শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৮

স্নানের শব্দ

দেশের প্রায় সবগুলো জাতীয় দৈনিকে গুরুত্ব দিয়ে ছবিসহ খবর ছেপেছে, ‘শবনম জাহান: বেসরকারি খাতে দেশের প্রথম নারী সিইও’। ফোন ম্যাসেঞ্জার উপচে পড়ছে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের বার্তায়। এতদিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা ইমতিয়াজও ক্ষুদে বার্তায় ‘কনগ্র্যাটস’ জানিয়েছে।

বিজয়ীর পাশে সবাই থাকে, তার জন্য বরণ ডালা, ফুলের তোড়ার অভাব হয় না। শবনম মনে মনে হাসে, তবে শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানাতে ভুলে না।

ছুটির দিনে মৌসুমী এসে টেপ রেকর্ডার আর খাতা কলম হাতে উপস্থিত হয় তার ইন্টারভিউ নিতে। অন্য কারো সাথে কথা বলার আগে নাকি তার সম্পাদিত ‘নারীর চোখ’ ম্যগাজিনের সঙ্গে কথা বলতে হবে শবনমকে, এক্সক্লুসিভ। শবনমের অস্বস্তি লাগছিল। খানিকটা বিব্রত’ও বোধ করছিল সে।
‘দেখ মৌসুমী, তোরা যেভাবে এটা দেখছিস, আমার কাছে কিন্তু বিষয়টা তেমন স্পেশাল কিছু না। কাজ করেছি, সেই কাজের ধারাবাহিকতায় এই পদে এসেছি, এটাকে এত মহিমান্বিত করার কিছু নেই।’

মৌসুমী নাছোড়বান্দার মতো বললো, ‘সেটা তুই মনে করছিস, কিন্তু ভেবে দেখ এটা তোর কত বড় অর্জন। সেলিব্রেটি হয়ে গেছিস একেবারে।’

শবনম হাসে। ‘সেলিব্রেটি ফেটি বাদ দে, কাজটা যেন ঠিকমতো করতে পারি সেই দোয়া কর। সিইও পদ ধরে রাখা কিন্তু সহজ না, যে কোনো সময় ঠাস করে পড়ে যেতে পারি।’

‘আমি অতশত বুঝিনা কয়েকটা প্রশ্ন করব ঝটপট উত্তর দিয়ে দে..’
মৌসুমী আর অপেক্ষা করতে রাজি নয়, সে মনে মনে অনেকগুলো প্রশ্ন সাজিয়ে এনেছিল, এবার একের পর এক সেগুলো জিজ্ঞেস করতে শুরু করল।
‘দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী সিইও হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে আপনার কেমন লাগছে? এই সাফল্যের পেছনের কারণগুলো একটু জানাবেন কি?’
‘আসলে সিইও হিসেবে আমি দায়িত্বটাকেই প্রাধান্য দিচ্ছি। এটা আমার কাছে খুব অসামান্য কোন প্রাপ্তি নয় বরং একটা বড় দায়িত্ব। আমি সবসময় কাজের মানুষ, কাজ করতে করতেই এই জায়গায় এসেছি। নিজের যোগ্যতা ও সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েছি। কখনো কোনো কিছুতে পিছিয়ে যাইনি, হাল ছাড়িনি। ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক ছাড় দিতে হয়েছে। তবে পারিবারিক সমর্থন পেয়েছি, ফলে সামনে এগুতে আমার তেমন সমস্যা হয়নি। আমার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আর গভর্নিং বডির সদস্যরা আমাকে এই পদের জন্য যোগ্য মনে করেছেন বলেই নিয়োগ দিয়েছেন। আমার সততা, কাজের প্রতি একাগ্রতা এবং কঠোর পরিশ্রম আমাকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে বলে মনে করি।

‘কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের কোনো বৈষম্য অনুভব করেছেন কি? নারীদের কাজের প্রতিবন্ধকতাকে আপনি কীভাবে দেখেন? ’
দেখুন আমি নিজেকে সবসময় ব্যক্তি হিসেবে দেখি। কাজের সময় আমি নারী না পুরুষ সেটা আমার মাথায় থাকে না। তবে কর্মক্ষেত্রে সবাইকে কম বেশি প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, সেখানে যে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারে সেই শীর্ষে পৌঁছায়। নারীর অগ্রগতির পথে দুই রকমের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে মনে করি, একটা প্রাতিষ্ঠানিক, যেমন অনেক প্রতিষ্ঠান নারী কর্মী নিয়োগ দিতে চায় না। তারা মনে করে নারীরা অফিসের চাইতে সংসারে বেশি মনোযোগী। কিন্তু আমি দেখেছি কাজের ক্ষেত্রে নারীরা অনেক সিনসিয়ার। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো নমনীয় হতে হবে। অন্য যে প্রতিবন্ধকতার কথা বলতে চাই সেটা হচ্ছে, মেয়েদের নিজেদের। অনেকেই নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারে না। আমি মনে করি মেয়েদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। পরিশ্রম করতে হবে। যে কোনো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সাহস থাকতে হবে। তাহলেই সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে সামনে এগিয়ে যেতে পারবে।

‘দেশে চাকরি ক্ষেত্রে নারীরা কতটা এগিয়েছে? সফল হতে হলে নারীদের কী করতে হবে?’
‘গত কয়েক দশকের চিত্র দেখলে বোঝা যায় বাংলাদেশের নারীরা বহুদূর এগিয়েছে। আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে ঢুকি তার চাইতে এখনকার পরিবেশ অনেক ইতিবাচকভাবে বদলেছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, ধীরে ধীরে উপরের ধাপগুলোতেও নারীরা উঠে আসছে। সফল হতে হলে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। অদম্য মনোবল নিয়ে ধৈর্য্য ধরে একাগ্র হয়ে নিজের কাজটা যথাযথভাবে করতে হবে। মেধা, পরিশ্রম, চ্যলেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতা থাকলে নারীরা এগিয়ে যাবেই।’

মৌসুমী আরও কিছু গৎবাঁধা প্রশ্ন যোগাড় করেছিল, কিন্তু তাকে থামিয়ে দিল শবনম। বলল, ‘রাখতো এ সব। কি সব বইয়ের ভাষায় প্রশ্ন করছিস আর আমিও সব বস্তাপচা কথায় উত্তর দিয়ে যাচ্ছি।’

‘সত্যি এরকম ভেজিটেবল কথা বার্তায় হবে না, এমন কিছু বল যা একেবারে অভূতপূর্ব, ফাটাফাটি, চমক লাগানো। যাতে আমার ম্যাগাজিনের কাটতি বেড়ে যায়। ওই মার মার কাট কাট জাতীয় কিছু। মানুষের জীবনে তেতো সত্য থাকে না, সেরকম কিছু …’
শূন্যে হাত ছুঁড়ে, মুখ গোল করে বলে মৌসুমী। শবনম হাসে।

সত্যিই যদি সবজায়গায় সব সত্য বলা যেতো তাহলে সামাজিক শৃঙ্খলার উঁচু স্তম্ভটি হয়তো হুড়মৃড় করে ভেঙে পড়ত। পদোন্নতির চিঠি দেওয়ার আগে কয়েকবার বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের মিটিং এ ডাক পড়েছিল তার। নানা রকম প্রশ্ন করে বোর্ড মেম্বাররা বুঝতে চেষ্টা করেছেন শবনম কতখানি দক্ষতার সঙ্গে কোম্পানি চালাতে পারবে। রাশভারি ফাইজুল চৌধুরী প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘এই সময়ে যখন কোম্পানি সিইও নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে তখন কেনো ওসমান গণির দুর্নীতির প্রমাণগুলো সামনে এল? কারা সেটা করল? এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই সময়টাকেই কেনো বেছে নেওয়া হল!’

শবনম স্মার্টলি বলেছে, ‘এই প্রশ্ন তো আমারো? মিস্টার গণির দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের পাশাপাশি কীভাবে এই গোপন তথ্য লিক হলো নিশ্চয়ই সেটাও খুঁজে বের করা উচিত। অফিস শৃঙ্খলার স্বার্থেই যারা গোপন তথ্য ফাঁস করেছে তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।’
শবনম জানে, অফিস পলিটিক্স ম্যানেজ করা একটা খেলা। এই খেলা বুঝে শুনে খেলতে হয়। প্রতিপক্ষের দুর্বলতা জানতে হয়। নিজেকে তৈরি করতে হয়। যদিও এই খেলা সে নিজের ইচ্ছায় শুরু করেনি কিন্তু এতে যে সে ভাল ভাবেই জড়িয়ে গেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

ওসমান গণি রাগে ক্ষোভে শবনম সম্পর্কে যা তা কথা বলেছে, তার চরিত্র নিয়ে দুর্নাম ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। বিক্ষিপ্ত কণ্ঠে এমনও বলেছে যে নারী হিসেবে শবনম বোর্ড মেম্বারদের পটিয়ে সুবিধা আদায় করে নিয়েছে। যদিও তার এ সব অপবাদের কোনোটাই হালে পানি পায়নি। তবু শবনম অপমানিত ও অসম্মানিত বোধ করেছে। শেষ পর্যন্ত যেদিন শবনম সিইওর দায়িত্ব নিয়েছে সেদিন ওসমান গণি রিজাইন লেটার সাবমিট করেছে। ওসমান গণির জন্য করুণা হয়েছে শবনমের, সহানুভূতি জাগেনি। মনে মনে অনুকম্পা বোধ করেছে সে আবার এও মনে হয়েছে এই ফলাফল ওসমান গণির প্রাপ্য ছিল। তার অপরিণামদর্শী আচরণ, সীমাহীন ঔদ্ধত্য আর পদের লোভ তাকে এই স্তরে পৌঁছে দিয়েছে।

‘এত বড় একটা অর্জন, তুই সিইও হলি, এই উপলক্ষে একটা ঘরোয়া পার্টি অন্তত দে,’ মৌসুমী আবদার করেছে, ‘এই ছুতায় আমরা একসঙ্গে হই, একটু মন প্রাণ ভরে গান বাজনা করি..’
শবনম বলেছে, ‘ঠিকাছে, তুই সবাইকে আমার হয়ে দাওয়াত দে, আমার বাসার ছাদে পার্টি হবে।’

সব মিলিয়ে ৩০/৩৫ জনের পার্টি। শবনম আর তারেকের খুব কাছের কয়েকটি আত্মীয় পরিবার, দুয়েকজন সজ্জন প্রতিবেশি আর মৌসুমি ও শবনমের নিকট বান্ধবীরা। এই তো! ফাইভ স্টার হোটেলের ক্যাটারিং সার্ভিস থেকে অর্ডার করে বেশ কয়েক পদের খাবার এনেছিল শবনম। মৌসুমী আর শ্রাবণ মিলেই বেলুন লাল নীল বাতি জ্বালিয়ে ছাদের উপর হাল্কা কিছু ডেকোরেশন করেছিল। পার্টিতে একটা পেঁয়াজের খোসার রঙের সিল্ক শাড়ি পরেছিল শবনম। সবাই শাড়ি ও শবনমের প্রশংসা করছিল। বহুদিন পর মাথা থেকে একটা ভারি বোঝা নেমে যাবার মত আরাম ও আনন্দে ভরে উঠেছিল শবনমের শরীর ও মন। চারিদিকে একটা উজ্জ্বল উষ্ণ আন্তরিক বাতাস যেন ধীর লয়ে বয়ে যাচ্ছিল।
প্রতিবেশিদের একজন পত্রিকায় শবনমের ছবি ছাপানোর প্রসঙ্গটি উল্লেখ করাতে তারেক রসিকতা করে বলল, ‘আমার ভাই স্ত্রীর পরিচয়ে পরিচিত হতে কোনো আপত্তি নেই। আমি সব সময় উনার অনুগামী।’

মৌসুমী ঠাট্টা করে সাংবাদিকদের মতো ভঙ্গী করে জানতে চাইল, ‘উনার সিইও পদ প্রাপ্তিতে আপনার অনুভূতি কি?’
তারেক হাসিমুখে বলল, ‘অনুভূতি চমৎকার! আসলে উনি তো শুরু থেকেই খুব সফলভাবে আমাদের পরিবারের সিইওর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, এখন থেকে অফিসেও করবেন, এ আর নতুন কি!’

‘আচ্ছা, আপনাদের মধ্যে কখনো দাম্পত্য কলহ হয় না? ইগো ক্রাইসিস নাই?’ সুরাইয়া জানতে চায়।
তারেক একবার শবনমের চোখের দিকে তাকায়। তারপর বলে, ‘আমি আসলে নিরীহ, গোবেচারা মানুষ তো, তাই বিয়ের পর থেকেই বিনা যুদ্ধে উনার বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছি। বলতে পারেন হাঁটু গেড়ে আত্মসমর্পণ করেছি, ফলে ওইসব সংকট আমাদের হয়নি।’
‘আর তা ছাড়া দুইজনই তো কাজ নিয়ে ব্যস্ত। দেখা সাক্ষাৎ হয় অল্প সময়ের জন্য, ঝগড়া ঝাটি করার অবকাশ কই, বল? তারপরও সংসারে থাকলে কিছু খোঁটাখুটি যে লাগে না, তা নয়। কিন্তু আমিই একতরফা চেঁচামেচি করি, উনি তো চুপ! একা একা আর কত ঝগড়া চালানো যায় বলেন!’ শবনম যোগ করে।

হাসি হুল্লোড় খানা পিনা আর শ্রাবণের গাওয়া গান দিয়ে সেদিনের সন্ধ্যাটা জমজমাট ভাল লাগায় ভরে থাকে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৭

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ