সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৭

স্নানের শব্দ

অফিসের আবহাওয়ায় সূক্ষ্ম একটা পরিবর্তন টের পাচ্ছে শবনম। ঠিক দৃশ্যমান কিছু নেই কিন্তু অদৃশ্য একটা বিভাজনের বাতাস হু হু করে বইছে যেন। ওসমান গণি সিইও হতে যাচ্ছে এই বিশ্বাসে একদল আগেভাগেই তার সুনজরে পড়ার আশায়, তার দলে যোগ দেওয়ার জন্য কসরত শুরু করে দিয়েছে। আরেকদল যারা গণিকে অপছন্দ করে তারা শবনমের পাঁ ধরার পাঁয়তারা করছে, যদিও শবনম স্বভাবগত কারণেই তাদের খুব একটা পাত্তা টাত্তা দিচ্ছে না। কিন্তু ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে তুমি যদি ওসমান গণিকে সমর্থন না করো তবে তার মানে হচ্ছে তুমি শবনমের লোক। ফলে শবনম প্রকাশ্যে কাউকে আশকারা না দিলেও মনিরুজ্জামান তার দলবল নিয়ে শবনমের পক্ষে দলভারী করে চলেছে।

‘এইসব গ্রুপিং ট্রুপিং ছাড়ো তো মনিরুজ্জামান, আমি পরিশ্রম করা মানুষ, আমার দলবাজির দরকার নাই। অফিসে এইরকম বিভক্তি একদমই ভাল লাগছে না আমার। এসব থামাও..’

মনিরুজ্জামানকে কড়া গলায় ধমক দিয়ে বলেছে শবনম। কিন্তু তাতে কি আর মনিরুজ্জামান থামে? সে বত্রিশ দাঁত বের করে হাসিমুখে বলে,
‘ম্যাডাম আপনি না চাইলে কি হবে, সবাই জানে অফিসে এখন দুইটা ভাগ। বাটপার আর তোষামোদকারীরা সব গেছে ওসমান গণির দলে আর বাকিরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও সব নীরবে আপনার দলে। আপনার চাওয়া না চাওয়ায় কিছু আটকাবে না ম্যাডাম। এটা হবেই।’

শবনমের অস্বস্তি লাগে, অফিসে এই ধরনের দলাদলির চর্চা সে আগে কখনো করেনি। করার দরকারও পড়েনি। প্রফেশনের শুরুর দিকে যখন জুনিয়র পোস্টে কাজ করেছে তখন কোনো কোনো বস যে তাকে দলে টানার চেষ্টা করেনি তা নয়, কিন্তু কখনোই কারো দাবার চালের গুটি হতে ইচ্ছে করেনি তার। ফলে কৌশলে সব পক্ষের সাথেই সুসম্পর্ক বজায় রেখে টেবিলে নাক মুখ গুজে নিজের কাজটা মনোযোগ দিয়ে ভালোভাবে করার চেষ্টা করে গেছে সে। সব দলের সঙ্গেই এক ধরনের ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে। রওশন আপা শবনমের এই ভারসাম্যবোধের খুব প্রশংসা করতেন। কিন্তু এখন তো সেই ভারের সমতা রক্ষা আর কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে এসে বিনা যুদ্ধে মাঠ ছেড়ে দেওয়ার কোনো ইচ্ছা শবনমের নেই।

এরই মধ্যে দুপুরবেলা লাঞ্চের পর শবনমের রুমে এসে একাউন্টসের আতিয়ার সাহেব জানিয়ে গেলেন ওসমান গণির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করার জন্য উপর থেকে নির্দেশ এসেছে। একটা উদ্দেশ্যপূর্ণ বাঁকা হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে মেদবহুল শরীরটা চেয়ারে এলিয়ে দিয়ে বললেন,
‘আপনের তো কপাল খুলি গেছে ম্যাডাম। এবার আর কেউ আফনেরে আটকায়া রাখতে হারতো ন’।’

যেন কিছুই জানে না এমন ভঙ্গী করে শবনম বলল, ‘কি যে বলেন না! ওসমান গণির জন্য তো আমার খারাপই লাগছে। সত্য মিথ্যা তো জানি না, কিন্তু বেচারা এমন একটা বাজে অবস্থায় পড়ল!’
‘অফিসের কেউ না কেউ আছে এর পেছনে, বুঝলেননি? নাইলে এত ভিতরের খবর বাইরে যাইতে পারে ন’।’
আতিয়ার সাহেব নিচু গলায় ফিসফিস করে।

‘তাই নাকি? কারা জড়িত জানা গেছে?’ শবনম ততোধিক ফিসফিস করে জানতে চায়।
‘না, এখন পর্যন্ত জানন যায় ‘ন। তবে ধরি ফালাইব। এইসব কথা চাপা থাকে না।’
‘কিন্তু ওসমান গণির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, টাকা পয়সা এদিক সেদিক করার, সেই কাজটা কি সত্যি? আসলেই সে দুর্নীতি করছে, নাকি করে নাই, পুরাটাই কি মিথ্যা অভিযোগ..’
‘না, সেইটা আঁই জানি ন। আল্লাহ মাবুদ জানে, কার মনে কি আছে, তবে বুঝলেননি, কথায় আছে না, যা রটে তার কিছুটা তো বটে.. তদন্ত করলেই পাওন যাইব হেতি দোষী কি নির্দোষ! কিন্তু হেতি সিইও হওনের যে খায়েশ করছিলেন, সেইটা আপাতত পুরণ হওনের কোনো পথ নাই ..আফনের পথ খুলি গেছে.. আর কুনো বাঁধা নাই।’
‘কি যে বলেন না, ভাই, সবই তো বোর্ড মেম্বারদের মর্জি, দেখেন আগে, ম্যানেজমেন্ট কি সিদ্ধান্ত নেয়.. পর্দার আড়ালে কত কিছু ঘটে, সব কিছু কি আমরা জানি?’

আতিয়ার সাহেব চলে যাওয়ার পর কম্পিউটর স্ক্রিনে চোখ রেখে গত মাসের আয়-ব্যয়ের হিসাবটা দেখছিল শবনম, তখনই ঘরের দরজা ঠেলে ঝড়ের গতিতে ঢুকলো ওসমান গণি। বিধ্বস্ত, রাগী চেহারা, মাথায় চুলগুলো অবিন্যস্ত, চোখে ক্রোধ, উত্তেজনায় শরীর কাঁপছে তার। দাঁড়ানো অবস্থাতেই শবনমের টেবিলে দু হাত রেখে মাথাটা সামনে বাড়িয়ে চাপা গলায় হিস হিস করে উঠল সে,
‘নোংরা খেলাটা না খেললেও পারতেন ম্যাডাম..ছি, এত নিচে কীভাবে নামতে পারলেন?’
‘হোয়াট? কী বলতে চান আপনি?’
আকস্মিক এই আক্রমণে রেগে গিয়ে সাঁই করে চেয়ার ছেড়ে উঠে ওসমান গণির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায় শবনম।
‘এই চক্রান্তটা না করলেও পারতেন, ম্যাডাম। মানুষ পাওয়ারের জন্য এমন ইতরামি করতে পারে জানা ছিল না! অন্তত আপনার কাছে এটা আশা করি নাই..’
ওসমান গণির কণ্ঠে তীব্র শ্লেষ। এবার তর্জনী উঁচিয়ে গলা চড়িয়ে প্রায় চিৎকার করে উঠল শবনম।
‘মুখ সামলে কথা বলেন ওসমান গণি, যা তা অপবাদ দিলে আমি কিন্তু একদম সহ্য করব না। সাবধান করে দিচ্ছি আপনাকে।’

শবনমের রাগত কণ্ঠস্বর রুমের কাঁচের দরজা ভেদ করে সামনের করিডোর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেল।
‘আমাকে কেন খামাকা আপনার কৃতকর্মের সঙ্গে জড়াতে চাইছেন? হ্যাঁ? যা বলার তদন্ত কমিটির সামনে গিয়ে বলেন! এখানে মাস্তানী করতে আসবেন না।’

শবনমের রণরঙ্গিণী মূর্তির সামনে এবার একটু থমকে গেল ওসমান গণি।
‘পদের লোভে আপনি হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন, কাকে কি বলছেন বুঝতে পারছেন না। পাগল হয়ে গেছেন!’
শবনম ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে।
‘না ম্যডাম, আমি ঠিক আছি। জ্ঞান বুদ্ধি লোপ পায় নাই। পাগলও হই নাই। সবই আমি বুঝতে পারছি ম্যাডাম। পরিষ্কার বুঝতে পারছি। কাউকে ছাড়ব না আমি। সব কুচক্রীদের দেখে নিবো।’

হুমকি দেওয়ার ভঙ্গীতে কথাটি বলে দড়াম শব্দ করে দরজাটা ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে যায় ওসমান গণি। শবনম ধপ করে নিজের চেয়ারে বসে একটু হাঁপাতে থাকে। প্রচণ্ড রাগে পা থেকে মাথা পর্যন্ত চিড়বিড় করছে তার। এক গ্লাস পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে শবনম। নির্ঝর চৌধুরী একবার কথায় কথায় বলেছিলেন, প্রফেশনের ঘাত প্রতিঘাত সামলাতে হলে গায়ের চামড়া মোটা হতে হয়। রাগ ক্রোধ কদাচ থাকতে নয়। অথচ ওসমান গণির এই নোংরা কুৎসিত আক্রমণের শিকার হয়ে রাগ ক্রোধ ক্ষোভ কোনোটাই সামলাতে পারছে না শবনম। মনে হচ্ছে চিৎকার করে ওসমান গণিকে গালিগালাজ করতে পারলে বা আঘাত করতে পারলে তার ক্ষোভ হয়ত কিছুটা কমত। বুক ভরে বাতাস নিয়ে মুখ দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ে শবনম। নিজের ছোট্ট রুমের ভেতর পায়চারি করে নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করে।
শবনম কখনোই বদরাগী টাইপের মানুষ নয়। সারা জীবন কারো উপকার করতে না পারলেও ক্ষতি অন্তত করেনি, কিন্তু এবার কি প্রতিযোগিতায় নেমে সে নিজের শুদ্ধ হৃদয়কে অশুদ্ধ করে ফেলল? শীর্ষে ওঠার জন্য প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে সাদা গায়ে কালি লাগিয়ে ফেলল? এই যে, ওসমান গণির সঙ্গে সংঘাত তার প্রধান কারণ তো এটাই যে তারা দুজনই একই সঙ্গে সিইও পদ পাবার জন্য আকাঙ্ক্ষা করছে। ফলে তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এই প্রতিযোগিতায় একজন জয়ী হবে এটাই নিয়ম। খেলা শুরু হয়ে গেছে, এখান থেকে পিছিয়ে আসার কোনো সুযোগ নেই। ধনুক থেকে তীর ছুটে গেছে, তাকে ফেরানো সম্ভব নয়।

ঘটনাচক্রে শবনম এই খেলায় ভালো অবস্থানে আছে। আর ওসমান গণি গাড্ডায় পড়ে গেছে। আবার উল্টোটাও হতে পারত, শবনমের কোনো ত্রুটি খুঁজে পেলে প্রতিপক্ষ নিশ্চয়ই তাকে ছেড়ে কথা কইতো না। সেই ত্রুটিটাই বড় করে ম্যানেজমেন্টের সামনে তুলে ধরে তার বিপক্ষে কাজে লাগাতো। শবনম জানে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এখন শুধু স্থির অবিচল ভাবে স্টিয়ারিংটা ধরে রাখতে হবে। কিছুতেই অধৈর্য হওয়া চলবে না। সেই পুরনো বাক্যটা নিজেকে শোনায় সে, ‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।’
শবনম হারতে চায় না, যেভাবেই হোক সে এই লড়াইয়ে জিততে চায়।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-১৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-১২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১১

স্নানের শব্দ: পর্ব-১০

স্নানের শব্দ: পর্ব-৯

স্নানের শব্দ: পর্ব-৮

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে বরুড়া ও মুরাদনগরে পৃথক দুইটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।

জানাযায়, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে সোমবার দুপুরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। মৃত দুইজন বড়হরিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন পয়ালগছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান বিপ্লব।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে হালকা মেঘের মধ্যে শিশুরা মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হয়। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহত কিশোর দুজন হলেন পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন(১৩) এবং আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন (১৩)।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে দু স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে একজন। হাসপাতাল থেকে নিহত দুজনের লাশ স্বজনরা বাড়িয়ে নিয়ে যান।

অপরদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরে জমির ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার সকালে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামের মৃত বীরচরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬৪) ও আন্দিকুট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসীম উদ্দীন ভুইয়ার ছেলে জুয়েল ভুঁইয়া (৩০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত নিখিল দেবনাথ ও জুয়েল ভূঁইয়া কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে পাশাপাশি জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতের শিকার হয়। পরে তাদেরকে আশেপাশের লোকজন এসে উদ্ধার করে দেখে তারা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বর্তমানে দুজনের মরদেহ নিজ নিজ বাড়িতে আছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনে তারা ঘটনাটি জানতে পারেন। এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা