অফিসের কাজ দ্রুত করার উপায়
এক সঙ্গে অনেক কিছুতে মনোযোগ দেওয়া খানিকটা কঠিন কাজ। কখনো কখনো অনেক কাজ একসঙ্গে করতে গিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয় না। কাজ শেষ না করলেও হয় না। তাই অনেক সময় অফিস সময়ের বাইরেও কাজ করতে হয় বা বাসায় কাজ নিয়ে ফিরতে হয়। এতে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। তাই সময়ের কাজ সময়ের মধ্যে শেষ করতে কাজের ধরনে কিছু পরিবর্তন আনা যেতেই পারে। তাহলে আপনিও পারবেন ঝটপট অফিসের কাজ শেষ করতে। কিছু উপায় অবলম্বন করে আপনি দ্রুত সেরে ফেলতে পারেন সব কাজ!
প্রাধান্য অনুযায়ী তালিকা তৈরি
একজন ভালো কর্মচারীর সবচেয়ে বড় গুণের একটি হলো প্রাধান্য বুঝতে পারা। আপনাকে বুঝতে হবে কোনো কাজটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা আগে ধরা। অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজটা জটিল ও সময় সাপেক্ষ হতে পারে। তখন আপনাকে বুঝে নিতে হবে কাজটিতে যথেষ্ট সময় দিতে আপনি আগে সেটা করবেন নাকি ছোট খাটো কাজগুলো আগে সেরে নেবেন। যদি কোনোভাবেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটির জন্য বাড়তি সময় না পাওয়া যায়, তাহলে আগে সেটা শেষ করে বাকিগুলো ধরুন। প্রতিদিন অফিসে ঢুকেই আপনাকে গুরুত্ব অনুযায়ী কাজের তালিকা তৈরি করতে হবে।
নিজের কাজের অভ্যাস বোঝা
একেক মানুষ একেকভাবে কাজ করে। কেউ কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনলে ভালো কাজ করতে পারেন, আবার কেউ গান শুনলে ফোকাস হারিয়ে ফেলেন। আপনি খেয়াল করে দেখুন আপনি কীভাবে কাজ করলে আপনার মনোযোগ দিতে সুবিধা হয়। যা যা কাজের সময় আপনার মনোযোগে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, সেসব কিছু দূরে সরিয়ে রাখুন। আপনার ডেস্ক এমনভাবে সাজিয়ে রাখুন যেন আপনার মনোযোগ দিতে সুবিধা হয়।
বড় কাজগুলো ছোট ছোট অংশে ভাগ করা
আমাদের কাছে যখন বড় কোনো কাজ আসে, যেটা আমাদের কাছে জটিল মনে হয়, তখন আমরা জেনে বা নিজের অজান্তে সেই কাজটা পিছাতে থাকি। কাজটা থেকে সারাদিন ধরে পালাতে থাকি। কিন্তু ভয় না পেয়ে আমাদের উচিত বড় কাজকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নেওয়া। একবার কাজের ছোট কোনো অংশে ঢুকে গেলে বাকিটা আপনা-আপনিই হয়ে যাবে। শুরু করাটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
বিরতি নির্ধারণ
টানা অনেক্ষণ কাজ করলে কাজের গুণগত মান খারাপ হয়ে যায়, আবার আমরা তাড়াতাড়ি ক্লান্তও হয়ে পড়ি। সেজন্য আমাদের একটু পর পর ছোট বিরতির প্রয়োজন। যেমন টানা দুই ঘণ্টা কাজ না করে আপনি নিজেকে বলবেন আমি টানা ২০ মিনিট কাজ করব, তারপর ৫ মিনিটের একটা বিরতি নেন। তারপর আবার ২০ মিনিট কাজ, আবার বিরতি। এভাবে যতক্ষণ কাজটা করবেন, ততক্ষণ আপনি কাজটায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারবেন।
কিছু শর্ট-কাট শিখে নেওয়া
অনেক সময় আমাদের মস্তিষ্ক যত তাড়াতাড়ি কোনো ভাবনা ভাবে, আমাদের হাত ততো তাড়াতাড়ি সেটা লিখে নিতে পারে না। তাই নিজের টাইপিং স্পিড বাড়ান। কম্পিউটারের কিছু কমন শর্ট-কাট শিখে নিন। এতে আপনার অনেক সময় বাঁচবে। এক কাজ বারবার না করে কীভাবে এ সময়টা বাঁচানো যায়, তার জন্য কী-বোর্ডের শর্ট-কাট অপশনগুলোর সঙ্গে নিজেকে অভ্যস্ত করে ফেলুন।
অন্যদের সঙ্গে কাজ করা
অনেক সময় আমরা একা একা কাজ করলে বেখেয়াল হয়ে যাই। দিবা স্বপ্ন দেখতে থাকি, কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় হারিয়ে যাই। কিন্তু অন্য কলিগদের মাঝে কাজ করলে তাদের কাজ করতে দেখে আপনারও কাজের মুড আসবে। অন্যদের সামনে আপনি লজ্জায় পড়ে হলেও এদিক ওদিক মনোযোগ দিতে পারবেন না। সেজন্য চেষ্টা করুন আপনার প্রোডাক্টিভ কলিগদের পাশে বসে কাজ করতে।
কাজ শুরুর আগে নিজেকে সময় দেওয়া
যে কোনো কাজ শুরুর জন্য আমাদের একটা মুডে যেতে হয়। যতক্ষণ কাজের মুড আসে না, ততক্ষণ আমরা খুব সহজেই বেখেয়াল হয়ে পড়ি। তাই কাজ শুরুর আগে শান্ত হয়ে বসে নিজেকে কিছুক্ষণ সময় দেওয়া উচিত। মাত্র অল্প কয় মিনিট নিজেকে সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলুন। তারপর মনে মনে কাজটা নিয়ে ভাবুন। এতে আপনার মনোযোগ অনেক অংশে বেড়ে যাবে।
এসএন