রানির খাওয়া

অবিশ্বাস্য একটি কর্মজীবন পার করে চলে গিয়েছেন ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ-২। তিনি নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য, ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য ও ব্রিটেনের রানি হিসেবে জীবনযাপনের অংশ হিসেবে কী খেতেন?
রাজকীয় রান্নাঘরের একটির প্রধান পাচক ডারেন ম্যাকড্রেইডির তথ্যানুসারে বেশিরভাগ দিনই রাজপরিবারের প্রধান একই ধরণের খাবার খেতে ভালোবাসতেন।
প্রথমে চা : বেশিরভাগ ব্রিটিশই জানেন, রানি আল গ্রে’র চায়ের প্রতি নিরপেক্ষ ছিলেন। তবে তাকে ঐতিহ্য মেনে খেতে হতো। এই চায়ের মালিক ছিলেন ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
এলিজাবেথের প্রিয় ব্র্যান্ড ছিল তুলনামূলকভাবে টুইনিংস। কফি, চকলেট ও আরো কটি ভালো পানীয় নিয়ে বানানো মিশ্রণ। টুইনিংস একটি বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ ব্র্যান্ড যারা দুনিয়াজুড়ে বিক্রি ও সরবরাহ করে। কোনো, কোনোদিন তিনি খালি কফি ভোরে উঠে খেতেন।
সকালের নাস্তা : তিনি সাধাসিদে মানুষ ছিলেন জীবনভর। একবল স্পেশাল ‘কে (বিশেষ ধরণের খাবার চাল ও গম দিয়ে আরো নানা কিছু মিশিয়ে বানানো)’, নানা ধরণের ব্রিটিশ ফল, একেবারে ঠিক সময়ে সকালের নাস্তার টেবিলে থাকতো রানির জন্য।
বিশেষ দিনগুলোর সকালে ডিমের নানা পদ ও স্যামন মাছের রান্না করা বিভিন্ন পদ খেতেন।
ও বলাই হলো না, রানির বিশেষ দিনের কোনো অভাব কোনোদিন হয়নি। তাকে অতিথিদের প্রিয় খাবার, ব্রিটিশ জনগণের সম্মান এবং রাজমর্যাদা জীবনভর পালন করে যেতে হয়েছে।
দুপুরের নাস্তা : তিনি কোনো কোনোদিন গ্রিল করা মাছ, অবশ্যই খুব ভালো এবং সেরা, আবার কোনোদিন গ্রিল মুরগি চাইতেন।
মাড় দেওয়া খাবারের বিশেষ পোশাক পরে বসতেন তিনি। অবশ্য এই কথা সত্য যে, রাজকীয় পরিবারের বিভিন্ন ধরণের ড্রেস কোড আছে এবং ব্রিটেনের রানিকে অবশ্যই তা সবসময় মেনে চলতে হয়েছে ও অন্যদের মানাতে হয়েছে।
‘ডোভার সোল’ নামের মাছ ভাজি করে তিনি খেতে ভালোবাসতেন।
কোনো, কোনোদিন ধুন্দুলের পদ, নানা ধরণের শাক ভাজি বা রান্না থাকতো।
মুরগির বাচ্চা তিনি গ্রিল করেও সালাদ দিয়ে খেতেন।
বিকেলের খাবার : ভালো ও উন্নতমানের চকলেট, বিস্কিট, কেক ও চা নিয়ে বসে পড়তেন ব্রিটেনের রানি বিকেলে। তার প্রিয় ছিল উন্নতমানের চকলেট কেক।
রাতের খাবার : দুপুরে যেভাবে খেতেন, সেভাবেই রাতের খাবার সারতেন ব্রিটেনের রানি। মাংসের নানা ধরণের রান্না, শাকসবজি তার রাতের খাবারের মধ্যে থাকতো।
রবিবার ছুটির দিনে তিনি ‘সানডে রোস্ট’ নামের একটি বিশেষ ধরণের খাবার খেতেন।
এবার বলি অতিথি আপ্যায়নে রাজ পরিবারের ইতিহাসে যত ধরণের বিশেষ খাবার ইতিহাসে আছে, তার সবই ব্রিটেনের রানির হেঁসেলে আছে।
তবে এই হলো ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের নিজের ও পরিবারের খাবার।
ভুলে যাবেন না-তিনি অতিথি আপ্যায়ন করতেন। ফলে কোন দিন একা, একা খেতে পেরেছেন সেটির হিসাব কারো জানা আছে?
ছবি : উইন্ডসর রাজপ্রাসাদে যৌবনের রানি এলিজাবেথ তার তরুণ-তরুণী ছেলে ও মেয়ে প্রিন্স চার্লস এবং প্রিন্সেস অ্যানকে নিয়ে খেতে বসেছেন স্বামী প্রিন্স ফিলিপকে নিয়ে। এই ছবিতে তার মেয়ে বই পড়ছেন, তাদের এই মুহূর্তগুলো আছে বিবিসির ‘দি রয়্যাল ফ্যামেলি’ নামের প্রামাণ্যচিত্রে। এক বছরের বেশি শ্রমের ফসল ১৯৬৯ সালের ২১ জুন প্রচার করা হয়েছে।
ওএফএস।
