বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৮

স্নানের শব্দ 

‘আহা কি ফাঁসাই না ফাঁসল এন সি, একেই বলে পচা শামুকে পা কাটা, ফাটা বাঁশের চিপায় আটকে যাওয়া । লোকাল ভাষায় এক্কেবারে মাইনকা চিপা যাকে বলে।’ কিছুক্ষণ আগে দরজায় নক করে ওসমান গণি তার কোট টাই সমেত ঢুকে পড়েছে শবনমের ঘরে। এখন তার সামনের চেয়ারে বসে জিহ্বায় চুক চুক শব্দ তুলে দুঃখ প্রকাশ করে এই মন্তব্য তার।  

‘খুবই দুঃখজনক।’ শবনম সতর্ক ভঙ্গিতে পাল্টা মন্তব্য করে ওসমান গণিকে পর্যবেক্ষণ করে। এদের কাছে মন খুলে কিছু বলাও বিপদ, জানে সে। তবুও এই মুহূর্তে সত্যিকারভাবে তার নিজের অনুভূতিটাই বলে শবনম, ‘উনার ফ্যামিলি.. মানে, এসব শুনে তার স্ত্রী সন্তানের প্রতিক্রিয়া কি হচ্ছে ভেবে খারাপ লাগছে আমার। কিছুই তো আর অজানা থাকে না এই জমানায় ..’‘উনি তো বলেছেন এসবই সম্পূর্ণ মিথ্যা। ষড়যন্ত্র, সাজানো নাটক। কোনো স্বার্থন্বেষী মহল তাকে বিপদে ফেলতে চাইছে। আর একটা কথা বলি ম্যাডাম, ওই নাফিসা আর পল্লবি দুইজনেরই পোষাক আশাক, চাল-চলন, স্বভাব চরিত্রে কিন্তু খেয়াল করছেন কিনা- বেশ সমস্যা ছিল! আমাদের কালচারে এসব যায়, বলেন! ’ওসমান গণি একটু সামনে ঝুঁকে চোখ ছোট করে বলে। 

‘এইসব কি বলছেন গণি? কিছু হইলেই মেয়েদের চলায় বলায় জামা কাপড়ে দোষ খোঁজা বন্ধ করেন তো। সমস্যাটা পোষাকে না, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে, আমাদের সামাজিক পারিবারিক শিক্ষায়। এই দেশে তিন বছরের মেয়েও রেপ হয়, হিজাব পরা মেয়েও খুন হয়! জানেন না আপনি? অপরাধীর দোষ দেখেন না, শুধু মেয়েদের চলন বলনের দোষ ধরেন! আপনার সঙ্গে আর একজন অশিক্ষিত মানুষের তাহলে কি পার্থক্য রইল! আমার সামনে এই ধরনের কথা একদম বলবেন না। ’ শবনম বেশ রাগত স্বরেই বলে।  

‘না না, ঠিক আছে। আসলে অনেকেই ওদের চলা ফেরা, তারপর, চরিত্র টরিত্র নিয়ে আলোচনা করছিল তাই বললাম আরকি! তবে কিছু মনে কইরেন না, আরেকটা কথা বলি, এনসি এবং ম্যানেজমেন্টের অনেকের ধারণা এসবের পেছনে আপনার হাত আছে।’ ওসমান গণি আচমকা গলা নামিয়ে বলে। এবার একটু চমকে যায় শবনম। ‘মানে? .. এই উদ্ভট ধারণার কারণ কি?’‘ওই তো আপনাদের সিস্টার হুড, উইমেনহুড আরও কি কি উইমেন ফর উইমেন ইত্যাদি কি সব আছে না? তা ছাড়া কারো তাল না পেলে ওইটুকু মেয়ের এত সাহস হয় কীভাবে, একটা প্রতিষ্ঠানের সিইওর বিরুদ্ধে বাজে কথা বলে!’

‘গণি, শোনেন,’ এইবারো রাগত সুরে কিন্তু দৃঢ় গলায় বলে শবনম। ‘আপনি এইসব উল্টা পাল্টা কথা একদম ছড়াবেন না। কোথায় শুনেছেন আপনি এইসব? কে বলেছে? আনেন তাকে আমার সামনে। আমি কোনোভাবেই এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না। এইসব আজগুবি কথা কারা ছড়ায়, বলেন তো? কি উদ্দেশ্য তাদের?’‘না, মানে রাগ কইরেন না। পল্লবি তো আপনার আন্ডারে অনেকদিন কাজ করেছে। ওর সঙ্গে আপনার সম্পর্কও ভাল ছিল।’ ‘হ্যাঁ, ছিল। কিন্তু ও কখনো আমার কাছে এ সব বলেনি। আমি কিছুই জানতাম না। হয়ত ভেবেছে নালিশ করে লাভ হবে না। তাই বলেনি। তবে আমি মনে করি এই অভিযোগগুলির তদন্ত অবশ্যই হওয়া উচিত এবং দোষীদের শাস্তিও হওয়া দরকার।’ 

‘না না, তাতো অবশ্যই।’ ওসমান গণি সুর পাল্টায়। ‘তবে কিনা ঘটনা তো অনেক দিন আগের। একটা প্রশ্ন উঠতে পারে যে সেই সময় অভিযোগ করে নাই কেনো? এতদিন পরে কি উদ্দেশে এইসব বিষয় সামনে আসল? এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না?’  ‘উফ! সবকিছুতে ষড়যন্ত্র খোঁজা আপনাদের বদভ্যাস হয়ে গেছে ভাই।’ শবনম বিরক্ত হয়। ‘আমাদের এমন প্রশ্ন তোলাই উচিত না যে আগে কেন বলোনি, এত দিন কেনো চুপ করে ছিল? আরে ভাই, একটা মেয়ে নানা কারণে এধরনের ঘটনাগুলো চেপে রাখে, আসলে চেপে রাখতে বাধ্য হয় সামাজিক বাস্তবতার কারণে। মেয়ে না হলে এ সব আপনি বুঝবেন না। এ দেশে তো সব কিছুতেই মেয়েদের দোষ!’ শবনম তার নিজের ভাষায় যতটা পারে ওসমান গণিকে বুঝিয়ে বলে। সোশাল মিডিয়া যে মেয়েদের মুখ খোলার ব্যাপারে এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, মন খুলে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে অনেককে- সেটাও বলে সে।

ওসমান গণি অবস্থা বুঝে আর কথা না বাড়িয়ে কেটে পড়ে।  শবনম ভাল করেই জানে, ওর দুয়েকটা কথায় ওসমান গণির চিন্তা-চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি ম্যাজিকের মত নিমিষে পাল্টাবে না। বহু যুগ ধরে মনের বিপুল গভীরে শেকড় গেড়ে বসে থাকা ধারণা কয়েক মিনিটের একটা বক্তৃতায় বদলে যায় না। তবে ওসমান গণি গংদের উদ্দেশ্য ভাল না। তারা এই ঘটনার সঙ্গে শবনমকে জড়িয়ে ফেলে ফায়দা লুটবার চেষ্টা করছে। চোখ কান খোলা রেখে ওদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেয় শবনম। টেবিলে রাখা স্বচ্ছ কাঁচের গোল পেপার ওয়েটটা পাঁচ আঙ্গুলের মাথা দিয়ে ধরে ঘুরায় সে। কোনো কিছু নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে থাকলে এই কাজটা করে শবনম।

এই মুহূর্তে সব কিছু বাদ দিয়ে মি-টু আন্দোলনে অংশ নেওয়া নিপীড়িত মেয়েগুলোর যন্ত্রণাটা বোঝার চেষ্টা করছে শবনম। দীর্ঘ সময় ধরে সবার অগোচরে নাফিসা তানজিনা নামের ওই অল্পবয়সি মেয়েটি বা ডানপিটে পল্লবি বুকের মধ্যে কিভাবে এই বেদনা বয়ে বেড়াচ্ছিল ভেবে তার মন আর্দ্র ও কাতর হয়ে ওঠে। ওই ঘটনা নিশ্চয়ই ওদের হৃদয়ে একটা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত তৈরি করেছে। সেই দুঃসহ ক্ষত কি সহজে সারবে? কয়েকদিন আগে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছে একজন মডেল। স্পষ্ট করে হয়রানিকারীর নাম বলেছে সে। এই যে সাহস করে নিপীড়কের নাম পরিচয় প্রকাশ করে দেওয়া তার একটা প্রভাব তো সমাজে অবশ্যই পড়বে। এতদিন যারা ভাল মানুষ সেজে সুন্দর মুখে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এই মেয়েরা একটানে তাদের সেই মুখোশ ছিঁড়ে ফেলেছে। যারা ভেবেছিল অন্যায় করে পার পেয়ে গেছি, কেউ কিছু জানবে না, যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াতে পারবে, তারা এখন ভয় পাচ্ছে। নারীকে অসম্মান করতে গিয়ে একটু হলেও তারা থমকে যাচ্ছে- এটাই বা কম কিসে? হয়ত তাদের পথ ধরে আরও অনেক নারী এগিয়ে আসবে, এধরনের ঘটনার শিকার হলে হয়ত তারা নির্ভয়ে মুখ খুলবে। যদিও এসব অভিযোগের বিচার হবে কিনা- তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তারপরও থেমে যাওয়া চলবে না। প্রচলিত আদালতে না হোক সামাজিক বিচার বলেও তো একটা কথা আছে। শবনম ভাবে, এই যে মহা প্রতাপশালী এনসি, নাফিসা আর পল্লবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে অফিস থেকে আপাত বিদায় নিতে বাধ্য হলো- সেটার কি কোনো মূল্য নেই? দ্বিতীয়বার এরকম ঘটনা ঘটানোর আগে অভিযুক্তরা কি দু’বার ভাববে না? একটুও শঙ্কিত হবে না? মৌসুমী একবার বলেছিল, আমাদের সমাজে নারী নিপীড়নের বিষয়টি অনেকটা সমুদ্রে ভেসে থাকা বিশাল হিমবাহের মতোই। এর উপরটা দেখা যায় সামান্যই, নিচে গোপনে জমাট বেঁধে থাকে বেশির ভাগ অংশ, যা আমরা দেখতে পাই না। সব ঘটনা প্রকাশ পেলে এর ভয়াবহতা বোঝা যেত। তখন ওই সব কুৎসিত ঘটনার ধাক্কা খেয়ে আমাদের সভ্য ভব্য টাইটানিক সমাজ ডুবন্ত জাহাজের মতো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ত। 

শুধু কি শারীরিকভাবেই মেয়েরা হেনস্থার শিকার হয়? শারীরিক মৌখিক মানসিক কত রকম ভাবেই না নিগৃহীত হচ্ছে নারী— বিশেষ করে কর্মজীবী নারী। যদি নিজের দীর্ঘ কর্মজীবন আতশ কাঁচের নিচে ফেলে দেখে তবে শবনমের জীবনেও কি ওরকম দু/চারটি হেনস্তার গল্প খুঁজে পাওয়া যাবে না? ঊর্ধ্বতন বস, পুরুষ সহকর্মী কিভাবে তাকাচ্ছেন, কি আচরণ করছেন, কি ধরনের কথা বলছেন সেসবও লক্ষ্য করার বিষয়। যদিও অনেক নারী বিষয়টি নিয়ে তেমন সচেতন থাকেন না। বোঝেন না কোনটি হয়রানি, আর কোনটি হয়রানি নয়! আবার কেউ কেউ হয়ত এমনই উপায়হীন অবস্থায় পড়েন যে তিনি সব জেনে বুঝেও মুখ বুজে থাকেন, চ্যালেঞ্জ করতে ভয় পান, পাছে তার চাকরিটা চলে যায়! খারাপ মানুষগুলো এই সুযোগটাই নেয়।  

তবে শবনম বেশ আশাবাদী। সামনে হয়ত নারীরা তাদের হয়রানির শিকার হবার ঘটনা ভয়ে লজ্জ্বায় আর চেপে রাখবে না বরং আরও বেশি করে সামনে আনবে। দোষীদের বিচার চাইবে। সময় আসলে একটু একটু করে বদলাচ্ছে। এতদিন স্থির হয়ে থাকা ঘড়ির কাঁটা অচলায়তন ভেঙে ঘুরতে শুরু করেছে। শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে সেটা যেন আবার থেমে না যায়। 

চলবে….

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-৭

স্নানের শব্দ: পর্ব-৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১ 

আরএ/

Header Ad
Header Ad

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে

অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও মাউশির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকে অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তার বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মাউশিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের এই দায়িত্ব কেবল সাময়িক, যা পদোন্নতি হিসেবে গণ্য হবে না। পরবর্তীতে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিচালক নিয়োগ হলে এই চলতি দায়িত্ব বাতিল হয়ে যাবে।

অধ্যাপক এহতেসাম উল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য তিনি পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তার অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জুন মাসে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যান। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং আন্দোলনে অসহযোগিতা করতেন। এমনকি কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন, যা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও ব্যবহার করতেন। তিনি কলেজের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিজের বাসায় গ্রিল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিজি পদ থেকে এহতেসাম উল হককে অপসারণের খবরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একজন বিতর্কিত ব্যক্তি শিক্ষাখাতের এত বড় দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তার অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

Header Ad
Header Ad

২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে এই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে একই কারণে আরও ১২ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছিল।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।

এছাড়া তালিকায় রয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ওই সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এবার সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ওএসডি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত।

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সেখানে সামরিক আইন চলছে। তার দাবি, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র চার শতাংশে নেমে গেছে, আর দেশটি ধ্বংসের পথে। যদিও যুদ্ধকালীন সময়ে নির্ভরযোগ্য জনমত জরিপ পাওয়া কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ট্রাম্পের দাবির মতো এতটা কমেনি।

এছাড়া, ইউক্রেনের নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, "তারা কি জনগণের মতামত নিয়েছে? তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চায়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি।"

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য কৌতুকপূর্ণ, কারণ তিনি নিজেই ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ইউক্রেন চাইলে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো এবং তাদের উচিত ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর অর্থ হলো—ইউক্রেনকে হয় রাশিয়ার মিত্র সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজি হতে হতো, নয়তো প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হতো।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সমর্থন না দিয়ে বরং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিতর্কিত শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে পারেন, যা পুতিনের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র: সিএনএন

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে
২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি
ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল
ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের ১০০ বিঘা জমি, ৫ ভবন ও ২ ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্তা, বিজেপির সিদ্ধান্তে চমক
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান
নামাজি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন আইশা খান
গাইবান্ধায় গাঁজাসহ আটক এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ
উপদেষ্টাদের মিটিংয়ে কোন প্রটোকলে গিয়েছিলেন হাসনাত-পাটোয়ারী: ছাত্রদল সেক্রেটারি
সরকারে থেকে ‘নতুন দল’ গঠন করলে মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
হোস্টিং সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য দিলো নিউজিল্যান্ড
বৈষম্যবিরোধী নামধারী শীর্ষ নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলা: রাকিব
যান্ত্রিক ত্রুটিতে আবারও বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
২২০ জনকে নিয়োগ দেবে সমরাস্ত্র কারখানা, এসএসসি পাসেও আবেদন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২ দিনব্যাপি খামারি প্রশিক্ষণ
সবার সাত দিন কারাগারে থাকা উচিত: আদালতে পলক
বিপ্লবী সরকারের ডাক থেকে সরে এলেন কাফি  
নাঈম ভাই হেনা কোথায়?: ‘তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস বাপ্পা’