সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

গল্প: পর্ব-১

মুজিবের হলদে পাখি

জেলখানার যে ওয়ার্ডে আছি, সেটার নাম সিভিল ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের সামনের মাঠটি আমার খুব পছন্দের। মাঠে কয়েকটি আম গাছ আছে। সেখানে আমি ফুল গাছ লাগিয়ে বাগান করেছি। সব মিলিয়ে এই মাঠ আমার টুঙ্গিপাড়ার স্মৃতির দুয়ার। একদৌড়ে ঢুকে গেলে বুকভরে শ্বাস টানা যায়। বুঝতে পারি আমি যেখানে যাই টুঙ্গিপাড়া আমার সঙ্গে থাকে। টুঙ্গিপাড়া আমার মানস-ভুমি। আনন্দ-বেদনার সঙ্গী।

আমার সেল থেকে চল্লিশ হাত দূরের পুরানো চল্লিশ সেলটি পাগলা গারদ। যেখানে দিনের বেলায় সত্তরজন, রাতের বেলায় সাঁইত্রিশ জন পাগল থাকে। কয়েকদিন ধরে ওরা রাতে খুব উৎপাত শুরু করেছে। এমন চিৎকার করে যে রাতে আমি ঠিকমতো ঘুমুতে পারিনা। ওদের চিৎকারে মাথা ঝনঝন করলে ঘুম আসেনা। উঠে বসে থাকি। ঘরে পায়চারি করি। আমিতো দিনের বেলা ঘুমাইনা। সেজন্য রাতের ঘুম আমার জন্য খুব জরুরি। ওদের চিৎকারে অতিষ্ঠ হয়ে যাই। কিন্তু কিছু করার থাকে না। ওদের থামানোর কোনো দায় জেল কর্তৃপক্ষের নাই। নিজেকেই এই দায় নিয়ে সময় কাটাতে হয়। উপায়হীন দিন কাটে। আমি আমার দিন কাটানো সুষ্ঠ-সুন্দর করার জন্য উপায় খুঁজি। প্রকৃতি আমার এই উপায়ের একটি বড় দিক। রাতে ঘুমুতে না পারলে আমি সকালে উঠে ফুলবাগানে হাঁটি। ফুলের দিকে তাকালে ফুলের নানা রঙ আমার চোখ জুড়িয়ে দেয়। আর ভেসে আসা সৌরভ শ্বাস টেনে বুক ভরে নেই। মাঝে মাঝে মনে হয় এখানে থাকব না। কিন্তু এমন প্রাকৃতিক সুষমা আমার কষ্ট ভুলিয়ে দেয়। ভোরের দুঃখ মুছে নিয়ে উড়ে যায়। ভাবি, মানুষের ভালোবাসার উর্দ্ধে এ এক অন্যরকম ভালোবাসা পাওয়া। টুঙ্গিপাড়ায় আমার শৈশব থেকে আমি প্রকৃতির কাছ থেকে এই ভালোবাসা পেয়েছি। আমি চেয়ার এনে আমগাছের নিচে বসে খবরের কাগজ কিংবা বই পড়ি। গাছতলায় বসে থাকার এই সময় দারুণ কাটে।

সাতদিন ধরে দেখছি আম গাছটায় দুটো হলদে পাখি রোজ এসে বসে। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি। পাখিদুটোকে খুব ভালোবাসি। দুজনে এক হয়ে খেলে। এ-ডালে ও-ডালে লাফায়। পাখা ঝাপটায়। ঠোঁটে ঠোঁট মেলায় আবার পাখা গুটিয়ে চুপ করে বসে থাকে। আমি তাকিয়ে থাকি এমন দৃশ্যের দিকে। পুরোটা আমার সামনে ছবি হয়ে যায়। মনে হয় এ ছবি আমার চোখের সামনে থেকে কোনো দিন বিলীন হবে না।

এখন ১৯৬৬ সালে আমার সময় পার হচ্ছে। ১৯৫৮ সালে যখন জেলে ছিলাম তখনও দুটো হলদে পাখি আসত। সে সময় আমি পাখিদুটোর নাম দিয়েছিলাম খোকা আর রেণু। আমার সামনে ওরা দশ বছরের খোকা আর তিন বছরের রেণু। জোড় বেঁধেছে। আমগাছের ডাল ওদের টুঙ্গিপাড়া। ওরা কিচকিচ শব্দে ডাকলে আমি বলি, তোমাকে আমি খুব ভালোবাসি রেণু। তুমি আমার বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়। তিন বছরের মানুষটি তুমি আমার পরাণ পাখি।

রেণু হেসে নিজেকে উজাড় করত। জেলে আমার সঙ্গে দেখা হলে বলতাম, তুমি আমার হলদে পাখি। আমি তোমার কে?

-তুমিও আমার হলদে পাখি।

১৯৫৮ থেকে ১৯৫৯-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত পাখি দুটো প্রতিদিন আসত। যেন বলত, আমাদের দেখ। জেলখানায় একা থাকার কষ্ট ভুলে যাও।

-মাঝে মাঝে আমার যে খুব নিঃসঙ্গ লাগে রেণু।

-নিঃসঙ্গতা মেনে নাও। তুমি পুরো জাতির সামনে দাঁড়িয়ে আছ গো।

আমি রেণুর দিকে তাকিয়ে থাকি। কত সহজভাবে এমন একটি গভীর কথা রেণু আমাকে বলল। ও আমার সামনে পুরো দেশ হয়ে লক্ষ মানুষ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কোথাও রেণুর কোনো দ্বিধা নাই। ওহ আল্লাহ, ও আমার জীবন ভরিয়ে রেখেছে।

এবার জেলে এসে হলদে পাখি দুটোকে খুঁজতে থাকি। একদিন আম গাছের ডালে দুটো হলদে পাখি দেখি। দেখেই বুঝতে পারি এদুটো আমার আগের দেখা পাখি না। এ দুটো অন্য পাখি। আগের পাখি দুটোর চেয়ে ছোট মনে হয়। আমি দুচোখ মেলে তাকিয়ে থাকি। একলা ঘরে নিঃসঙ্গ থাকার যন্ত্রণা কমে যায়। একদিন মনে হয় হলদে পাখি দুটো আগের পাখির বংশধর। ভাবনার পাশাপাশি জোরে জোরে হাসি। পাখির বংশধর ভেবে আমি পাখি ভালোবাসার নিজের মনোজগতে স্বস্তি খুঁজি। এমন ভাবনায় তাড়িত হয়ে আমগাছের নিচে এসে দাঁড়াই। ঘাড় ঘুরিয়ে উপরে তাকাই। ডালপাতার বিস্তারের সবুজ ¯স্নিগ্ধতায় আপ্লুত হই। আমার চোখ জুড়িয়ে যায়। দেখি পাখিদুটো পাশাপাশি নিশ্চুপ বসে আছে। আমি বিড়বিড়িয়ে বলি, নিশ্চুপ থাকবি কেন তোরা, গান কর। তোদের গান শুনলে আমার বুকের ভেতর স্বপ্ন ঘনায়। তোরা আমার দুঃখী মানুষ না। তোদের গানে পুরো দেশ আমার সামনে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মনে হয় হলুদ দেশ আমার। হলদে রঙ সবুজের মাঝে শস্যের স্বপ্ন।

-রেণু পাখিদুটো যে আমার কত বড় বন্ধু যারা জেলখানায় একাকী ঘরে বন্দী থাকে নাই তারা বুঝতে পারবে না।

-আমি বুঝতে পারি গো। হলদে পাখি তোমার মনের আনন্দ। তাই না?

-ঠিক বলেছ। হলদে পাখি ছাড়াও চড়ুই পাখি আর কাকও আমার বন্ধু। আমি এই নির্জন ঘরে ওদের নিয়ে আসি ভাবনার তুমুল আনন্দে। আমার ঘরের সামনের বারান্দায় কয়েকটা কবুতর থাকে। এখানে বাচ্চা ফোটায়। তখন বত্রিশ নম্বর বাড়ির ছবি আমার সামনে ফুটে ওঠে। আমার ভালোবাসার কবুতর হয়ে ওরা আমার আদর পায়। আমি কাউকে ওদেরকে ধরতে দেইনা। সিপাহি, জমাদার সাহেবরাও কবুতরগুলোকে কিছু বলে না। বাচ্চাগুলোও নিয়ে যায় না। ওগুলো বড় হয়ে উড়ে যায়। তবে এটা ঠিক আমি কাকের কাছে পরাজিত হয়েছি। রেণু দেখা করতে এলে ওকে যখন একথা বলি, তখন ও হাসতে থাকে। অল্পসময়ে ওর হাসি থামে না। হাসতে হাসতে বলে, পাখির কাছে পরাজিত হওয়া আনন্দের।

-নাগো। কোনো কোনো সময় আনন্দের হয় না।

-কি করে কাকেরা?

-পায়খানা করে আমার ফুল বাগান নষ্ট করে। আর এত চিৎকার করে যে সহ্য করা কঠিন।

-এখন তাহলে তুমি কি করবে?

-আমি ঠিক করেছি যে কাকদের এখানে বাসা বানাতে দেব না। আর আগের বানানো বাসাগুলো ভেঙে ফেলতে বলব কাদেরকে। ওদের চিৎকারে আমার শান্তি নষ্ট হয়। আমি স্বস্তি হারাই।

-ঠিক আছে ওদের বাসা ভেঙে ফেললে ওরা অন্য গাছে গিয়ে বাসা বানাবে। অসুবিধা কি?

-হ্যাঁ, বাসাতো ওদের বানাতেই হবে।

-তা ঠিক। ডিম পাড়বে, বাচ্চা ফোটাবে। বাসা না থাকলে ওদের অধিকার নষ্ট হবে।

-ঠিক বলেছ রেণু।

-তোমার কাছ থেকেইতো মানুষের অধিকারের বিষয় শিখেছি। তুমি আমার টিচার।

-না, না আমি তোমার টিচার না। আমি ঘরে-বাইরে তোমার ভালোবাসার মানুষ।

রেণু মুখ টিপে হাসে। যাওয়ার সময় বলে, তোমার প্রিয় কৈ মাছ এনেছি। পেট ভরে ভাত খেয়ে ঘুমুবে।

-আচ্ছা তাই করব। ঘুমের স্বপ্নে তুমি থাকবে। দেখব টুঙ্গিপাড়ার মধুমতী নদীর ধারে দাঁড়িয়ে আছ। আমাকে নৌকায় আসতে দেখে হাত নাড়ছ। তোমার মাথার উপর দিয়ে উঠে যাচ্ছে অনেক পাখি।

-পাখি, পাখি। তোমার সামনে এখন অনেক পাখি। তুমি আমার হলদে পাখি।

আমাকে হাসতে দেখে রেণু মুখ আড়াল করে। জেলখানার গেটের ঘরে বসে এসব আলোচনায় অন্যরকম আমেজ পাই। রেণুও খুশি হয়। পরে একসময় বিদায় নিতে হয়।

 

চলবে…

 

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভারত এখন পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং দিল্লিতে কূটনৈতিকদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। তবে এসব আলোচনা মূলত অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরতেই হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

কাশ্মির সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে গুলিবিনিময় অব্যাহত রয়েছে। কাশ্মিরে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে এবং শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অতীতের সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার ইতিহাস তুলে ধরলেও এবারকার হামলায় সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ এখনো প্রকাশ করেনি। পাকিস্তান সরকার সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, যেহেতু ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পরমাণু শক্তিধর দেশ, তাই সামরিক সংঘাত বড় ধরনের বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।

ইরান ও সৌদি আরব মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানালেও, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতি তাদের মনোযোগ সীমিত বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৯ সালের ঘটনার তুলনায় এবার প্রমাণের স্বচ্ছতা কম, আর “রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” নামে একটি অজ্ঞাত গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করলেও ভারত এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠনের ছায়া গোষ্ঠী বলে মনে করছে।

ভারতীয় সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ রয়েছে এবং মোদি সরকার “বড় ধরনের কিছু” করার পরিকল্পনায় এগোচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ