বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৮

স্নানের শব্দ

দেশের প্রায় সবগুলো জাতীয় দৈনিকে গুরুত্ব দিয়ে ছবিসহ খবর ছেপেছে, ‘শবনম জাহান: বেসরকারি খাতে দেশের প্রথম নারী সিইও’। ফোন ম্যাসেঞ্জার উপচে পড়ছে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের বার্তায়। এতদিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা ইমতিয়াজও ক্ষুদে বার্তায় ‘কনগ্র্যাটস’ জানিয়েছে।

বিজয়ীর পাশে সবাই থাকে, তার জন্য বরণ ডালা, ফুলের তোড়ার অভাব হয় না। শবনম মনে মনে হাসে, তবে শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানাতে ভুলে না।

ছুটির দিনে মৌসুমী এসে টেপ রেকর্ডার আর খাতা কলম হাতে উপস্থিত হয় তার ইন্টারভিউ নিতে। অন্য কারো সাথে কথা বলার আগে নাকি তার সম্পাদিত ‘নারীর চোখ’ ম্যগাজিনের সঙ্গে কথা বলতে হবে শবনমকে, এক্সক্লুসিভ। শবনমের অস্বস্তি লাগছিল। খানিকটা বিব্রত’ও বোধ করছিল সে।
‘দেখ মৌসুমী, তোরা যেভাবে এটা দেখছিস, আমার কাছে কিন্তু বিষয়টা তেমন স্পেশাল কিছু না। কাজ করেছি, সেই কাজের ধারাবাহিকতায় এই পদে এসেছি, এটাকে এত মহিমান্বিত করার কিছু নেই।’

মৌসুমী নাছোড়বান্দার মতো বললো, ‘সেটা তুই মনে করছিস, কিন্তু ভেবে দেখ এটা তোর কত বড় অর্জন। সেলিব্রেটি হয়ে গেছিস একেবারে।’

শবনম হাসে। ‘সেলিব্রেটি ফেটি বাদ দে, কাজটা যেন ঠিকমতো করতে পারি সেই দোয়া কর। সিইও পদ ধরে রাখা কিন্তু সহজ না, যে কোনো সময় ঠাস করে পড়ে যেতে পারি।’

‘আমি অতশত বুঝিনা কয়েকটা প্রশ্ন করব ঝটপট উত্তর দিয়ে দে..’
মৌসুমী আর অপেক্ষা করতে রাজি নয়, সে মনে মনে অনেকগুলো প্রশ্ন সাজিয়ে এনেছিল, এবার একের পর এক সেগুলো জিজ্ঞেস করতে শুরু করল।
‘দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী সিইও হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে আপনার কেমন লাগছে? এই সাফল্যের পেছনের কারণগুলো একটু জানাবেন কি?’
‘আসলে সিইও হিসেবে আমি দায়িত্বটাকেই প্রাধান্য দিচ্ছি। এটা আমার কাছে খুব অসামান্য কোন প্রাপ্তি নয় বরং একটা বড় দায়িত্ব। আমি সবসময় কাজের মানুষ, কাজ করতে করতেই এই জায়গায় এসেছি। নিজের যোগ্যতা ও সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েছি। কখনো কোনো কিছুতে পিছিয়ে যাইনি, হাল ছাড়িনি। ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক ছাড় দিতে হয়েছে। তবে পারিবারিক সমর্থন পেয়েছি, ফলে সামনে এগুতে আমার তেমন সমস্যা হয়নি। আমার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আর গভর্নিং বডির সদস্যরা আমাকে এই পদের জন্য যোগ্য মনে করেছেন বলেই নিয়োগ দিয়েছেন। আমার সততা, কাজের প্রতি একাগ্রতা এবং কঠোর পরিশ্রম আমাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে বলে মনে করি।

‘কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের কোনো বৈষম্য অনুভব করেছেন কি? নারীদের কাজের প্রতিবন্ধকতাকে আপনি কীভাবে দেখেন? ’
দেখুন আমি নিজেকে সবসময় ব্যক্তি হিসেবে দেখি। কাজের সময় আমি নারী না পুরুষ সেটা আমার মাথায় থাকে না। তবে কর্মক্ষেত্রে সবাইকে কম বেশি প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, সেখানে যে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে সেই শীর্ষে পৌঁছায়। নারীর অগ্রগতির পথে দুই রকমের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে মনে করি, একটা প্রাতিষ্ঠানিক, যেমন অনেক প্রতিষ্ঠান নারী কর্মী নিয়োগ দিতে চায় না। তারা মনে করে নারীরা অফিসের চাইতে সংসারে বেশি মনোযোগী। কিন্তু আমি দেখেছি কাজের ক্ষেত্রে নারীরা অনেক সিনসিয়ার। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো নমনীয় হতে হবে। অন্য যে প্রতিবন্ধকতার কথা বলতে চাই সেটা হচ্ছে, মেয়েদের নিজেদের। অনেকেই নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারে না। আমি মনে করি মেয়েদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। পরিশ্রম করতে হবে। যে কোনো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সাহস থাকতে হবে। তাহলেই সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে সামনে এগিয়ে যেতে পারবে।

‘দেশে চাকরি ক্ষেত্রে নারীরা কতটা এগিয়েছে? সফল হতে হলে নারীদের কী করতে হবে?’
‘গত কয়েক দশকের চিত্র দেখলে বোঝা যায় বাংলাদেশের নারীরা বহুদূর এগিয়েছে। আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে ঢুকি তার চাইতে এখনকার পরিবেশ অনেক ইতিবাচকভাবে বদলেছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, ধীরে ধীরে উপরের ধাপগুলোতেও নারীরা উঠে আসছে। সফল হতে হলে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। অদম্য মনোবল নিয়ে ধৈর্য্য ধরে একাগ্র হয়ে নিজের কাজটা যথাযথভাবে করতে হবে। মেধা, পরিশ্রম, চ্যলেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতা থাকলে নারীরা এগিয়ে যাবেই।’

মৌসুমী আরও কিছু গৎবাঁধা প্রশ্ন যোগাড় করেছিল, কিন্তু তাকে থামিয়ে দিল শবনম। বলল, ‘রাখতো এ সব। কি সব বইয়ের ভাষায় প্রশ্ন করছিস আর আমিও সব বস্তাপচা কথায় উত্তর দিয়ে যাচ্ছি।’

‘সত্যি এরকম ভেজিটেবল কথা বার্তায় হবে না, এমন কিছু বল যা একেবারে অভূতপূর্ব, ফাটাফাটি, চমক লাগানো। যাতে আমার ম্যাগাজিনের কাটতি বেড়ে যায়। ওই মার মার কাট কাট জাতীয় কিছু। মানুষের জীবনে তেতো সত্য থাকে না, সেরকম কিছু …’
শূন্যে হাত ছুঁড়ে, মুখ গোল করে বলে মৌসুমী। শবনম হাসে।

সত্যিই যদি সবজায়গায় সব সত্য বলা যেতো তাহলে সামাজিক শৃঙ্খলার উঁচু স্তম্ভটি হয়তো হুড়মৃড় করে ভেঙে পড়ত। পদোন্নতির চিঠি দেওয়ার আগে কয়েকবার বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের মিটিং এ ডাক পড়েছিল তার। নানা রকম প্রশ্ন করে বোর্ড মেম্বাররা বুঝতে চেষ্টা করেছেন শবনম কতখানি দক্ষতার সঙ্গে কোম্পানি চালাতে পারবে। রাশভারি ফাইজুল চৌধুরী প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘এই সময়ে যখন কোম্পানি সিইও নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে তখন কেনো ওসমান গণির দুর্নীতির প্রমাণগুলো সামনে এল? কারা সেটা করল? এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই সময়টাকেই কেনো বেছে নেওয়া হল!’

শবনম স্মার্টলি বলেছে, ‘এই প্রশ্ন তো আমারো? মিস্টার গণির দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের পাশাপাশি কীভাবে এই গোপন তথ্য লিক হলো নিশ্চয়ই সেটাও খুঁজে বের করা উচিত। অফিস শৃঙ্খলার স্বার্থেই যারা গোপন তথ্য ফাঁস করেছে তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।’
শবনম জানে, অফিস পলিটিক্স ম্যানেজ করা একটা খেলা। এই খেলা বুঝে শুনে খেলতে হয়। প্রতিপক্ষের দুর্বলতা জানতে হয়। নিজেকে তৈরি করতে হয়। যদিও এই খেলা সে নিজের ইচ্ছায় শুরু করেনি কিন্তু এতে যে সে ভাল ভাবেই জড়িয়ে গেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

ওসমান গণি রাগে ক্ষোভে শবনম সম্পর্কে যা তা কথা বলেছে, তার চরিত্র নিয়ে দুর্নাম ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। বিক্ষিপ্ত কণ্ঠে এমনও বলেছে যে নারী হিসেবে শবনম বোর্ড মেম্বারদের পটিয়ে সুবিধা আদায় করে নিয়েছে। যদিও তার এ সব অপবাদের কোনোটাই হালে পানি পায়নি। তবু শবনম অপমানিত ও অসম্মানিত বোধ করেছে। শেষ পর্যন্ত যেদিন শবনম সিইওর দায়িত্ব নিয়েছে সেদিন ওসমান গণি রিজাইন লেটার সাবমিট করেছে। ওসমান গণির জন্য করুণা হয়েছে শবনমের, সহানুভূতি জাগেনি। মনে মনে অনুকম্পা বোধ করেছে সে আবার এও মনে হয়েছে এই ফলাফল ওসমান গণির প্রাপ্য ছিল। তার অপরিণামদর্শী আচরণ, সীমাহীন ঔদ্ধত্য আর পদের লোভ তাকে এই স্তরে পৌঁছে দিয়েছে।

‘এত বড় একটা অর্জন, তুই সিইও হলি, এই উপলক্ষে একটা ঘরোয়া পার্টি অন্তত দে,’ মৌসুমী আবদার করেছে, ‘এই ছুতায় আমরা একসঙ্গে হই, একটু মন প্রাণ ভরে গান বাজনা করি..’
শবনম বলেছে, ‘ঠিকাছে, তুই সবাইকে আমার হয়ে দাওয়াত দে, আমার বাসার ছাদে পার্টি হবে।’

সব মিলিয়ে ৩০/৩৫ জনের পার্টি। শবনম আর তারেকের খুব কাছের কয়েকটি আত্মীয় পরিবার, দুয়েকজন সজ্জন প্রতিবেশি আর মৌসুমি ও শবনমের নিকট বান্ধবীরা। এই তো! ফাইভ স্টার হোটেলের ক্যাটারিং সার্ভিস থেকে অর্ডার করে বেশ কয়েক পদের খাবার এনেছিল শবনম। মৌসুমী আর শ্রাবণ মিলেই বেলুন লাল নীল বাতি জ্বালিয়ে ছাদের উপর হাল্কা কিছু ডেকোরেশন করেছিল। পার্টিতে একটা পেঁয়াজের খোসার রঙের সিল্ক শাড়ি পরেছিল শবনম। সবাই শাড়ি ও শবনমের প্রশংসা করছিল। বহুদিন পর মাথা থেকে একটা ভারি বোঝা নেমে যাবার মত আরাম ও আনন্দে ভরে উঠেছিল শবনমের শরীর ও মন। চারিদিকে একটা উজ্জ্বল উষ্ণ আন্তরিক বাতাস যেন ধীর লয়ে বয়ে যাচ্ছিল।
প্রতিবেশিদের একজন পত্রিকায় শবনমের ছবি ছাপানোর প্রসঙ্গটি উল্লেখ করাতে তারেক রসিকতা করে বলল, ‘আমার ভাই স্ত্রীর পরিচয়ে পরিচিত হতে কোনো আপত্তি নেই। আমি সব সময় উনার অনুগামী।’

মৌসুমী ঠাট্টা করে সাংবাদিকদের মতো ভঙ্গী করে জানতে চাইল, ‘উনার সিইও পদ প্রাপ্তিতে আপনার অনুভূতি কি?’
তারেক হাসিমুখে বলল, ‘অনুভূতি চমৎকার! আসলে উনি তো শুরু থেকেই খুব সফলভাবে আমাদের পরিবারের সিইওর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, এখন থেকে অফিসেও করবেন, এ আর নতুন কি!’

‘আচ্ছা, আপনাদের মধ্যে কখনো দাম্পত্য কলহ হয় না? ইগো ক্রাইসিস নাই?’ সুরাইয়া জানতে চায়।
তারেক একবার শবনমের চোখের দিকে তাকায়। তারপর বলে, ‘আমি আসলে নিরীহ, গোবেচারা মানুষ তো, তাই বিয়ের পর থেকেই বিনা যুদ্ধে উনার বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছি। বলতে পারেন হাঁটু গেড়ে আত্মসমর্পণ করেছি, ফলে ওইসব সংকট আমাদের হয়নি।’
‘আর তা ছাড়া দুইজনই তো কাজ নিয়ে ব্যস্ত। দেখা সাক্ষাৎ হয় অল্প সময়ের জন্য, ঝগড়া ঝাটি করার অবকাশ কই, বল? তারপরও সংসারে থাকলে কিছু খোঁটাখুটি যে লাগে না, তা নয়। কিন্তু আমিই একতরফা চেঁচামেচি করি, উনি তো চুপ! একা একা আর কত ঝগড়া চালানো যায় বলেন!’ শবনম যোগ করে।

হাসি হুল্লোড় খানা পিনা আর শ্রাবণের গাওয়া গান দিয়ে সেদিনের সন্ধ্যাটা জমজমাট ভাল লাগায় ভরে থাকে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৭

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া