বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১১ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

পর্ব-১

যে তুমি টলেমির বোন, বধূ

মাত্র একুশটি বছরই তিনি রাজ্য শাসন করেছেন। তার পূর্বপুরুষ ও পূর্ব নারীরা গ্রিস থেকে আগত। প্রায় তিনশো বছর আগে নীল নদের এই দেশে এসে রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর গ্রিক জন্মের গৌরববোধ থেকে যতই এদেশীয় নারীদের সঙ্গে মেলামেশা রোধে কঠোর আইন জারি করা হোক বা এমনকি রাজমুকুট ধরে রাখতে রাজ পরিবারে ভাই ও বোনের বিয়ের প্রথা চালু হোক, যেমনটা ইতিহাস জুড়েই দেখা দেয় যে বহিরাগতরা ভিন্ন ভূ-খণ্ডে এসে অনেক প্রজন্ম ধরে বাস করতে থাকলে একটা সময় রক্তের অবিমিশ্রতা আর ধরে রাখা যায় না।

মহারাজ টলেমি প্রথম সোতেরের বংশধর টলেমি দ্বাদশ ওলেতেসের কথাই ধরা যাক। তার কন্যা ফিলোপেতর কিন্তু আর দশটি গ্রিক মেয়ের মত দীর্ঘকায় নয়। বলতে গেলে খর্বকায়। বর্ণে ততটা শুভ্রাও নয়। চুল খানিকটা কোঁকড়া ও কালো, বর্ণ অনেকটাই তামাটে বা আরও সঠিকভাবে বললে প্রায় মসী বর্ণ ঘেঁষে। কিন্তু টলেমি রাজবংশে এই ফিলোপেতরই প্রথম রাজকন্যা যে মিশরীয় ভাষা শিখছে।

‘তুমি কেন এত কষ্ট করে এতগুলো ভাষা শিখছ, ফিলোপেতর?’ মহারাজা ওলেতেস কৌতূহলী হয়ে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেন।
‘আমার মনে হয় আজ এত এত প্রজন্ম ধরে আমরা এই দেশে বাস করছি। কিন্ত একটি দেশের মানুষের ভাষা না শিখলে বা জানলে বহিরাগতই থেকে যাওয়া হয়। আমরা কি শুধু শাসকই রয়ে যাব? এদেশের হব না কখনো? এদের ভাষাকে ভালবাসব না? জানব না? এ ছাড়া যত বেশি ভাষা জানা যায়, ততই নানা ভূ-খণ্ডের মানুষের হৃদয়ের উত্তাপ ও চিন্তার গতি-প্রকৃতি বোঝা যায়, যা একজন শাসকের জন্য খুবই কাজে লাগে।‘

মুগ্ধ বিষ্ময়ে ফিলোপেতরের দিকে তাকিয়ে থাকেন ওলেতেস। শৈশব থেকেই ফিলোপেতরের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ নিত্য নতুন ভাষা শিক্ষায়। গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা বা ভূগোল যে সে পছন্দ করে না, তা‘ নয়। তবে একদম কোলে-পিঠে চড়ার সময় থেকে ফিলোপেতর প্রাসাদের ইথিওপীয় দাসীর কাছ থেকে চট করে শিখে নিচ্ছে অসংখ্য ইথিওপীয় শব্দ, পার্সী মালীর কাছ থেকে জেনে নিচ্ছে পার্সী ভাষায় নানা ফুলের নানা নাম, গন্ধদ্রব্য বেচতে আসা আরবীয় বণিককে জিজ্ঞাসা করছে আরবি ভাষায় বিভিন্ন গন্ধদ্রব্যের প্রতিশব্দ; গ্রিক ও লাতিন ত‘ রাজকন্যা হিসেবে তাকে পড়তেই হয়, সিরীয় ঘোড়সহিসকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসা করছে ঘোড়াকে সিরীয় ভাষায় কি বলে, মিশরীয় পুরোহিতদের কাছ থেকে মিশরীয় আর আরামিক কবিতা সেই বালিকা বয়সেই সে শুনে শুনে পাখি পড়া করছে। আর একটু বড় হতেই ফিলোপেতরের বাবার কাছে একই দাবি বা জেদ তাকে বিভিন্ন ভাষা শেখানো হোক। ফিলোপেতরের বড় বোন কিন্তু দেখতে-শুনতে বিশুদ্ধ গ্রিক। যেমন দীর্ঘকায় তেমনি শুভ্রা। তবে সে সমরবিদ্যায় বেশি আগ্রহী। ঘোড়া ছোটাবে বা তলোয়ার চালাবে। ফিলোপেতর অশ্ব বা তরবারির চেয়ে পড়াশোনায় বেশি আগ্রহী। তা‘ দেখতে দেখতে নয়টা ভাষা অনর্গল পড়তে-লিখতে-বলতে শিখে গেল ফিলোপেতর। কেন জানি না বাদামী, কোঁকড়াচুলো ছোট মেয়ের প্রতিই মহারাজা ওলেতেসের সূক্ষ টানটি রাজপ্রাসাদের সবাই বুঝতে পারে। ওলেতেসের প্রায়ই মনে হয় তার আপাত: মিশরীয় দর্শনা এই মেয়েটি অসম্ভব প্রতিভার অধিকারী। নাহলে একটি পনেরো বছরের মেয়ে নয়টি ভাষায় অনর্গল কথা বলে স্বদেশ সহ আশপাশের নানা রাজ্যের মানুষের হৃদয় জয় করছে? ওলেতেস আরও লক্ষ্য করেছেন যে তার বিশুদ্ধ গ্রিক দর্শনা, সমরবিদ ও ঢ্যাঙ্গা লম্বা, ফ্যাকফেকে সাদা বড় কন্যার পাশে দাঁড়িয়েই শ্যামবর্ণা, হ্রস্বকায় ও কালো চুলের ফিলোপেতর যখন নয়টি ভাষায় কথা বলা শুরু করে, রাজসভায় আসা সেনাপতি-অমাত্য-মন্ত্রী ও নানা দেশ থেকে আগত পুরুষদের চেহারার অবস্থা তখন দেখার মত হয়! যেন কোনো যাদুকরী সামনে দাঁড়িয়ে তার যাদুদণ্ড দিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে এক অনিঃশেষ মন্ত্রজাল! আর ছোট মেয়েও বাবার তেমন ন্যাওটা। বাবা রোমে যাবেন মিশরের বার্ষিক কর একটু কমানোর আবেদন করতে। ছোট মেয়ে হাজির হয়ে গেল,
‘আমি আপনার সঙ্গে চলি?’
‘বহু দূরের পথ, মা!’
‘কিছু হবে না। আমাকে আপনার সঙ্গী হতে অনুমতি ত‘ দিন?’
‘চলো তবে!’

মহারাজাও জানেন যে শুধু গ্রিক-লাতিনের আভিজাত্য নয়, দীর্ঘ অশ্ব-শিবিকা-উষ্ট্র-খচ্চরের পিঠে চলা ও আরও ক্লান্তিকর নৌপথে ফিলোপেতর শুধু নানা ভাষা বলে বলে খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে নানা দেশের ও নানা সমাজের মানুষের হৃদয় জয় করে ও তাদের নানা সাহায্য নিয়ে এই দুরূহ যাত্রা অনেকটাই সুগম করে আনবে। কিন্তু রোমে যেতে যেতে ও রোমক সিনেটরদের সঙ্গে বার্ষিক করের বোঝা কমানোর দেন-দরবার করতে করতেই যে বিশুদ্ধ গ্রিক দর্শনা, জ্যেষ্ঠ ও সমরবিদ কন্যা বেরেনিস যে নিজেই পিতার সিংহাসন নিজ অধিকারে পেতে একটি বিদ্রোহ আয়োজন করে ফেলবে, এটা ওলেতেস কল্পনাও করেননি।
‘তোমার বড় বোন বিদ্রোহ করেছে, শুনেছো?‘
‘শুনেছি।‘
‘এখন তাহলে আমরা কি করব?‘
‘রোমক সিনেটররা আপনার অনুরোধ শুনেছে। মিশরের বার্ষিক কর অনেকটাই কমাতে রাজি হয়েছে। খুব অল্প সময়ের সফরে আমরা তাদের কাছ থেকে অনেকটা হৃদ্যতা ও অন্তরঙ্গতা অর্জনে সমর্থ হয়েছি। তাদের অনুরোধ করলে কি তারা এ বিদ্রোহ দমনে আমাদের কিছু সেনা সাহায্য করবে না?’
‘তুমি বলছো কি ফিলোপেতর? এত অল্প সময়ের সফরে এত বড় অনুরোধ কি করা যায়?
‘আপনি দেখুনই না বলে!’
‘তাহলে তোমাকেই সেটা বলতে হবে। সত্যি বলতে...আমি যেন এখনি বৃদ্ধ হয়ে গেছি। এ ক‘দিন আমি শুধু তোমার সঙ্গে থেকেছি। সিনেটরদের সঙ্গে তোমার নয়টি ভাষার বাগ্মীতা দিয়ে, অসম্ভব কূটনৈতিক দক্ষতায় দেশের জন্য যা কিছু করার তুমিই ত‘ করলে। তবে কাল সকালে এই প্রস্তাবও তোমাকেই দিতে হবে।‘
‘আপনি নিশ্চিত থাকুন।‘

ওলেতেস পরিতৃপ্তির নিশ্বাস ছাড়েন। তার দুই পুত্র নিতান্তই ছোট আজো। বড় দুই মেয়েকেই তাই পুত্রের মত বড় করতে হয়েছে। বড়টি সমরবিদ্যার দিকে ঝুঁকলো ছোটটি ঝুঁকলো পাঠ ও কূটনীতিতে। তবে নৃপতি হিসেবে ওলেতেস জানেন রাজশাসনে সমরবিদ্যার চেয়েও পান্ডিত্য আর রাজনীতির জ্ঞানই বেশি কাজে দেয়। তলোয়ার চালাতে বেতনভোগী সৈনিক বা সেনাপতিরা তো থাকেই। দরকার পরিচালনার বুদ্ধি। সেটা তার ক্ষিপ্র অশ্বারোহিনী ও অসিচালিকা বড় মেয়ের চেয়ে নয়টি ভাষা জানা ছোট মেয়েরই যে ঢের ঢের বেশি তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু বড় মেয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করলো কেন? অল্প বয়সেই ওদের মায়ের মৃত্যুর পর থেকে তামাটে বর্ণা আর হ্রস্বকায় বলে টলেমি রাজবংশের সবাই গ্রিক দর্শনা বড় মেয়েটিকে বেশি ভালবাসতো বলেই ছোট মেয়ের দিকে তিনি ঝুঁকে গেছিলেন? নাকি ফিলোপেতরের প্রবল মেধাও তার দৃষ্টি টেনেছিল বেশি? সেই সুপ্ত ক্রোধ থেকেই কি এত বড় কাণ্ড ঘটালো বড় মেয়ে?

‘মহামান্য রোমক সিনেট- আমি, মিশরের নৃপতি টলেমি দ্বাদশ ওলেতেসের কন্যা ক্লিওপেট্রা সপ্তম ফিলোপেতর, মিশরের বার্ষিক কর হ্রাস করার আবেদনের প্রস্তাব গ্রহণ করায় মিশরের নৃপতি ও জনগণের পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও অভিবাদন জ্ঞাপন করছি। তবে, কর হ্রাসের আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠার মুহূর্তেই এক ঘোর দু:সংবাদ আমার পিতা নৃপতি টলেমি দ্বাদশ ওলেতেস ও আমার হৃদয়কে শঙ্কাকুল করে তুলেছে এবং এ বিষয়ে আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি!’
পঞ্চদশী ফিলোপেতর, এক মাথা সাপের ফনার মত কোঁকড়া চুল আর বাদামী বর্ণা ও হ্রস্বকায় মেয়েটি, রোমক সিনেটের অসংখ্য বর্ষীয়ান পুরুষের সামনে মাথা নিচু করে অভিবাদনের ভঙ্গিতে দু‘হাত ছাড়িয়ে মেলে দেয় তার ন‘টি ভাষার সম্ভার। রিনরিনে সুরেলা কণ্ঠস্বরে লাতিন থেকে গ্রিক, গ্রিক থেকে হিব্রু বা আরামিক, কখনো সিরীয় বা আরবি নানা রূপক-প্রবচন-উপমা-অলঙ্কারে সমৃদ্ধ তার নাতিদীর্ঘ অথচ হৃদয় জয় করা বক্তব্যে তাক লেগে যায় পক্ককেশ রোমক সিনেটরদের।
‘ওলেতেস তো দেখতে বিশুদ্ধ গ্রিক। তবে শুনেছি মিশরীয় রক্ত আছে এমন নারী বিয়ে করেছে ওদের বংশের কেউ কেউ। গত কয়েক প্রজন্ম ধরেই। সন্তান-সন্ততিরা তাই কেউ শুভ্র ও দীর্ঘকায়, কেউ কেউ স্থানীয় চেহারা পেয়েছে। কিন্ত এই মেয়েটি...বাদামী হোক আর হ্রস্ব হোক...এর জ্ঞান ও পান্ডিত্যের পাশে গ্রিক-রোমক নারী কেন, অনেক পুরুষও দাঁড়াতে পারবে না!’

‘তেমনটাই মনে হচ্ছে। এখনো দেহ পূর্ণ নারীর মত পরিপুষ্ট হয়নি- বলতে গেলে এখনো প্রায় নাবালিকা। তাতেই এই? এই মেয়ে বড় হলে কি হবে ভাবতেই ত্রাহি ত্রাহি লাগছে!’

মুগ্ধ রোমক সিনেটররা এ ওর সঙ্গে ফিসফাস করতে থাকেন।
‘হুম- ওর বাবা তো কিছুই করল না। কর হ্রাস করার আবেদন, যুক্তি পেশ, অনুরোধ-অনুনয় তো সব এই কিশোরীই করল। আহা, পিতৃপ্রাণ মেয়ে! ওর বড় বোন বিদ্রোহ করেছে? আপন পিতার বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলেছে? খুব খারাপ কথা!’
‘ভাইয়েরা এখনো ছোট ছোট। শিশু।’
‘তাহলে তো সেনা সাহায্য করাই উচিত। ফিলোপেতরের মোহিনী বক্তৃতা যে স্বর্গের দেবতারাও উপেক্ষা করতে পারবেন না!’
‘হা-হা- ঠিক বলেছো। প্রথম দর্শনে মনে হবে আদৌ সুন্দরী না। কেমন কালো রং, কালো চুল আর ছোটখাটো! কিন্তু যেই না কথা বলতে শুরু করে, অমনি ঘোর ধরে যায়!’
‘এ মেয়ে বড় হলে কি হবে?’
‘চলো-সেটা ভাবতে ভাবতেই রোম ওদের সেনা সাহায্য করুক।’

নীল নদের দুই তীরের মানুষই জানে যে নৃপতি ওলেতেস নন, তার পঞ্চদশ বর্ষীয়া দ্বিতীয়া কন্যা ফিলোপেতরই শুধু রোম থেকে মিশরের বার্ষিক কর কমিয়েই আনেনি, জ্যেষ্ঠ ভগ্নীর বিদ্রোহ দমন করতে পিতার পক্ষে বিশাল রোমক সেনাবাহিনীও নয়টি ভাষার বাগ্মীতা ও ক্ষুরধার যুক্তি ও কূটনৈতিক চাতুরি দিয়ে অর্জন করে এনেছে। সেটা সেই ৫৫ অব্দের কথা। বেরেনিস নিহত হলো বিদ্রোহ দমনের যুদ্ধে। বোঝা গেল যে দৈহিক শক্তির চেয়েও রাজনীতি আর চাতুরিই সবসময় জয়ী হয়। যেমনটা জিতে গেল- ওলেতেস অথবা ফিলোপেতর? কিন্তু বড় মেয়েকে হত্যার পর নৃপতি ওলেতেসও কেমন অবসাদে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন আর দ্রুতই বুড়িয়ে যেতে লাগলেন। মাত্র চার বছরের মাথায় যম তার শিয়রে এসে বসলেন।
‘ফিলোপেতর’
‘বলুন মহারাজ!’
‘আমি সম্ভবত: বেশি দিন আর বাঁচব না। বেরেনিস নিহত। তোমাকেই রাজ্য শাসন করতে হবে। কিন্তু তুমি জানো যে রাজ পুরোহিতেরা একশো ভাগ নারী শাসক পছন্দ করেন না। সেজন্যই হোক বা আমাদের এই টলেমি রাজবংশ রক্তের বিশুদ্ধতার জন্যই হোক, ভাই ও বোনের বিয়ের যে রীতি প্রচলন করে গেছেন...তোমার মা-ও আমার বোন ছিলেন! এই বংশে প্রত্যেক ভাই বা রাজাই হচ্ছে টলেমি আর প্রত্যেক বোন বা রানীই হচ্ছে ক্লিওপেট্রা। এটাই আমাদের বংশীয় উপাধি।‘
‘সে তো জানিই, পিতা! তবু এত কড়াকড়ি করেও একশো ভাগ গ্রিক বিশুদ্ধতা কি রক্ষা করা গেছে? আমি নিজেই কি দেখতে অনেকটা এদেশীয়দের মত নই?’
‘তিনশো বছর ভিন্ন এক ভূ-খণ্ডে বাস করলে রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করা যায় না। এই টলেমি রাজ বংশে বারোটি ভাই-বোন বিয়ের পরেও মিশরীয় রক্ত ঢুকে গেছে। আসলে একদম সূচনালগ্নে আমাদের পূর্বপুরুষেরা এসে স্থানীয় নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক হলে সন্তান-সন্ততি যে আর গ্রিকদের মত হবে না, সেটা বুঝতে পারেননি। দেখতে দেখতে যখন বোঝা গেল যে রক্তের বিশুদ্ধতা আর রক্ষা করা যাচ্ছে না, তখন নিয়ম-কানুন কঠোর করা হলো ঠিকই, ভাই-বোন বিয়েও চালু হলো...তবে ততদিনেই মিশ্রণ অনেকটাই যা হবার হয়ে গেছে। যে কথা বলছিলাম...!’
‘বলুন?’
‘তোমার মা আমার বোন হলেও মাত্র এক বছরের ছোট ছিলেন। আমার পিতামহ বিয়ে করেছিলেন তার দু‘বছরের বড় বোন বা ক্লিওপেট্রাকে। মোট কথা, সব পাশাপাশি বয়সের বলে দাম্পত্যে বাধা হয়নি কিন্তু...আমি জানি...রাজশাসন ধরে রাখার জন্য তোমাকে বিয়ে করতে হবে তোমার পরের ভাই থিওস ফিলোপেতর দ্বিতীয়কে, যার বয়স মাত্র দশ। তার পরের ভাইটি আরো ছোট। আমি জানি যে উনিশ বছরের তরুণীর সঙ্গে দশ বছরের বালকের দাম্পত্য খুব সুখকর নয়। কিন্তু রাজ্যের স্বার্থে, সিংহাসনের স্বার্থে আর প্রজাশাসনের স্বার্থে...’
‘আমি আপনার নির্দেশ বুঝতে পারছি পিতা...কোন সমস্যা হবে না...যত দিন বেঁচে আছেন, আপনি তো রাজা আছেনই আমাদের সবার মাথার উপর! তারপর রাজ পুরোহিতদের নির্দেশে আমার যা যা করণীয়, সবই আমি পালন করব। অক্ষরে অক্ষরে।‘

‘রাজকুমারী ফিলোপেতর!’ মেমফিসের মন্দিরের প্রধান পুরোহিত স্বয়ং এসে রাজসভায় এসে ফিলোপেতরের সামনে দাঁড়ান।
‘আজ্ঞা করুন, প্রধান পুরোহিত!’
‘নৃপতি ওলেতেসের মৃত্যুর পর তার যাবতীয় শেষকৃত্য সুষ্ঠুভাবে পালিত হয়েছে। এই রাজ্যের নতুন শাসক হিসেবে, দেশবাসী বা প্রজামণ্ডলী আপনার ভ্রাতা টলেমি থিওস ফিলোপেতর দ্বিতীয় ও আপনার শুভ বিবাহ অনুষ্ঠানের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।‘
‘আমার অমত নেই। রাজ্য ও প্রজামন্ডলীর মঙ্গলার্থে আমার করণীয় সবকিছুই আমি মেনে চলবো।‘
‘মিশর ও তার মানুষের জন্য আপনার প্রগাঢ় প্রেমের কথা কারো অবিদিত নয়, রাজকুমারী! আমি তবে পাঁজি-পুথি দেখে শুভ দিন-ক্ষণ স্থির করি?’
‘করুন।‘
‘জয় যুবরাজ ও যুবরাণী টলেমি থিওস ফিলোপেতর দ্বিতীয়, ক্লিওপেট্রা সপ্তম ফিলোপেতরের জয়!’
প্রধান পুরোহিত গলা তুলতেই সভায় উপস্থিত অন্য পুরোহিত, মন্ত্রী-সেনাপতি-অমাত্যবর্গ সবাই গলা তুললেও ফিলোপেতরের জন্য মৃদু অস্বস্তিও শুরু হয় অনেকের।
‘টলেমি-ক্লিওপেট্রা বা ভাই-বোন বিয়ে এই রাজবংশে নতুন কিছু নয়। দুই/তিন বছরের ছোট বোন বা এক/দুই বছরের ছোট ভাই হলে সমস্যা না। দু‘জনেই যৌবনে পৌঁছালে ওই সামান্য ব্যবধানে দাম্পত্য বা সন্তান জন্মদানে কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু এই দশ বছরের বালক এই উনিশের যুবতীর চাওয়া-পাওয়া কি করে মেটাবে? এমন সব মুহূর্তেই রাজপ্রাসাদে দেখা দেয় সমস্যা, গুপ্ত প্রণয় ও ব্যভিচার চরমে ওঠে। এমনকি রাজনারীদের সঙ্গে কোন সুদর্শন, সুঠাম ক্রীতদাসের প্রণয়ও তখন আর অসম্ভব থাকে না।‘
‘যাক- রাজকুমারী ফিলোপেতর বরাবরই বুদ্ধিমতী, বিবেচক। দেশের স্বার্থই তার বরাবরের প্রাধান্য। আর সারাদিন তার যা ব্যস্ততা। ওই বালক স্বামী তো আর দেশ চালাবে না! দেশ চালাবেন ফিলোপেতরই। শুধু কিনা নারী একা কোন রাজ্যশাসন করতে পারে না- তেমনটা ধর্মে বা আইনে বিধান নেই। তাই বালক পতি ও ভ্রাতাকে সামনে রেখে তাঁকেই যা করার করতে হবে।‘
‘আহা-বিয়ের দিনে কেমন সাজবেন ফিলোপেতর? হোন শ্যামবর্ণা বা হ্রস্বকায়া, তিনি কথা বলতে শুরু করলে পুরুষেরা যে তার পায়ে সব গড়াগড়ি খেতে শুরু করে!’
‘শুনছি- তার বিয়ের সাজের প্রস্তুতি এখনি শুরু হয়ে গেছে!’

চলবে….

আরএ

Header Ad
Header Ad

সচিবালয়ে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে যা জানালেন ফায়ারের ডিজি

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে ৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই মধ্যে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে কথা বলেছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল।

তিনি জানান আগুনের সূত্রপাত নিয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ডিজি জাহেদ কামাল জানান, ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে, যার মধ্যে ১০টি ইউনিট সরাসরি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বড় গাড়িগুলো ভবনের ভেতরে প্রবেশে বাধা পাওয়ায় গেট ভেঙে দুটি গাড়ি ভেতরে ঢোকানো হয়। এ ঘটনায় ২১১ জন কর্মী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে আগুন নেভানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে বলে জানান তিনি।

এদিকে, আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার সময় একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। পানির পাম্পের সংযোগ দিতে সড়ক পার হওয়ার সময় একটি ট্রাকের ধাক্কায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মী সোহানুজ্জামান নয়ন আহত হন। তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোহানুজ্জামান তেজগাঁওয়ের স্পেশাল ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়।

Header Ad
Header Ad

শেখ হাসিনাকে ভারত কি ফেরত পাঠাবে? আল–জাজিরার প্রতিবেদন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গ ভারতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। দ্বিপাক্ষিক প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকা সত্ত্বেও নয়াদিল্লি ইচ্ছা করলে ঢাকার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে। চুক্তিতে এ ধরনের অনুরোধ নাকচ করার সুযোগ রাখা হয়েছে, ফলে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে কিনা, তা এখনো অনিশ্চিত।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার বিশ্লেষণধর্মী অনুষ্ঠান ইনসাইড স্টোরি এই বিষয়টি গভীরভাবে তুলে ধরেছে। “বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে কি ভারত ফেরত পাঠাবে?” শিরোনামের ভিডিও প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার আল–জাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে গত সোমবার দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক পত্র দেওয়া হয়। গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অভিযোগে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার।

আদ্রিয়ান ফিনিঘানের উপস্থাপনায় ইনসাইড স্টোরিতে কথা বলেন ভারতের ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত, যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো সোহেলা নাজনীন ও বাংলাদেশের নারী অধিকারবিষয়ক সংগঠন নারীপক্ষের সহপ্রতিষ্ঠাতা শিরীন হক।

শ্রীরাধা দত্তের কাছে আদ্রিয়ান ফিনিঘানের প্রশ্ন ছিল, শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের প্রতি যে অনুরোধ জানানো হয়েছে, তা নিয়ে নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়া কেমন হতে হবে? ঢাকার এই অনুরোধ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে বলে মনে হচ্ছে। আপনি কী মনে করেন?

জবাবে শ্রীরাধা বলেন, নিঃসন্দেহে এটি (শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ) একটি বেশ জটিল প্রক্রিয়া। এখানে রাজনৈতিক বিবেচনাসহ আরও কিছু বিষয় আছে। তা ছাড়া বাংলাদেশের বিচার বিভাগ কতটা নিরপেক্ষ, তা-ও ভেবে দেখবে ভারত। পাশাপাশি কিছু টেকনিক্যাল বিষয়ও রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতের কাছে শুধু কূটনৈতিক পত্র দেওয়া হয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়া হয়নি। সেটাও বিবেচনায় নেবে ভারত। এ ছাড়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতটা ন্যায়বিচার পাবেন—এ ধরনের নানা বিষয়ও আছে।

একই প্রশ্নের জবাবে সোহেলা নাজনীন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালে যে প্রত্যর্পণ চুক্তি হয়েছে, তাতে প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের সুযোগ রয়েছে। সাধারণত যেকোনো প্রত্যর্পণ চুক্তিতে এ ধরনের কিছু শর্ত থাকে। যেমন কোনো দেশ যদি মনে করে ফেরত পাঠানো ব্যক্তির ক্ষেত্রে সুষ্ঠু বিচারপ্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে না, সে ক্ষেত্রে চুক্তিবদ্ধ কোনো দেশ প্রত্যর্পণ আহ্বানে সাড়া না–ও দিতে পারে। আর শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে ভারত কী করবে, তা ভারত সরকারই ভালো বলতে পারবে।

এরপর তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তিনি কি ন্যায়বিচার পাবেন? আপনার কী মনে হয়? জবাবে সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রিসার্চ ফেলো বলেন, এটা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কী ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে, সেটার ওপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমি আশা করব, গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে তারা সুষ্ঠু প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে।’

শিরীন হকের কাছে আদ্রিয়ান ফিনিঘানের প্রশ্ন ছিল, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালকে কতটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়? এই মধ্যে তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুকে অভিযোগ করেছেন, তাঁর মা ও আওয়ামী লীগের নেতারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই তাঁদের বিচারের কথা বলা হচ্ছে।

জবাবে শিরীন হক বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার আমলেই নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছিল। কিন্তু তা দূর করার জন্য তাঁর সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এখন তিনিই (শেখ হাসিনা) এই ট্রাইব্যুনালে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই আশা করব, বিচারে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে, অবাধ ও সুষ্ঠু বিচার হবে।’

তবে সবকিছু অনিশ্চিত—এমন মন্তব্য করে শিরীন হক বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার যে কথা বলা হচ্ছে, সেটার সঙ্গে তিনি একমত নন। এর একটি কারণ হলো, ২০১৩ সালে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে চাপ তৈরি করতে শাহবাগে (আওয়ামী লীগ) সরকারের পক্ষে গণজাগরণ হয়েছিল, সেখানে ফাঁসি দাবি করা হয়েছিল। এভাবেই ট্রাইব্যুনালটি বিতর্কিত হয়েছিল। এবার সে রকম কিছু হচ্ছে না। তিনি আশা করেন, এবার তেমনটি হবে না, ভিন্ন কিছু হবে।

প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে ভারত অতীতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণ করেছে জানিয়ে শিরীন হক বলেন, শেখ মুজিব হত্যা মামলার আসামি আবদুল মাজেদকে ফেরত পাঠিয়েছিল নয়াদিল্লি। যেহেতু অতীতে অভিযুক্তদের ভারত প্রত্যর্পণ করেছে, তাই দেশটি এবারও ঢাকার প্রত্যর্পণের অনুরোধে সাড়া দেবে।

নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সম্প্রতি বলেছে, বাংলাদেশ যত দিন মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্ত করবে না, তত দিন দিল্লিকে শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের আশ্রয় দিতে হবে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে শিরীন হক বলেন, তারা বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডের বাতিল চেয়েছে। মামলা যেমনই হোক, তিনি নিজেও সব ধরনের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে। তবে তাঁকে (শেখ হাসিনা) বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।

Header Ad
Header Ad

সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় ফায়ার সার্ভিস কর্মী নিহত

নিহত ফায়ার সার্ভিস কর্মী সোহানুর জামান নয়ন। ছবি: সংগৃহীত

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে রাজধানীর বাংলাদেশ সচিবালয়ে লাগা আগুন নেভানোর কাজ করতে গিয়ে রাস্তা পারাপারের সময় ট্রাকচাপায় সোহানুর জামান নয়ন (২৪) নামে তেজগাঁও ফায়ার সার্ভিস টিমের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ২টার দিকে সচিবালয়ের সামনের রাস্তায় ঘটনাটি ঘটে। আহত দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক রাত পৌনে ৪টার দিকে সোহানুরকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত মো. হাবিবুর রহমান (২৫) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

নিহত সোহানুর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার আটপনিয়া গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে। তিনি তেজগাঁও ফায়ারস্টেশনে কর্মরত ছিলেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাতে ফায়ার সার্ভিসের এ্যাম্বুলেন্স আহত দুই জন ফায়ারসার্ভিস কর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহানুর নামে এক ফায়ারসার্ভিস কর্মী মারা যায়। আরেকজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

মৃতের সহকর্মীরা জানান, রাতে সচিবালয় আগুন লাগলে ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা সচিবালয়ের সামনে রাস্তায় পানির পাইপ লাগানোর সময় এক দ্রুতগামী ট্রাক ধাক্কায় দুজন আহত হয়। পরে তাদের দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসে অন্য সহকর্মীরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সোহানুর।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সচিবালয়ে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে যা জানালেন ফায়ারের ডিজি
শেখ হাসিনাকে ভারত কি ফেরত পাঠাবে? আল–জাজিরার প্রতিবেদন
সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় ফায়ার সার্ভিস কর্মী নিহত
৬ ঘণ্টা পর সচিবালয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে
সচিবালয়ের আগুন লাগা ভবনে রয়েছে যেসব মন্ত্রণালয়
মধ্যরাতে সচিবালয়ে ভয়াবহ আগুন, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট ও নয়তলা
চুয়াডাঙ্গায় দুই কোটি টাকার স্বর্ণসহ ৩ পাচারকারী আটক
দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ধানবোঝাই ট্রাকের ধাক্কা, চালক-হেলপার নিহত
কুবির আরেক ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশে দিলো শিক্ষার্থীরা
টাকার বিনিময়ে ভোট দিলে জুলুমের শিকার হবেন: সারজিস আলম
চাঁদপুরে জাহাজে সাত খুন: গ্রেপ্তার ইরফান ৭ দিনের রিমান্ডে
টাঙ্গাইলে শিক্ষিকাকে কু-প্রস্তাবের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত
ভারত থেকে ২৪ হাজার টন চাল আসছে বৃহস্পতিবার
৩০০ ফুট গভীর খাদে সেনাবাহিনীর ট্রাক, ভারতের ৫ সেনা নিহত
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধানের পদত্যাগ দাবি কর্মকর্তাদের
কাজাখস্তানে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত অন্তত ৪০ (ভিডিও)
গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে জার্সি তৈরি করল চিটাগং কিংস
ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে বিরামপুর সীমান্ত থেকে ২ যুবক আটক
৭ জানুয়ারি লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার জয়ের, বললেন ‘একদম ভুয়া’