হোম অফিসের ক্ষেত্রে করণীয়
চলছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। বেড়েই চলেছে সংক্রমণের হার। সরকারিসহ বেশ কিছু অফিসে অর্ধেক জনবল দিয়ে অফিস চালানো হচ্ছে। এ সময় অনেকেই বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করছেন। এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে।
প্রয়োজনীয় যোগাযোগ অব্যাহত
বাড়িতে বসে কাজ করা মানেই যা খুশি তা করা নয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কর্মস্থল বা আপনার সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা আপনার কাছ থেকে কী আশা করছেন, তা জানা সবচেয়ে জরুরি। প্রতিদিন কাজ শুরুর আগে ও শেষে আপনার ব্যবস্থাপকের সঙ্গে অন্তত ১০ মিনিট কথা বলে কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন। যারা দূরে বসে কাজ করেন, তাদের জন্য আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে চোখের আড়ালে চলে যাওয়া। বাড়িতে বসে যখন বস বা সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, তা যেন মুখোমুখি যোগাযোগের মতোই সমৃদ্ধ হয়। এদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভিডিও কল, স্কাইপ, জুমের মতো টুলগুলো কাজে লাগাতে পারেন।
ভাবনায় পরিবর্তন
অফিসে যাওয়ার জন্য যেমন প্রস্তুতি লাগে, তেমনি বাড়ি বসে কাজের জন্য একই রকম প্রস্তুতি থাকতে হবে। সকালে গোসল করে ঠিকঠাক মতো পোশাক পরে কাজ শুরু করতে হবে। একে অফিসের কাজের মতোই ভাবতে হবে। যাদের বাড়িতে অফিসের মতো সেটআপ নেই, তাদের অফিসের মতো করে নিজেদের গুছিয়ে নিতে হবে, কাজের জায়গা বের করে নিতে হবে। ঠিকমতো গোছানো কাজের পরিবেশ না পেলে দূরে বসে কাজের ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা কিছুটা কমতে পারে।
পরিবারের সদস্যদের সীমানা নির্ধারণ
বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে অফিসের কাজ করাটা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ এখন স্কুলও বন্ধ। এ কারণে আপনার বাড়ির মধ্যে এমন সীমানা তৈরি করুন, যা আপনার পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারে। যখন দরজা বন্ধ করে দেবেন মনে করুন, আপনি সেখানে নেই। অফিসে বসেই কাজ করছেন। যদি নির্দিষ্ট কাজের জায়গা থাকে, তবে বাড়িতে বসে কাজের ক্ষেত্রে সুবিধাগুলো কাজে লাগানো যায়।
ব্যায়াম ও কফি ব্রেক নিন
যেহেতু বাসায় কাজ করছেন, তাই শরীরটা ফিট রাখতে হালকা কিছু ব্যায়ামও সেরে নিন। আপনার সুবিধা মতো সময় বের করে ব্যায়াম করুন। দাঁড়িয়ে হাত ও আঙুলের ব্যায়াম করতে পারেন।। কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে হাত ও আঙুল রিলাক্স করার মতো ব্যায়াম করলে শরীরের মাংসপেশিগুলো শিথিল হবে, বাড়তি ক্যালোরিও পুড়বে। ফোনে কথা বলার সময় হাঁটুন।
শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা
সারাদিন ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায় বসে রয়েছেন অনেকেই। এ থেকে সারাদিন ঘাড়ে-কোমরে ব্যথা হতে পারে। খাটে বসে কাজ করলে পেছনে সাপোর্ট দেওয়ার মতো কিছু থাকে না। অনেকে হয় তো বালিশ দিয়ে সাপোর্ট দিয়ে কাজ করেন, কিন্তু তাতেও আপানার কোমর আর পিঠ সঠিক সাপোর্ট পায় না। খাটে বাসে কাজ করতে করতে আপনি অজান্তেই সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েন আর এর এটা আপনার শিরদাঁড়ার জন্য একদম ভালো নয়। বিছানায় বসে কাজ করলে ঘুম চলে আসে। আর তাতে আপনার কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যায়।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান
দুপুরে স্বাস্থ্যকর লাঞ্চ করা জরুরি। হাতের কাছে পানির বোতল রাখবেন অবশ্যই যাতে ফাঁকে ফাঁকে পানি পান করতে পারেন।
প্রযুক্তিগত সচেতনতা
সন্দেহজনক যে কোনো ই-মেইল ওপেন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।করোনাভাইরাসের সচেতনতা বিষয়ক মেইল, লিঙ্ক বা ফাইল পেয়ে থাকলে সেগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। কারণ এ সময় নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। আপনার ইলেক্ট্রিক ডিভাইস সুরক্থি রাখতেই এসব বিষয়ে সচেতন হবে কম্পিউটারে অ্যান্টিভাইরাস আপডেটেড আছে কিনা নিশ্চিত করুন। সর্বশেষ কাজের ব্যাকআপ রাখা। নিরাপদ অথেনটিকেশন সিস্টেম ব্যবহার করতে হবে। যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি, তাদের ফোন নম্বর ও বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা সংগ্রহে রাখা উচিত।
এসএন