সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৮

স্নানের শব্দ 

‘আহা কি ফাঁসাই না ফাঁসল এন সি, একেই বলে পচা শামুকে পা কাটা, ফাটা বাঁশের চিপায় আটকে যাওয়া । লোকাল ভাষায় এক্কেবারে মাইনকা চিপা যাকে বলে।’ কিছুক্ষণ আগে দরজায় নক করে ওসমান গণি তার কোট টাই সমেত ঢুকে পড়েছে শবনমের ঘরে। এখন তার সামনের চেয়ারে বসে জিহ্বায় চুক চুক শব্দ তুলে দুঃখ প্রকাশ করে এই মন্তব্য তার।  

‘খুবই দুঃখজনক।’ শবনম সতর্ক ভঙ্গিতে পাল্টা মন্তব্য করে ওসমান গণিকে পর্যবেক্ষণ করে। এদের কাছে মন খুলে কিছু বলাও বিপদ, জানে সে। তবুও এই মুহূর্তে সত্যিকারভাবে তার নিজের অনুভূতিটাই বলে শবনম, ‘উনার ফ্যামিলি.. মানে, এসব শুনে তার স্ত্রী সন্তানের প্রতিক্রিয়া কি হচ্ছে ভেবে খারাপ লাগছে আমার। কিছুই তো আর অজানা থাকে না এই জমানায় ..’‘উনি তো বলেছেন এসবই সম্পূর্ণ মিথ্যা। ষড়যন্ত্র, সাজানো নাটক। কোনো স্বার্থন্বেষী মহল তাকে বিপদে ফেলতে চাইছে। আর একটা কথা বলি ম্যাডাম, ওই নাফিসা আর পল্লবি দুইজনেরই পোষাক আশাক, চাল-চলন, স্বভাব চরিত্রে কিন্তু খেয়াল করছেন কিনা- বেশ সমস্যা ছিল! আমাদের কালচারে এসব যায়, বলেন! ’ওসমান গণি একটু সামনে ঝুঁকে চোখ ছোট করে বলে। 

‘এইসব কি বলছেন গণি? কিছু হইলেই মেয়েদের চলায় বলায় জামা কাপড়ে দোষ খোঁজা বন্ধ করেন তো। সমস্যাটা পোষাকে না, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে, আমাদের সামাজিক পারিবারিক শিক্ষায়। এই দেশে তিন বছরের মেয়েও রেপ হয়, হিজাব পরা মেয়েও খুন হয়! জানেন না আপনি? অপরাধীর দোষ দেখেন না, শুধু মেয়েদের চলন বলনের দোষ ধরেন! আপনার সঙ্গে আর একজন অশিক্ষিত মানুষের তাহলে কি পার্থক্য রইল! আমার সামনে এই ধরনের কথা একদম বলবেন না। ’ শবনম বেশ রাগত স্বরেই বলে।  

‘না না, ঠিক আছে। আসলে অনেকেই ওদের চলা ফেরা, তারপর, চরিত্র টরিত্র নিয়ে আলোচনা করছিল তাই বললাম আরকি! তবে কিছু মনে কইরেন না, আরেকটা কথা বলি, এনসি এবং ম্যানেজমেন্টের অনেকের ধারণা এসবের পেছনে আপনার হাত আছে।’ ওসমান গণি আচমকা গলা নামিয়ে বলে। এবার একটু চমকে যায় শবনম। ‘মানে? .. এই উদ্ভট ধারণার কারণ কি?’‘ওই তো আপনাদের সিস্টার হুড, উইমেনহুড আরও কি কি উইমেন ফর উইমেন ইত্যাদি কি সব আছে না? তা ছাড়া কারো তাল না পেলে ওইটুকু মেয়ের এত সাহস হয় কীভাবে, একটা প্রতিষ্ঠানের সিইওর বিরুদ্ধে বাজে কথা বলে!’

‘গণি, শোনেন,’ এইবারো রাগত সুরে কিন্তু দৃঢ় গলায় বলে শবনম। ‘আপনি এইসব উল্টা পাল্টা কথা একদম ছড়াবেন না। কোথায় শুনেছেন আপনি এইসব? কে বলেছে? আনেন তাকে আমার সামনে। আমি কোনোভাবেই এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না। এইসব আজগুবি কথা কারা ছড়ায়, বলেন তো? কি উদ্দেশ্য তাদের?’‘না, মানে রাগ কইরেন না। পল্লবি তো আপনার আন্ডারে অনেকদিন কাজ করেছে। ওর সঙ্গে আপনার সম্পর্কও ভাল ছিল।’ ‘হ্যাঁ, ছিল। কিন্তু ও কখনো আমার কাছে এ সব বলেনি। আমি কিছুই জানতাম না। হয়ত ভেবেছে নালিশ করে লাভ হবে না। তাই বলেনি। তবে আমি মনে করি এই অভিযোগগুলির তদন্ত অবশ্যই হওয়া উচিত এবং দোষীদের শাস্তিও হওয়া দরকার।’ 

‘না না, তাতো অবশ্যই।’ ওসমান গণি সুর পাল্টায়। ‘তবে কিনা ঘটনা তো অনেক দিন আগের। একটা প্রশ্ন উঠতে পারে যে সেই সময় অভিযোগ করে নাই কেনো? এতদিন পরে কি উদ্দেশে এইসব বিষয় সামনে আসল? এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না?’  ‘উফ! সবকিছুতে ষড়যন্ত্র খোঁজা আপনাদের বদভ্যাস হয়ে গেছে ভাই।’ শবনম বিরক্ত হয়। ‘আমাদের এমন প্রশ্ন তোলাই উচিত না যে আগে কেন বলোনি, এত দিন কেনো চুপ করে ছিল? আরে ভাই, একটা মেয়ে নানা কারণে এধরনের ঘটনাগুলো চেপে রাখে, আসলে চেপে রাখতে বাধ্য হয় সামাজিক বাস্তবতার কারণে। মেয়ে না হলে এ সব আপনি বুঝবেন না। এ দেশে তো সব কিছুতেই মেয়েদের দোষ!’ শবনম তার নিজের ভাষায় যতটা পারে ওসমান গণিকে বুঝিয়ে বলে। সোশাল মিডিয়া যে মেয়েদের মুখ খোলার ব্যাপারে এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, মন খুলে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে অনেককে- সেটাও বলে সে।

ওসমান গণি অবস্থা বুঝে আর কথা না বাড়িয়ে কেটে পড়ে।  শবনম ভাল করেই জানে, ওর দুয়েকটা কথায় ওসমান গণির চিন্তা-চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি ম্যাজিকের মত নিমিষে পাল্টাবে না। বহু যুগ ধরে মনের বিপুল গভীরে শেকড় গেড়ে বসে থাকা ধারণা কয়েক মিনিটের একটা বক্তৃতায় বদলে যায় না। তবে ওসমান গণি গংদের উদ্দেশ্য ভাল না। তারা এই ঘটনার সঙ্গে শবনমকে জড়িয়ে ফেলে ফায়দা লুটবার চেষ্টা করছে। চোখ কান খোলা রেখে ওদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেয় শবনম। টেবিলে রাখা স্বচ্ছ কাঁচের গোল পেপার ওয়েটটা পাঁচ আঙ্গুলের মাথা দিয়ে ধরে ঘুরায় সে। কোনো কিছু নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে থাকলে এই কাজটা করে শবনম।

এই মুহূর্তে সব কিছু বাদ দিয়ে মি-টু আন্দোলনে অংশ নেওয়া নিপীড়িত মেয়েগুলোর যন্ত্রণাটা বোঝার চেষ্টা করছে শবনম। দীর্ঘ সময় ধরে সবার অগোচরে নাফিসা তানজিনা নামের ওই অল্পবয়সি মেয়েটি বা ডানপিটে পল্লবি বুকের মধ্যে কিভাবে এই বেদনা বয়ে বেড়াচ্ছিল ভেবে তার মন আর্দ্র ও কাতর হয়ে ওঠে। ওই ঘটনা নিশ্চয়ই ওদের হৃদয়ে একটা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত তৈরি করেছে। সেই দুঃসহ ক্ষত কি সহজে সারবে? কয়েকদিন আগে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছে একজন মডেল। স্পষ্ট করে হয়রানিকারীর নাম বলেছে সে। এই যে সাহস করে নিপীড়কের নাম পরিচয় প্রকাশ করে দেওয়া তার একটা প্রভাব তো সমাজে অবশ্যই পড়বে। এতদিন যারা ভাল মানুষ সেজে সুন্দর মুখে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এই মেয়েরা একটানে তাদের সেই মুখোশ ছিঁড়ে ফেলেছে। যারা ভেবেছিল অন্যায় করে পার পেয়ে গেছি, কেউ কিছু জানবে না, যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াতে পারবে, তারা এখন ভয় পাচ্ছে। নারীকে অসম্মান করতে গিয়ে একটু হলেও তারা থমকে যাচ্ছে- এটাই বা কম কিসে? হয়ত তাদের পথ ধরে আরও অনেক নারী এগিয়ে আসবে, এধরনের ঘটনার শিকার হলে হয়ত তারা নির্ভয়ে মুখ খুলবে। যদিও এসব অভিযোগের বিচার হবে কিনা- তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তারপরও থেমে যাওয়া চলবে না। প্রচলিত আদালতে না হোক সামাজিক বিচার বলেও তো একটা কথা আছে। শবনম ভাবে, এই যে মহা প্রতাপশালী এনসি, নাফিসা আর পল্লবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে অফিস থেকে আপাত বিদায় নিতে বাধ্য হলো- সেটার কি কোনো মূল্য নেই? দ্বিতীয়বার এরকম ঘটনা ঘটানোর আগে অভিযুক্তরা কি দু’বার ভাববে না? একটুও শঙ্কিত হবে না? মৌসুমী একবার বলেছিল, আমাদের সমাজে নারী নিপীড়নের বিষয়টি অনেকটা সমুদ্রে ভেসে থাকা বিশাল হিমবাহের মতোই। এর উপরটা দেখা যায় সামান্যই, নিচে গোপনে জমাট বেঁধে থাকে বেশির ভাগ অংশ, যা আমরা দেখতে পাই না। সব ঘটনা প্রকাশ পেলে এর ভয়াবহতা বোঝা যেত। তখন ওই সব কুৎসিত ঘটনার ধাক্কা খেয়ে আমাদের সভ্য ভব্য টাইটানিক সমাজ ডুবন্ত জাহাজের মতো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ত। 

শুধু কি শারীরিকভাবেই মেয়েরা হেনস্থার শিকার হয়? শারীরিক মৌখিক মানসিক কত রকম ভাবেই না নিগৃহীত হচ্ছে নারী— বিশেষ করে কর্মজীবী নারী। যদি নিজের দীর্ঘ কর্মজীবন আতশ কাঁচের নিচে ফেলে দেখে তবে শবনমের জীবনেও কি ওরকম দু/চারটি হেনস্তার গল্প খুঁজে পাওয়া যাবে না? ঊর্ধ্বতন বস, পুরুষ সহকর্মী কিভাবে তাকাচ্ছেন, কি আচরণ করছেন, কি ধরনের কথা বলছেন সেসবও লক্ষ্য করার বিষয়। যদিও অনেক নারী বিষয়টি নিয়ে তেমন সচেতন থাকেন না। বোঝেন না কোনটি হয়রানি, আর কোনটি হয়রানি নয়! আবার কেউ কেউ হয়ত এমনই উপায়হীন অবস্থায় পড়েন যে তিনি সব জেনে বুঝেও মুখ বুজে থাকেন, চ্যালেঞ্জ করতে ভয় পান, পাছে তার চাকরিটা চলে যায়! খারাপ মানুষগুলো এই সুযোগটাই নেয়।  

তবে শবনম বেশ আশাবাদী। সামনে হয়ত নারীরা তাদের হয়রানির শিকার হবার ঘটনা ভয়ে লজ্জ্বায় আর চেপে রাখবে না বরং আরও বেশি করে সামনে আনবে। দোষীদের বিচার চাইবে। সময় আসলে একটু একটু করে বদলাচ্ছে। এতদিন স্থির হয়ে থাকা ঘড়ির কাঁটা অচলায়তন ভেঙে ঘুরতে শুরু করেছে। শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে সেটা যেন আবার থেমে না যায়। 

চলবে….

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-৭

স্নানের শব্দ: পর্ব-৬

স্নানের শব্দ: পর্ব-৫

স্নানের শব্দ: পর্ব-৪

স্নানের শব্দ: পর্ব-৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১ 

আরএ/

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে বরুড়া ও মুরাদনগরে পৃথক দুইটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।

জানাযায়, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে সোমবার দুপুরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। মৃত দুইজন বড়হরিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন পয়ালগছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান বিপ্লব।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে হালকা মেঘের মধ্যে শিশুরা মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হয়। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহত কিশোর দুজন হলেন পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন(১৩) এবং আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন (১৩)।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে দু স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে একজন। হাসপাতাল থেকে নিহত দুজনের লাশ স্বজনরা বাড়িয়ে নিয়ে যান।

অপরদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরে জমির ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার সকালে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামের মৃত বীরচরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬৪) ও আন্দিকুট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসীম উদ্দীন ভুইয়ার ছেলে জুয়েল ভুঁইয়া (৩০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত নিখিল দেবনাথ ও জুয়েল ভূঁইয়া কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে পাশাপাশি জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতের শিকার হয়। পরে তাদেরকে আশেপাশের লোকজন এসে উদ্ধার করে দেখে তারা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বর্তমানে দুজনের মরদেহ নিজ নিজ বাড়িতে আছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনে তারা ঘটনাটি জানতে পারেন। এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা