৪০ হাজার টাকার মামলা নিষ্পত্তিতে ৪০ বছর
সাড়ে ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের এক ঘটনার ৪০ বছর পর ওই ঘটনার রায় এসেছে উচ্চ আদালত থেকে।
বিচারপতি মো. আবু জাফার সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) এই রায় ঘোষণা করেন।
ওই টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পর মামলা হয়েছিল ১৯৮২ সালে। পাঁচ বছর পর ওই মামলায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ৪২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পরে ওই দণ্ড এবং জরিমানার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল হয় ১৯৮৮ সালে। হাইকোর্টে আপিল করার এক যুগ পর এবং ঘটনার প্রায় দুই দশক পর আবেদনকারী ২০০১ সালে মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার আরও প্রায় ২০ বছর পর অর্থাৎ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার প্রায় ৪০ বছর পর বৃহস্পতিবার ওই আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে হাইকোর্টে।
এদিন আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ।
ওই ঘটনায় হাইকোর্টে আপিলকারী ছিলেন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ১ নং বাজুবাঘা ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহান।
মামলাসূত্রে জানা যায়, তিনটি হাট লিজ দেওয়াকে কেন্দ্র করে আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো ১৯৮২ সালের ৯ জুন চারঘাট থানায় মামলা করে। মামলায় সাড়ে ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। মামলায় ওই বছর ১০ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পাঁচ বছর পর ১৯৮৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে তাকে পাঁচ বছরের জেল ও ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ১৯৮৮ সালে আপিল (আপিল নং: ১৮৬/১৯৮৮) করেন আব্দুস সোবহান। হাইকোর্টে এই আপিল বিচারাধীন থাকাবস্থায় ২০০১ সালের ১৬ জুন মারা যান তিনি। তখন আপিলে দুদককে পক্ষভুক্ত করা হয়নি। পরে দুদক এই মামলায় পক্ষভুক্ত হয়ে শুনানিতে অংশ নেয়।
আইনজীবী শাহীন আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট বিভাগ অনেক পুরানো এক আপিলের রায় ঘোষণা করে সেটি নিষ্পত্তি করেছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে ৪০ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ছিল। এই অভিযোগে দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলা করে।
তিনি বলেন, সেই মামলায় পাঁচ বছরের সাজা এবং ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আব্দুস সোবহান আপিল করেন। অনেকদিন পর আজকে রায়ের মাধ্যমে আপিলটি নিষ্পত্তি হলো। অলরেডি আপিলকারী মারা গিয়েছেন। আপিলকারী মারা গেলে আইনের বিধান হচ্ছে আপিলটা অ্যাবেট (বাদ) হয়ে যাবে দণ্ড ও সাজার ক্ষেত্রে। কিন্তু জরিমানাটা থেকে যাবে। এখন এই জরিমানার বিষয়ে শুনানি হয়েছে। শুনানি শেষে আপিল অ্যালাউ (মঞ্জুর) করেছে আদালত। এর মাধ্যমে আপিলের নিষ্পত্তির ঘটনা ঘটলো।
এমএ/এএস