বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

দুই ফোঁটা জল

ওর নাম জলফড়িং দেওয়ার পেছনে কোনো শক্ত যুক্তি নেই। মুখ থেকে হঠাৎ করেই বেরিয়ে গেল। বেরিয়ে যাওয়ার পর জলফড়িং নাম আর ফেরত নেইনি। জলফড়িংই নামটা সঙ্গে নিয়ে গেছে। জলফড়িংয়ের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সময়। আমার পরীক্ষা না, জলফড়িংয়ের পরীক্ষা ছিল। আমি আর্টস ফ্যাকাল্টিতে পড়ি। আমার সাবজেক্ট ছিল সমাজবিজ্ঞান। অবশ্য এসএসসি ও এইচএসসিতে আমি কমার্সের ছাত্র ছিলাম। কি মনে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে কমার্স পড়তে ইচ্ছা হলো না। অংক নিয়ে ব্যস্ত থাকতে ভালো লাগছিল না। মা-বাবাকে না জানিয়েই ফরম তুললাম কেবল আটর্সের সাবজেক্টে। বাবার শখে কমার্স নিয়েছিলাম। বাবা কষ্ট পাবেন বলেই বাড়িতে কিছুই বললাম না। বাবা ভাবলেন আমি কমার্সে ভর্তি হচ্ছি। শেষে যখন দেখলেন আটর্সের সাবজেক্টে চান্স পেয়েছি বাবা শুধু শুকনো মুখে বললেন, কমার্সটা তোর আর পড়া হলো না। একটু ভালো করে প্রিপারেশন নিতি? আমি আর সত্যি কথাটা জানালাম না। সেখান থেকেই আমার কমার্স জীবনের ইতি ঘটল। তাতে সুবিধা হলো আমার। পড়াশোনার বাইরে ঘুরে বেড়ানোর সময় পাই। টেনেটুনে সেকেন্ড ক্লাস পেলেই চলবে। বেশি পড়তাম না। লতায় পাতায় সম্পর্কের এক ভাইয়ের হাত ধরে ঢুকে গেলাম রাজনীতিতে। চোখে তখন অনেক স্বপ্ন। নেতা হতে ইচ্ছে করত। চাকরি না হলেও ক্ষতি নেই। রাজনীতি করব- এ রকম একটা ইচ্ছা মনের ভেতর ততদিনে ঢুকে গেছে। অনেকে বড় ভাই বলে সালাম দেয়। ভালোই লাগে। সকালে পেছন পকেটে একটা বই খাতা নিয়ে বের হই। আড্ডাতেই সময় যায় বেশি। আমার ততদিনে একটা সার্কেল গড়ে উঠেছে। কোনো মেয়ে নতুন এলো-গেল তীক্ষ্ণ নজর রাখি। এটাই যেন কাজ! এই নজর রাখতে গিয়েই একদিন জলফড়িং আমার ফুড়ৎ করে ঢুকে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ছিল। গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি। আমি ও আরও কয়েকজন আছি। কেউ কেউ আমাদের কাছে আসছে, জানতে চাইছে নিজের আসনের খবর। আমরা বুঝিয়ে দিচ্ছি। এর মধ্যে লক্ষ্য করলাম একটি ফর্সা, হালকা গড়নের মেয়ে ভিড় ঠেলে গেটের দিকে যাচ্ছে। বেশি তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কারো হাতের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ওর প্রবেশপত্রটি পরে গেল। মেয়েটি এটা লক্ষ না করেই গেট দিয়ে ঢুকে গেল। আমি পেছন থেকে ডেকে উঠলাম এই জলফড়িং, অ্যাই?

জলফড়িং নামটির সূচনা এখান থেকেই।

আমি চ্যাঁচিয়ে বললাম, ’আপনার অ্যাডমিট কার্ড'?

অত ভিড়ে কেউ কারও কথা শোনার কথা না। জলফড়িংও শুনল না। অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থেকে আমিও বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলাম। এতক্ষণে যুতসই একটা কাজ পেলাম। আমি ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেলাম প্রবেশপত্র উদ্ধার করার জন্য। যতটা সহজ ভেবেছিলাম কাজটি তত সহজ ছিল না। মিছিলের ভেতর দাঁড়িয়ে মাটি থেকে তোলার চেষ্টা করছি। সবাই পরীক্ষার হলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আমি সাগরের মধ্যে থেকে মুক্তা তুলে আনলাম। প্রবেশপত্র হাতে নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে একটু এগুতেই দেখি জলফড়িং দাঁড়িয়ে আছে। মনে হয় কান্নাকাটি করেছে। চোখ দুটো ফোলা। আমি প্রবেশপত্র এগিয়ে দিলাম। জলফড়িং প্রবেশপত্রটি হাতে নিয়ে পেছনে ঘুরে হাঁটতে লাগল। একবার ধন্যবাদও দেওয়ার প্রয়োজন মনে করল না। আশ্চর্য! আমি পেছন থেকে আবার ডাকলাম, অ্যাই জলফড়িং? মেয়েটা আমার কথায় থমকে দাড়াল।

আমাকে কিছু বললেন? এগিয়ে এসে জানতে চাইল।

’ভালোভাবে পরীক্ষা দেবেন।’

’ঠিক আছে। আর হ্যাঁ আমার নাম জলফড়িং না মৌমিতা। মৌমিতা সেন। বলার সময় ঠোঁটের কোণে একটু হাসি ফুটে উঠল।’

’ও আচ্ছা।’ আমার নাম বলার সময়ই পেলাম না।

জলফড়িং পরীক্ষার্থীদের ভিড়ে হারিয়ে গেল। ভর্তি না হলে জলফড়িংয়ের সঙ্গে আমার দেখা হওয়ার কোনো চান্স ছিল না। আমি চাইছিলাম জলফড়িং এখানে ভর্তি হোক। উপকারের পরিবর্তে প্রাপ্য ধন্যবাদটা নিতে হবে জলফড়িংয়ের কাছ থেকে। জলফড়িং ভর্তি হলো কমার্স ডিপার্টমেন্টে। তখন আমার মনে হলো কমার্সে ভর্তি হলেই বেশ হতো। জলফড়িংকে দেখলাম নবীন বরণ অনুষ্ঠানে। নতুনদের ফুল দিয়ে বরণ করার সময়। জলফড়িংয়ের হাতে আমি ফুল দিতে পারলাম না। এরপর আমি বাড়িতে একটু সমস্যা হলে সেখানে মাসখানেক ক্যাম্পাস থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। জলফড়িংয়ের সঙ্গে দেখা হলো না। ক্যাম্পাসে ফিরে এসে একদিন সকালে দেখা হলো জলফড়িংয়ের সঙ্গে। মহুয়া তলায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। জলফড়িং ক্লাস থেকে ফিরছিল। আমি লাফ দিয়ে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।

’কেমন আছেন?’

আমাকে হঠাৎ ওভাবে দেখে হকচকিয়ে গেল জলফড়িং।

আমাকে বলছেন?

আমাকে চিনতে পারছেন?

’না।’ জলফড়িংয়ের সোজা উত্তর। আমাকে একটু নির্লজ্জ হতে হলো। আমাকেই গায়ে পরে পরিচয় দিতে হলো। সেদিনের প্রবেশপত্রের ঘটনাটা তাকে বললাম। শুনে মনে পরে যাওয়ায় মনে হয় একটু লজ্জিত হলো। লজ্জা পাওয়ার সময় জলফড়িংয়ের চোখ মুখ লাল হয়ে গেল।

’আমি আপনাকে ধন্যবাদ দিতে পারিনি। দুঃখিত। টেনশনে ছিলাম তো তাই। এখানে ভর্তি হতে না পারলে গ্রামের কলেজে ভর্তি হতে হতো। আর কোথাও তো চান্স পাইনি।’

’ভাগ্যিস ভর্তি হয়েছেন!’

’মানে?’

’মানে কিছু না। আপনি বুঝবেন না।’

আমি বুঝতে চাচ্ছি না।

আমি ফিরোজ। সমাজবিজ্ঞান থার্ড ইয়ারে পড়ি।

’ও আচ্ছা। আপনি আমাকে একটু সাহায্য করতে পারেন?’

জলফড়িংয়ের মুখ থেকে সাহায্যের কথা শুনে আমি আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। এ যেন রাজকন্যার মুখ থেকে আদেশের অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকা।

’কি সাহায্য?’

’মানে এখানে হোস্টেলে একটা সিট নেওয়া আর একটু নোট-টোট জোগাড় করে দেওয়া। আমার তো এখানে কেউ পরিচিত নেই। ও হ্যাঁ আমি লক্ষ্য করেছি আপনি আজও আমাকে জলফড়িং ডাকছেন। আমার ও ডাকে আপত্তি নেই। তবে সবার সামনে আমাকে মৌমিতা বলেই ডাকবেন।’

জলফড়িংয়ের সঙ্গে কথা হলো বেশ অনেকক্ষণ। জানলাম বাবা-মার একমাত্র সন্তান সে। ওর আর একটা বড় বোন ছিল। মারা গেছে। আমার সম্পর্কেও বললাম। ইনিয়ে বিনিয়ে ক্যাম্পাসে আমার প্রভাবের কথা বললাম। জলফড়িংয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা একটু স্বাভাবিক হলো এদিন।

এরপর থেকে প্রতিদিনই জলফড়িংয়ের সঙ্গে দেখা হতো। কথা হতো। প্রতিদিনই সমীর দা’র দোকানের চা খাওয়া হতো। ক্লাস শেষেই আমাকে ফোন দিত। আমি ছুটে যেতাম। আমি তো খুব বেশি ক্লাস-টাস করতাম না। জলফড়িংয়ের সাথে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার তিন বছর পর ক্যাম্পাসকে আমার অন্যরকম লাগতে লাগল। লেখাপড়া আর রাজনীতির জীবনের বাইরেও একটা জীবন আছে সেটা এই প্রথম টের পেলাম। সেটা হলো জলফড়িং। জলফড়িংয়ের জীবন। কীভাবে যেন মেয়েটা আমার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গেল। লক্ষ করলাম জলফড়িংও ক্যাম্পাসে আমি নির্ভর। ফটোকপি থেকে শুরু করে ফুচকা খাওয়া আমাকে ছাড়া চলছে না। আরও বেশ কিছু বন্ধু আছে ওর, তবে আমার গুরুত্বটা বুঝতাম একটু আলাদা। ভাবলাম এবার জলফড়িংকে আমার অনুভূতির কথাটা সরাসরি বলতে হবে। সম্পর্কটা এগিয়ে নিতে হবে। সকালে বই খাতা পকেটে গুঁজে ক্যাম্পাসে এলাম। জলফড়িং এর মধ্যেই দুইবার ফোন দিয়েছে। সমীর দা’র চায়ের দোকানে। কি না কি দরকার আছে। সারপ্রাইজ আছে। আজ তো সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা আমার। পৌঁছে দেখি জলফড়িং আগেই এসেছে। আমাকে দেখেই হাসিমুখে এগিয়ে এলো।

’ফিরোজ ভাই, ওর নাম স্বপ্নীল।’ ওর সাথেই বসেছিল ছেলেটি। পরিচয় দিতেই উঠে হাত এগিয়ে দিল।

এই সারপ্রাইজের কথাই বলেছিলাম।

’ও চিটাগাং ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। ইংরেজি, থার্ড ইয়ার। আমাদের একই গ্রামে বাড়ি। পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। আপনার কথা বলাতে খুব দেখা করতে চাইছিল।’

জানো, আমার নাম ফিরোজ ভাই কি রেখেছে?

’কি?’

’জলফড়িং। সুন্দর না নামটা?’

’হু।’

স্বপ্নীলের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা হলো। যাওয়ার সময় বলে গেল, ভাই মৌমিতাকে একটু দেখবেন। আপনাকে খুব বিশ্বাস করে।
ওদের বিদায় দিয়ে চলে আসি। স্বপ্নীলের সাথে মৌমিতাকে বেশ মানিয়েছে। আমার সারপ্রাইজটা তোলা থাক। মৌমিতার কথা ভাবতে ভাবতে দেখি দু’চোখ থেকে দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়েছে। আমি তাড়াতাড়ি মুছে ফেলি।

 টিটি/

Header Ad
Header Ad

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’

ছবি: সংগৃহীত

খুলনার ময়লাপোতা এলাকায় ‘শেখ বাড়ি’ নামে পরিচিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র আজ (বুধবার) রাতে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের আহ্বানে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা সেখানে জড়ো হয়ে বাড়িটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং সিটি করপোরেশনের দুটি বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এর আগে গত ৪ আগস্ট ‘শেখ বাড়ি’তে প্রথম দফায় আগুন লাগানো হয়। সেদিন বাড়িটি খালি থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর আবারও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। একসময় যেখান থেকে খুলনা অঞ্চলের আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো, আজ সেটির অস্তিত্ব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো।

প্রসঙ্গত, ‘শেখ বাড়ি’ ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচার মালিকানাধীন। এ বাড়িতে তাঁর চাচাতো ভাই, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সোহেল উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন পরিবারের সদস্য বসবাস করতেন। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এ বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা ছিল।

বুলডোজার চালানোর সময় ছাত্র-জনতার বিপুল উচ্ছ্বাস লক্ষ করা যায়। তাঁদের দাবি, বৈষম্যমূলক রাজনৈতিক শাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল এই বাড়ি, তাই এটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য।

Header Ad
Header Ad

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল নেমেছে। আজ বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে, সন্ধ্যা ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হয়। তারা স্লোগান দিতে দিতে জাদুঘরের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ জাদুঘরের বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করে।

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার ঘোষণার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণের বিরোধিতা করে এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২' নামে একটি কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে, বুলডোজার ছাড়াই তারা নিজ হাতে ভাঙচুর চালায়।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের থামাতে ব্যর্থ হয়। বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত, যেখানে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার আগে বসবাস করতেন।

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা
আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব