ঝাল খাবার খেলে শরীর ঘেমে যায় কেন?
ছবি সংগৃহিত
ঝাল খাবার গ্রহণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে সাধারণত শরীর তাৎক্ষণিকভাবে ঘেমে যায়। যারা নিয়মিত ঝাল খাবার খান, তারা বিষয়টি ভালোভাবে খেয়াল করবেন। মূলত ঝাল খাবারের কয়েকটি উপাদান মুখ থেকে শুরু করে পাকস্থলী পর্যন্ত থাকা স্নায়ু রিসেপ্টরগুলোতে উষ্ণ অনুভূতি সৃষ্টির ফলে এমনটি ঘটে থাকে।
অনেকেই প্রায় প্রতিদিন ঝাল খাবার খেয়ে থাকেন। কিন্তু ঝাল খাবার খেলে শরীরে ঠিক কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে সেটা বেশিরভাগেরই অজানা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেল সেরকমই কিছু তথ্য।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার ফিজিওলজিস্ট ডেভিড জুলিয়াস বলেন, "ঝাল খাবার গ্রহণের ফলে দেহে বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে। জিহ্বা ও ঠোঁটে অসাড় অনুভূতি থেকে শুরু করে শরীর ঘেমে যাওয়া এর মধ্যে অন্যতম।"
তবে ঝাল খাবার গ্রহণের ফলে দেহে সৃষ্ট সবধরনের প্রতিক্রিয়াই যে ইতিবাচক, এমনটি নয়। এমনকি কেউ যদি ঝাল খেতে ভালোবাসে তবুও সেটি নেতিবাচক হতে পারে। কেননা প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেহে ঝাল খাবারের উপকারিতা ও ক্ষতিকারক উভয় দিকই রয়েছে।
শরীর ঘেমে যাওয়া
ঝাল খাবার গ্রহণের প্রতিক্রিয়া হিসেবে সাধারণত শরীর তাৎক্ষণিকভাবে ঘেমে যায়। যারা নিয়মিত ঝাল খাবার খান, তারা বিষয়টি ভালোভাবে খেয়াল করবেন। মূলত ঝাল খাবারের কয়েকটি উপাদান মুখ থেকে শুরু করে পাকস্থলী পর্যন্ত থাকা স্নায়ু রিসেপ্টরগুলোতে উষ্ণ অনুভূতি সৃষ্টির ফলে এমনটি ঘটে থাকে।
অনেকেই ঝাল খাবার খেতে পছন্দ করেন। ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে মুখে ও জিহ্বায় জ্বালাপোড়া হয়, গরম লাগে। অনেকের কপাল থেকে ঘামও ঝড়তে থাকে। মরিচের মধ্যে কাপাসাইসিন নামে একটি উপাদান এই অনুভূতির জন্য দায়ী।
ক্যাপসাইসিনয়েড নামের সমধর্মী বেশ কিছু যৌগের মধ্যে এটি অন্যতম। ব্যথানাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই উপাদান আবিষ্কারের পর মূলত পোড়া ক্ষতের ব্যথা উপশমে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো।
ক্যাপসাইসিন মুখ ও জিহ্বায় থাকা ভ্যানিলয়েড রিসেপ্টরের (সংবেদী কোষের) সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে। রিসেপ্টরগুলো এর ঝাঁজকে তাপ হিসেবে শনাক্ত করে এবং মস্তিষ্কে ভুলভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সংকেত পাঠায়। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর সংকেতের কারণে মস্তিষ্ক ঝালকে গরম অনুভূতি হিসেবে শনাক্ত করে। এ জন্য ঝাল খাবার খেলে শরীরে তাপমাত্রা বেড়েছে বলে অনুভূত হয়।
ঝাল খাবার খাওয়ার আরও সুবিধা রয়েছে। ক্যাপসাইসিনয়েড স্নায়ুকোষগুলোকে উত্তেজিত করে, ফলে বিপাক ক্রিয়া ত্বরান্বিত করে, এভাবে শরীরে শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং পাশাপাশি ক্ষুধার অনুভূতি কমায়। এ ছাড়া ঝাল মুখে লালা নিঃসরণ বাড়িয়ে ভাতের মতো শুকনো খাবার গিলতে সহায়তা করে।
এছাড়াও এই গরম অনুভূতি এন্ডোরফিন নামের একটি হরমোন নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয় যা শরীরে প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে, ফলে আরাম বোধ হয়।
তবে ব্যক্তিভেদে ঝাল সহ্য করার ক্ষমতা আলাদা। তাই জোর করে বা অতিরিক্ত ঝাল খাবার না খাওয়াই ভালো।