ধারাবাহিক ভ্রমণ, পর্ব: ৩
প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা
বেলা বাড়ার সাথে সাথে গিজার পিরামিড ঘিরে পর্যটকের ভিড় বাড়তে থাকে। পার্কিংয়ে জমতে থাকে বিশাল টুরিস্ট বাসের সারি। যন্ত্রচালিত বাস এবং ছোট ছোট গাড়ির ফাঁকে অশ্বচালিত বাহনের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। গিজায় মানুষ গিজগিজ করতে শুরু করলে পিরামিডের এবড়ো থেবড়ো পাথুরে দেয়াল থেকে অতি সাবধানে নেমে আসেন রানা ভাই এবং হেনা।
একটু বেখেয়াল হয়ে পিরামিডের শরীর থেকে গড়িয়ে পড়লে হাড্ডি গুঁড়ো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হতে দেরি হবে না। ওরা দুজন নেমে আসার পর সিলভিয়াকে অনুসরণ করে আমরা আবার কাঠের পাটাতন ধরে হেঁটে একটি তিন রাস্তার মোড়ে এসে দাঁড়ালাম। এখানে দাঁড়িয়ে গিজার গ্রেট মিরামিড পুরোটা দেখা যায়। সামনের পিচঢালা পথ ধরে বিরতিহীনভাবে চলছে মাইক্রোবাস, ট্যাক্সি এবং ঘোড়ার গাড়ি। রাস্তার নিচে বালিতে ‘টুরিস্ট পুলিশ’ লেখা সাদা একটা জিপ দাঁড়িয়ে থাকলেও আশপাশে কোনো পুলিশ দেখা গেল না। হয়তো তারা কাছেই কোথাও আড্ডা দিচ্ছেন।
আমরা যখন তে-মাথায় ঘুরে ফিরে ছবি তুলছি, তখন পাশ দিয়ে যাবার সময় টাঙ্গাওয়ালা গতি কমিয়ে কী যেন জিজ্ঞেস করে গেল, উত্তর দিল সিলভিয়া। বুঝলাম, কাছাকাছি অন্য কোনো গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার আহবান ছিল তার, কিন্তু সিলভিয়ার কথা শুনে হাতের চাবুকে শব্দ তুলে ঘোড়া হাঁকিয়ে চলে গেল। ঠিক এই সময় গাড়িসহ এসে হাজির হলো বাসাম। গাইড জানালো, এবারে আমরা যাচ্ছি প্যানোরমা পয়েন্টে। ক্রমেই গিজার গ্রেট পিরামিড থেকে দূরে সরে যাচ্ছি আমরা এবং যতো দূরে যাই ততোই পিরামিডের নান্দনিক সৌন্দর্য দৃশ্যমান হয়ে উঠতে থাকে। সিলভিয়া বলেছিল বেশ কয়েকটি নির্বাচিত জায়গা থেকে পিরামিড সবচেয়ে সুন্দর দেখায়। স্বাভাবিকভাবেই সেইসব স্পট যথেষ্ট বিস্তৃত হলেও পর্যটক বা ছবি শিকারিদের কারণে দাঁড়াবার জায়গা পাওয়াই কঠিন। আমাদের অবশ্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হলো না। আট দশজনের একটা দল জায়গা ছাড়ার পরে দূরে থেকে দেখা হলো দূরের পিরামিড।
বিস্তৃত মরুভূমির বালিতে সকালের ঝলমলে রোদে অনেক দূরের তিনটি পিরামিড তাদের বিস্মৃত প্রায় ইতিহাসের আদিম গৌরব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আসলে যে কোনো বড় জিনিস, প্রকৃতির বিশাল বিন্যাস, কোনো স্থাপনা এমনকি কোনো বড় মাপের মানুষকে নির্ধারিত দূরত্ব থেকেই সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। দূরের দৃষ্টি নন্দন পিরামিড দেখে আমার ভ্রাম্যমাণ পাদাবলী থেকে কয়েকটি লাইন মনে পড়ে যায়। ‘দূরের পাহাড় জুড়ে কে যেনো বিছিয়ে রাখে সবুজ মখমল/কাছে গেলে কাঁটা বেঁধে–চোখে পড়ে গুল্ম লতা মাটি ও পাথর/পাহাড় দূরেই ভালো–কাছে এসে তাই আমি বাঁধি নাই ঘর।’ পাহাড়ের মতো পিরামিডও দূর থেকে দেখাই ভালো। স্থাপত্যশিল্পের এই অনন্য নিদর্শন দেখতে হলে তার কাছে যাওয়ার, অমসৃণ পাথর ছুঁয়ে দেখার, শরীর বেয়ে আরোহণ করার দরকার নেই।
প্যানোরমা পয়েন্টে পিরামিডের পটভূমিতে আমরা বেশ কিছুক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে বসে যৌথ এবং এককভাবে ছবি তুললাম। দেখা গেল স্থিরচিত্রে স্থায়ী হবার বাসনায় কেউ কারো চেয়ে কম নয়। আমাদের সাথে সিলভিয়া এবং বাসামও ছবি তুলতে দাঁড়িয়ে গেল। প্যানোরমার ভিউয়িং পয়েন্টের ঠিক বিপরীত দিকে অস্থায়ী চালাঘর তুলে স্মারক সামগ্রীর বেচা-কেনার বাজার বসেছে। যেখানে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আসা যাওয়া, সেখানে সেদেশের জিনিসপত্র এবং স্যুভেনিয়ারের বাণিজ্য থাকবে এবং সেটাই স্বাভাবিক। নীল, ধূসর কিংবা সাদা পাথরের পিরামিডের সেট, দ্বিতীয় রামসেস এবং নেফারতিতি বা অন্য কোনো ফারাও সম্রাটের ধাতব ও সিরামিকের ছোট ছোট মূর্তি, প্যাপিরাসের পাতায় স্থানীয় শিল্পীদের হাতে আঁকা প্রত্নতাত্ত্বিক মিসরের গুহাচিত্রের নানা দৃশ্যের রঙিন ছবির পসরা সাজানো আকর্ষণীয় সুভেনিয়ার সংগ্রহের প্রলোভন সযত্নে এড়িয়ে আবার গাড়িতে উঠে বসি। এবারে গন্তব্য মরু প্রান্তরে ছড়িয়ে থাকা ওপেন এয়ার এক্সিবিশন।
গিজার পিরামিড থেকে বেশখানিটা দূরে দূরে বিস্তৃত মালভূমি এলাকাজুড়ে এই প্রথমবারের মতো একটি উন্মুক্ত শিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। মিসরের পর্যটন ও পুরাতত্ত্ব মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে শিল্প ও ঐতিহ্যের মিসরীয় সংস্থা ‘আর্ট ডি ইজিপ্ট’। যথারীতি ইওনেস্কোও তার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বছর খানেকের প্রস্তুতির পর ‘ফর এভার ইজ নাউ’ শিরোনামে মিসরের এই আন্তর্জাতিক ওপেন এয়ার আর্ট এগজিবিশনে স্থান পেয়েছে দেশি বিদেশি দশজন শিল্পী ও ভাস্করের স্থাপনা। আমরা এক একটি শিল্প-স্থাপনা হাতের বামে রেখে সামনে এগোতে থাকি। প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে যেখানে প্রথম যাত্রা বিরতি দিয়েছি সেটি ইতালির শিল্পী লরেঞ্জো কুইনের ভাস্কর্য ‘টুগেদার’। দশটির মধ্যে ছয়টি ভাস্কর্য দেখে ফেলার পরে মনে হয়েছে এটিই আমার দেখা সবচেয়ে ভালো লাগা শিল্পকর্ম। পিরামিডের আকারে যুক্ত করা দুটি হাতের ভেতর দিয়ে অনেক দূরে দৃশ্যমান গিজার তিনটি পিরামিড। স্টেইনলেস স্টিলের তার ব্যবহার করে ৩৬ হাজার পয়েন্টে ওয়েল্ডিং করে জোড়া দিয়ে নয় মাস ধরে তৈরি ভাস্কর্যটি নিঃসন্দেহে একটি সুদৃশ্য শৈল্পিক সৃষ্টি।
এ ছাড়া আমাদের দেখা সেরা কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে মিসরীয় শিল্পী মোয়াতাজ নাসেরের ১৪ মিটার লম্বা নৌকার আকৃতির আকৃতি এবং অনেকগুলো বৈঠাকে আড়াআড়ি সাজিয়ে নিচের ত্রিভুজের ভেতর দিয়ে পিরামিড অবলোকন ‘বারজাখ’। এখানে সামনে থেকে দেখার পরে উল্টো দিক থেকে দেখার জন্যে আমি স্থাপনাটি ঘিরে রাখা রেলিং অতিক্রম করে উন্মুক্ত বালির চত্বরে হাঁটতে থাকি। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কিশোর বয়সী একজন স্বেচ্ছাসেবক এসে বিনয়ের সাথে জানায়, ‘বালির উপরে হাঁটাচলা করা নিষেধ।’ নিষেধাজ্ঞা শিরোধার্য করে আমরা এসে গাড়িতে উঠে পড়ি। সময়ের কারণে সবগুলো স্থাপনা দেখা সম্ভব না হলেও মিসরের শিল্পী মোতাজ নাসেরের ‘বারজাখ’ এবং ইউক্রেনের আলেক্সান্দার পোনোমারেভের ‘ওরোবোরোস’ স্থাপনা দুটিও ভালো লেগেছে, আর সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার বিষয় ছিল এই পুরো পরিকল্পনা।
‘আর্ট ডি ইজিপ্ট’এর প্রতিষ্ঠাতা শিল্পী নাদিন আবদেল গাফ্ফার বলেছেন, এই প্রদর্শনী প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতা ও সমসাময়িক বিশ্বের শিল্প চর্চার এক ঐতিহাসিক মেলবন্ধন। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের মধ্যে সৌহার্দ্য বা অভিজ্ঞতা বিনিময়ই শুধু নয় বরং পৃথিবীর সংকটকালে আমরা সবার কাছে শান্তি মানবতা ও আশার বাণী পৌঁছে দিতে চাই।’ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে, ‘আর্ট ডি ইজিপ্ট’এর প্রতিষ্ঠাতা, পরিচালক, শিল্পী এবং নির্বাহীদের সকলেই নারী। সৌরভ এই প্রদর্শনীর ব্যাপারে আগে থেকে না জানালে এই অভিনব শিল্পকর্ম দেখার বিরল সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতাম এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই আয়োজক এবং শিল্পীদের সাথে ধন্যবাদ সৌরভেরও প্রাপ্য।
সমসাময়িক শিল্পের জগৎ থেকে আমরা আবার সাড়ে চার হাজার বছর আগে ফিরে যাই। হাতের ডান দিকে পিরামিডগুলো রেখে আমাদের লাল গাড়ি গিজা নেক্রোপলিসের গ্রেট স্ফিংসের পথে ছুটতে থকে। চলার পথে পিরামিডের পটভূমিতে প্রতি মুহূর্তে দৃশ্য বদলে যায়। দূরে বালির পাহাড় ডিঙ্গিয়ে একদল উট জোর কদমে ছুটে যাচ্ছে, একটি টাঙ্গার ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছে একটি বিদেশি যুগল, পিরামিডে চূড়া পারস্পেক্টিভের কারসাজিতে পর্যটকের হাতের তালুতে স্পর্শ করিয়ে ছবি তুলছে স্থানীয় ফটোগ্রাফার, কক্সবাজারের সমুদ্র তীরে যেমন রঙিন ছাতার নিচে অগণিত পর্যটক শুয়ে বসে থাকেন, তেমনি পিরামিড পেছনে রেখে প্রান্তর জুড়ে সাদা ছাতার নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সময় কাটাচ্ছে বিলাসী টুরিস্ট। তবে এখানে প্রায় প্রত্যেক ছাতার কাছাকাছি হাঁটু মুড়ে বসে আছে একটা বা দুটো উট।
স্ফিংসের কাছাকাছি ভিউ পয়েন্টে আমরা নেমে পড়লে একটু দূরে রাস্তার উপরেই গাড়ি নিয়ে দাঁড়ায় বাসাম। মানুষের মাথা এবং সিংহের দেহ বিশিষ্ট চুনাপাথরের পৌরাণিক প্রাণি স্ফিংসের নির্মাণকাল সম্পর্কে সঠিক তথ্য না থাকলেও সাধারণ ধারণা ফারাও সম্রাট খুফুর পুত্র খাফরের রাজত্বকালে অর্থাৎ খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দের কাছাকাছি কোনো এক সময় কঠিন শিলার স্তরে নির্মিত হয়েছিল এই বিশাল মূর্তি।
সকালের সূর্য প্রণামের উদ্দেশ্যে স্ফিংসের মুখ পূর্ব দিকে বলে মত দিয়েছেন গবেষকরা। সামনে অথবা ডাইনে বাঁয়ে অনেক দূর পর্যন্ত দাঁড়ালে পেছনে সার্বক্ষণিকভাবে দৃশ্যামান গিজার গ্রেট পিরামিড। সন্ধ্যায় স্ফিংসের মুখোমুখি বসে দর্শকদের জন্য লাইট এ্যান্ড সাউন্ড শোর ব্যবস্থা আছে। সময় করে মাত্র ৪০ ডলারের টিকেট কিনে রাতের রঙিন আলোয় পিরামিড এবং স্ফিংসের সৌন্দর্য ও ইতিহাসের ধারা বিবরণী শোনা যেতো, কিন্তু সময়টাই শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠেনি।
প্রত্নতত্ত্ববিদ পণ্ডিতদের অনেকেই বলে থাকেন স্ফিংসের মুখে ঠিক যেনো খাফরের চেহারা কেটে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। তা তো হতেই পারে। সম্রাট সেকালের সব স্থপতি, পুরকৌশলী, রাজমিস্ত্রি এবং শ্রমিক যোগাড় করে, তাদের খাইয়ে পরিয়ে, হাতে হাতুড়ি ছেনি তুলে দিয়ে নিজের চেহারাই তো ফটিয়ে তুলতে বলবেন। সেই কারণে ২৫৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রাজত্ব শেষ হয়ে গেলেও স্ফিংস দেখতে এসে অন্তত একবার হলেও মহামহিম খাফরের নাম নিতে হচ্ছে। তবে সাম্রাট বাহাদুরের নাকটা কেমন করে যেনো ভেঙে পড়েছে। তবে এটা নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গের মতো কোনো ব্যাপার নিশ্চয়ই নয়। সাড়ে চার হাজার বছর পরে সম্রাটের মুণ্ডু যথাস্থানে আছে এবং সিংহের থাবা ও লেজ যে খসে পড়েনি, এই তো যথেষ্ট।
আমরা ব্যস্ত রাস্তার পাশে স্ফিংসের স্থাপনা ঘিরে গড়ে তোলা পাথরের দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ করেই স্কুলের কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী ছবি তোলার জন্যে হেনাকে ঘিরে ধরল। ছবি তোলার পরে কিছুটা নিচে নেমে ভিন্ন একটা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চেষ্টা করলাম বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এই ভাস্কর্য। স্ফিংসের সামনের প্রান্তর জুড়ে পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, ছবি তুলছে আবার অল্প দু-চারজন আর্ট এগজিবিশনের স্থাপনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পী গিলেসা কোনোলের শিল্পকর্ম ‘ইটারনিটি নাউ’ দেখছেন। এই স্থাপনাটি সম্পর্কে বলা হয়েছে এটি অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সময়হীন মুহূর্তকে মূর্ত করে তুলে সাড়ে চার হাজার বছরের ইতিহাসের সাথে একীভূত হয়ে গেছে। বিবরণীতে যাই লেখা হোক, শিল্পকর্মটির মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝিনি এবং এটি দেখতেও তেমন আহামরি কিছু মনে হয়নি।
আরও অনেকটা পথ হেঁটে সিঁড়ি ভেঙে পুরো স্ফিংস চত্বর না ঘুরে শক্তি এবং সময় বাঁচিয়ে আমার আবার বাসামের গাড়িতে উঠে পড়ি। সাক্কারার পথে গিজা থেকে বেরিয়ে পথের দুপাশে চোখে পড়ে সবুজ গাছপালা কিংবা একটুকরো বাগানে ঘেরা বাড়ি, স্কুল, মসজিদ অথবা দেয়াল দিয়ে ঘেরা কোনো কারখানা। কোথাও কোথাও অসমাপ্ত ভবনের র্নিমাণ কাজ চলছে। তবে বসতবাড়ি কিংবা অন্য যে কোনো দুটি স্থাপনার মাঝখানের খালি জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে পাঁচ সাতটা খেজুর গাছ। পথে ছোট ছোট ফসলের ক্ষেত এবং ক্ষেতের পাশে খেজুর পাতায় ছাওয়া ঝুপড়ি ঘর পেরিয়ে সাক্কারার দূরত্ব কমতে থাকলে খেজুর গাছের সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রথমে যা খেজুরের বাগান মনে হয়েছিল, তা এক সময় খেজুরের বনের মতো মনে হয়। অবশ্য খেজুরের ঘন বনও এক সময় উধাও হয়ে যায়, তার পরিবর্তে স্পষ্ট হয়ে উঠতে থাকে মরুভূমির দৃশ্য। গিজা থেকে সাক্কারার পঁচিশ কিলোমিটার পথের শেষ দিকে এসে আমরা দুপাশের বালিয়াড়ির মাঝখান দিয়ে কিছুটা উঁচু-নিচু পথ পাড়ি দিয়ে আবার উপরে উঠতে থাকি। পর্যটকের চোখে মরুভূমিকে তার প্রকৃত রূপে তুলে ধরতেই বোধহয় এখানে বালির সমুদ্রের মধ্যে কোথাও কোথাও মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে দুই একটা খেজুর গাছ।
(চলবে)
এসএ/