শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব: ৯

অঘ্রানের অন্ধকারে

অনেকদিন বাদে তুরি এই রেষ্টুরেন্টে এসে বসেছে। একসময় প্রায় প্রতিদিন আসত সেই উচ্ছল চঞ্চল দুরন্ত মানুষের সঙ্গে। সেই মানুষটা এখন অন্য বন্ধু জুটিয়েছে। তাদের সঙ্গে উদ্দাম সময় কাটায়। তুরির ভাবনায় আচ্ছন্ন হয়ে আসে মানুষটা। যদি আজ আবার দেখা হয় তাহলে কি সেই আগের মতো করে বলবে, তুমি এত সুন্দর করে কথা বলো কীভাবে, শুধু শুনতে ইচ্ছে করে!

আনমনা হয়ে যেত তার কথা শুনে তুরি। কী চেয়েছিল সে, সেও কি তা জানত! হয়তো পুরোটাই তার ছেলেমানুষি ছিল। ওই দুম করে পিঠের ওপর কিল মেরে বসা। চুলের বেণি ধরে আচমকা টান দিয়ে নিজের বুকের ওপর নিয়ে ফেলা। দুম করে হাত ধরে হ্যাঁচকা টানে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া। তুরিই শুধু দূরে দূরে সরিয়ে রাখত নিজেকে। এখন খুব মনে হয়, একবার যদি আসত! এসে হাতটা ধরে বলত, তোমাকে এত পছন্দ করি কেন?

ভাবনাগুলো যখন জমাট বাঁধতে শুরু করেছে তখন শাবিন এসে দাঁড়াল সামনে।

এত দেরি করলেন আপনি? আমি সেই কখন থেকে বসে আছি, গলায় প্রতীক্ষার অভিমান ছিল তুরির।

শুনে বুকের ভেতর ছটফট করে উঠল শাবিনের। নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, জায়গাটা খুঁজে পাচ্ছিলাম না।

তুরির মুখোমুখি বসল শাবিন এবং মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকল। নিরাভরণ একজন মানুষ যখন এত সুন্দর হয় তখন তার মাধুর্য হয় একান্তই আপনার, ধার করা সৌন্দর্য সে নয়। না কপালে ছোট্ট টিপ। না গলায় কিছু, না কানে। আভরণহীন তুরির সেই মোহিনী মুখের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকল শাবিন।

তুরি ওর মুগ্ধতাকে ধাক্কা দিয়ে নাড়িয়ে দিলো, কিছু ভাবছেন মনে হয়?

শাবিন চমকাল তবে সত্য গোপন করে বলল, অস্বস্তি কাটছে না।

কেন?

এরকম মারমার কাটকাট দুর্দান্ত টাইপ রেষ্টুরেন্ট, মনে হচ্ছে আমি খুবই বেমানান এখানে।

এরকম মনে হচ্ছে কেন?

এমন দামী রেষ্টুরেন্টে আসা হয় না। পাড়ার ছাপড়া চায়ের স্টল, তারপর এখানকার ওই হোটেল, আমার দেখা ওই পর্যন্ত। এখানে অস্বস্তি তো লাগবেই, তাই না! সহজ-সরল স্বীকারোক্তি শাবিনের।

তুরি আস্থা মেশানো গলায় বলল, ওরকম করে ভাবছেন কেন? ভাবুন এটা আপনার জন্য স্বাভাবিক ব্যাপার। আপনি চাইলেই হবে।

হ্যাঁ, এখন খুব স্বাভাবিক। এতদিন ছিল না।

এই চিন্তাটা আপনাকে ঝেড়ে ফেলতে হবে।

কোন চিন্তাটা?

এবার তুরির কণ্ঠে অধিকারের সুর, কী ছিল, কী ছিল না। আপনি বর্তমান নিয়ে ভাববেন। আগামী নিয়ে কথা বলবেন। আপনার এখন প্রধান কাজ হবে রেগুলার ক্লাস করা এবং পরীক্ষা দেওয়ার সব রকমের প্রিপারেশান কমপ্লিট করা। আপনি কি বুঝতে পারছেন, কী বলছি?

শাবিনের ইচ্ছে করছে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে আনন্দ প্রকাশ করতে। বুকের ভেতরের খুশির ঢেউ মুখের হাসি হয়ে ফুটে উঠল, বুঝতে পারছি।

তুরি মুগ্ধচোখে শাবিনের দিকে তাকিয়ে আছে। কাতর আবেগ মেশানো গলায় তুরি বলল, আপনি খুব ভালো রেজাল্ট করবেন। সেই যোগ্যতা আপনার আছে, আপনি জানেন। ভালো চাকরিতে জয়েন করবেন। আপনার মা কেমন খুশি হবেন বলুন তো।

শাবিন বলল, আর তুমি?

তুরি চারপাশ আলো করে গেয়ে উঠল, পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে/ পাগল আমার মন জেগে ওঠে-

 

সাত দিন পার হয়ে গেল। তুরির সঙ্গে দেখা হয়নি। ফোন করলে সাদামাটা হাই-হ্যালো ধরনের কথা হয়। সামনে শাবিনের পরীক্ষা। সে পড়ায় মন দিয়েছে। খুব দরকার না হলে বাসা থেকে বের হয় না।

আরও দুদিন পার হয়েছে। এই দুদিনে তুরির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার ফোন বন্ধ। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জারে তুরি নেই।

আজ শাবিনের জন্মদিন। আজ যে শাবিনের জন্মদিন সেটা আবিষ্কার করেছে তুরি। ন্যাশনাল আইডি কার্ডে জন্মদিন লেখা আছে পহেলা জানুয়ারি।

তুরি বলেছিল, খোঁজ নিয়ে দেখুন আপনার সঙ্গে যারা এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে সবার জন্মদিন পহেলা জানুয়ারি।

এই তথ্য শাবিনকে অবাক করেছে। ক্লাস নাইনে রেজিস্ট্রেশনের সময় হেডস্যার ওদের বয়স ঠিক করে জন্ম তারিখ লিখে দিয়েছিলেন।

বিস্মিত হয়ে শাবিন বলল, হ্যাঁ, এই তারিখটা আমাদের স্কুলের হেডস্যার ঠিক করেছেন। অনেকের বয়স তিনি পহেলা জানুয়ারি লিখেছিলেন। আপনি জানলেন কেমন করে!

তুরি কেন জানি জেদ ধরে থাকল। সে শাবিনের আসল জন্ম তারিখ বের করতে চায়। শাবিনের মা ঠিকঠাক বলতে পারলেন না। বললেন, তোর বাবা জানত।

তুরির আগ্রহে শাবিন পুরাতন কাগজ ঘেটে জন্মদিন লেখা বাংলা সাল তারিখ বের করে এনে দিলো। ইংরেজি ক্যালেন্ডারের সঙ্গে দিনক্ষণ মিলিয়ে তুরি বের করেছে আজ শাবিনের অরিজিনাল জন্মদিন।

শাবিন জানে তুরি আজ এখানে আসবে। তুরি বলেছিল, এরপর দেখা হবে আপনার সঙ্গে আমার বিশেষ কোনো দিনে এই রেস্টুরেন্টে।

আজ বিশেষ দিন। এত বছর মনে হয়নি। আজ মনে হয়েছে। এখানে আসার আগে কেন জানি আচমকা বুকের ধড়ফড়ানি বেড়ে গেল। কাজগুলো গুছিয়ে করতে পারছিল না। স্যান্ডো গেঞ্জির ওপর শার্ট পরতে গিয়ে খেয়াল করল গেঞ্জি পরেছে উলটো করে। খুব যে গরম পড়েছে তা না। মাত্র গোসল করেছে, তাও দরদর করে ঘামছে। সবুজ ছাপছাপ শার্ট খুলে নীল প্রিন্টের শার্ট গায়ে দিলো। ভেজা তোয়ালেতে আরেকবার ঘাড় মুখ মুছে গা থেকে শার্ট, স্যান্ডো গেঞ্জি খুলে সাদা আর অ্যাশের কম্বিনেশনের পলো গেঞ্জি পরে নিলো।

বুকের ধড়ফড়ানি কমে গেলেও অস্থিরতা থেকে গেছে। তুরি আসবে কিনা নিশ্চিত না। মন বলছে তুরি আসবে। বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করছে। তুরি আসছে না। ভুলে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। শাবিন জানে তুরি আসবে। তুরি ওকে কথা দিয়েছে।

শাবিন টেবিলের ওপর টিস্যু বক্স থেকে টিস্যু পেপার নিয়ে সমান দুই ভাঁজ করে ছিঁড়ল। দুই টুকরো টিস্যু পেপারের একটাতে লিখল ‘ওয়াই’, মানে ইয়েস। আর একটাতে লিখল ‘এন’, মানে নো।

চোখ বন্ধ করে কাগজ তুলবে। যদি ‘ওয়াই’ ওঠে, তারমানে তুরি আসবে। যদি ‘এন’ ওঠে, তাহলে জানবে তুরি আসবে না। ‘ওয়াই’ আর ‘এন’ লেখা টিস্যু পেপারের টুকরো দুটো বেশ কয়েক ভাঁজ করে টেবিলের ওপর ছড়িয়ে দিলো। চোখ বন্ধ করে হাতড়ে একটা কাগজ তুলল। খুলে দেখল তাতে লেখা ‘এন’।

শাবিন ভাবল একবার না, তিনবার দেখবে। দেখলও তাই। চোখ বন্ধ করে ভাঁজ করা কাগজ তুলল তিনবার। পরপর দুবার ‘ওয়াই’ লেখা কাগজ উঠল। 

শাবিন প্রতীক্ষায় থাকল। তুরি এলো না। শাবিন ফিরে গেল।

 

শাবিন এসেছে তুরিদের বাসায়।

বড়ো আপা শাবিনকে দেখে বললেন, কী ব্যাপার! এতদিন পর! কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছিলে?

বড়ো আপার সঙ্গে কথা বললেই শাবিনের মন ভালো হয়ে যায়। চনমনে গলায় বলল, এই তো একটু ব্যস্ত ছিলাম।

চাকরি শুরু করেছ নাকি?

না বড়ো’পা। ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার প্রিপারেশন নিচ্ছিলাম।

বাহ্। খুব ভালো খবর। বসো, তোমাকে মিষ্টি খাওয়াই। ঘরে বানানো।

শাবিন জিজ্ঞেস করল, তুরি কোথায়?

ও তো চলে গেছে, বড়ো আপা এমনভাবে বললেন যেন তুরির কোথাও যাওয়ার কথা আর শাবিন সেটা জানে।

চলে গেছে মানে! কোথায়? বড্ড অস্থির শোনাল শাবিনের গলা।

বড়ো আপা হাসলেন। হেঁয়ালি করে বললেন, তুরি হারিয়ে গেছে।

প্লিজ বড়ো’পা! অমন করবেন না। বলুন ও কোথায় গেছে!

বড়ো আপার কণ্ঠস্বর এবার অপরিচিত মনে হলো। ধীর শান্ত গলায় বললেন, শোনো শাবিন। পড়াশোনা করতে চাইছ, মন দিয়ে করো। আমি শুধু ওর না, তুমি যদি সত্যি আমাকে বড়ো বোন মনে করো, তোমার সেই বড়ো বোন হয়ে বলছি, তুমি ওকে খুঁজো না।

কেন?

প্রশ্ন থাক। ধরে নাও তুরি সত্যি হারিয়ে গেছে।

হারিয়ে গেছে বলেই তো খুঁজব। না খুঁজলে পাব কীভাবে?

খুঁজলেই যে পাবে সে ব্যাপারে কি তুমি নিশ্চিত?

আমার মন বলছে।

তাহলে খুঁজতে পারো।

শাবিনের সহসা মনে হলো তুরি কোথায় যেতে পারে সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। সে তুরিকে কোথায় খুঁজবে! তুরিকে খুঁজতে হবে কোনোদিন এমন কথা সে ভাবেনি কখনো।

বড়ো আপা গলার স্বর বদলে ফেললেন। কণ্ঠস্বরে গভীর আন্তরিকতা নিয়ে বললেন, আমি বলি কী, তার আগে নিজের ভিতটাকে আরও মজবুত করে নাও। আমি তোমাকে সাহায্য করব। শুধু খুঁজে পেলেই তো হবে না, তাকে ধরে রাখার মতো যথেষ্ট শক্তি থাকতে হবে।

বড়ো আপার আন্তরিকতা শাবিনকে শান্ত করতে পারল না। ভেতরটা পুড়ে খাক হয়ে গেল। হতাশ গলায় বলল, আমার আরও আগে বোঝা উচিত ছিল।

বড়ো আপা বললন, তুমি হয়তো কেবল অবলম্বন খুঁজছিলে মাত্র। তারচেয়ে বেশি কিছু না। যেটাকে তুমি অবলম্বন করবে সেটাও তো যথেষ্ট শক্ত হওয়া চায়। নাহলে যে সবশুদ্ধ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে।

ঝট করে উঠে পড়ল শাবিন। বলল, যাই বড়ো’পা।

বড়ো আপা আটকালেন না, তবে একটুক্ষণ দাঁড়াতে বললেন, তুরি তোমার জন্য বই রেখে গেছে। তুমি দাঁড়াও আমি নিয়ে আসছি।

তুরিকে ফোন করল শাবিন। তুরির ফোন বন্ধ। বলছে সুইচড অফ। কেউ যদি ইচ্ছে করে হারায় তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। শাবিনের মনে হচ্ছে তুরি তার কাছ থেকে ইচ্ছে করে হারিয়ে গেছে। সিলভিয়ার ফোন নম্বর শাবিনের নেই। সে এখান থেকে বের হয়ে নিকেতনে যাবে। সিলভিয়াদের ফ্ল্যাটে।

শাবিন দাঁড়িয়ে আছে। ভেঙে পড়ছে সবকিছু। বড়ো আপা ভেতরের ঘর থেকে একটা বই এনে শাবিনের হাতে দিয়ে বললেন, তুমি আমার ওপর রাগ করলেও জেনো সব সময় তোমার এই বড়ো বোন তোমার জন্য দরজা খুলে অপেক্ষা করবে।

কোনো কথা না বলে বইটা হাতে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ল শাবিন।

হনহন করে হেঁটে যাচ্ছে। রাগ কী অভিমান ওকে ভেঙেচুরে তছনছ করে দিচ্ছে।

সিলভিয়াকে বাসায় পাওয়া গেল না। তার বোন শাবিনকে আগে কখনো দেখেননি বা তার নাম শোনেননি বলে সিলভিয়ার ফোন নম্বর দিতে রাজি হননি।

 

শাবিন হাঁটছে রোদ্দুর ভেঙে। খানিকটা উদ্দেশ্যবিহীন, খানিকটা এলোমেলো। দরদরে তাতাল দুপুর। একেবারেই নিজের ভেতর নিজের মতো করে ডুবে আছে বলে রোদের তেজ অনুভব করতে পারছে না। হয়তো রোদ যতটুকু শরীর পোড়াতে চাইছে, নিজের সঙ্গে নিজের কথোপকথনে মন, আত্মা আর সত্তা পুড়ছে তারচেয়ে বেশি।

হাঁটতে হাঁটতে বকুল তলার সেই পুকুর পাড়ে এসে দাঁড়াল। একটা শালিক এসে বসেছে সামনের নারকেল গাছের সবচেয়ে উঁচুতে যে পাতা তার ওপর। পাতা বাতাসে তিরতির করে কাঁপছে। শাবিনের নিজের ভেতর প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, যারা খুব বেশি যুক্তি নির্ভর, যারা বাস্তবতা দিয়ে বিচার করতে পারে সবকিছু, তাদের কি কখনো বুকের ভেতর কষ্ট হয়! তাদের কি কখনো বুক চেপে আসে কষ্টে!

শাবিনের মনে হয়, কারও কারও ভেতরে কী প্রচন্ড কাঙালীপনা থাকে। সে জানে চলে যাবে, তবু কোথাও একটু আঁচড় রেখে যেতে চায়।

মনের ভেতর কবেকার একটা গান ভাসতে থাকে,

এখন আমার বড়ো দুঃসময়

মনের আকাশ মেঘে ঢাকা

যখন তখন চোখের কোণে

নিশি জমা হয়।

 

এই শহর আর টানছে না শাবিনকে। আলগা হয়ে গেছে বাঁধন। তুরি ওকে কিছু না বলে কোথাও চলে গেছে। বড়ো আপা হেঁয়ালি করে বলেছেন, তুরি হারিয়ে গেছে। তীব্র কষ্ট কিংবা অভিমান শাবিনকে একেবারে একা করে দিয়েছে। 

শাবিন ওদের গ্রামে যাচ্ছে। কেন জানি মনে হয়েছে বাবা সেখানে থাকতে পারেন। শাবিনের খুব বাবার কথা মনে পড়ছে। ছোটোবেলা থেকে যে বাবাকে সে ভয় পেয়ে আসছে। যার কাছ থেকে সবসময় দূরে থাকতে চেয়েছে। আজ সেই বাবার জন্য তার বুকের ভেতর হাহাকার করছে। মনে হচ্ছে বাবার কাছে আশ্রয় পেলে সে শান্তি পাবে।

পড়ন্ত বিকেলের ট্রেনে চেপে বসেছে। ট্রেনের কামরায় জানালার ধারে বসে আছে শাবিন। দুপাশের গাছগুলো কেবল সরে সরে যাচ্ছে। শূন্যতায় চোখ মেলে থাকা শুধু। বাইরে তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগছে না। চোখ টনটন করছে। পাশের ব্যাগের ভেতর থেকে তুরির দেওয়া বই বের করল খানিকটা বেখেয়ালে। চলে যাওয়ার আগে বড়ো আপার কাছে তুরি ওর জন্য বইটা রেখে গেছে। কাহ্লিল জিবরান-এর ‘দ্য স্যান্ড অ্যান্ড ফোম।’ প্রচ্ছদের ওপর হাত বুলিয়ে মলাট ওলটালো।

বইয়ের প্রথম সাদা পাতায় গোটা গোটা অক্ষরে তুরি লিখেছে,

আমাদের জীবন অনেকগুলো ছোটো ছোটো ভুল দিয়ে গড়া। আমরা আমাদের জীবনের সেই ভুলগুলোকে ধরতে পারি না। আর ধরতে পারি না বলে আমরা হেরে যাই অনায়াসে। আমাদের কিন্তু হারার কথা ছিল না। কথা ছিল আমরা আমাদের ভুলগুলোকে হয় উপড়ে ফেলে, না হয় তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যাব। আমরা পারিনি। আমরা কেবল পিছিয়ে পড়েছি। পিছিয়ে পড়া জীবন মানুষের জীবন না। মানুষের জীবন জয় করার জন্য, হারার জন্য নয়। জয় কীভাবে সুনিশ্চিত করা যায় সেটা আমাদের ভেবে দেখা জরুরি। নাকি আমরা প্রতিদিন একটু একটু করে ক্ষয়ে যাব! ক্ষয়ে যাওয়ার জন্য আমরা জন্মাইনি, আমরা জন্মেছি সৃষ্টি করতে। নতুন পৃথিবীর জন্ম দেব বলে আমরা জন্মেছি। আমরা জন্মাব আবার নতুন আরেকটি পৃথিবীর জন্ম দিতে।

আর তারপর? তারপর আমার নটে গাছটি মুড়োল। স্বপ্ন আমার ফুরোল। হায় রে সামান্য মেয়ে, হায় রে বিধাতার শক্তির অপব্যায়।

চোখদুটো বন্ধ করে বুকের ভেতর গভীরভাবে শ্বাস টেনে নিল শাবিন। চেপে আসছে বুকের ভেতর, ওখানে বাতাসের বড্ড অভাব। শূন্যতায় ভরা বুকের ভেতর চাপা কষ্ট গুড়গুড় করে উঠল।

(চলবে)

 

পর্ব ৮ : অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৭ : অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৬: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৫: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৪: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৩: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ২: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ১: অঘ্রানের অন্ধকারে

Header Ad

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে এবার জুটি বাধলেন বাংলাদেশের তারকা অভিনেত্রী আফসানা মিমি। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তর জীবনকাহিনি নিয়ে এই সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ভারতের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা মানসমুকুল পাল।

জানা গেছে, হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাসকে কেন্দ্র করে সিনেমা বানাবেন নির্মাতা মানসমুকুল পাল। আগামীতে সেই সিনেমাতেই দেখা যাবে মিঠুনকে। শোনা যাচ্ছে, অভিনেতার বিপরীতে দেখা যেতে পারে বাংলাদেশি অভিনেত্রী আফসানা মিমিকে। যদিও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি নির্মাতা। তবে ভারতের জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই পরিচালক চিত্রনাট্য লেখার আগে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবেন।

মূলত সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার আগে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসে থাকা জায়গাগুলো নিজে ঘুরে দেখতে চান মানসমুকুল। ভারতীয় গণমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাস অবলম্বনে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করছি তাতে বাংলাদেশের একাধিক জায়গার উল্লেখ রয়েছে।

তাই ঢাকা, কিশোরগঞ্জসহ অন্যান্য জায়গায় যাওয়ার কথা আছে। সেই জায়গাগুলো নিজে দেখলে উপলব্ধি থাকবে, আর তাতে চিত্রনাট্য লেখার কাজও সহজ হবে।

শুধু জায়গা পরিদর্শন নয়, বাংলাদেশে এসে অভিনেত্রী আফসানা মিমির সঙ্গেও দেখা করবেন মানসমুকুল। তিনি এ-ও জানান, সিনেমার অধিকাংশ শুটিং বাংলাদেশে হবে। কিন্তু এখনই নয়। বর্তমানে মানসমুকুলের হাতে ৩টি সিনেমার কাজ রয়েছে। সেসব চলচ্চিত্র শেষ করে তবেই তিনি এই সিনেমার কাজ শুরু করবেন।

Header Ad

দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তারেক রহমান বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যেতে নির্বাচন প্রয়োজন।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য আরও ২ বছর আগে সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা দিয়েছি আমরা। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন শুরু করবে, আরেকজন টেনে নিয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে, জনগণ তবেই জনপ্রতিনিধি বাছাই করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকের মনে প্রশ্ন আমরা কেন বারবার নির্বাচনের কথা বলছি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এর ফলে সংসদের যারা জনপ্রতিনিধি বাছাই হয়ে আসবে, তারা সংসদে বসে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কীভাবে দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরের সমস্যা সমাধান করা যায়। সকল সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে আশপাশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। যদি এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারা যায়, তবেই মানুষ আপনাদের দায়িত্ব দিবে, অন্যথায় দ্বিতীয়বার ভাববে।

এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপি খুলনা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

Header Ad

২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা

ফাইল ছবি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষরাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী পাঁচদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান