শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

সন্ধ্যার পর বের হলাম খান এল খলিলি বাজারের উদ্দেশ্যে। আল মাআদি থেকে পঁচিশ-তিরিশ মিনিটের পথ, পৌঁছাতেই যদি রাত আটটা সাড়ে আটটা বেজে যায় তাহলে যে জমজমাট বাজারের কথা শুনে এসেছি তার দেখা পাবো কি না সে ব্যাপারে আমার একটু সন্দেহ ছিল। রানা ভাই আশ্বস্ত করলেন, রাত যত গভীর হবে কায়রোর আড্ডা ততই জমে উঠবে। আজ গাড়িতে চালকের আসনে সৌরভ। রানা ভাই এবং হেনা ছাড়াও আমাদের সঙ্গে আছেন পাইলট রাজি। খান এল খলিলি বাজারের প্রবেশ পথ বাঁ হাতের দিকে রেখে সৌরভ অনেকটা সামনে থেকে ইউটার্ন নিয়ে পার্কিংয়ের জায়গা খুঁজতে খুঁজতে আবার প্রবেশ পথের কাছে এসে একটা খালি জায়গা পেয়ে গেল। এখানকার গাড়ি রাখার ব্যবস্থাপনা ঢাকার নিউ মার্কেটের কথা মনে করিয়ে দেয়। তেমনি একজন ইজারাদারের লোক কিংবা স্থানীয় মাস্তানের প্রতিনিধি ডানে-বামে সামনে-পেছনে করে গাড়ি পার্ক করতেও সাহায্য করল। আমরা নেমে বিশাল বড় গেট দিয়ে সাড়ে পাঁচ শ বছর আগের বাণিজ্যিক এলাকায় ঢুকে পড়লাম।

সুলতান সালাহউদ্দিনের শাসনকালেই মিসরের ব্যবসা বাণিজ্য ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছিল। দেশে বিদেশে আসা যাওয়ার সময় সওদাগরদের পথের পাশে গড়ে উঠেছিল অস্থায়ী সরাইখানা। আরো শ দুয়েক বছর পরে চতুর্দশ-পঞ্চদশ শতকে মামলুক সুলতানদের আমলে অস্থায়ী সরাইখানাগুলো তুলে এনে আল আযহার মসজিদের পাশের খালি জায়গায় গড়ে তোলা হয় নতুন বাজার ব্যবস্থা, নতুন বাণিজ্য কেন্দ্র। পাথরের তৈরি দ্বিতল ভবনের উপরের তলায় ব্যবসায়ীদের আবাস আর নিচের তলা এবং উঠানে রাখা হতো তাদের মালপত্র। প্রথম মামলুক সুলতান বারকুকের সময়ে সম্পদশালী ব্যবসায়ী যুবরাজ জাহারকাস আল খলিলি এখানে বিশাল এক সরাইখানা গড়ে তোলেন। তার নামেই সম্প্রসারিত বাজার এলাকার নামই হয়ে যায় খান এল খলিলি। এখানে বলে রাখা ভালো, আরবি ভাষায় ‘খান’ অর্থ সরাইখানা বা আবাসিক হোটেল! অর্থাৎ আইয়ুব খান, মোনায়েম খান থেকে শুরু করে শারুখ খান, আমির খান পর্যন্ত খান বংশের সকলেই আসলে একেকটা সরাইখানা! খোদ আরব দেশের ভাষায় যে খান সাহেবদের এমন বেইজ্জতি করা হয়েছে, কায়রোর খান এল খলিলিতে না এলে তা কখনোই জানা হতো না।

বিশাল তোরণের নিচে দিয়ে ভেতরে ঢুকলেও প্রথমে মনে হলো আমরা কী পুরনো ঢাকায় কোনো রাস্তায় ঢুকে পড়েছি! অপ্রশস্ত পথের দুপাশে পুরনো দালান। সড়কজুড়ে তেমন ব্যস্ততা নেই। দোকানগুলোতে বাতি জ্বলছে; কিন্তু আদৌ কোনো বেচা-কেনা চলছে বলে মনে হয় না। যতই সামনে এগোতে থাকি, বাজারের জনসমাগম এবং জৌলুস দুটোই বাড়তে থাকে। প্রথমেই যা দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তা হলো–আট দশজন বয়োবৃদ্ধ মানুষের তুমুল এক আড্ডা। সৌরভ এবং রাজি হাতের বাঁ-পাশের একটা হুক্কা-কলকির দোকানে ঢুকে গেলে রানা ভাই আড্ডাবাজ বৃদ্ধদের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেন। তাদের একজন আমাদের ডেকে বসতে বলেন। যে দুজন বসে ডোমিনো খেলছিলেন তাদের একজন জানতে চান কোন দেশ থেকে এসেছি আমরা। আলাপ পরিচয়ের পরপরই একজন কফি খাবার আমন্ত্রণ জানান। হয়তো আরো কিছুক্ষণ বসলে কফির আমন্ত্রণ রেখেই বেরোনো যেতো। কিন্তু হাতে সময় নেই বলে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ে আমরা একটু এগিয়ে সামনে একটা আলোকোজ্জ্বল দোকানে ঢুকে পড়ি। আসলে দোকানটাই আলোর। সামনে এবং ভেতরে সুদৃশ্য বাতিদান, নকশা কাটা ল্যাম্প শেড, কাচের তৈরি রঙিন টেবল ল্যাম্প সাজানো। জিনস জ্যাকেট পরা হিজাবহীন তরুণী সেলস গার্ল আগ্রহের সঙ্গেই এটা সেটা দেখায়; কিন্তু এসব ভঙুর জিনিস নিয়ে হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ি পৌঁছানো যে সম্ভব নয়, তা তাকে কে বোঝাবে!

খানিকটা সামনে এগিয়ে দাঁড়ালাম আলো ঝলমলে একটা তিন রাস্তার মোড়ে। মাঝখানে ছোট্ট সড়ক দ্বীপে গোটা দুই খেজুর গাছের নিচে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে চলছে চায়ের আড্ডা। একদিকে বড় একটা রেস্টুরেন্টের গায়ে আরবিতে লেখা কোকাকোলা পেপসির বড় বড় হোর্ডিং। এ পথে এমনিতে যানবাহন চলাচল নিষেধ, তবে ছোট ছোট চার চাকা এবং তিন চাকার ডেলিভারি ভ্যান চলাচলে কোনো মানা নেই। আর মোটর সাইকেল আরোহিদের যাতায়াত বোধহয় সর্বত্র অবাধ। একটু এগিয়ে একটা অলঙ্কারের দোকানে রূপা কিংবা ব্রোঞ্জের মতো ধাতবে বসানো বিচিত্র রঙ রূপ আকৃতির পাথরের অলঙ্কার দেখে চোখ ফেরানো যায় না। রানা ভাই এখান থেকে বেশ কয়েকটা পাথর বসানো আংটি লকেট কিনে ফেললেন।

জনাকীর্ণ গলিপথ, ব্যস্ত রেস্তোরাঁ, মোড়ে মোড়ে মসজিদ আর পথের দুপাশে অগণিত সম্ভারে সাজানো খান এল খলিলি বাজার। এক একটি গলিতে পায়ে চলার পথ ধরে হাঁটতে থাকলে হাজারো পণ্যের চোখ ধাঁধানো প্রদর্শনী যে কোনো বাজার বিলাসী মানুষকে বিভ্রান্ত করবেই। এখানে যা পাওয়া যায় না তেমন কিছু বোধহয় শুধু কায়রো বা মিসরে নয়, এশিয়া বা আফ্রিকার কোনো বাজারেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। রূপার তৈরি ঝকঝকে পানপাত্র, স্টেইন্ড গ্লাসের নানা রকম বাতি, হাতে তৈরি সুদৃশ্য বিভিন্ন সামগ্রী। সোনা রূপা তামা এবং পাথরের অলঙ্কার কিংবা মশলাপাতি, আগরবাতি, ধুপ-ধুনা এবং সুগন্ধি আতর আর তৈজসপত্র, বাসন কোসন, সিরামিক সামগ্রীর বিপুল সমাবেশ সারাদিন ধরে ঘুরেও দেখে শেষ করা সম্ভব নয়।

বাজার জুড়ে প্রত্যেক মহল্লায়, প্রতিটি রাস্তার মোড়েই রয়েছে এক একটি মসজিদ। মসজিদগুলোর খোদাই করা কাঠের দরজা, জাফরি কাটা জানালা, কারুকাজ করা খিলান মিহরাব এবং প্রায় একই ধরনের স্থাপত্যের দীর্ঘ এক বা একাধিক মিনার। রাতের প্রতিটি মিনারে বা গম্বুজে রঙিন আলো ফেলে সৃষ্টি করা হয়েছে চমৎকার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। এক জায়গায় এসে দুটি বিভক্ত পথের মাঝখানের একটি মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা একই সঙ্গে তিনটি মসজিদের সৌন্দর্য দেখি কিছুক্ষণ। খান এল খলিলি বাজারের বিভিন্ন গলিতে মসজিদের সংখ্যা ডজনখানেকের কম নয়।

রানা ভাইকে পেছনে ফেলে আর একটু এগিয়ে সৌরভ একটা সরবতের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে গেল। তাজা ফলের রস নয়, বরং শুকনো ফলের নির্যাস থেকে তৈরি পানীয় এদের বৈশিষ্ট্য। আমরা গ্লাস হাতে নিয়ে চেখে দেখার আগে তেতুলের শরবত তৈরির কলা-কৌশল দেখলাম। পরিবেশিত শরবত কুশলী শরবতওয়ালার হাতের কারুকাজ এবং মুখের কথার মতো সুস্বাদু না হলেও তেমন সমস্যা ছিল না; কিন্তু হেনা এক চুমুক মুখে দিয়েই বলল, ‘আরশোলার গন্ধ পাচ্ছি। হয় তেতুল কিংবা গ্লাসের উপর আরশোলা হেঁটে গেছে।’ তার ঘ্রাণশক্তি বেশি, আমি কিন্তু কিছুই বুঝতে পারিনি। গ্লাসে শেষ চুমুক দিয়ে বললাম, ‘অতিকায় ডাইনোসোর বিলুপ্ত হয়ে গেলেও হাজার বছর ধরে তেলেপোকা ঠিকই টিকে আছে। অতএব শ তিনেক বছরের পুরনো বাজারে আরশোলা থাকতেই পারে।’

আড়াই কিংবা তিন শ বছরের পুরনো রেস্তোরাঁ বা ক্যাফে ছড়িয়ে আছে বাজারের সর্বত্রই। আমরা একটা জনবহুল চওড়া রাস্তা থেকে খিলানযুক্ত প্রবেশ পথ পেরিয়ে এবং কয়েক ধাপ সিঁড়ি ভেঙে ক্রমেই আরো সংকীর্ণ অথচ লোকে লোকারণ্য পথে হাঁটতে থাকি। এখানে দুপাশে কাপড় চোপড়, তৈরি পোশাক, বোরকা-হিজাব, বিছানার চাদর, কুশন কভার এবং কার্পেটের দোকান। রেস্তোরাঁগুলোর বাইরে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে চলছে জমজামাট আড্ডা এবং ডোমিনো খেলা। কোথাও কোথাও গিটার বা দলসিমার বাজিয়ে চলছে একক বা মিলিত কণ্ঠে গান এবং তার সঙ্গে মহা হৈ চৈ! আপাদমস্তক বোরকায় ঢাকা, কিংবা হিজাব পরা নারীরা আড্ডায় পিছিয়ে আছে বলে মনে হয় না। তাদের ডোমিনো খেলতে বা হৈ হৈ করে আড্ডা দিতে দেখিনি, কিন্তু চার পাঁচজন এক সঙ্গে বসে দিব্যি ‘শিশা’ নামে পরিচিত নলওয়ালা হুঁকা টানছে। এতে মসজিদ ভারাক্রান্ত খান এল খলিলি কিংবা ঈজিপশিয়ান ইসলামের কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি হয়েছে বলেও মনে হয় না। সরু গলি পথে হাঁতে হাঁটতে যেখানে এক জায়গায় টেবিল ঘিরে পাঁচ সাতজনের একটা দল বেহালা বাজিয়ে গান গাইছেন আর আমি ভাবছি এখানে মিউজিকসহ ভিডিও রেকর্ড করতে পারলে ভালো হতো, তখনই সৌরভ বললো এই সেই বিখ্যাত এল ফিসাবি। নাগিব মাহফুজের ক্যাফে!

এল ফিসাবি যাত্রা শুরু করেছিল এখন থেকে সোয়া দুই শ বছর আগে ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে। আসবাবপত্র বা পরিবেশন রীতি কিছুটা বদলে গেলেও পুরনো হলদে রঙের দেয়াল, ছোট ছোট টেবিল এবং উঁচু সিলিং থেকে ঝোলানো বাতি দেখে মনে হয় প্রাচীন এই রেস্তোরাঁর আসলে তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। দুই শতাব্দীর বেশি সময় ধরে মিসরের কবি সাহিত্যিক, শিল্পী, সঙ্গীতজ্ঞ এবং বুদ্ধিজীবীদের নিয়মিত সমাবেশের এই জায়গাটি সাধারণ মানুষের কাছে কেবলই একটি চা কফির দোকান হলেও প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এই অপরিসর রেস্তোরাঁ একটি অন্তরঙ্গ মিলনক্ষেত্র। সন্ধ্যার এ সময়টা বাইরে ভেতরে প্রায় পুরো ক্যাফেতেই কোনো আসন খালি নেই। তারপরেও আমরা কেমন করে যেনো দুটো কাছাকাছি টেবিলে পাঁচজনই বসার জায়গা পেয়ে গেলাম। সৌরভ এখানকার বিখ্যাত চায়ের কথা বলে আরবিতে কিছু ইংরেজি মিশিয়ে অর্ডার দেবার পরে আমি প্রথমেই নোবেল বিজয়ী মিসরীয় লেখক নাগিব মাহফুজের স্মৃতি জড়িত সংরক্ষিত কক্ষটি দেখতে যাই।

শুনেছি নাগিব তাঁর কায়রো ট্রিলজির অনেকটাই এল ফিসাবির এই কক্ষে বসেই লিখেছিলেন। অপরিসর ঘরটির একদিকে দেয়ালে বিশাল ফ্রেমে বাধানো আয়না, বিপরীত দিকে কাঠের কারুকাজ করা দেয়াল এবং তাকে সাদা কালো বা রঙিন ছবি। এসব ছবিতে নাগিব মাহফুজের সঙ্গে বিভিন্ন জনের যুগল বা দলগত উপস্থিতি। মাথার উপরে ঝুলছে পুরনো আমলের নকশা কাটা কাচের মাঝারি ধরনের ঝাড় বাতি। প্রবেশ পথের বিপরীত দিকের দেয়ালের দুদিকে দুটি ছোট আলমারি বা তাকের মতো কিছু একটা ছাড়াও কতগুলো বাধানো ছবির নিচে ঝুলছে আরবি ও ইংরেজিতে লেখা ‘এল ফিসাবি’। এখানেও নাগিব মাহফুজের একক কোনো আলোকচিত্র নেই। একটা তাকের উপরে কতগুলো জায়নামাজ স্তূপ করে রাখা। বিশ্বখ্যাত নোবেল বিজয়ী লেখকের স্মৃতিধন্য পুরো ঘরটা অগোছালো এবং খুব একটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নও বলা যাবে না। ‘এল ফিসাবি’র প্রতিষ্ঠাতার সপ্তম প্রজন্ম আকরাম আল ফিসাবি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমরা নতুন করে সাজাতে চাই না, কারণ আমরা রেস্তোরাঁ না, একটা ঐতিহ্য সংরক্ষণ করছি। নিয়মিত যারা এখানে আসেন, তারাও চান এটি যেমন আছে তেমনই থাকুক।’ আকরাম সাহেবের কথায় হয়তো যুক্তি আছে; কিন্তু তার মানে এ নয় যে, কিছুটা সাজিয়ে-গুছিয়ে সাফ সুতরো রাখলেই ঐতিহ্য খসে পড়বে!

বাইরে আড্ডা থেকে বেহালার সঙ্গে জোরালো কণ্ঠ সঙ্গীতের আওয়াজ ভেসে আসে। আমি নাগিব মাহফুজের কক্ষ থেকে বেরিয়ে দ্রুত বেহালাবাদক এবং তার দলের ছবি তুলতে যাই। বাইরে বসলেও এই আড্ডাটা ঘিরে রয়েছে নকশা কাটা কাঠের বেষ্টনী। ছবি তোলার ব্যাপারে আমার একটু দ্বিধা ছিল, কেউ যদি আপত্তি করে! কিন্তু ইশারায় ক্যামেরা দেখাবার পরে দুজন উঠে দাঁড়িয়ে মাথার উপরে দুই হাত তুলে গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন শুরু করলেন। ছবি তুলে ফিরে এসে দেখলাম গাঢ় নীল টি-শার্ট পরা বয়সী পরিবেশক ইতিমধ্যেই টেবিলে চা নামিয়ে দিয়ে গেছে। পুদিনা পাতা দেওয়া মিন্ট-টি এবং চায়ের মধ্যে সেদ্ধ ছোলা দেয়া বিশেষ ধরনের ভেষজ চা। ছোট ছোট স্বচ্ছ কাপে পরিবেশিত চা থেকে চামচ দিয়ে ছোলা তুলে খাবার ব্যবস্থা আছে।

ছোলা-চা খেতে খেতেই একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম–এখানে রেস্তোরাঁ বা কফিশপের ভেতরে ফেরিওয়ালা অথবা কোনো সাহায্য প্রার্থী অবাধে ঢুকে পড়তে পড়তে পারে। প্রথমে ক্যালিগ্রাফি করা রুমাল নিয়ে একজন এবং তারপরে এলেন তসবিহর ফেরিওয়ালি। দুজন বিক্রেতাকে ফিরিয়ে দিলেও শেষে শিশু সন্তান কোলে কাঁধে ব্যাগ ঝোলানো মেরুন রঙের বোরকা পরিহিতা সাহায্য প্রার্থীকে রানা ভাই খালি হাতে ফেরাতে পারলেন না।

চা শেষ করে আরও কিছুক্ষণ বসে আমরা যখন বেরোতে যাব, সেই সময় আমাদের জানালার ঠিক বাইরে নতুন করে আরেকটা আড্ডা শুরু হলো। এবার গিটার হাতে কয়েকজন জন তরুণ শুরু করলেন সমবেত কণ্ঠে জমাট আরবি গান। গানের শেষটা না শুনে শতবর্ষের বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা, রাজনৈতিক বিতর্ক ও লেখক কবিদের অন্তরঙ্গ কথপোকথনের কেন্দ্র এবং নিঃসঙ্গ লেখকের চেয়ার টেবিল পেছনে ফেলে আমরা সরু গলিপথ ধরে বাইরে বেরিয়ে এলাম।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে এবার জুটি বাধলেন বাংলাদেশের তারকা অভিনেত্রী আফসানা মিমি। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তর জীবনকাহিনি নিয়ে এই সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মানসমুকুল পাল।

জানা গেছে, হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাসকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানাবেন নির্মাতা মানসমুকুল পাল। আগামীতে সেই সিনেমাতেই দেখা যাবে মিঠুনকে। শোনা যাচ্ছে, অভিনেতার বিপরীতে দেখা যেতে পারে বাংলাদেশি অভিনেত্রী আফসানা মিমিকে। যদিও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি নির্মাতা। তবে ভারতের জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই পরিচালক চিত্রনাট্য লেখার আগে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন।

মূলত সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার আগে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসে থাকা জায়গাগুলো নিজে ঘুরে দেখতে চান মানসমুকুল। ভারতীয় গণমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করছি তাতে বাংলাদেশের একাধিক জায়গার উল্লেখ রয়েছে।

তাই ঢাকা, কিশোরগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার কথা আছে। সেই জায়গাগুলো নিজে দেখলে উপলব্ধি থাকবে, আর তাতে চিত্রনাট্য লেখার কাজও সহজ হবে।

শুধু জায়গা পরিদর্শন নয়, বাংলাদেশে এসে অভিনেত্রী আফসানা মিমির সঙ্গেও দেখা করবেন মানসমুকুল। তিনি এ-ও জানান, সিনেমার অধিকাংশ শুটিং বাংলাদেশে হবে। কিন্তু এখনই নয়। বর্তমানে মানসমুকুলের হাতে ৩টি সিনেমার কাজ রয়েছে। সেসব চলচ্চিত্র শেষ করে তবেই তিনি এই সিনেমার কাজ শুরু করবেন।

Header Ad

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যেতে নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ২ বছর আগে সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে, আরেকজন টেনে নিয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে, জনগণ তবেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এর ফলে সংসদের যারা জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে আসবে, তারা সংসদে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায়। সকল সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আশপাশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। যদি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা যায়, তবেই মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দিবে, অন্যথায় দ্বিতীয়বার ভাববে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান