শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৭ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

মারুফুল ইসলাম

একগুচ্ছ কবিতা

অগ্নিশপথ

আজ আমার মন ভালো নেই
আজ আমি কারো মুখ দেখব না
আজ আমি কাউকে মুখ দেখাব না
অন্ধকার ঘরে বসে থাকব একা

আজ আমাকে কেউ ডাকতে এসো না
আমি অস্তিত্বে আগুন জ্বেলেছি
আজ আমাকে কেউ প্রবোধ দিও না
আমি অগ্নিমুখ তৃতীয় নয়ন মেলেছি

আমার যে মেয়েটা ছোটবেলায় গরম চা খেতে দিয়ে
ঠোঁটে আর জিভে ছ্যাঁকা খেয়েছিল বলে
আমার সারাটা বুক সাহারা মরুভূমি হয়ে গিয়েছিল
সেই মেয়েটাকে আজ ওরা জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে
অসহ্য অনলে দগ্ধ হয়ে গেছে সূর্য

এ সমাজ আজ জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড
এ সময় লেলিহান নরক

হা জীবন
হা পৃথিবী
হা মহাশূন্য
ও তো ঠিকমতো জানতেই পারল না
বৈশাখি ঝড়ে কৈশোর কতটা উচ্ছ্বল
মুহুরী নদীর জোয়ারে যৌবন কতটা চঞ্চল
থেমে থাকা রাতে থমকে থাকা চাঁদের আলোয়
বেঁচে থাকা কত যে মধুর

না, কোনো অভিযোগ নেই
অভিশাপ নয়
প্রতিটি পোড়ানো প্রাণ বাতাসে মিশিয়ে দিচ্ছে অগ্নিগর্ভ দীর্ঘশ্বাস
ওরা প্রতিশোধ চায়
ওরা প্রতিরোধ চায়
মহাজীবনের অগ্নিশপথ চায়

বিষয়টি রাজনৈতিক

বিষয়টি রাজনৈতিক, বন্ধুগণ
সঙ্গত কারণেই সমাজতাত্ত্বিক
মনস্তাত্ত্বিক
এবং অর্থনৈতিক
বিষয়টি আমাদের আবহমান অন্ধকার দিক
চলুন, এবার এক ঝলক আলো ফেলে দেখা যাক

সোনার বাংলার সুবর্ণচরের
চৌদ্দ বছরের মেয়েটি রাতের আকাশ বাতাস চিরে
চিৎকার করে কাঁদছিল
হ্যাঁ, জানি, ওর মুখ বাঁধা ছিল
চোখ বাঁধা ছিল
হাত বাঁধা ছিল
পা বাঁধা ছিল
শরীর বাঁধা ছিল
প্রাণ জিম্মি ছিল
জীবন বন্দি ছিল
তবু, বন্ধুগণ, আমি নিশ্চিত
ও সর্বোচ্চ আর্ত চিৎকারে কাঁদছিল
কেননা, ওর মন ছিল মুক্ত

ওর মাকে তখন উঠোনে ঠুকরে চলছিল
নয়টা শকুন
ওর মাকে তখন উঠোনে খুবলে যাচ্ছিল
নয়টা জানোয়ার
ওর মাকে তখন উঠোনে দুমড়ে মুচড়ে ফেলছিল নয়টা পিশাচ

নারীটি ধানের শীষ নয়
অমানুষগুলো নৌকা নয়

কিন্তু বিষয়টি রাজনৈতিক
সঙ্গত কারণেই সমাজতাত্ত্বিক
মনস্তাত্ত্বিক
অর্থনৈতিক
এবং বিষয়টি আমাদের আবহমান এক অন্ধকার দিক
আসুন, বন্ধুগণ, অন্তত একটিবার
আমরা নিজেদের ভেতর আলো ফেলে
অনুসন্ধান করি আমাদের আত্মপরিচয়

আমাদের সোনার বাংলায়
আর যেন কখনোই
আর যেন কিছুতেই
সুবর্ণচরের সেই কালরাত নেমে না আসে

নতুন করে পাব বলে : গণহত্যা ১৯৭১

সেই রাত ভেসে যায়নি তবু বুড়িগঙ্গার জলে
নরকের নাভি থেকে অতর্কিত ঘাতক বাতাস এসে
কালান্তক ফুৎকারে নিভিয়ে দিয়েছিল
অগণন অপ্রস্তুত মানব-প্রদীপ
ইতিহাস সাক্ষী
এমন গণহত্যা কোথাও কখনো দেখেনি
জীবনগন্ধী এই গন্ধম-গ্রহ

সংখ্যাতীত চাঁদনি রাতে প্লাবিত প্রাণস্পন্দিত প্রিয় প্রাচীন পৃথিবী
সে-রাতে অসহ্য অবিশ্বাস্যতায় প্রত্যক্ষ করেছিল
পাকিস্তানী হানাদারের হা-মুখ হাবিয়া

ধ্বংসযজ্ঞ আর হত্যাকাণ্ডের তাণ্ডবে বিস্ফোরিত হয়েছিল
প্রেম আর পার্বণের এ-শহর
স্বপ্ন আর সঙ্গীতের এই বিস্তীর্ণ জনপদ-গ্রাম-লোকালয়
প্রজ্ঞা ও মনীষার পীঠস্থান বিশ্ববিদ্যালয়
জ্ঞান আর সংস্কৃতির লীলাকেন্দ্র জগন্নাথ-ইকবাল-এস এম হল
সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী পিলখানা
আইনের ঝাণ্ডাধারী পুলিশলাইন

ছাত্রাবাস-ছাউনি-ব্যারাক-রাজপথ-নিমগ্ন নিবাস
হয়ে উঠেছিল
প্রাগৈতিহাসিক অগ্নিগিরির বিদীর্ণ বক্ষ

জ্বালামুখে কত জ্বলন
লাভাস্রোতে কত যন্ত্রণাদগ্ধ মৃত্যুর দহন
কালের প্রগাঢ় চশমার ভেতর থেকে শূন্যপাপ শিশুচোখে
তাকিয়ে আছেন আজো সেইসব শহীদ সন্ত
ওঁদের গুলিবিদ্ধ হৃদপিণ্ডে কত রক্ত
ওঁদের অপাপবিদ্ধ হৃদয়ে কত প্রেম

আগুন আর রক্তের রঙ কত লাল হতে পারে
মৃত্যু আর কষ্টের রঙ কত নীল হতে পারে
বিভীষিকার রঙ কত কালো হতে পারে
না না করে ওঠে ব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত রঙের খনি

হন্তারক পিশাচ-শোষক
বুলেটে ও বেয়োনেটে ঠেকাতে চেয়েছিল
আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম
বুটের তলায় আর ট্যাংকের চাকায়
নিশ্চিহ্নে পিষে ফেলতে চেয়েছিল
বাঙালি জাতিসত্তা
আর মানবতা
কিন্তু মাথার ওপরে অন্তরীক্ষে অদম্য তর্জনি উদ্যত করে
ধরিত্রীর বিপুল বিস্তারে পর্বতপ্রমাণ দাঁড়িয়েছিলেন
সময়ের অবিসংবাদিত সেই সূর্যসন্তান
আর সাড়ে সাত কোটি অসাম্প্রদায়িক বুকের পাঁজরে আমরা রচনা করেছি
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল জোড়া এই বিজয়-দুর্গ

সেই রাতে পরাজয় মানেনি এই দুর্দম দুর্জয়
বাংলার মাটি, বাংলার জল

নতুন করে পাব বলে : এসো, হে বৈশাখ

সোনার পালঙ্কে শুয়ে আছে ঠাকুরমার ঝুলির কন্যা
বাঁধভাঙা চুলে তার কী বাহার
ঢেউ তোলে রূপকাহিনির উপচানো বন্যা
মেঘের ঘোড়ায় চড়ে আসবে কি ডালিম কুমার
কালবোশেখের উড়ন্ত কেশরে
তীরহারা স্বপ্নের দুরন্ত পারাপার
বেদেনির দীঘল কড়ির জাদুমন্ত্রবলে
গাঙের বাতাস হারিয়েছে পথ
বল পান্থ, কোন দিগন্তে ঠিকানা লিখেছে তােমার
অবিশ্রান্ত দিব্যরথ

এই মৃত্তিকার রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রেম তার
বুনেছে জীবন-বীজ
বাহুবন্ধে অলঙ্কার বিশ্বাসের প্রাচীন তাবিজ
তাকে আমি পাঠ দিই প্রথম ভালোবাসার
ধনধান্যপুষ্পভরা আমাদের সোনার বাংলার

এখানে চাঁদের বুড়ি থুত্থুড়ি চরকায় সুতো কেটে যায়
জ্যোৎস্নার সাগর ফুলে-ফেঁপে ওঠে
উঠোনে উঠোনে মাদুরের বিছানায়
শীতলপাটির কারুকার্যে বর্ণময় নিয়মিত নিদ্রার আবেশ
অজস্র প্রাণের স্পর্শে রঙধনু হয়ে
জেগে থাকে এই বাংলাদেশ

নদীর ভেতরে নদী
তার আকাশে আকাশে পালতোলা পাখি
নৌকার গলুই ঢেউয়ে ঢেউয়ে বেঁধে রাখে রাখি
কাকে বলে প্রেম আর কার নাম প্রীতি
এস হে বিশ্ববাসী, নিয়মনীতি পাশে রেখে
দেখে যাও সোঁদাগন্ধময় রীতি

নিমেষে আর্য-অনার্য ভুলে
বাউল বাদাম তুলে
নিজেকেই ছেড়ে দাও নিজে
একতারার একাকী তারে দেখে নাও
কী করে প্রাচীন পংক্তিমালা বৃষ্টিজলে ভিজে
আমি তার নিরুদ্বিগ্ন আঁচলের প্রান্ত ছুঁয়ে যাই
ইতিহাসের উদ্বিগ্ন আড়ালে হারাই
আহা এই চিরচেনা আকুল আখড়ায়
সকলেই কী আশ্চর্য ঠাকুরের সঙ্গীত শোনায়

কে কবে শুনেছে বল ষড়ঋতু মুছে গেছে
নিসর্গের নির্লিপ্ত নয়নে
কে কবে দেখেছে বল জাফলং হারিয়েছে
শূন্যপ্রাণ পাথরের বনে
জল তার বেহালার আনন্দ ও বেদনার
সুর খোঁজে প্রতিটি পার্বনে
কালের তুলি বর্ণালি জীবনের ছবি আঁকে
অপরূপ রূপের অঙ্গনে

এদেশের নামে প্রেম, রঙে প্রেম, প্রাণে প্রেম, মনে প্রেম
মানচিত্রে প্রেমপূর্ণ ছবি
কাহ্নপা চণ্ডীদাস মধুসূদন লালন হাছন
রবীন্দ্রনাথ নজরুল জীবনানন্দ জসীম করিম
এ-মাটির প্রেমমগ্ন কবি

ঘুম ভেঙে শুনি সেই চিরপ্রেমময় ডাক
এসো, এসো, এসো, হে বৈশাখ

১০

একুশে ফেব্রুয়ারির পুঁথি

 

শোনো শোনো সবাই
শোনো শোনো সবাই মনেপ্রাণে শোনো হৃদয় দিয়ে
বলছি কথা বাংলাদেশ আর বাংলা ভাষা নিয়ে

আজকে একুশ তারিখ
আজকে একুশ তারিখ ফেব্রুয়ারির নিশ্চয় মনে আছে
চেয়ে দেখো কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে গাছে

আছে শিমুল পলাশ
আছে শিমুল পলাশ চারদিকে ওই বাহারে বিস্তারে
সবুজ রঙের মাঝে লালের রঙ যে নজর কাড়ে

তারও আগে বলি
তারও আগে বলি বঙ্গভূমির পথে পথে চলি
সূর্যসন্তানগণের নামে দেই শ্রদ্ধাঞ্জলি

বাংলা মায়ের ছেলে
বাংলা মায়ের ছেলে মায়ের ভাষার অধিকারের তরে
উনিশশো বায়ান্ন সনটা দেখো মনে করে

আহা সালাম জব্বার
আহা সালাম জব্বার রফিক বরকত থোকা থোকা নামে
চেয়ে দেখো ছুঁয়ে দেখো বুকটা কেমন কাঁপে

ওরা চেয়েছিল
ওরা চেয়েছিল মাতৃভাষাই হবে রাষ্ট্রভাষা
ধারাজলে মেটাক চাতক আজন্ম পিপাসা

কিন্তু পাকিস্তানি
কিন্তু পাকিস্তানি দুষ্ট শাসক বাংলা ভাষার বৈরী
তাতে কি ভাই আমরা সবাই জীবন দিতে তৈরি

মায়ের ভাষার জন্য
মায়ের ভাষার জন্য বাঙালিরা জীবন দিয়ে ধন্য
একুশে ফেব্রুয়ারি তাই আজও জনারণ্য

দেখো নয়ন মেলে
দেখো নয়ন মেলে দিকে দিকে বাংলা ভাষার নামে
লালসবুজের চিঠি আসে বাংলাদেশের খামে

আজকে বিশ্বব্যাপী
আজকে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিনে
আটশো কোটি মানুষ বন্দি ভাষার রক্তঋণে

দেখো আপন মনে
দেখো আপন মনে গৃহকোণে সোনাপাখির কাছে
বাংলা মায়ের বাংলা বোলে কত মধু আছে

আমরা জগতজুড়ে
আমরা জগতজুড়ে বেড়াই ঘুরে বাংলা ভাষা নিয়ে
এই ভাষাটা পেয়েছি এই বুকের রক্ত দিয়ে

তাইতো ভালোবাসি
তাইতো ভালোবাসি প্রাণের চেয়ে বাংলা ভাষা ভাইরে
এমন মধুর মুখের বুলি ভূভারতে নাইরে

মাগো তোমার বুকে
মাগো তোমার বুকে আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি
মায়ের ভাষায় তাই গেয়ে যাই অন্তরা সঞ্চারী

বাজাই জাদুর বাঁশি
বাজাই জাদুর বাঁশি সবাই মিলে সোনার বাংলাদেশে
এই মাটিতেই জীবন মরণ বাংলা ভালোবেসে

আমার ভাইয়ের রক্তে
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
আমি কি ভুলিতে পারি

 

Header Ad
Header Ad

সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফের মৃত্যু নিশ্চিত করল হামাস

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফ নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। গত বছর ইসরাইলি হামলায় নিহত হন মোহাম্মদ দেইফ।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বিবিসি। এতে বলা হয়, এক বিবৃতিতে, দেইফের পাশাপাশি হামাসের উপ-সামরিক কমান্ডার মারওয়ান ইসার মৃত্যুর কথাও ঘোষণা করেছে হামাস। যদিও গত বছরের মার্চ মাসে ইসার মৃত্যুর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

এছাড়া গত বছরের আগস্টে ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, তারা আগের মাসে দেইফকে হত্যা করেছে, কিন্তু তখন হামাস বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। ইসরাইল দাবি করেছিল, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামলার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে দেইফ অন্যতম ছিলেন। সেই হামলায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেইফকে গাজায় হামাসের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হত। ইয়াহিয়া সিনওয়ারের পরেই ছিল তার অবস্থান। ইয়াহিয়া সিনওয়ারও গত বছর ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিহত হন।

এদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিচারকরা গত বছর দেইফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন, পাশাপাশি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

এদিকে, ইসা হামাসের সামরিক শাখার ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন এবং ইসরাইলের মোস্ট-ওয়ান্টেড ব্যক্তিদের একজন হিসেবে বিবেচিত হতেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইসাকে তাদের সন্ত্রাসী কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। তারা মনে করে ৭ অক্টোবরের হামলার সাথে ইসা সরাসরি যুক্ত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির

ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো কোনো আরব নেতা সিরিয়া সফরে গেলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় তিনি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে পৌঁছান। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের পর এই প্রথমবার কোনো সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধান দেশটি সফর করলেন। বর্তমানে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আহমেদ আল-শারা। সফরের সময় দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে কাতারের আমিরকে স্বাগত জানান তিনি।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, নতুন সিরীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাতার মাঠপর্যায়ে কাজ করতে আগ্রহী। বিশেষ করে সিরিয়ার জনগণের জন্য চলমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা করা, ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রতিহত করা এবং সিরিয়ার ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সহায়তা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

বিশ্লেষকদের মতে, কাতারের আমিরের এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে এই প্রতিবেদন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত কর্মকর্তারা পুলিশের দায় এড়াতে পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন দিয়েছেন এবং ইয়ামিনকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

সমালোচকরা বলছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে পুলিশের নৈতিক অবক্ষয় এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে গণঅভ্যুত্থানের পরও তারা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারেনি। বরং, কঠিন চাপে থেকেও পুলিশের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড মাঝে মাঝেই প্রকাশ পাচ্ছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশের দাবি, ইয়ামিন এপিসি (সাঁজোয়া যান) কারে উঠলে বাইরে থেকে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোঁড়ে, যা তাকে আহত করে। এরপর এএসআই মোহাম্মদ আলী তাকে নামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তার হাতে ব্যথা থাকায় ফসকে পড়ে যান ইয়ামিন। পুলিশ আরও জানায়, জনগণের কাছে হস্তান্তরের জন্য তাকে রোড ডিভাইডারে রাখা হয়, যাতে কেউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারে।

তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজের কোনো মিল পাওয়া যায়নি। ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুলিশের সদস্যরা নীল রঙের এপিসি কারের ওপর ইয়ামিনকে ফেলে রেখে টহল চালায় এবং ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর এপিসি কারটি সাভারের রানা প্লাজা ও ভ্যাট অফিসের মাঝামাঝি এলাকায় আসে। এরপর এপিসির ভেতর থেকে এক পুলিশ সদস্য দরজা খুলে দেয় এবং আরেকজন ইয়ামিনকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় ফেলে দেয়।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ইয়ামিন তখনও জীবিত ছিলেন। প্রচণ্ড কষ্টে নিশ্বাস নিতে দেখা যায় তাকে। তার পরনে ছিল নেভি ব্লু ট্রাউজার ও খয়েরি রঙের জামা। এপিসি থেকে ফেলে দেওয়ার পর তার দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে যায় এবং একটি পা এপিসির বাঁ দিকের চাকার সঙ্গে আটকে থাকে। মৃত ভেবে পুলিশের সদস্যরা তার পায়ে আর গুলি না করে রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। এরপর আরও দুই পুলিশ সদস্য নেমে এসে তাকে সার্ভিস লেনে ফেলে রেখে চলে যায়।

পুলিশের এই প্রতিবেদনকে ‘চরম পক্ষপাতদুষ্ট’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, তদন্ত কর্মকর্তারা শুধু পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য নিয়েছেন, অথচ কোনো প্রত্যক্ষদর্শী, সংবাদকর্মী বা সাধারণ মানুষের সাক্ষ্য নেননি। এ কারণে তদন্ত প্রক্রিয়াকে পক্ষপাতদুষ্ট ও অবিশ্বাস্য বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এক প্রতিবেদনে পুলিশের আচরণকে ‘ভয়ংকর বর্বরতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির তিন পুলিশ সদস্য দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন এবং অপেশাদারসুলভ আচরণ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখাকে সুপারিশ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ নীল এপিসি কার থেকে ইয়ামিনের গুলিবিদ্ধ দেহ রাস্তায় ফেলে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। ঘটনাটি ঘটে সাভারের আশুলিয়া এলাকায়। কোনো ময়নাতদন্ত বা আনুষ্ঠানিক মৃত্যুসনদ না দিয়েই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইয়ামিনের লাশ হস্তান্তর করে।

ঢাকা ও সাভার রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ইয়ামিনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা না করার জন্য পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। পরে, পরিবার তাকে সাভারের তালবাগে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান বাধা দেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাংক টাউন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ দায় মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু ভিডিও ফুটেজের ভয়ংকর দৃশ্যগুলো ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনার সঙ্গে পুলিশের বক্তব্যের কোনো মিল নেই। তাহলে, শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে যদি সত্য প্রকাশ না পায়, তবে স্বাধীন তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পুনরায় এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি উঠেছে। নিহত ইয়ামিনের পরিবার এবং আন্দোলনকারীরা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফের মৃত্যু নিশ্চিত করল হামাস
প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির
শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক
রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান
কোটা পদ্ধতি পুনরায় পর্যালোচনার নতুন ৩ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: জামায়াত আমির
নওগাঁ বারের নির্বাচনে সব পদে বিএনপি প্যানেলের জয়
আরব আমিরাতে চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি
ডিপসিকের চেয়েও কার্যকর নতুন এআই আনার দাবি আলিবাবার
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাণিজ্য মেলায় সংঘর্ষ, আহত ১৬
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে নিজেই জানিয়ে দিবো: তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
সাত কলেজের জন্য হচ্ছে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’
ভোটারদের আস্থা পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নিতে বলেছে ইইউ: ইসি সচিব
রংপুরের টানা চতুর্থ হার, প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রইলো খুলনা
চিরতরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঢাকার মধুমিতা সিনেমা হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'জয় বাংলা' স্লোগান, আটক ৫
প্রধান উপদেষ্টার উদ্বোধনে শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলা
সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানো সেই যুবককে গুলি করে হত্যা