বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

স্বকৃত নোমান  

লেখকের দায়বদ্ধতা  

একজন লেখক একজন স্রষ্টা। একইসঙ্গে একজন ব্যক্তিও। ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষ কি আলাদা? ব্যক্তি মানুষটি যদি চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশ, লম্পট, ধর্ষক হয়, তাতে কি তার সৃষ্টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়? আমি বলি, হ্যাঁ, করা যায়। কিন্তু আপনি বলবেন, না করা যায় না। কারণ ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষ সম্পূর্ণ আলাদা। মহাকবি হোমার অন্ধ ছিলেন, সুরগুরু বিঠোফেন বধির ছিলেন, শেক্সপীয়র মদ্যপ ও উচ্ছৃঙ্খল ছিলেন, বাল্মীকি দস্যু ছিলেন, আর কালিদাস ছিলেন মহামূর্খ। তাই বলে তাঁদের সৃষ্টি তো প্রশ্নবিদ্ধ নয়। তাঁদের সৃষ্টিকে তো আমরা খারিজ করে দিতে পারি না। রবীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন, ‘কবিরে পাবে না তাহার জীবনচরিতে।’ কার্ল গুস্তাভ ইয়ুং বলেছেন, ‘শিল্পী-স্বভাবকে পুরোপুরি প্রকাশ পেতে গেলে শিল্পীর নিজের ব্যক্তিস্বভাবকে আগে নির্বাসিত করতে হবে।’ ওদিকে টি.এস.এলিয়টও স্রষ্টার মধ্যে দুজনের অস্তিত্বের কথা বলেছেন, একজন the man who suffers এবং অপরজন the mind which creates. সুতরাং ব্যক্তি মানুষ ও স্রষ্টামানুষ যে সম্পূর্ণ আলাদা―এর পক্ষে মহান মনীষীদের ভারী ভারী সব উক্তি পাওয়া যাচ্ছে। অতএব, আপনার পাল্লা ভারী।

কিন্তু জনাব, বাটখারার পাল্লা একটি হয় না। বাটখারার জন্য দুটি পাল্লা লাগে। আপনার পাল্লাটি ভারী হলেও বিপরীত পাল্লাটি কি শূন্য? মোটেই তা নয়। আপনি নিশ্চয়ই সাহিত্যত্তাকে স্বীকার করেন? করতেই হবে। একটা জায়গায় স্বীকার না করে কিন্তু উপায় নেই। যেমন ধরুন, সাহিত্যতত্ত্ব কবিতাকে কবিতা বলেছে, গল্পকে গল্প বলেছে, উপন্যাসকে উপন্যাস বলেছে। এখন আপনি যদি বলেন, না, কবিতাকে আমি গল্প বলবো, গল্পকে নাটক বলবো, উপন্যাসকে কবিতা বলবো, আর নাটককে অংক বলবো―তাহলে আপনার সঙ্গে তর্ক বৃথা। আপনি শিল্পী নন, নৈরাজ্যবাদী। শিল্পরাজ্যে আপনার প্রবেশ নিষেধ। আপনি নিশ্চয়ই তা নন। সাহিত্যতত্ত্বকে আপনি স্বীকার করেন। আপনি জানেন যে, সাহিত্যের বহু তত্ত্বের মধ্যে মার্কসীয় সাহিত্যত্ত্ব অনেক প্রভাবশালী, অনেক বেশি বিখ্যাত। পৃথিবীর বহু প্রভাবশালী সাহিত্যিক এই তত্ত্বকে মেনেছেন, মানেন।

মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্বে আপনার ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষের বিভাজনকে ‘অবস্তুতান্ত্রিক’ বা ‘ভাববাদী’ বলেছে। প্রাচীনকালের রচনাগুলো দেখুন না। যেমন ধর্মগ্রন্থ। ওগুলোকে তো মানব-রচিত বলেই স্বীকার করা হয় না। ওগুলোর উপর দৈবত্ব আরোপ করা হয়। অর্থাৎ এগুলো মানব-রচিত নয়। সেসব রচনায় দুটো সত্তার অস্তিত্বকে স্বীকার করা হচ্ছে। হতেই পারে। প্রাচীনকালে এমন দৈব ঘটনা হামেশাই ঘটতো। কারণ মানুষ তখনো তার চিন্তাকে শৃঙ্খলিত করতে পারেনি, তার ক্ষমতাকে সুসংহত করতে পারেনি, পৃথিবীতে তার অস্তিত্বের জয় ঘোষণা করতে পারেনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কার্ল গুস্তাভ ইয়ুং বা টি.এস.এলিয়টও কার্ল মার্কস-কথিত সেই অবস্তুতান্ত্রিক বা ভাববাদী বা সেই দৈবযুগের মতবাদের সমর্থক। হতেই পারেন। দোষের কিছু নেই।

কিন্তু পৃথিবীটা এখন বদলে গেছে। এখন অন্ধকবি হোমারের যুগ নয়, এখন বধির বিঠোফেনের যুগ নয়, এখন মদ্যপ ও উচ্ছৃঙ্খল শেক্সপীয়রের যুগ নয়, এখন দস্যু বাল্মীকির যুগ নয়, এখন ‘মহামূর্খ’ কালিদাসের যুগ নয়। তাদের মৃত্যুপরবর্তীকালে পৃথিবীর সমস্ত নদ-নদীর অনেক জল গড়িয়েছে। অনেক নদী শুকিয়ে গেছে। এন্টার্টিকা-হিমালয়ের অনেক বরফ গলে গেছে। অনেক অরণ্য মরুভূমিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ঘটে গেছে ফরাসি বিপ্লব, অক্টোবর বিপ্লব, ঘটে গেছে হাইতি, কিউবা, চাইনিজ বিপ্লব। দু-দুটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। হিরোশিমা-নাগাসাকি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। মানুষ এখন কল্পিত স্বর্গকে পৃথিবীতে নামিয়ে এনেছে, একটি বাটনের মধ্য দিয়ে মানুষ এখন পৃথিবীকে শাসন করছে। একটি বাটনের চাপে গোটা স্থলভাগকে উড়িয়ে দিতে পারে মানুষ। মানুষের বুদ্ধির উৎকর্ষ এখন শিখরকে স্পর্শ করেছে।

পৃথিবীটা এখন পণ্যায়নের পৃথিবী। আপনি যে গল্পটি লিখছেন সেটা একটি পণ্য। আপনি যে কবিতাটি লিখছেন সেটি একটি পণ্য। আপনি যে উপন্যাসটি লিখছেন সেটি একটি পণ্য। আপনার কবিতার, গল্পের, উপন্যাসের বইটি একজন পাঠকও না কিনলে, আপনার বইটি কোনো প্রকাশক প্রকাশ না করলে, আপনি স্বীকার করুন বা না-ই করুন, আমি নিশ্চিত, আপনি লেখালেখি ছেড়ে দেবেন। ছেড়ে দেবেন, কারণ, আপনার মধ্যে হতাশা তৈরি হবে, নিরর্থকতা তৈরি হবে। আপনি কোনো অনুপ্রেরণা পাবেন না। লেখাবাহুল্য, শিল্পসৃষ্টির জন্য অনুপ্রেরণা জরুরি। সেই অনুপ্রেরণা আকাশ থেকে আসে না। রবীন্দ্রনাথের ‘অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেন’ এই উক্তিকে অচল ঘোষণা করেছে পণ্যসভ্যতা। অর্থাৎ আপনি একটি পণ্যসভ্যতায় বসবাস করছেন। গায়ের জোরে আপনি এই সভ্যতাকে অস্বীকার করতে পারবেন না।

এই পণ্যায়নের যুগে হোমার, বাল্মীকি আর কালিদাসরা জন্মগ্রহণ করেন না। কারণ এই পণ্যায়নের যুগের চাহিদা আলাদা। সামাজিক সম্পর্ক, শ্রমবিভাগ এবং সাংস্কৃতিক জীবনও আর সেই কালে দাঁড়িয়ে নেই। সমাজের এখন মূল লক্ষণ প্রগতি, অর্থাৎ সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। অতএব শেষ হয়ে যাওয়া, বিগত হয়ে যাওয়া সামাজিক অবস্থাকে ফিরিয়ে আনা এখন আর সম্ভব নয়। পুরনো সেই মহাকাব্য রচনার যুগ বা এলিজাবেথ-বিক্রমাদিত্যের যুগ বা জীবন আর ফিরে আসবে না। ফিরে আসবে না সেই সময়কার সাহিত্যকর্মও। এখনকার যুগটা সম্পূর্ণই আলাদা। এই আলাদা যুগে প্রত্যেক মানুষই এক বিশেষ সমাজে বাস করে। সেই সমাজ থেকে সে বন্ধনমুক্ত হতে পারে না। কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীও বন্ধনমুক্ত হতে পারে না। পেটে একবেলা ভাত না থাকলে এখন আর কলম চলে না। তাই মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বা নজরুলরা এখন আর জন্মগ্রহণ করেন না।

আপনি যদি এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে চান, তবে আপনার উদ্দেশে ভি.আই লেনিন বলছেন, ‘হে বুর্জোয়া লেখকগণ! আপনারা যে অবাধ স্বাধীনতার কথা বলেন, তা নিছক ভণ্ডামি মাত্র। যে সমাজে অর্থই শক্তি, যে সমাজে অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ দুঃসহ দারিদ্র্যে কষ্ট সহ্য করেন, আর মুষ্টিমেয় ধনী পরগাছার মতো জীবন-যাপন করে, সে সমাজে সত্য এবং সক্রিয় স্বাধীনতা বলতে কিছু থাকে না।’ সুতরাং এই পণ্যায়নের যুগে আপনি যে ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষকে আলাদা করে আপনার পাল্লাটি ভারী করতে চাইলেন, বিপরীত পাল্লার ওজনের কাছে আপনার পাল্লাটি হালকা হয়ে গেল, আপনার পাল্লাটি উপরের দিকে উঠে গেল। অর্থাৎ আপনার পাল্লাটি হালকা, বিপরীত পাল্লাটি ভারী।

আপনি বলতে পারেন, এটি তো মার্কসীয় সাহিত্যতত্ত্ব। আমি এই তত্ত্ব মানি না। তাহলে আপনার তত্ত্বটি কী? ওই অবস্তুতান্ত্রিকতা? ওই ভাববাদীতা? ওই দৈবত্ব? ওই প্রাচীনতা? জনাব, সবিনয়ে আপনাকে বলছি, আপনি গায়ের জোরে বাস্তবকে অস্বীকার করছেন। আপনার চারদিকে যে জাজ্বল্যমান বাস্তব, তা আপনি দেখেও না দেখার ভান করছেন। আপনি কপটতা করছেন। কপটতা দিয়ে শিল্প-সাহিত্য হয় না। শিল্প-সাহিত্যের জন্য সততা আবশ্যক। তবু যদি আপনি গায়ের জোরে অস্বীকার করতে চান, করুন। আপনার সঙ্গে বিতর্কে না যাই। বিতর্কে যাই সেই লোকটির সঙ্গে, যিনি এই পণ্যায়নকে স্বীকার করছেন, নিজেকে মার্কসবাদী বলে দাবি করছেন, আবার একই সঙ্গে ব্যক্তিমানুষ ও স্রষ্টামানুষকে আলাদা করছেন। এই লেখা পড়ার পর, সেই মানুষটি, আশা করছি, হয়ত আর আলাদা করবেন না।

আসলেই কি তাই? আলাদা কি করা যায় না? যায়। কল্যাণরাষ্ট্রে করা যায়। যে রাষ্ট্রে মানুষে মানুষে সমতা এসেছে, জাতি গঠন হয়েছে, সেই কল্যাণ রাষ্ট্রে ব্যক্তিমানুষের দিকে আমাদের নজর না দিলেও চলে। যেমন ধরুন সুইডেন, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, লুক্সেমবুর্গ, লিশটেনস্টাইন। এসব রাষ্ট্রকে কল্যাণ রাষ্ট্র বলা যায়। অপরাধীদের অভাবে এসব দেশের কারাগারগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এটি কল্যাণ রাষ্ট্রের প্রধান লক্ষণ। এসব দেশের একজন কবি-সাহিত্যিক ব্যক্তিজীবনে যদি চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশ, লম্পট, ধর্ষক হন―তার ব্যক্তিজীবনের দিকে আমাদের না তাকলেও চলে। কারণ তার রাষ্ট্রের কোনো সংকট নেই, জাতির কোনো সংকট নেই। তার জাতি ‘কল্যাণ’-এর যে মহাসমুদ্র রচনা করেছে, সেই সমুদ্রে তার সমস্ত অপরাধ সিন্ধুর মাঝে বিন্দুর মতো বিলীন হয়ে যাবে।

কিন্তু বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে ব্যক্তিমানুষের কি এই অবাধ স্বাধীনতার সুযোগ আছে? অর্থাৎ একজন কবি বা ঔপন্যাসিক বা নাট্যকারের কি সেই সুযোগ আছে? তাকে কি দুই সত্তায় বিভাজন করা যায়? এই রাষ্ট্র তিরিশ লক্ষ শহিদের হাড়-কঙ্কালের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এই রাষ্ট্রের নাগরিকরা এখনো তার পরিচয় নিয়ে সংশয়ী। সে বাঙালি না মুসলামান, এখনো এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। অর্থাৎ এখনো জাতিটাকে গঠন করতে পারেনি। এই রাষ্ট্রের অসংখ্য নাগরিক এখনো শত্রæরাষ্ট্র পাকিস্তানকে বন্ধু মনে করে, মুক্তিযুদ্ধকে বলে ‘গণ্ডগোল’। এই রাষ্ট্রের অসংখ্য তরুণ স্বাধীনতা-বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে। এই রাষ্ট্রের মুসলমানরা হিন্দুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়, ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে। এই রাষ্ট্রের সংখ্যাগুরু নাগরিকরা ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী নাগরিকদের মানুষ বলে স্বীকার করতে নারাজ। এই রাষ্ট্রের পরতে পরতে দুর্নীতির মহোৎসব। এই রাষ্ট্রের অসংখ্য প্রাচীনপন্থী নাগরিক শিল্প-সাহিত্যকে ‘অধর্মের কাজ’ বা ‘অকাজ’ বলে গণ্য করে। এমন একটি রাষ্ট্রের একজন কবি বা ঔপন্যাসিকে দুই সত্তায় বিভাজন করা যায় কিনা? এমন একটি রাষ্ট্রে একজন কবি-লেখক ব্যক্তিজীবনে চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশ, লম্পট, ধর্ষক হতে পারেন কিনা? যুদ্ধাপরাধীদের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করতে পারেন কিনা? প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতে পারেন কিনা?

আপনি বলতে পারেন, কবি-লেখকের কোনো রাষ্ট্র নেই, কোনো দেশ নেই; কবি-লেখক বিশ্বনাগরিক। সুতরাং এই রাষ্ট্রের প্রতি তার দায় না থাকলেও চলে। আপনার উদ্দেশ্যে হোর্হে লুইস বোর্হেস বলছেন, ‘আমি সব ধরনের জাতীয়তাবাদকে ঘৃণা করি, আমি বিশ্বনাগরিক হতে চাই। সমগ্র বিশ্বের নাগরিক এবং আমি আর্হেন্তিনারও একজন ভালো নাগরিক। আর্হেন্তিনীয় প্রজাতন্ত্র পৃথিবীরই একটি অংশ।’

সুতরাং, আপনার সেই কবি-লেখকটিও বিশ্বনাগরিক হতে পারেন, কোনো সমস্যা নেই। শুধু এটুকু মনে রাখলে চলবে, এই গণপ্রজাতন্ত্রের বাংলাদেশ এই বিশ্বেরই অন্তর্ভুক্ত একটি দেশ।

 

লেখক : কথাসাহিত্যিক

 

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

বক্তব্য রাখছেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডক্টর এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর বাংলাদেশ’ আয়োজিত সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

‘ডিসকাশন অন ডেমোক্রেটিক কলাপ্স অ্যান্ড রিবিল্ডিং অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে হাউস অব লর্ডসের সিনিয়র সদস্য আলেক্সান্ডার চার্লস কার্লাইল কিউসি সভাপতিত্ব করেন। ভয়েস ফর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্রডকাস্টার আতাউল্লাহ ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

সম্মেলেনে সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বলেন, বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঠিক তদন্ত শেষে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুররাবৃত্তি না হয়।

লর্ড হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে সব ধরনের সহায়তা পাবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান লেবার দলীয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুপা হক।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
ধামরাইয়ে শ্রমিকবাহী বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪