নাটোরে বিএনপি নেতা দুলু ও তাঁর স্ত্রী ছবির বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন । ছবি: সংগৃহীত
নাটোরে হত্যা, বিস্ফোরকসহ তিন মামলায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও তাঁর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবির জামিন বাতিল করে পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। আজ মঙ্গলবার নাটোর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শরীফ উদ্দীন এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরকসহ তিন মামলার চার্জ শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল। এর মধ্যে যুবলীগ কর্মী পলাশ হত্যা মামলায় দুলু ও বিস্ফোরক মামলায় তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন চার্জ শুনানির দিনে আদালতে হাজির না হওয়ায় আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করেন। পরে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ও চার্জ গঠন করেন।
দুলুর আইনজীবী আবুল হোসেন বলেন, বিএনপি নেতা দুলু ক্যান্সারে আক্রান্ত। তিনি বর্তমানে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মর্মে আদালতে চিকিৎসা সনদ এবং স্বামীর সেবা ব্যস্ত থাকা স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের সময় আবেদন চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। কিন্তু বিচারক আবেদন নামঞ্জুর করে পৃথক মামলায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পিপি আরিফুর রহমান বলেন, ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে যুবলীগ কর্মী পলাশ নাটোর স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে শহরের আলাইপুর এলাকায় দুলুর উপস্থিতিতে ১৫ থেকে ১৬ জন অস্ত্রধারী তার পথরোধ করে। এ সময় পলাশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হলে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পলাশ মারা যায়। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তজা আলী বালু বাদী হয়ে দুলুসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০২০সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুলুসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে।
তিনি বলেন, এছাড়া ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর সকালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে দুলুর বাড়ি অতিক্রম করার সময় বিএনপির কর্মী ও সমর্থকরা ওই মিছিলের ওপর ককটেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ করে। এতে তৎকালীন সদর উপজেলা সভাপতি রুবেল গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম বাদী হয়ে দুলুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিনসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।
পিপি আরিফুর রহমান আরও বলেন, মামলাটি খারিজের পিটিশন দিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়। ফলে কয়েক বছর মামলাগুলো অচলাবস্থায় ছিল। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর মামলাগুলো পর্যালোচনা করে এবং আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হই। আদালত আমার কথা শুনেছেন এবং আসামিপক্ষের ২৬৫/সি এর দরখাস্তটি নামঞ্জুর করেন। আসামি দুলু দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় আদালত সময় আবেদন নামঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। পাশাপাশি ৩০২ ধারায় সব আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিস্ফোরক মামলায় মঙ্গলবার নির্ধারিত চার্জ গঠনের দিনে দুলুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।