সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩

স্নানের শব্দ

অফিসে ঢোকার মুখেই, লিফট থেকে নেমে, ওসমান গণির সঙ্গে দেখা, ওসমান গণির চেহারা অনেকটা গোলগাল চাইনিজদের মতো, ছোট ছোট চোখ, মাথায় সোজা পাতলা চুল, মুখে ফ্রেঞ্চ কাট দাড়ি, লম্বায় মাঝারি, মোটাসোটা শরীর, একটা আকাশি রঙের সার্টের সঙ্গে গলায় নেভি ব্লু রঙের টাই ঝুলিয়েছে গণি, শবনমকে দেখে হাসি মুখে বলল, ‘গুড মর্ণিং শবনম আপা, ইউ আর লুকিং গ্রেট!’

কর্পোরেটের চলতি নিয়মমাফিক মুখে হাল্কা হাসি ঝুলিয়ে গণিকে পাল্টা সম্ভাষণ জানাল শবনম। যদিও শবনম খুব ভাল করেই জানে গণি হারামজাদা হয়ত মনে মনে বলছে, ‘বুড়ির ঢং কত! এই বয়সেও কি সাজুগুজু কইরা অফিসে আসছে !’

এই মুহূর্তে অফিসে শবনমের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ওসমান গণি, প্রকিউরমেন্ট ডিপার্টমেন্টের হেড, তবে ম্যানেজমেন্টের ব্যাপক তোষামোদি করে সব কিছুতেই ওর চেয়ে এক ধাপ সামনে এগিয়ে আছে সে। থাকুক এগিয়ে, উচ্চপদস্থদের চাটুকারিতা করা শবনমের পক্ষে আগেও সম্ভব হয়নি কোনদিন আর হবেও না, এই যোগ্যতাটি (!) না থাকার কারণে জীবনে মাশুলও গুনতে হয়েছে অনেক, চোখের সামনে হাত কচলানো পার্টি সুবিধা হাতিয়ে নিয়েছে, আর সে পড়ে রয়েছে বেকুবের মতো লাইনের পেছনে। শবনম জানে, ব্যক্তিত্বহীন বসরাই তোষামোদী পছন্দ করে, আর যারা কাজে ফাঁকি দেয়, অসৎ, যারা অনৈতিক সুবিধা পেতে চায়, তারাই হয়ত ঊর্ধ্বতনদের তোষামোদি করে নিজের মতলব হাসিল করে।

এই কোম্পানির সিইও যিনি, টপ ম্যানেজমেন্টের খুব পছন্দের লোক নির্ঝর চৌধুরী সুন্দর চেহারার স্মার্ট, পরিপাটি, হাসিখুশি দীর্ঘদেহী ভদ্রলোক, বহুদিন দেশের বাইরে ছিলেন, বড় বড় কোম্পানিতে কাজ করেছেন কিন্তু দিন শেষে তিনিও কি চাটুকারদেরই পছন্দ করেন না? শবনমের স্বাধীনচেতা দৃঢ় মনোভাব যে তার তেমন পছন্দ নয়, সেটা উৎকট ভাবে প্রকাশ না করলেও শবনম তার অপছন্দের ব্যাপারটা নিজের সিক্সথ সেন্স দিয়ে ধরতে পারে। ফলে, শবনমও তার সঙ্গে একটা প্রয়োজনীয় পেশাদারি দুরত্ব বজায় রেখে নিজের নির্ধারিত কাজ কর্মগুলো করে যায়।

নির্ঝর চৌধুরী সারাক্ষণই অফিস মিটিংগুলোতে বলতে থাকেন, কোম্পানিতে গণতান্ত্রিক চর্চা চালু করতে হবে, টপ টু বটম সবার মতামতের মূল্য আছে, আমি সব বিষয়ে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করি। কিন্তু মুখে যাই বলুক, শবনমের বুঝতে অসুবিধা হয় না যে তিনি আসলে চান সবাই তার সিদ্ধান্তকেই সমর্থন করুক। ওসমান গণিও এটা না বোঝার মতো বোকা নয় আর সে কারণেই সবসময় সে আগ বাড়িয়ে বলতে শুরু করে, ‘অসাধারণ প্রস্তাব স্যার। অতি উত্তম প্রস্তাব, আপনার মাথায় কিভাবে এত চমৎকার সব আইডিয়া আসে বুঝি না..’

নির্ঝর চৌধুরী মুচকি হেসে বলেন, ‘অভিজ্ঞতা, বুঝলে গণি, অভিজ্ঞতার মূল্য জ্ঞানের চেয়ে বেশি! কি বলেন শবনম?’ শবনমও মাথা নাড়ে। শুকনো গলায় বলে, ‘সে তো অবশ্যই!’

তার নিজের চাকরিজীবনও যে বাইশ বছর পেরুতে চলল সে কথা আর এই মজলিশে বলে কি হবে? এখানে টিকতে হলে নির্ঝর চৌধুরীর স্তাবকতা করতে হবে, মাথা দুলিয়ে বলতে হবে, ‘চমৎকার সে হতেই হবে, হুজুরের মতে অমতকার?’ অমত নেই। অমত হলে বা মতবিরোধ তৈরি হলেই তো সমস্যা। নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে গেলে বসের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটবে। শবনম নিজেকে বুঝিয়েছে, খামাকা বিরোধিতায় যাওয়ার দরকার নেই, এই মত যদি তোমার পছন্দ না হয় তাহলে স্রেফ চুপ করে থাক, আর যদি দেখ তোমার মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তখন মত প্রকাশ কর।

এই অফিসগুলো তো অফিস নয় যেন ইঁদুর দৌড়ের মাঠ, এখানে সবাই দৌড়ায় উপরে উঠার জন্য আর কর্তৃপক্ষের সুনজরে পড়ার জন্য। শবনমের পুরনো কলিগ বিল্লাহ ভাইয়ের কথা মনে পড়ে, ‘বুঝলেন শবনম, বসদের সবসময় দেখাবেন আপনি খুবই ব্যস্ত, সারাক্ষণই তাদের সামনে ফাইলপত্র হাতে অযথাই ছোটাছুটি করবেন, উঠতে বসতে সালাম দেবেন, শুধু মাথা নিচু করে কাজ করলে হবে না, কাজ দেখাতে হবে, নইলে নেপোয় খাবে দই আর আপনি আফসোস করে মরবেন..’

শবনম ইন্টারকমে ফোন করে অ্যাকাউন্টসের নতুন ছেলেটাকে ডেকে পাঠায়, সেদিন খুব কড়া ডোজ দিয়ে ফেলেছে, আজকে একটু মলম লাগিয়ে দিতে হবে, যাতে ক্ষতটা স্থায়ী না হয়, সহকর্মীদের মনের অবস্থাটা খেয়াল রাখাও একজন ভাল বসের দায়িত্ব।

‘এসো মনিরুজ্জামান, বসো, এই অফিসে কতদিন হলো জয়েন করেছ? এটাই প্রথম চাকরি?’
‘নয় মাস ম্যাডাম। জি¦, এটাই প্রথম ফুল টাইম জব।’

শবনম তার সামনে বসে থাকা মনিরুজ্জামানকে ভাল করে লক্ষ্য করে। গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যাম, মাথায় ঘন কালো কোকড়া চুল, ক্লিন শেভড চেহারায় এখনো গ্রামীণ তারুণ্য ও সারল্যের ছাপ পুরোপুরি মিলিয়ে যায়নি। শবনম ছেলেটির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসল, তাকে চা অফার করল, তারপর জানতে চাইল, ‘তোমার জীবনে তুমি কতদূর যেতে চাও মনিরুজ্জামান?’

মনির কিছুক্ষণ ইতস্তত করে, তারপর বলে, ‘এইতো,সবাই যেমন শীর্ষে যেতে চায় ম্যাডাম তেমন ..’
‘ভেরি গুড। বড় স্বপ্ন দেখতে হবে, বড় আশা করতে হবে। আর পজেটিভ থিংকিং প্র্যাকটিস করবে। গ্লাস অর্ধেক ভর্তি দেখা শিখবে, অর্ধেক খালি দেখা না, ঠিক আছে? মনোছবি বুঝো? মনে মনে নিজেকে কোথায় দেখতে চাও তার একটা ছবি তৈরি করবে, প্রতিদিন, তারপর সেই অনুযায়ী কাজ করে যাবে। মানুষের মধ্যে ভালটা খুঁজে বের করে সেটার প্রশংসা করবে, প্রশংসা না করতে পারলে চুপ থাকবে, সেটাও ভাল। এগুলি প্র্যাকটিস। কয়েকদিন চর্চা করো, দেখবে অভ্যাস হয়ে যাবে। বেশিরভাগ সময় নেতিবাচক চিন্তা মানুষকে পিছিয়ে দেয়, এটা মনে রেখো.. ’
‘ম্যাডাম, আমি আপনাকে অনেক পছন্দ করি, আসলে সেদিন..’
মনিরুজ্জামান হড়বড় করে বলতে শুরু করলে শবনম ডান হাতটা সামান্য উঁচু করে তাকে থামিয়ে দেয়। এরচে বেশি বাড়তে দেওয়া যাবে না।
‘ঠিকাছে মনিরুজ্জামান। উইশ ইউ অল দ্য বেস্ট, মনোযোগ দিয়ে কাজ করো কেমন!’

মনিরুজ্জামানের চলে যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে নিজের তরুণ বয়সের কথা মনে পড়ে শবনমের, একেবারে সেলফ মেড মানুষ সে, বাবা-চাচা-মামার জোর ছাড়া যেমন হয় সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার, স্রেফ নিজের সাহস আর আত্মবিশ্বাসে ভর করে এগিয়ে যাওয়া তার, ইমতিয়াজের সঙ্গে জেদ করে নেদারল্যান্ডসে এক বছরের মাস্টার্স কোর্সটা না করলে অবশ্য এ জায়গায় আসা সম্ভব হতো কিনা কে জানে, বিদেশি ডিগ্রিটা চাকরি জীবনে তাকে অনেক পয়েন্টে এগিয়ে রেখেছে। সবাই জানতো, ইমতিয়াজ আর শবনম এক সঙ্গেই বাইরে পড়তে যাবে। ডিপার্টমেন্টে সবসময় ফার্স্ট ক্লাস ফাস্ট ইমতিয়াজ, শবনম কখনো সেকেন্ড, কখনো থার্ড। তাতে অবশ্য আফসোস ছিল না শবনমের, ইমতিয়াজ তো তারই, ফলে ইমতিয়াজের সাফল্য মনে হতো শবনমের নিজেরই সাফল্য। কিন্তু ইমতিয়াজ যখন ফুল স্কলারশিপে হার্র্ভার্ডে পড়ার চান্স পেয়ে গেল, তখন থেকেই কেমন যেন বদলে যেতে শুরু করল। এই বদলানোগুলো মুখে বলে ঠিক বোঝানো যায় না, কিন্তু কাছের মানুষরা ঠিকই তা অনুভব করতে পারে। তারা বোঝে কোথায়ও তাল কেটে গেছে, ছন্দ পতন হয়েছে, কি যেন আর আগের মতো মিলছে না। তারা কেউ কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় বলেনি আবার নিজের একান্ত জীবনে স্বাগতমও জানায়নি। কিভাবে যেন, দুজনেই বুঝে গেছে দুজনের দুটি পথ এক হয়ে মিশে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ অবশিষ্ট নেই। অভিযোগ, অনুযোগ, অভিমানের চেয়ে শবনমের গায়ে বেশি লেগেছিল অপমানটুকু। পরাজয় আর প্রত্যাখ্যানের অপমান। নেদারল্যান্ডসের ঠাণ্ডা শীতল বরফ জমা সেই নিঃসঙ্গ নির্বান্ধব লেইডেন শহরে দীর্ঘ এগার মাস অপমানটা বুকের মধ্যে পুষে রেখে শক্ত পাথর বিছানো পথে রক্তাক্ত পায়ে আর মনে হেঁটে, দাঁতে দাঁত চেপে ডিগ্রিটা নিয়ে দেশে ফিরে অল্প কয়েকদিনের পরিচয়ে বড় ভাইয়ের বন্ধু তারেককে বিয়ে করে ফেলেছিল শবনম।

তারেকের তেমন বিদ্যা নেই, বিদ্যার অহংকারও নেই, অদ্ভুত এক সরল জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখে দেখেই সে কাটিয়ে দিয়েছে শবনমের সঙ্গে এতগুলো বছর, যেন সঙ্গে থেকেও নেই, পাশে থেকেও দূরে কোথাও, নিজের মধ্যে নিমগ্ন, নির্লিপ্ত ধ্যানী বুদ্ধ। এতে একদিকে ভালই হয়েছে, নিজের পেশাগত জীবন নিজের ইচ্ছামতো গুছিয়ে নিতে পেরেছে শবনম। প্রেম ছিল, তবে সেটা শুধু নিজের কাজের সঙ্গে নিজের, কোথায়ও আর কোনোদিকে চোখ মেলে তাকায়নি সে, তাকাতে ইচ্ছাও করেনি। ওই দরজা লোহার সিলমোহর মেরে চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে শবনম। অন্তত প্রেম নিয়ে আর কোনো পুরুষের কাছে গিয়ে কাঁদুনি গাওয়ার ইচ্ছা হয়নি তার। পুরুষ, অনেক সময়, নারীর কান্নার অর্থও ঠিকমতো বুঝতে পারে না। নিজেদের মনের মতো ভুল অর্থ করে সবজান্তার মতো নিজের বানানো পৃথিবীতে ভাব ধরে বসে থাকে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

স্নানের শব্দ: পর্ব-২

স্নানের শব্দ: পর্ব-১ 

আরএ/

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধের আশঙ্কায় পাকিস্তানকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দিচ্ছে তুরস্ক। ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ইতোমধ্যে তুরস্ক থেকে সাতটি অস্ত্রবাহী সামরিক বিমান পাকিস্তানে পৌঁছেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৭ এপ্রিল তুরস্কের বিমান বাহিনীর একটি হারকিউলিস সি-১৩০ কার্গো বিমান করাচিতে অবতরণ করে, যাতে নানা ধরনের সামরিক সরঞ্জাম ছিল। এ ঘটনাকে তুরস্কের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের জন্য বৃহত্তর প্রতিরক্ষা সহায়তার অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।

শুধু একটি বিমানই নয়, ইসলামাবাদের সামরিক ঘাঁটিতেও তুরস্কের আরও ছয়টি কার্গো বিমান অবতরণ করেছে, যেগুলোতেও সামরিক সরঞ্জাম ছিল বলে নিশ্চিত করেছে তুর্কি ও পাকিস্তানি সূত্র।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া বিশ্লেষণ করে বলছে, ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনার পর দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে বেড়ে চলা উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তুরস্কের এই পদক্ষেপ এসেছে।

তুরস্কের পাশাপাশি পাকিস্তান চীনের সঙ্গেও সামরিক সম্পর্ক জোরদার করছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে চীন প্রায় ৪০টি দেশে অস্ত্র রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে ৮২ শতাংশেরও বেশি অস্ত্র গেছে পাকিস্তানে।

এদিকে, ভারতের সাথে যুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তানের পক্ষে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছে খালিস্তানপন্থী শিখরা। খালিস্তানি নেতা গুরপাতওয়ান্ত সিং পান্নু হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যুদ্ধ বাধলে দুই কোটি শিখ পাকিস্তানের পক্ষে অপ্রতিরোধ্য দেয়াল হয়ে দাঁড়াবে এবং ভারতীয় সেনাদের পাঞ্জাব পার হতে দেওয়া হবে না। পান্নু আরও দাবি করেন, ভারতের বিজেপি সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে কাশ্মীরে হামলার নাটক সাজিয়েছে এবং হিন্দুদের হত্যা করে নির্বাচনী ফায়দা তুলতে চাইছে।

তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে সতর্ক করে বলেন, ইন্দিরা গান্ধীর পরিণতি তাদেরও হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন—জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল—আগামী ৯ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে বিভাগীয় পর্যায়ে সেমিনার ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না।

তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় তিন সংগঠন সম্মিলিতভাবে ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে ৪টি বৃহত্তর অঞ্চলে ভাগ করে এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। উদ্দেশ্য হলো—তরুণদের ক্ষমতায়ন, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং একটি আধুনিক, মানবিক বাংলাদেশ নির্মাণে তরুণ প্রজন্মের মতামত ও চিন্তা সংগ্রহ করা।

প্রথম দিন: "তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ" শীর্ষক সেমিনার।
দ্বিতীয় দিন: "তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ"।

সেমিনারে তরুণ প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, চিন্তাবিদ ও উদ্যোক্তারা কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রযুক্তি, পরিবেশ ও রাজনৈতিক অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন। এ কর্মসূচি বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা ও তারেক রহমানের রাজনৈতিক দর্শনের আলোকে পরিচালিত হবে।

চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগ:
▪ ৯ মে — কর্মসংস্থান ও শিল্পায়ন নিয়ে সেমিনার
▪ ১০ মে — তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

খুলনা ও বরিশাল বিভাগ:
▪ ১৬ মে — শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে সেমিনার
▪ ১৭ মে — তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ:
▪ ২৩ মে — কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে সেমিনার
▪ ২৪ মে — তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগ:
▪ ২৭ মে — তরুণদের অর্থনৈতিক মুক্তি ও রাজনৈতিক ভাবনা নিয়ে সেমিনার
▪ ২৮ মে — তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ

মোনায়েম মুন্না বলেন, এই কর্মসূচিগুলোর মাধ্যমে তরুণদের প্রত্যাশা, মতামত ও ভাবনাকে রাজনৈতিক নীতিতে যুক্ত করে একটি জনমুখী, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনের পথ তৈরি করবে বিএনপি।

Header Ad
Header Ad

পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

দেশের পাঁচটি জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার ও সোমবার (২৭ ও ২৮ এপ্রিল) দেশের বিভিন্ন স্থানে এসব মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। কুমিল্লার মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় চারজন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে তিনজন, নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও মদনে দুজন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন এবং চাঁদপুরের কচুয়ায় একজন প্রাণ হারিয়েছেন।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া এলাকায় ধান কাটতে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বজ্রপাতে দুজন কৃষক নিহত হন। নিহতরা হলেন নিখিল দেবনাথ (৫৮) ও জুয়েল ভূঁইয়া (৩০)।

একই জেলার বরুড়া উপজেলার খোসবাস উত্তর ইউনিয়নের পয়েলগচ্ছ গ্রামে দুপুর ১২টার দিকে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় বজ্রপাতে মারা যায় দুই কিশোর—মোহাম্মদ জিহাদ (১৪) ও মো. ফাহাদ (১৩)। এ সময় আবু সুফিয়ান (সাড়ে ৭) নামের একটি শিশু আহত হয় এবং তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে খয়েরপুর আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের হাওরে ধান কাটার সময় সকালে বজ্রপাতে প্রাণ হারান দুই কৃষক—ইন্দ্রজিৎ দাস (৩০) ও স্বাধীন মিয়া (১৫)। একই সময়ে মিঠামইন উপজেলার শান্তিগঞ্জ হাওরে ধানের খড় শুকাতে গিয়ে বজ্রপাতে নিহত হন ফুলেছা বেগম (৬৫) নামের এক নারী।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ধনুন্দ গ্রামে রবিবার রাত ১০টার দিকে বজ্রপাতে আহত হয়ে পরে হাসপাতালে মারা যান দিদারুল ইসলাম (২৮)। তিনি একটি ইফতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন।
আজ সকাল ৭টার দিকে মদন উপজেলার তিয়োশ্রী গ্রামে মাদ্রাসাগামী শিশু মো. আরাফাত (১০) বজ্রপাতে মারা যায়।

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে গরু চরাতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান রিমন তালুকদার। তিনি শাল্লা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার নাহারা গ্রামে সকালে বজ্রপাতের বিকট শব্দে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান বিশাখা রানী (৩৫)। তিনি কৃষক হরিপদ সরকারের স্ত্রী। চিকিৎসক জানান, বজ্রপাতের সরাসরি আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না, শব্দের প্রভাবে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি