোমা বাংলোর দিকে ফিরে গেল। কিছুদূরে যেতেই ওরা বিজয়কে দেখতে পেলো। বিজয়ও মনে হচ্ছে হাঁটতে বেরিয়েছে। এদিকেই আসছে ও।
কাছাকাছি আসতেই ওরা দাঁড়িয়ে পড়লো।
বিজয় মৌমিকে একটুক্ষণ দেখলো। তারপর সোমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো।
- আরে সোমা? তুমি কবে এসেছো?
- পরশু সন্ধ্যায়, তুমি?
-এইতো গতকাল রাতে। আড়চোখে মৌমিকে আরও একবার দেখে নিয়ে বলল, অনেক রাতে। ঘুমিয়ে পড়েছিলে তাই রাজন আর ডাকেনি ।
-ও, আচ্ছা।
- হাঁটতে বেরিয়েছ নাকি ফিরে যাচ্ছ?
-আমাদের হাঁটা শেষ। ফিরে যাচ্ছি।

আচ্ছা, ঠিক আছে।

বিজয় আবার মৌমির দিকে তাকালো। এবার চোখাচোখি হলো ওদের। কিন্তু কেউ কোন কথা বলল না। মৌমিতা চোখ নামিয়ে নিয়ে বাংলোর দিকে হাঁটতে লাগলো।

 

 

 

 

 

Header Ad
Header Ad

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মো. জাফর আলম। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মো. জাফর আলমকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি জানান, বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে ধানমণ্ডি এলাকা থেকে মো. জাফর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে ঠিক কী অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

Header Ad
Header Ad

ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীরের পহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভয়াবহ হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সীমান্তে প্রতিদিন গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে, বাড়ছে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা। এর মধ্যেই পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী হানিফ আব্বাসী ভারতে পরমাণু হামলার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।

শনিবার এক অনুষ্ঠানে হানিফ আব্বাসী বলেন, "শুধুমাত্র ভারতের জন্য ১৩০টি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র তাক করে রাখা হয়েছে। ঘৌরি, শাহিন এবং গজনবির মতো অত্যাধুনিক মিসাইলও প্রস্তুত আছে।" ভারতের প্রতি কঠোর সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, "তারা যদি সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করার চেষ্টা করে, তাহলে সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।"

মন্ত্রী আরও বলেন, "আমরা মিলিটারি সরঞ্জাম ও মিসাইল শুধু প্রদর্শনের জন্য রাখিনি। পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কোথায় রাখা আছে তা কেউ জানে না, তবে এটুকু নিশ্চিত - এগুলো ভারতের দিকেই তাক করে রয়েছে।"

পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ টেনে হানিফ আব্বাসী বলেন, "নয়া দিল্লি এখন বুঝতে শুরু করেছে তাদের কর্মকাণ্ডের কঠোর পরিণতি কী হতে পারে। যদি এই পরিস্থিতি ১০ দিন চলতে থাকে, তাহলে ভারতের এয়ারলাইন্সগুলো দেউলিয়া হয়ে যাবে।"

পহেলগাম হামলার জন্য ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতাকেই দায়ী করেন তিনি। তাঁর ভাষায়, "ভারত কিছু ঘটলেই অকারণে পাকিস্তানকে দোষারোপ করে।"

প্রসঙ্গত, পহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সমস্ত ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত।

ভারতীয় অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। ইসলামাবাদ ইতিমধ্যে সিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে এবং পাকিস্তানের আকাশসীমা দিয়ে ভারতের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। পাশাপাশি সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করা হলে যুদ্ধের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে পাকিস্তান।

Header Ad
Header Ad

চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বিতর্কিত চরিত্র হয়ে উঠেছেন তাওহিদ হৃদয়। তাঁকে ঘিরে যেন একের পর এক নাটকীয় ঘটনা ঘটছে, আর প্রতিদিনই সেই নাটকে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন পর্ব। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের আয়োজক ক্রিকেট কমিটি অব মেট্টোপলিস (সিসিডিএম) মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, হৃদয় চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন।

সবশেষ গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ম্যাচে আউট হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া দেখানোর অভিযোগ ওঠে মোহামেডানের এই অধিনায়কের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে তাঁকে শুনানিতে ডাকা হলেও তিনি হাজির হননি। পরে ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ তাঁকে লেভেল-১ অপরাধে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং একটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেন।

এর আগে হৃদয়ের ডিমেরিট পয়েন্ট ছিল ৭। নতুন করে ১ পয়েন্ট যোগ হওয়ায় তা দাঁড়িয়েছে ৮-এ। বিসিবির আচরণবিধির ৭.৫ ধারা অনুযায়ী, কোনো খেলোয়াড়ের ডিমেরিট পয়েন্ট ৮ ছুঁলে তাকে চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। সেই অনুযায়ীই হৃদয়ের ওপর চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।

ফলে আগামীকাল আবাহনীর বিপক্ষে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ‘অলিখিত ফাইনালে’ মোহামেডানের পক্ষে মাঠে নামতে পারবেন না হৃদয়। এটি মোহামেডানের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

 

তাওহিদ হৃদয়। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে, ১২ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন হৃদয়। পরে সংবাদমাধ্যমে এসে আম্পায়ারদের বিরুদ্ধে ‘মুখ খোলার হুমকি’ দেওয়ায় সেই নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে দুই ম্যাচ করা হয় এবং সঙ্গে যোগ হয় ৭ ডিমেরিট পয়েন্ট।

তবে ওই নিষেধাজ্ঞা নিয়েও কম নাটক হয়নি। দুই দফায় নিষেধাজ্ঞা কমানো ও বাড়ানো নিয়ে বিসিবির ভেতরে জল ঘোলা হয়। শেষ পর্যন্ত জানানো হয়, হৃদয়ের দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে, তবে সেটির কার্যকারিতা এক বছরের জন্য স্থগিত থাকবে। এ সিদ্ধান্তের পরেই দেশের অভিজ্ঞ আম্পায়ার শরফৌদ্দোলা ঘোষণা দেন, তিনি আর ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করবেন না।

এসব বিতর্কের মধ্যে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ম্যাচে নিজের আউটের প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আবারও নতুন করে নিষেধাজ্ঞায় পড়লেন হৃদয়। ফলে ঘরোয়া ক্রিকেটের এই নাটকে নতুন মাত্রা যোগ হলো।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ
উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত
ছেলে খুঁজে পাচ্ছি না, একজন জীবনসঙ্গী দরকার: মিলা
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধে ভারতের ১.১৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির শঙ্কা
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
উত্তাল ইউআইইউ ক্যাম্পাস, ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ
এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬০৮
ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছে: আলী রীয়াজ
মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান: ‍শেহবাজ শরীফ
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক