সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

গল্প

নবীনা নীশিথ

-ও আম্মা, দেখেন কে আইছে।

আসমতের মা এ পুরোনো বাড়ির পঁচিশ বছরের পুরোনো বুয়া। টিনশেড একতলা বিল্ডিং এখন প্রায়ই উঠে গেছে। কিন্তু এটা এখনো আছে। এর বাউন্ডারী দেয়ালের বাইরের রাস্তায় মানুষ ও রিকশা চলাচলের শব্দ এ বাড়ির ভেতর থেকে শোনা যায় তবে সেগুলো দেখতে হলে নীল রংয়ের লোহার গেটের ওপরের ঝাঝড়ির ফাঁক দিয়ে তাকাতে হয়। একটু আগে যখন একটা সিএনজি গেটের বাইরে এসে থামলো আসমতের মার গাছে পানি দেবার জন্য ওখানটায় দাঁড়িয়ে ছিল। কিশোর থেকে বড় হয়ে ওঠা এ বাড়ির একজনকে এই সন্ধ্যার প্রায় অন্ধকারেও চিনতে আসমতের মা’র ভুল হয়নি। আম্মা, মানে মিসেস তাহেরুন্নেছা দ্রুত গেটের কাছে এসে দাঁড়ালেন। একে ঈদের দিন তাতে নিঃসঙ্গ পরিবার, তাই কেউ এলে তার ও তার স্বামীর ভালোই লাগে। আজ নামাজের পর থেকে মানুষ জন বেড়াতে এসেছিলো ভালোই। এখন যখন সিকিউরিটি গার্ড ও ফ্ল্যাট মালিকের অ্যাপায়ন্টমেন্ট ছাড়া প্রায় কোন গৃহেই প্রবেশ করা যায় না সেখানে দরজায় নক করে এ বাড়িতে আশেপাশের অনেকেই ঢুকতে পারে। এ সহজলভ্যতার জন্য তিনি পাড়ার শিশুদের কমন নানী এবং এবং তার স্বামী ইব্রাহীম সাহেব কমন নানা হিসেবে বেশ প্রিয়ভাজন। তাহেরার বয়স ষাট আর ইব্রাহীমের উনসত্তর।


-কে আসমতের মা?
-সাইজা ভাই আর ভাবী।
তাহেরা আশুতুন্নেছা হাই স্কুলে বিজ্ঞান পড়াতেন। অবসর নিয়েছেন সময় হবার আগেই। তাকে আশেপাশের মানুষ সজ্জনশীলা বলে জানে। তবে সেজো পুত্র ও পুত্রবধু তাকে সালাম করার এই সময়টিতে তার মনে হয় আজ অধৈর্য্য হয়ে পড়েছিলাম। তা বিশ্বের কেউ না জানুক আমি জানি। পরপরই মিলা শাশুড়িতে সালাম করে। ও জিজ্ঞেস করে,
‘‘আম্মা কেমন আছেন। ঈদের শাড়ি পরেননি? তাহেরা বলেন ‘‘বিকেল পর্যন্ত পরাই ছিল। আসর নামাজের সময় খুলে রেখেছি।’ এটা ড্রইংরুম। খলিল বলে,
-আম্মা, আব্বা কোথায়?

-উনি তো আসনের একটু আগেই মসজিদে যান। তোমরা ঢুকার দু মিনিট আগেই মসজিদে গেছেন। মাগরিব পড়েই বাসায় ফিরবেন। চল তোমরা ভেতরে চল। নামাজটা পড়ে তোমাদের সাথে কথা বলি। পাঞ্জাবিটা খুলতে খুলতে খলিল বলে, ‘‘আম্মা আমিও নামাজ পড়বো।’ ঈদের দিনে সাধারণত কেউ কোন বাসায় হাতে ব্যাগ নিয়ে আসে না। মিলার হাতে দুটো ব্যাগ আছে। ও ওগুলো নিয়ে শাশুড়ির পেছন পেছন বাড়ির ভেতর ঢুকে। অন্দর মহলে যেতে ডান দিকে উঠান পড়ে। ষেখানে আসমত দাঁড়িয়ে। ও খলিল ও মিলাকে বলে, ‘‘ঈদ মুবারক। মামা-মামী কেমন আছেন? কখন আইলেন?’ ওর বয়স সতের বছর। এ বাড়ির কেয়ারটেকার। এ বাড়ির দেয়ালের বাইরে ছোট আর একটা প্লট আছে। সেখানে দুটো ঘর করে দিয়েছেন ইব্রাহীম। আসমত, ওর মা ও এক ছোট বোন সেখানেই থাকে। অজু করবার আগে তাহেরা আসমতকে আস্তে করে বলেন, ‘‘মসজিদে যা। নানাকে বল গিয়ে----------।’’

নামাজের পর পছন্দ মত কাউকে পেয়ে গেলে বুড়ো হয়তো এক ঘণ্টা গল্প করে তবে ফিরবেন নইলে এশার নামাজও পড়ে আসতে পারেন।

আসমত উঠোনোর পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে যায়। খলিল বারান্দায় অজু করে নামাজে দাঁড়ায়। মীলা ও শাশুড়ি আর এক রুমে। নামাজ শেষ হলে মখমলের সবুজ রংয়ের জায়নামাজটা যত্ন করে ভাঁজ করে কাঠের আলমারীল নীচের র‌্যাকটাতে রেখে দেয়। দু বছর আগে ওদের বিয়ের পর ওরা এই রুমটাতেই কিছু দিন ছিল। পুরোনো সেগুন কাঠের খাট। তাতে নতুন একটা লাল ও বেগুণী চাদর বেড কভার ও একই কাপড়ের তৈরি দুটো বালিশ পাতা। ঈদের দিনে তাহেরা এ বাসার প্রত্যেকের বিছানায় নতুন বেড কভার পাতবেই। নতুন মানে, নতুন কেনা নয়। দশ বছর আগে এগুলো কেনা। দামী। বছরে দু’দিন বের করা হয় বলে চক্চকে ঝক্ঝকে রয়েছে। এবার ও বাবা মা’র বেডরুমে যায়। ওখানে কেউ নেই। একটুখানি পরা একটা নতুন আদা সিল্ক এর শাড়ি খাটের ওপর ঝুলিয়ে রাখা। খলিল বুঝতে পারে, তাহেরা আজ বোধ হয় একবার পড়ে ছিলেন। কে দিলো। আম্মা তো শপে গিয়ে এটা কিনতে পারার কথা নয়। আর আম্মা? তিনি তার এই চোখ দিয়ে এমন একটা শাড়ি কিনতে পারবেন না। বড় আপা ও দুলাভাই দিয়ে গেছে? লজ্জায় খলিল আজ তাদের কথা একবারও মা’কে জিজ্ঞেস করেনি যদিও সকালে তাদের সাথে ওর কথা হয়েছিল। পাশে নতুন সাদা ঝক্ঝকে একটা পাজামাও ঝুলে আছে। বোঝাই যাচ্ছে বাবা সকালে এটা পড়েছিলেন।

তাহের ও আসমতের গলা একসাথে এসময় শোনা যায়। নীলা ও শ্বাশুড়ির সাথে কথা বলছিলো। খলিল ও নীলা দ্রুত ইব্রাহীমের দিকে ছুটে যায়। ওরা তাঁকে সালাম করে। তিনি বলেন, ‘‘তোমরা কখন এলে? কেমন আছ?’’ তার চোখ দেখেও বোঝা যায় তিনি আশা ছেড়ে দিয়ে ছিলেন। সারা দিন গেছে, সন্ধ্যাও পার হয়ে গেছে। আশা হারানোই তো স্বাভাবিক। তাহেরাও এসে বিছানায় বসেন। ব্যাখ্যা দেবার ভঙ্গীতে খলিল ও নীলা বলে সকালে নামাজ শেষে ওদের বস এর বাসায় কলঅন’ এ যেতে হয়েছিলো। তারপর এলো ওদের অফিসের কেউ কেউ। স্কুলের ও ইউনিভারসিটির বন্ধু। নীলা বলে, আপনাদের ছেলে এরপর গেল নারিন্দা গোরস্তানে। এ কথায় তাহেরার মুখে একটু আনন্দ ফুটে ওঠে। ওখানে ওর আম্মা ও আব্বার কবর। নীলার বাবার বাড়ি ওয়ারী। ওখানেও শ্বাশুড়িকে সালাম করে বাসায় ফিরতে ফিরতে দুপুর পার হয়ে গেল। তাই ওরা বিকেলে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। তাছাড়া এখন রাস্তার অবস্থা আগের মত নেই। ঈদের দিনেও বেশ যট। ওদের আজিমপুর কোয়ার্টার থেকে মীরপুর ১০ নম্বরের এই বাসায় আসতে এক ঘণ্টার বেশি লেগে গেছে এই ছুটির দিনেও। তাহেরা বলেন, ‘তো স্নিগ্ধার বাসায় যাস নি?’ স্নিগ্ধা খলিলের বড় বোন। খলিল বলে, আপু তো দাওয়াত দিয়েছে কাল দুপুরে। তোমরাও তো যাবে শুনলাম। তাহেরা আসমতের মা’কে বলেন, ডাইনিং টেবিলে জর্দ্দা, ফিন্নি ও সেমাই দিতে। নীলা বলে, ‘না আম্মা থাক। খাবো না।’ তাহেরার মনে আগের হতাশাটা আবার ফিরে আসতে থাকে। একি, এসেছে সারাদিন শেষে নানা জায়গায় বেড়িয়ে, এখন বলছে খাবে না।’ ইব্রাহীমের কানেও কথাটা ভালো লাগে না। বিয়ের পর এরা এ বাসায় ছিল মাত্র তিন সপ্তাহ। তারপরই চলে গেছিল সরকারি কোয়ার্টারে। কোয়ার্টারটা আবার পুত্রবধুর নামে। ও এগ্রিকালচার এক্সটেনশন ডিপারটমেন্ট এর বীজতত্ববিদ। খলিল বাংলা একাডেমিতে সহকারী পরিচালক। এরা বসে আছে ড্রইং রুমে। নীলা শ্বাশুড়ীর বাহু ধরে বলে, আম্মা আপনারা বসেন। আমি আসছি। ও ভেতরে শ্বশুড় শ্বাশুড়ির বেড রুম এ যায়। সঙ্গে আনা প্যাকেট দুটো নিয়ে ফিরে। হালকা নীল ও সাদা মিশ্রনের টাঙ্গাইল সিল্ক এর শাড়ি আর মিশ্র সিল্ক এর পাঞ্জাবীটা বের করে ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ীর হাতে দেয়। বুড়ো বুড়ির মন থেকে একটু আগের নাবোধক অনুভুতিটা কমে যায়। তা দামী কিছু পাওয়া জনিত নয় ভালবাসা প্রাপ্তি জনিত। তাহেরা কিছু বলেন না। নেড়ে চেড়ে দেখে সোফার ----- টেবিলের ওপর রেখেছেন।

খলিল বলেন, খুব সুন্দর। কতগুলো টাকা খরচ করেছ। এখন কোথায়ই বা যাই এ সব পরে। আসমতের মা মেঝেতে বসে দৃশ্যপট দেখছিলো। এ বাড়ির তিন ছেলে মেয়েরই বিয়েতে সে খুব খেটেছে। এবং তার দুটিই হয়েছিলো এ বাড়ির ভেতরেই শামিয়ানা টাংগিয়ে। ও বলে, এগুলি পইরা আপনারা খলিল ভাইজানের বাসায় বেড়াইতে যাইবেন। যাওনের জায়গার কি অভাব আছে আপনাগো?’ সে এসব কথা বলার অধিকার রাখে। নীলা ওর হাত ব্যাগ থেকে পাচশ টাকার একটা নোট বের করে আসমতের মা’র হাতে দেয়। ও তা হাসিমুখে আপত্তি করে শেষে নেয়। তাহেরা ঠিক বুঝতে পারছেন না এরা এরপর কি করবে। কিছু মেলে না। উপঢৌকন বিনিময়ও শেষ। তাহলে? নীলা এবার হাসি মুখে বলে, আম্মা চলেন তো দেখি রান্নাঘরে। আজ আপনি এই সময়ের মধ্যে কি কি রান্না করলেন? আসমতের মা, তুমিও চল মাংস, পোলাও তো গরম করতে হবে।’ তাহেরা ভালো বোধ করা শুরু করেন।

আসমতের মাকে সঙ্গে নিয়ে নীলা হাড়ি পাতিলের ঢাকনা খুলে খুলে দেখে আর একে একে চুলোয় দেয়। পোলাও, মুরগির সাদা কোমরা, গুরুর রেজালা আর খাসীর ভুনা চুলার তাপে চড় চড় করে শব্দ করতে থাকে। দুজনে দু’চুলোয় সেগুলো খুন্তী দিয়ে নাড়তে থাকে। হাট বাজার, লঞ্চ ঘাট, স্কুলের মাঠ বা এয়ারপোর্টের একটা নিজস্ব কলরব থাকে। ঈদের দিনেরও তেমনি একটা নিজস্ব আমেজ থাকে। ইব্রাহীম এশার নামাজের অজু করছেন। খলিল উঠানে হেঁটে হেঁটে সেই আমেজটা উপবোগ করতে থাকে। সাত কাটা জমির বাড়ির উঠানের বেশ খানিকটা জায়গায় তাহেরা বেগুন, কাচা মরিচ, নারিকেল এবং ফুলের গাছ লাগিয়েছেন। রান্নাঘর থেকে ঘি এর আর বাগান থেকে ফুলের গন্ধে ইব্রাহীমের খুব ভালো লাগে। কিছুদিন হলো রান্নাঘরেও টাইলস লাগানো হয়েছে। প্রাক্তন সরকারি কর্মচারী ইব্রাহীমের অর্থের প্রাচুর্য না থাকলেও বাইরে থেকে তা আসারও প্রয়োজন নেই। তবু তার বড় ছেলে মাল্টা থেকে বছরে একবার অন্ততঃ চার লাখ টাকা পাঠায়। সে ওখানে এনভায়রনমেন্টলিষ্ট। সেই টাকার সামান্য অংশ দিয়ে টাইলস এর কাজটা হয়েছে। সেদিকে তাকিয়ে নীলার মনে হয় সাদা শিফন জর্জেটের ওপর কেউ কালো পাড় এর সূচি কাজ করেছে। খাবার গরম হতে হতে ইব্রাহীমের নামাজ হয়ে গেছে। তাহেরা খেয়াল করেন যে নীলা কাপড় বদলে একটা সুতি ম্যাক্সি পড়ে নিয়েছে এর মধ্যে। ওদিকে গরম পাতিলে গ্লাস প্লেট ধুয়ে টেবিলে দিচ্ছে আসমতের মা। নীলা হাত মুখ ধুয়ে নেয়। ও বলে, আম্মা, আব্বা, ইব্রাহীম সবাই আস, টেবিলে বস। শ্বশুড়কে ও বলে কষ্ট করে ঈদের এতগুলো বাজার করেছেন। তিনি বলেন, না কষ্ট কই, বাজার তো কাছেই। লুঙ্গি পরেই যাই। সঙ্গে আসমত যায়। বের হলে একটু ভালোও লাগে।


-আম্মা, দামী মাংস পোলাও কি করবো? ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে রাখবো না টেবিলে খোলা রেখে দেব? কাল সকালে খেতে যা মজা লাগবে। তাহেরা বলেন, যে গরম, খোলা রাখা বোধ হয় ঠিক হবে না। জুড়াক। আমি ফ্রিজে রাখবো নি।
পিতা পুত্র টেলিভিশনের এক ঈদ প্রোগ্রাম দেখতে মগ্ন। রাত এখন সাড়ে নটা। নীলা আর তাহেরা উঠানে। নীলা শ্বাশুড়িকে আস্তে করে বলে,

-আম্মা, আজ কিন্তু থাকবো আমরা।’
-পাগল মেয়ে কি বলে? এটা কি একটা জানানোর কথা হলো?
আসমতের মা বলে, ‘হ ভাবী থাকেন। ভালো হইব। কতদিন আপনাগো দেখি না।’
ওদিকে লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরা পুত্রর ভাবসাব দেখে ইব্রাহীমও বুঝতে পারছেন না এরা আজ যাবে কি না। এতবড় বাসা থাকার পরও বৌ এর ছোট্ট কোয়ার্টারে গিয়ে ঢুকেছে বিয়ের পর পরই। উনি বা তাহেরা অভিমান করে এ নিয়ে কিছু বলেন নি।

রাত এখন এগারটা। অন্যান্য রাতে বুড়ো বুড়ি এসময়ের আগেই ঘুমিয়ে পড়েন।


তারা বেডরুমের দরজা খোলা রেখেই ঘুমান বাইরের বারান্দার দরজাটি বন্ধ করে। নীলা ও খলিল যে রুমে শুয়েছে তার পাশেই দম্পতির রুম। এ বাড়িতে অনেকদিন পর রাত্রিযাপন তাই পানির জগ গ্লাস আনতে ভুল হয়েছিল। শ্বশুড় শ্বাশুড়ির রুমের খোলা দরজা দিয়ে বারান্দার বাঁ পাশে রান্না ঘরে যেতে যেতে ও শ্বশুড় শ্বাশুড়ির গল্প শুনতে পায়।
ইব্রাহীম বলছেন, ‘একান্ত গরীব বাবা মা ও সন্তানের কাছ থেকে টাকা পয়সা চায় না। চায় শুধু তাদের সঙ্গটা।
তাহেরা বলেন, ‘ হ্যাঁ ওটা এখন বেশ পাবে।’ কি করে? কতদিন পর মাত্র এক রাত। না, বৌ মা বলেছে ওরা কোয়ার্টার ছেড়ে দিয়ে এবাসায় আমাদের সঙ্গেই থাকবে। আসলে বৌমার তো দোষ নেই। তুমি কখনো কোয়ার্টার নাও নি। আমাদের ছেলেরই খুব শখ ছিল সরকারি বাসায় একটু থাকার। তাছাড়া বৌমার ভালো খবর আছে।’ পুরুষ মানুষ, বুঝতে একটু দেরি হয়। ইব্রাহীম ভাবেন চাকরির কোন বিষয় হবে হয়তো। তারপরই তিনি বুঝতে পারেন, না তা নয়। এটা অনেক গভীর আনন্দের বিষয়। নীলা আর শোনে না। গ্লাস, জগ ও মোবাইলের টর্চ্চ নিয়ে বেডরুমে চলে যায়।
তাহেরা স্বামীকে বলেন, এ বাড়িতে কত ঈদ এসেছে, চলেও গেছে। কিন্তু আজকের ঈদটা রয়ে যাবে।

 

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভারত এখন পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং দিল্লিতে কূটনৈতিকদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। তবে এসব আলোচনা মূলত অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরতেই হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

কাশ্মির সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে গুলিবিনিময় অব্যাহত রয়েছে। কাশ্মিরে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে এবং শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অতীতের সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার ইতিহাস তুলে ধরলেও এবারকার হামলায় সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ এখনো প্রকাশ করেনি। পাকিস্তান সরকার সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যেহেতু ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পরমাণু শক্তিধর দেশ, তাই সামরিক সংঘাত বড় ধরনের বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।

ইরান ও সৌদি আরব মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানালেও, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি তাদের মনোযোগ সীমিত বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৯ সালের ঘটনার তুলনায় এবার প্রমাণের স্বচ্ছতা কম, আর “রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” নামে একটি অজ্ঞাত গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করলেও ভারত এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠনের ছায়া গোষ্ঠী বলে মনে করছে।

ভারতীয় সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ রয়েছে এবং মোদি সরকার “বড় ধরনের কিছু” করার পরিকল্পনায় এগোচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ