রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

সন্ধ্যার পর বের হলাম খান এল খলিলি বাজারের উদ্দেশ্যে। আল মাআদি থেকে পঁচিশ-তিরিশ মিনিটের পথ, পৌঁছাতেই যদি রাত আটটা সাড়ে আটটা বেজে যায় তাহলে যে জমজমাট বাজারের কথা শুনে এসেছি তার দেখা পাবো কি না সে ব্যাপারে আমার একটু সন্দেহ ছিল। রানা ভাই আশ্বস্ত করলেন, রাত যত গভীর হবে কায়রোর আড্ডা ততই জমে উঠবে। আজ গাড়িতে চালকের আসনে সৌরভ। রানা ভাই এবং হেনা ছাড়াও আমাদের সঙ্গে আছেন পাইলট রাজি। খান এল খলিলি বাজারের প্রবেশ পথ বাঁ হাতের দিকে রেখে সৌরভ অনেকটা সামনে থেকে ইউটার্ন নিয়ে পার্কিংয়ের জায়গা খুঁজতে খুঁজতে আবার প্রবেশ পথের কাছে এসে একটা খালি জায়গা পেয়ে গেল। এখানকার গাড়ি রাখার ব্যবস্থাপনা ঢাকার নিউ মার্কেটের কথা মনে করিয়ে দেয়। তেমনি একজন ইজারাদারের লোক কিংবা স্থানীয় মাস্তানের প্রতিনিধি ডানে-বামে সামনে-পেছনে করে গাড়ি পার্ক করতেও সাহায্য করল। আমরা নেমে বিশাল বড় গেট দিয়ে সাড়ে পাঁচ শ বছর আগের বাণিজ্যিক এলাকায় ঢুকে পড়লাম।

সুলতান সালাহউদ্দিনের শাসনকালেই মিসরের ব্যবসা বাণিজ্য ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছিল। দেশে বিদেশে আসা যাওয়ার সময় সওদাগরদের পথের পাশে গড়ে উঠেছিল অস্থায়ী সরাইখানা। আরো শ দুয়েক বছর পরে চতুর্দশ-পঞ্চদশ শতকে মামলুক সুলতানদের আমলে অস্থায়ী সরাইখানাগুলো তুলে এনে আল আযহার মসজিদের পাশের খালি জায়গায় গড়ে তোলা হয় নতুন বাজার ব্যবস্থা, নতুন বাণিজ্য কেন্দ্র। পাথরের তৈরি দ্বিতল ভবনের উপরের তলায় ব্যবসায়ীদের আবাস আর নিচের তলা এবং উঠানে রাখা হতো তাদের মালপত্র। প্রথম মামলুক সুলতান বারকুকের সময়ে সম্পদশালী ব্যবসায়ী যুবরাজ জাহারকাস আল খলিলি এখানে বিশাল এক সরাইখানা গড়ে তোলেন। তার নামেই সম্প্রসারিত বাজার এলাকার নামই হয়ে যায় খান এল খলিলি। এখানে বলে রাখা ভালো, আরবি ভাষায় ‘খান’ অর্থ সরাইখানা বা আবাসিক হোটেল! অর্থাৎ আইয়ুব খান, মোনায়েম খান থেকে শুরু করে শারুখ খান, আমির খান পর্যন্ত খান বংশের সকলেই আসলে একেকটা সরাইখানা! খোদ আরব দেশের ভাষায় যে খান সাহেবদের এমন বেইজ্জতি করা হয়েছে, কায়রোর খান এল খলিলিতে না এলে তা কখনোই জানা হতো না।

বিশাল তোরণের নিচে দিয়ে ভেতরে ঢুকলেও প্রথমে মনে হলো আমরা কী পুরনো ঢাকায় কোনো রাস্তায় ঢুকে পড়েছি! অপ্রশস্ত পথের দুপাশে পুরনো দালান। সড়কজুড়ে তেমন ব্যস্ততা নেই। দোকানগুলোতে বাতি জ্বলছে; কিন্তু আদৌ কোনো বেচা-কেনা চলছে বলে মনে হয় না। যতই সামনে এগোতে থাকি, বাজারের জনসমাগম এবং জৌলুস দুটোই বাড়তে থাকে। প্রথমেই যা দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তা হলো–আট দশজন বয়োবৃদ্ধ মানুষের তুমুল এক আড্ডা। সৌরভ এবং রাজি হাতের বাঁ-পাশের একটা হুক্কা-কলকির দোকানে ঢুকে গেলে রানা ভাই আড্ডাবাজ বৃদ্ধদের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেন। তাদের একজন আমাদের ডেকে বসতে বলেন। যে দুজন বসে ডোমিনো খেলছিলেন তাদের একজন জানতে চান কোন দেশ থেকে এসেছি আমরা। আলাপ পরিচয়ের পরপরই একজন কফি খাবার আমন্ত্রণ জানান। হয়তো আরো কিছুক্ষণ বসলে কফির আমন্ত্রণ রেখেই বেরোনো যেতো। কিন্তু হাতে সময় নেই বলে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ে আমরা একটু এগিয়ে সামনে একটা আলোকোজ্জ্বল দোকানে ঢুকে পড়ি। আসলে দোকানটাই আলোর। সামনে এবং ভেতরে সুদৃশ্য বাতিদান, নকশা কাটা ল্যাম্প শেড, কাচের তৈরি রঙিন টেবল ল্যাম্প সাজানো। জিনস জ্যাকেট পরা হিজাবহীন তরুণী সেলস গার্ল আগ্রহের সঙ্গেই এটা সেটা দেখায়; কিন্তু এসব ভঙুর জিনিস নিয়ে হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ি পৌঁছানো যে সম্ভব নয়, তা তাকে কে বোঝাবে!

খানিকটা সামনে এগিয়ে দাঁড়ালাম আলো ঝলমলে একটা তিন রাস্তার মোড়ে। মাঝখানে ছোট্ট সড়ক দ্বীপে গোটা দুই খেজুর গাছের নিচে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে চলছে চায়ের আড্ডা। একদিকে বড় একটা রেস্টুরেন্টের গায়ে আরবিতে লেখা কোকাকোলা পেপসির বড় বড় হোর্ডিং। এ পথে এমনিতে যানবাহন চলাচল নিষেধ, তবে ছোট ছোট চার চাকা এবং তিন চাকার ডেলিভারি ভ্যান চলাচলে কোনো মানা নেই। আর মোটর সাইকেল আরোহিদের যাতায়াত বোধহয় সর্বত্র অবাধ। একটু এগিয়ে একটা অলঙ্কারের দোকানে রূপা কিংবা ব্রোঞ্জের মতো ধাতবে বসানো বিচিত্র রঙ রূপ আকৃতির পাথরের অলঙ্কার দেখে চোখ ফেরানো যায় না। রানা ভাই এখান থেকে বেশ কয়েকটা পাথর বসানো আংটি লকেট কিনে ফেললেন।

জনাকীর্ণ গলিপথ, ব্যস্ত রেস্তোরাঁ, মোড়ে মোড়ে মসজিদ আর পথের দুপাশে অগণিত সম্ভারে সাজানো খান এল খলিলি বাজার। এক একটি গলিতে পায়ে চলার পথ ধরে হাঁটতে থাকলে হাজারো পণ্যের চোখ ধাঁধানো প্রদর্শনী যে কোনো বাজার বিলাসী মানুষকে বিভ্রান্ত করবেই। এখানে যা পাওয়া যায় না তেমন কিছু বোধহয় শুধু কায়রো বা মিসরে নয়, এশিয়া বা আফ্রিকার কোনো বাজারেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। রূপার তৈরি ঝকঝকে পানপাত্র, স্টেইন্ড গ্লাসের নানা রকম বাতি, হাতে তৈরি সুদৃশ্য বিভিন্ন সামগ্রী। সোনা রূপা তামা এবং পাথরের অলঙ্কার কিংবা মশলাপাতি, আগরবাতি, ধুপ-ধুনা এবং সুগন্ধি আতর আর তৈজসপত্র, বাসন কোসন, সিরামিক সামগ্রীর বিপুল সমাবেশ সারাদিন ধরে ঘুরেও দেখে শেষ করা সম্ভব নয়।

বাজার জুড়ে প্রত্যেক মহল্লায়, প্রতিটি রাস্তার মোড়েই রয়েছে এক একটি মসজিদ। মসজিদগুলোর খোদাই করা কাঠের দরজা, জাফরি কাটা জানালা, কারুকাজ করা খিলান মিহরাব এবং প্রায় একই ধরনের স্থাপত্যের দীর্ঘ এক বা একাধিক মিনার। রাতের প্রতিটি মিনারে বা গম্বুজে রঙিন আলো ফেলে সৃষ্টি করা হয়েছে চমৎকার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। এক জায়গায় এসে দুটি বিভক্ত পথের মাঝখানের একটি মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা একই সঙ্গে তিনটি মসজিদের সৌন্দর্য দেখি কিছুক্ষণ। খান এল খলিলি বাজারের বিভিন্ন গলিতে মসজিদের সংখ্যা ডজনখানেকের কম নয়।

রানা ভাইকে পেছনে ফেলে আর একটু এগিয়ে সৌরভ একটা সরবতের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে গেল। তাজা ফলের রস নয়, বরং শুকনো ফলের নির্যাস থেকে তৈরি পানীয় এদের বৈশিষ্ট্য। আমরা গ্লাস হাতে নিয়ে চেখে দেখার আগে তেতুলের শরবত তৈরির কলা-কৌশল দেখলাম। পরিবেশিত শরবত কুশলী শরবতওয়ালার হাতের কারুকাজ এবং মুখের কথার মতো সুস্বাদু না হলেও তেমন সমস্যা ছিল না; কিন্তু হেনা এক চুমুক মুখে দিয়েই বলল, ‘আরশোলার গন্ধ পাচ্ছি। হয় তেতুল কিংবা গ্লাসের উপর আরশোলা হেঁটে গেছে।’ তার ঘ্রাণশক্তি বেশি, আমি কিন্তু কিছুই বুঝতে পারিনি। গ্লাসে শেষ চুমুক দিয়ে বললাম, ‘অতিকায় ডাইনোসোর বিলুপ্ত হয়ে গেলেও হাজার বছর ধরে তেলেপোকা ঠিকই টিকে আছে। অতএব শ তিনেক বছরের পুরনো বাজারে আরশোলা থাকতেই পারে।’

আড়াই কিংবা তিন শ বছরের পুরনো রেস্তোরাঁ বা ক্যাফে ছড়িয়ে আছে বাজারের সর্বত্রই। আমরা একটা জনবহুল চওড়া রাস্তা থেকে খিলানযুক্ত প্রবেশ পথ পেরিয়ে এবং কয়েক ধাপ সিঁড়ি ভেঙে ক্রমেই আরো সংকীর্ণ অথচ লোকে লোকারণ্য পথে হাঁটতে থাকি। এখানে দুপাশে কাপড় চোপড়, তৈরি পোশাক, বোরকা-হিজাব, বিছানার চাদর, কুশন কভার এবং কার্পেটের দোকান। রেস্তোরাঁগুলোর বাইরে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে চলছে জমজামাট আড্ডা এবং ডোমিনো খেলা। কোথাও কোথাও গিটার বা দলসিমার বাজিয়ে চলছে একক বা মিলিত কণ্ঠে গান এবং তার সঙ্গে মহা হৈ চৈ! আপাদমস্তক বোরকায় ঢাকা, কিংবা হিজাব পরা নারীরা আড্ডায় পিছিয়ে আছে বলে মনে হয় না। তাদের ডোমিনো খেলতে বা হৈ হৈ করে আড্ডা দিতে দেখিনি, কিন্তু চার পাঁচজন এক সঙ্গে বসে দিব্যি ‘শিশা’ নামে পরিচিত নলওয়ালা হুঁকা টানছে। এতে মসজিদ ভারাক্রান্ত খান এল খলিলি কিংবা ঈজিপশিয়ান ইসলামের কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি হয়েছে বলেও মনে হয় না। সরু গলি পথে হাঁতে হাঁটতে যেখানে এক জায়গায় টেবিল ঘিরে পাঁচ সাতজনের একটা দল বেহালা বাজিয়ে গান গাইছেন আর আমি ভাবছি এখানে মিউজিকসহ ভিডিও রেকর্ড করতে পারলে ভালো হতো, তখনই সৌরভ বললো এই সেই বিখ্যাত এল ফিসাবি। নাগিব মাহফুজের ক্যাফে!

এল ফিসাবি যাত্রা শুরু করেছিল এখন থেকে সোয়া দুই শ বছর আগে ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে। আসবাবপত্র বা পরিবেশন রীতি কিছুটা বদলে গেলেও পুরনো হলদে রঙের দেয়াল, ছোট ছোট টেবিল এবং উঁচু সিলিং থেকে ঝোলানো বাতি দেখে মনে হয় প্রাচীন এই রেস্তোরাঁর আসলে তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। দুই শতাব্দীর বেশি সময় ধরে মিসরের কবি সাহিত্যিক, শিল্পী, সঙ্গীতজ্ঞ এবং বুদ্ধিজীবীদের নিয়মিত সমাবেশের এই জায়গাটি সাধারণ মানুষের কাছে কেবলই একটি চা কফির দোকান হলেও প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এই অপরিসর রেস্তোরাঁ একটি অন্তরঙ্গ মিলনক্ষেত্র। সন্ধ্যার এ সময়টা বাইরে ভেতরে প্রায় পুরো ক্যাফেতেই কোনো আসন খালি নেই। তারপরেও আমরা কেমন করে যেনো দুটো কাছাকাছি টেবিলে পাঁচজনই বসার জায়গা পেয়ে গেলাম। সৌরভ এখানকার বিখ্যাত চায়ের কথা বলে আরবিতে কিছু ইংরেজি মিশিয়ে অর্ডার দেবার পরে আমি প্রথমেই নোবেল বিজয়ী মিসরীয় লেখক নাগিব মাহফুজের স্মৃতি জড়িত সংরক্ষিত কক্ষটি দেখতে যাই।

শুনেছি নাগিব তাঁর কায়রো ট্রিলজির অনেকটাই এল ফিসাবির এই কক্ষে বসেই লিখেছিলেন। অপরিসর ঘরটির একদিকে দেয়ালে বিশাল ফ্রেমে বাধানো আয়না, বিপরীত দিকে কাঠের কারুকাজ করা দেয়াল এবং তাকে সাদা কালো বা রঙিন ছবি। এসব ছবিতে নাগিব মাহফুজের সঙ্গে বিভিন্ন জনের যুগল বা দলগত উপস্থিতি। মাথার উপরে ঝুলছে পুরনো আমলের নকশা কাটা কাচের মাঝারি ধরনের ঝাড় বাতি। প্রবেশ পথের বিপরীত দিকের দেয়ালের দুদিকে দুটি ছোট আলমারি বা তাকের মতো কিছু একটা ছাড়াও কতগুলো বাধানো ছবির নিচে ঝুলছে আরবি ও ইংরেজিতে লেখা ‘এল ফিসাবি’। এখানেও নাগিব মাহফুজের একক কোনো আলোকচিত্র নেই। একটা তাকের উপরে কতগুলো জায়নামাজ স্তূপ করে রাখা। বিশ্বখ্যাত নোবেল বিজয়ী লেখকের স্মৃতিধন্য পুরো ঘরটা অগোছালো এবং খুব একটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নও বলা যাবে না। ‘এল ফিসাবি’র প্রতিষ্ঠাতার সপ্তম প্রজন্ম আকরাম আল ফিসাবি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমরা নতুন করে সাজাতে চাই না, কারণ আমরা রেস্তোরাঁ না, একটা ঐতিহ্য সংরক্ষণ করছি। নিয়মিত যারা এখানে আসেন, তারাও চান এটি যেমন আছে তেমনই থাকুক।’ আকরাম সাহেবের কথায় হয়তো যুক্তি আছে; কিন্তু তার মানে এ নয় যে, কিছুটা সাজিয়ে-গুছিয়ে সাফ সুতরো রাখলেই ঐতিহ্য খসে পড়বে!

বাইরে আড্ডা থেকে বেহালার সঙ্গে জোরালো কণ্ঠ সঙ্গীতের আওয়াজ ভেসে আসে। আমি নাগিব মাহফুজের কক্ষ থেকে বেরিয়ে দ্রুত বেহালাবাদক এবং তার দলের ছবি তুলতে যাই। বাইরে বসলেও এই আড্ডাটা ঘিরে রয়েছে নকশা কাটা কাঠের বেষ্টনী। ছবি তোলার ব্যাপারে আমার একটু দ্বিধা ছিল, কেউ যদি আপত্তি করে! কিন্তু ইশারায় ক্যামেরা দেখাবার পরে দুজন উঠে দাঁড়িয়ে মাথার উপরে দুই হাত তুলে গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন শুরু করলেন। ছবি তুলে ফিরে এসে দেখলাম গাঢ় নীল টি-শার্ট পরা বয়সী পরিবেশক ইতিমধ্যেই টেবিলে চা নামিয়ে দিয়ে গেছে। পুদিনা পাতা দেওয়া মিন্ট-টি এবং চায়ের মধ্যে সেদ্ধ ছোলা দেয়া বিশেষ ধরনের ভেষজ চা। ছোট ছোট স্বচ্ছ কাপে পরিবেশিত চা থেকে চামচ দিয়ে ছোলা তুলে খাবার ব্যবস্থা আছে।

ছোলা-চা খেতে খেতেই একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম–এখানে রেস্তোরাঁ বা কফিশপের ভেতরে ফেরিওয়ালা অথবা কোনো সাহায্য প্রার্থী অবাধে ঢুকে পড়তে পড়তে পারে। প্রথমে ক্যালিগ্রাফি করা রুমাল নিয়ে একজন এবং তারপরে এলেন তসবিহর ফেরিওয়ালি। দুজন বিক্রেতাকে ফিরিয়ে দিলেও শেষে শিশু সন্তান কোলে কাঁধে ব্যাগ ঝোলানো মেরুন রঙের বোরকা পরিহিতা সাহায্য প্রার্থীকে রানা ভাই খালি হাতে ফেরাতে পারলেন না।

চা শেষ করে আরও কিছুক্ষণ বসে আমরা যখন বেরোতে যাব, সেই সময় আমাদের জানালার ঠিক বাইরে নতুন করে আরেকটা আড্ডা শুরু হলো। এবার গিটার হাতে কয়েকজন জন তরুণ শুরু করলেন সমবেত কণ্ঠে জমাট আরবি গান। গানের শেষটা না শুনে শতবর্ষের বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা, রাজনৈতিক বিতর্ক ও লেখক কবিদের অন্তরঙ্গ কথপোকথনের কেন্দ্র এবং নিঃসঙ্গ লেখকের চেয়ার টেবিল পেছনে ফেলে আমরা সরু গলিপথ ধরে বাইরে বেরিয়ে এলাম।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। ওই দিন ৪১৯ জন সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

চলতি বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

প্রথম ফ্লাইটটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। হজ ব্যবস্থাপনাকে নির্বিঘ্ন করতে সরকারি পর্যায়ে ১১২ জন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ হাজার ৭৪৩ জন গাইড দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৭০ জন মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহায়তা করবেন।

হজযাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি এয়ারলাইনস। ৩১ মে পর্যন্ত হজের ফ্লাইট চলবে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।

পবিত্র হজ উপলক্ষে এ বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালনা করবে ১১৮টি, সাউদিয়া ৮০টি এবং নাস এয়ারলাইনস ৩৪টি ফ্লাইট।

হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা, যা ৯ জিলহজ মসজিদে নামিরা থেকে প্রদান করা হয়। এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে হজের খুতবা, এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হবে ২০টি ভাষায়। 

যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ফরাসি (ফ্রেঞ্চ), মালয়, উর্দু, ফারসি, চাইনিজ, তুর্কি, রাশিয়ান, হাউসা, ইংরেজি, সুইডিশ, স্প্যানিশ, সোয়াহিলি, আমহারিক, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, বসনিয়ান, মালায়লাম, ফিলিপিনো এবং জার্মান। 

উল্লেখ্য, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহিদ রাজিতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। আহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে হরমুজগান প্রদেশের রাজধানী বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত এই বন্দরে ঘটে বিপর্যয়টি।

ইরানের জরুরি সেবাবিভাগের মুখপাত্র বাবাক ইয়াকতেপেরেস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বার্তাসংস্থা আইএলএনএ-কে জানান, একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকেই এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তবে সেগুলোতে কান না দিয়ে সরকারি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।”

সরকারি বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ছোট পরিসরে আগুন লাগার পর তা দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম এবং পরিবেশে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের তীব্রতা দ্রুত বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই প্রবল ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনারগুলোর মধ্যে সালফারজাতীয় রাসায়নিক থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও কনটেইনারগুলোর সুনির্দিষ্ট উপাদান এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, শহিদ রাজি বন্দরটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দরগুলোর একটি। এটি হরমুজ প্রণালির উত্তরে, বন্দর আব্বাস থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এই প্রণালি দিয়েই বিশ্বের মোট উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়, ফলে এ বন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার