সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪

স্নানের শব্দ

এক বাড়িতে থেকেও শ্রাবণের সঙ্গে শবনমের দেখা হলো চারদিন পর। বাড়ির ভেতরেই লালনের আরশিনগর তৈরি হয়ে গেছে যেন, মেয়ে পড়শির মতোই বলল, ‘হাই, মা, তুমি এখনো বাসায়? অফিসে যাও নাই? আজকে তোমার কোনো জরুরি মিটিং নাই বুঝি?’
শবনম মেয়ের প্রশ্নের অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে পারলেও গলায় একটু স্নেহ মিশিয়ে হাসিমুখে বলে,
‘মিটিং বিকালে, তাই একটু দেরিতে যাচ্ছি, ফিরতে দেরি হবে, তুই?’
‘আমি একটা ফ্রেন্ডের বাসায় যাব, পল্টনে..’
‘চল, তোকে নামিয়ে দিয়ে যাই।’
‘উহু, দরকার নাই, আমি ঠিকই রিকশা নিয়ে চলে যেতে পারব।’
শ্রাবণ তার এক রাশ লম্বা কালো চুল রাবার ব্যান্ড দিয়ে আটকে নিয়ে বলে।
‘সে তো পারবিই, তোর সঙ্গে একটু গল্প করতে করতে গেলাম না হয়, তুইও যা ব্যস্ত হয়ে গেছিস, আজকাল দেখাই হয় না তোর সঙ্গে..’

অনিচ্ছাতেও নাক কুঁচকে মায়ের সঙ্গে যেতে রাজি হয় শ্রাবণ। ছোটবেলায় পুতুলের মতো তুলতুলে যে মেয়েটা মার গলা জড়িয়ে ধরে জানতে চাইত সব বন্ধুদের মায়েরা স্কুলের সামনে বসে থাকে, ওর মা কেনো থাকে না? যে মিষ্টি নরম মেয়েটা ঠোঁট ফুলিয়ে ছলছল চোখে প্রায় সকালেই মায়ের শাড়ির আঁচল ধরে আবদার করত, ‘আজ অফিসে যেওনা মা’। সেই কোমল চঞ্চল শিশুটিকে আজকের শ্রাবণের মধ্যে খুঁজতে থাকে শবনম। ঠোঁটের কাছের সেই আহ্লাদি ভাবটা, চোখের তারার সেই বাদামী ঝিলিক, ছোট্ট লক্ষীমন্ত কপাল সব একই আছে শুধু সেই শ্রাবণ বেবী আর শিশু নেই, বড় এক তরুণী হয়ে গেছে। আমার সন্তান আর আমার নেই, তার এখন নিজস্ব ভাবনা আছে, তার আছে ভবিষ্যতের দিকে ছুটে যাওয়ার তাড়া, সে স্বাধীনচেতা, নিজস্ব তার মন ও মনন, তার একান্ত স্বপ্নে নেই অন্যের এমনকি তার বাবা মায়েরও প্রবেশের অধিকার।

গাড়িতে চড়েই কানের মধ্যে হেডফোন গুজে দেয় শ্রাবণ, চোখ বন্ধ করে মাথা দুলিয়ে কি যেন শোনে। শবনম মেয়ের কাধে হাত দিয়ে ডাকে, ‘কি শুনিস?’
‘কি আবার? গান। শুনবা? দাঁড়াও ..’ শ্রাবণ হেডফোনের একটা প্রান্ত শবনমের কানে গুজে দেয়। পিংক ফ্লয়েডের ‘সো ইউ থিংক ইউ ক্যান টেল, হেভেন ফরম হেল’ বাজতে থাকে।
শবনমের অনভ্যস্ত কানে কন্যার পছন্দের হাইবিটের ইংরেজি সংগীত পীড়নের মতোই শোনায়। তবু মেয়ের মন রাখতে ঘাড় কাৎ করে কানের মধ্যে হেডফোনের বাটন লাগিয়ে শ্রাবণের পছন্দের কয়েকটা গান চোখ বুজে শোনে সে। শেষমেষ আর না পেরে বলে,
‘পরে আবার শুনব নে রে মা, আমার কানে তোদের এই সব গানের চেয়ে এখনো রবীন্দ্র সংগীত বা হারানো দিনের গান ভাল লাগে।’
‘জেনারেশন গ্যাপ, মা’
শ্রাবণ একটু হেসে বলে। ‘তবে ওদের গানের লিরিকসগুলো খুব সুন্দর, ফিলোসফিক্যাল, একটু মনোযোগ দিয়ে শুনলে বুঝবা..’

শ্রাবণ আবার নিজের কানে হেডফোন গুজে নেয়। শবনম মেয়ের সঙ্গে গল্প করার জন্য বিষয় হাতড়ায়। কোনো প্রসঙ্গে কথা বললে শ্রাবণ ঝর্ণার মতো কলকল করে কথা বলবে ভেবে পায় না সে। কিছুদিন আগেও তাদের প্রসঙ্গের অভাব ছিল না, স্কুলের কোনো টিচার কিভাবে কথা বলে, কোন সাবজেক্ট পড়তে অসহ্য লাগে, কোনটা পানির মতো সোজা, কোন বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ড হুমকি দিয়েছে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার, কোন বান্ধবী বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে এমন হাজার বিষয়ে অবিরাম কথা বলতো শ্রাবণ, বরং শবনমই সেসব কথার অর্ধেক শুনতো, অর্ধেক শুনতো না। এখন হয়েছে উল্টোটা, শবনমের মনে হয় তার কোনো কথাই হয়ত ঠিকমতো শোনে না শ্রাবণ। বেশি কিছু বললে বিরক্ত হয় বা চুপ করে থাকে।

কি নিয়ে কথা শুরু করা যায়, ফেমিনিজম? ক্যারিয়ার? ওয়ার্ল্ড পলিটিকস? মার্কসবাদ? কোনটা এই মুহূর্তে ওর পছন্দের বিষয়? আমার মা কি আমার সঙ্গে কথা বলার সময় এই সমস্যায় পড়ত, ভাবতে চেষ্টা করে শবনম। নিজের মায়ের সঙ্গে অনেক বিষয়েই মতের অমিল ছিল তার, মায়ের সরল গ্রামীণ বিচার বুদ্ধি আর অভিজ্ঞতার সঙ্গে শবনমের চিন্তাভাবনার বিরোধ লেগেই থাকত কিন্তু সেই কারণে স্বাভাবিক কথাবার্তা চালাতে কখনো অসুবিধায় পড়তে হয়নি। শ্রাবণ হয়েছে কিছুটা গম্ভীর আর চাপা স্বভাবের, ওর মনের তল খুঁজে পেতে তাই প্রায়ই হাবুডুবু খায় শবনম।
‘আচ্ছা, মা, আজকে সারাদিন তুমি অফিসে কি কাজ করবা?’

শ্রাবণ হঠাৎ কান থেকে হেডফোন খুলে একটু ঘুরে বসে মায়ের মুখোমুখি হয়ে জিজ্ঞেস করে।
‘প্রতিদিন যা করি, মিটিং, ফাইল দেখা, সিদ্ধান্ত দেওয়া, জুনিয়রদের কাজের তদারকি করা এসব। তুই কি করবি?’ পাল্টা জানতে চায় শবনম।
‘এই তো মিরাকে নিয়ে একটু ঘুরতে বের হব, ও খুব আপসেট, জানো, আংকেল আন্টি ওকে বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, কিন্তু ও এখন বিয়ে করতে চায় না।’
‘কেনরে, ওর পছন্দের কেউ আছে?’
‘মা, সেই জন্য না। মিরা আসলে এখনই বিয়ে করার জন্য রেডি না। অন্তত পড়াশোনাটা তো কমপ্লিট করবে। থ্যাংকস গড, তোমরা এখনো এতো আমার বিয়ে টিয়ে নিয়ে ভাবো না। শুধু দাদিই মাঝে মাঝে বিয়ের কথা বলে।’
দাদির গলা নকল করে শ্রাবণ বলে, ‘নাতিন জামাই দেখতাম চাই, কয়দিন বাঁচি জানি না। মইরা গেলে আফসুস থাকবো। তুই তাড়াতাড়ি ভাল দেইখ্যা একটা বিয়া বস।’
‘তোর পছন্দের কেউ আছে নাকি? ছেলেবন্ধু?’ শবনম মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করেই ফেলে।
‘ছেলে বন্ধু আছে, কিন্তু স্পেশাল কেউ নাই মা। কাউকে পছন্দ হয় না, মনে হয় হবেও না, চিন্তা ভাবনা রুচি বিশ্বাস আদর্শ কিছুতে মেলে না। কেমন সব বলদ বলদ লাগে সব গুলোকে, আর ওরা এমন সব বিষয় নিয়ে তর্ক করে, যা নিয়ে আমার কথা বলতেও ইচ্ছে করে না। উফ, খুব ইমম্যাচিওর মনে হয়! আমি বাপু বিয়ে টিয়ে করব না, ঠিক করে ফেলেছি, নিজের মত স্বাধীন জীবন যাপন করব, দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়াব, বুড়ো হলে একটা ওল্ড হোমে চলে যাব। কেমন হবে বল!’

শ্রাবণ তার স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্য ভেঙে এক টানা নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলে। শবনম মেয়ের কথায় সায় দিয়ে সামনের রাস্তায় চোখ রেখে বলে, ‘ভালই তো! বেশ রোমান্টিক প্রথা বিরোধী জীবন। মনমানসিকতায় মিল না হলে কোনো সম্পর্কে না জড়ানোই ভাল। বিয়ে করতেই হবে, কে বলেছে..’
শ্রাবণ হেসে বলে, ‘অরুন্ধতি রায়ের মা নাকি তার মেয়েকে বলেছিলেন, আর যাই করো না কেন, কখনো বিয়ে করো না। হা হা হা, তুমিও সেই পথ ধরলা নাকি?’
শবনমও মেয়ের সঙ্গে হাসে, বলে, ‘আমি অতটা শক্ত করে কিছু বলছি না, যে বিয়ে করোই না, আমি বলতে চাচ্ছি মন-পছন্দ মানুষ না পেলে খামোকা বিয়ের দরকার কি? একটা অসুস্থ সম্পর্ক বয়ে বেড়ানোর মানে নেই। তবে পরে যদি এমন কাউকে খুঁজে পাস যাকে খুব ভাল লেগে গেল, তাহলে বিয়ে করতেও তো পারিস। আমি সেটাই বলছি।’
‘ও’।

কিছুক্ষণ দুজনেই চুপচাপ। শ্রাবণ একটু ভেবে বলে, ‘আচ্ছা, মা, বিয়ে না করলে তো বাংলাদেশে আবার বাচ্চা নেওয়া যায় না কিন্তু আমার আবার বাচ্চা খুব ভাল লাগে মা। আচ্ছা, দত্তক নিয়ে বাচ্চা পালা যাবে না? বাংলাদেশে তো অনেক বাচ্চারই বাবা মা থাকে না, সেরকম কাউকে দত্তক নিয়ে নেব..’
সামনের গাড়িটা হঠাৎ ব্রেক কষলে শবনমের গাড়িটাও একটা ঝাঁকুনি খায়, শ্রাবণের কথা শুনে মনে মনে সেরকম একটা ঝাঁকুনি অনুভব করে শবনম। বাংলাদেশের বাস্তবতায় অবিবাহিত একজন নারীর দত্তক সন্তান পালন সমাজ কিভাবে দেখবে, তা ভাবার চেষ্টা করে সে। মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
‘তুই সিরিয়াসলি এরকম ভাবছিস নাকি?’
‘হ্যাঁ, ইন্ডিয়ান একট্রেস সুস্মিতা সেনের মতো সিঙ্গেল মাদার হব।’

শ্রাবণ মিষ্টি করে হাসে। ‘বায়োলজিক্যাল মা হওয়া অনেক ঝক্কি। কিভাবে যে তুমি আমাকে জন্ম দিছ কে জানে? আমি তো আমার ইউটেরাসটাই ফেলে দিতে চাই, খামোকা শরীরে একটা বাড়তি অঙ্গ রাখার কি দরকার? মাসে মাসে ঝামেলা, ব্যাথা, অস্বস্তি আর কষ্ট সহ্য করা। আর আমি যখন বাচ্চা জন্ম দেব না বলেই ঠিক করেছি..আর এই বাজে নষ্ট পৃথিবীতে একটা বাচ্চাকে কেন আনব আমি? কি দরকার?’

শবনম বুঝতে পারে না, শ্রাবণ কি ওকে ঘাবড়ে দিতে চাইছে? মাকে অদ্ভুত সব কথা শুনিয়ে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়ে মজা পাচ্ছে ? ও তো আর এখন বাচ্চা মেয়ে নয়, একুশ বছরের একটা তরুণীর মুখে এসব কি ধরনের কথা? শবনম যেন নিজের একমাত্র সন্তানকে পুরোপুরি চিনতে পারছে না। কেমন একটা অস্বস্তি হয়।
‘মা, ভয় পাচ্ছ নাকি?’ শ্রাবণের মুখে দুষ্ট হাসি। রাস্তায় এখন আর জ্যাম নেই। গাড়ি প্রায় পৌঁছে গেছে পল্টনের কাছাকাছি। শবনম মুখে শুকনো হাসি ধরে রেখে বলে, ‘নাহ, তুই ভয় দেখাতে চাইলেই আমি ভয় পাব নাকি?’
শ্রাবণ বলে, ‘তাইলে সার্জারির পারমিশন দিয়ে দিয়েছ? যে কোনোদিন করিয়ে ফেলব কিন্তু..’
‘কিন্তু‘ শ্রাবণ, আরও পরে, কখনো তো তোর বায়োলজিক্যলি মা হওয়ার ইচ্ছা জাগতে পারে। মনে হতে পারে পৃথিবীর কোটি কোটি নারী যে অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গেছে সেই অভিজ্ঞতাটা নিজেও নেই। ইউটেরাস ফেলে দিলে তো সেই অপশানটা থাকে না।’
গাড়ি মিরাদের বাড়ির গলির সামনে পৌঁছে গেছে। গাড়ি থেকে নামতে নামতে শ্রাবণ দৃঢ় গলায় বলে,
‘ইচ্ছা হবে না।’
‘যদি তোর বরের ইচ্ছা হয়?’
‘বিয়েই তো করব না..আগেই বলেছি। আর আমার শরীর সিদ্ধান্ত আমার..’ শ্রাবণ চিৎকার করে বলে।

তারপর শবনমের উদ্দেশে ডান হাত নাড়িয়ে গলির ভেতর হনহন করে হাঁটতে থাকে, একবারও পেছনে ফিরে তাকায় না।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>
স্নানের শব্দ: পর্ব-৩

স্নানের শব্দ: পর্ব-২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১ 

আরএ/

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভারত এখন পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং দিল্লিতে কূটনৈতিকদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। তবে এসব আলোচনা মূলত অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরতেই হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

কাশ্মির সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে গুলিবিনিময় অব্যাহত রয়েছে। কাশ্মিরে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে এবং শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অতীতের সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার ইতিহাস তুলে ধরলেও এবারকার হামলায় সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ এখনো প্রকাশ করেনি। পাকিস্তান সরকার সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যেহেতু ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পরমাণু শক্তিধর দেশ, তাই সামরিক সংঘাত বড় ধরনের বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।

ইরান ও সৌদি আরব মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানালেও, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি তাদের মনোযোগ সীমিত বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৯ সালের ঘটনার তুলনায় এবার প্রমাণের স্বচ্ছতা কম, আর “রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” নামে একটি অজ্ঞাত গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করলেও ভারত এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠনের ছায়া গোষ্ঠী বলে মনে করছে।

ভারতীয় সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ রয়েছে এবং মোদি সরকার “বড় ধরনের কিছু” করার পরিকল্পনায় এগোচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ