ভোটের রাতে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: ১০ জনের ফাঁসি, ৬ জনের যাবজ্জীন
আসামিদের আদালতকক্ষে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার অপর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস এ রায় দেন। একইসঙ্গে ওই ছয়জনের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ সাক্ষীর সাুুক্ষ্যগ্রহণ শেষে রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদনে করে। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল ১৫ আসামিকে। বর্তমানে তারা নোয়াখালী জেলা কারাগারে রয়েছেন। তবে ঘটনার পর থেকে মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) নামে একজন আসামি পলাতক রয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা উপলক্ষে সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের মধ্য দিয়ে ১৫ আসামিকে কড়া নিরাপত্তায় জেলা জজ আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। হাজত প্রাঙ্গণে আসামিদের স্বজনদের ভিড় দেখা গেছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্থানীয় রুহুল আমিনের নেতৃত্বে স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে রেখে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ অভিযোগপত্র দেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক জাকির হোসেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রছুল বলেন, সুবর্ণচরে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় কারাগারে আছেন ১৫ জন। তাদের মধ্যে আট আসামি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।