বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৭

স্নানের শব্দ

অফিসের আবহাওয়ায় সূক্ষ্ম একটা পরিবর্তন টের পাচ্ছে শবনম। ঠিক দৃশ্যমান কিছু নেই কিন্তু অদৃশ্য একটা বিভাজনের বাতাস হু হু করে বইছে যেন। ওসমান গণি সিইও হতে যাচ্ছে এই বিশ্বাসে একদল আগেভাগেই তার সুনজরে পড়ার আশায়, তার দলে যোগ দেওয়ার জন্য কসরত শুরু করে দিয়েছে। আরেকদল যারা গণিকে অপছন্দ করে তারা শবনমের পাঁ ধরার পাঁয়তারা করছে, যদিও শবনম স্বভাবগত কারণেই তাদের খুব একটা পাত্তা টাত্তা দিচ্ছে না। কিন্তু ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে তুমি যদি ওসমান গণিকে সমর্থন না করো তবে তার মানে হচ্ছে তুমি শবনমের লোক। ফলে শবনম প্রকাশ্যে কাউকে আশকারা না দিলেও মনিরুজ্জামান তার দলবল নিয়ে শবনমের পক্ষে দলভারী করে চলেছে।

‘এইসব গ্রুপিং ট্রুপিং ছাড়ো তো মনিরুজ্জামান, আমি পরিশ্রম করা মানুষ, আমার দলবাজির দরকার নাই। অফিসে এইরকম বিভক্তি একদমই ভাল লাগছে না আমার। এসব থামাও..’

মনিরুজ্জামানকে কড়া গলায় ধমক দিয়ে বলেছে শবনম। কিন্তু তাতে কি আর মনিরুজ্জামান থামে? সে বত্রিশ দাঁত বের করে হাসিমুখে বলে,
‘ম্যাডাম আপনি না চাইলে কি হবে, সবাই জানে অফিসে এখন দুইটা ভাগ। বাটপার আর তোষামোদকারীরা সব গেছে ওসমান গণির দলে আর বাকিরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও সব নীরবে আপনার দলে। আপনার চাওয়া না চাওয়ায় কিছু আটকাবে না ম্যাডাম। এটা হবেই।’

শবনমের অস্বস্তি লাগে, অফিসে এই ধরনের দলাদলির চর্চা সে আগে কখনো করেনি। করার দরকারও পড়েনি। প্রফেশনের শুরুর দিকে যখন জুনিয়র পোস্টে কাজ করেছে তখন কোনো কোনো বস যে তাকে দলে টানার চেষ্টা করেনি তা নয়, কিন্তু কখনোই কারো দাবার চালের গুটি হতে ইচ্ছে করেনি তার। ফলে কৌশলে সব পক্ষের সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে টেবিলে নাক মুখ গুজে নিজের কাজটা মনোযোগ দিয়ে ভালোভাবে করার চেষ্টা করে গেছে সে। সব দলের সঙ্গেই এক ধরনের ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে। রওশন আপা শবনমের এই ভারসাম্যবোধের খুব প্রশংসা করতেন। কিন্তু এখন তো সেই ভারের সমতা রক্ষা আর কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে এসে বিনা যুদ্ধে মাঠ ছেড়ে দেওয়ার কোনো ইচ্ছা শবনমের নেই।

এরই মধ্যে দুপুরবেলা লাঞ্চের পর শবনমের রুমে এসে একাউন্টসের আতিয়ার সাহেব জানিয়ে গেলেন ওসমান গণির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করার জন্য উপর থেকে নির্দেশ এসেছে। একটা উদ্দেশ্যপূর্ণ বাঁকা হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে মেদবহুল শরীরটা চেয়ারে এলিয়ে দিয়ে বললেন,
‘আপনের তো কপাল খুলি গেছে ম্যাডাম। এবার আর কেউ আফনেরে আটকায়া রাখতে হারতো ন’।’

যেন কিছুই জানে না এমন ভঙ্গী করে শবনম বলল, ‘কি যে বলেন না! ওসমান গণির জন্য তো আমার খারাপই লাগছে। সত্য মিথ্যা তো জানি না, কিন্তু বেচারা এমন একটা বাজে অবস্থায় পড়ল!’
‘অফিসের কেউ না কেউ আছে এর পেছনে, বুঝলেননি? নাইলে এত ভিতরের খবর বাইরে যাইতে পারে ন’।’
আতিয়ার সাহেব নিচু গলায় ফিসফিস করে।

‘তাই নাকি? কারা জড়িত জানা গেছে?’ শবনম ততোধিক ফিসফিস করে জানতে চায়।
‘না, এখন পর্যন্ত জানন যায় ‘ন। তবে ধরি ফালাইব। এইসব কথা চাপা থাকে না।’
‘কিন্তু ওসমান গণির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, টাকা পয়সা এদিক সেদিক করার, সেই কাজটা কি সত্যি? আসলেই সে দুর্নীতি করছে, নাকি করে নাই, পুরাটাই কি মিথ্যা অভিযোগ..’
‘না, সেইটা আঁই জানি ন। আল্লাহ মাবুদ জানে, কার মনে কি আছে, তবে বুঝলেননি, কথায় আছে না, যা রটে তার কিছুটা তো বটে.. তদন্ত করলেই পাওন যাইব হেতি দোষী কি নির্দোষ! কিন্তু হেতি সিইও হওনের যে খায়েশ করছিলেন, সেইটা আপাতত পুরণ হওনের কোনো পথ নাই ..আফনের পথ খুলি গেছে.. আর কুনো বাঁধা নাই।’
‘কি যে বলেন না, ভাই, সবই তো বোর্ড মেম্বারদের মর্জি, দেখেন আগে, ম্যানেজমেন্ট কি সিদ্ধান্ত নেয়.. পর্দার আড়ালে কত কিছু ঘটে, সব কিছু কি আমরা জানি?’

আতিয়ার সাহেব চলে যাওয়ার পর কম্পিউটর স্ক্রিনে চোখ রেখে গত মাসের আয়-ব্যয়ের হিসাবটা দেখছিল শবনম, তখনই ঘরের দরজা ঠেলে ঝড়ের গতিতে ঢুকলো ওসমান গণি। বিধ্বস্ত, রাগী চেহারা, মাথায় চুলগুলো অবিন্যস্ত, চোখে ক্রোধ, উত্তেজনায় শরীর কাঁপছে তার। দাঁড়ানো অবস্থাতেই শবনমের টেবিলে দু হাত রেখে মাথাটা সামনে বাড়িয়ে চাপা গলায় হিস হিস করে উঠল সে,
‘নোংরা খেলাটা না খেললেও পারতেন ম্যাডাম..ছি, এত নিচে কীভাবে নামতে পারলেন?’
‘হোয়াট? কী বলতে চান আপনি?’
আকস্মিক এই আক্রমণে রেগে গিয়ে সাঁই করে চেয়ার ছেড়ে উঠে ওসমান গণির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায় শবনম।
‘এই চক্রান্তটা না করলেও পারতেন, ম্যাডাম। মানুষ পাওয়ারের জন্য এমন ইতরামি করতে পারে জানা ছিল না! অন্তত আপনার কাছে এটা আশা করি নাই..’
ওসমান গণির কণ্ঠে তীব্র শ্লেষ। এবার তর্জনী উঁচিয়ে গলা চড়িয়ে প্রায় চিৎকার করে উঠল শবনম।
‘মুখ সামলে কথা বলেন ওসমান গণি, যা তা অপবাদ দিলে আমি কিন্তু একদম সহ্য করব না। সাবধান করে দিচ্ছি আপনাকে।’

শবনমের রাগত কণ্ঠস্বর রুমের কাঁচের দরজা ভেদ করে সামনের করিডোর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেল।
‘আমাকে কেন খামাকা আপনার কৃতকর্মের সঙ্গে জড়াতে চাইছেন? হ্যাঁ? যা বলার তদন্ত কমিটির সামনে গিয়ে বলেন! এখানে মাস্তানী করতে আসবেন না।’

শবনমের রণরঙ্গিণী মূর্তির সামনে এবার একটু থমকে গেল ওসমান গণি।
‘পদের লোভে আপনি হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন, কাকে কি বলছেন বুঝতে পারছেন না। পাগল হয়ে গেছেন!’
শবনম ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে।
‘না ম্যডাম, আমি ঠিক আছি। জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পায় নাই। পাগলও হই নাই। সবই আমি বুঝতে পারছি ম্যাডাম। পরিষ্কার বুঝতে পারছি। কাউকে ছাড়ব না আমি। সব কুচক্রীদের দেখে নিবো।’

হুমকি দেওয়ার ভঙ্গীতে কথাটি বলে দড়াম শব্দ করে দরজাটা ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে যায় ওসমান গণি। শবনম ধপ করে নিজের চেয়ারে বসে একটু হাঁপাতে থাকে। প্রচণ্ড রাগে পা থেকে মাথা পর্যন্ত চিড়বিড় করছে তার। এক গ্লাস পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে শবনম। নির্ঝর চৌধুরী একবার কথায় কথায় বলেছিলেন, প্রফেশনের ঘাত প্রতিঘাত সামলাতে হলে গায়ের চামড়া মোটা হতে হয়। রাগ ক্রোধ কদাচ থাকতে নয়। অথচ ওসমান গণির এই নোংরা কুৎসিত আক্রমণের শিকার হয়ে রাগ ক্রোধ ক্ষোভ কোনোটাই সামলাতে পারছে না শবনম। মনে হচ্ছে চিৎকার করে ওসমান গণিকে গালিগালাজ করতে পারলে বা আঘাত করতে পারলে তার ক্ষোভ হয়ত কিছুটা কমত। বুক ভরে বাতাস নিয়ে মুখ দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ে শবনম। নিজের ছোট্ট রুমের ভেতর পায়চারি করে নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করে।
শবনম কখনোই বদরাগী টাইপের মানুষ নয়। সারা জীবন কারো উপকার করতে না পারলেও ক্ষতি অন্তত করেনি, কিন্তু এবার কি প্রতিযোগিতায় নেমে সে নিজের শুদ্ধ হৃদয়কে অশুদ্ধ করে ফেলল? শীর্ষে ওঠার জন্য প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে সাদা গায়ে কালি লাগিয়ে ফেলল? এই যে, ওসমান গণির সঙ্গে সংঘাত তার প্রধান কারণ তো এটাই যে তারা দুজনই একই সঙ্গে সিইও পদ পাবার জন্য আকাঙ্ক্ষা করছে। ফলে তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এই প্রতিযোগিতায় একজন জয়ী হবে এটাই নিয়ম। খেলা শুরু হয়ে গেছে, এখান থেকে পিছিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই। ধনুক থেকে তীর ছুটে গেছে, তাকে ফেরানো সম্ভব নয়।

ঘটনাচক্রে শবনম এই খেলায় ভালো অবস্থানে আছে। আর ওসমান গণি গাড্ডায় পড়ে গেছে। আবার উল্টোটাও হতে পারত, শবনমের কোনো ত্রুটি খুঁজে পেলে প্রতিপক্ষ নিশ্চয়ই তাকে ছেড়ে কথা কইতো না। সেই ত্রুটিটাই বড় করে ম্যানেজমেন্টের সামনে তুলে ধরে তার বিপক্ষে কাজে লাগাতো। শবনম জানে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এখন শুধু স্থির অবিচল ভাবে স্টিয়ারিংটা ধরে রাখতে হবে। কিছুতেই অধৈর্য হওয়া চলবে না। সেই পুরনো বাক্যটা নিজেকে শোনায় সে, ‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।’
শবনম হারতে চায় না, যেভাবেই হোক সে এই লড়াইয়ে জিততে চায়।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া