গরমে আদালতের ড্রেস কোড নিয়ে আলোচনায় বসবেন প্রধান বিচারপতি
সারাদেশে তাপপ্রবাহের কারণে আদালতে শুনানির সময় আইনজীবী-বিচারকদের কালো কোট ও গাউনে পরিবর্তন আনা যায় কি না সে বিষয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
শনিবার (১৩ মে) বেলা ১১টায় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
তিনি জানান, দেশব্যাপী তাপপ্রবাহের কারণে আদালতে মামলা শুনানিকালে পরিধেয় পোশাকের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি আগামী ১৩ মে বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
এর আগে, গত ১৮ এপ্রিল উচ্চ তাপমাত্রার প্রেক্ষাপটে আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেস কোড নির্ধারণের জন্য প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়। ই-মেইল যোগে সুপ্রিম কোর্টের দুইজন আইনজীবী ও একটি সংস্থার পক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়েছিল।
আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ মূলত একটি গ্রীষ্মকাল প্রধান দেশ। বছরের প্রায় ৮ মাস উচ্চ তাপমাত্রা বিরাজমান থাকে। বাংলাদেশে আইনজীবীদের আদালতে পরিধানের জন্য সিভিল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস, ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রুলস ১৯৭৩ এবং আপিল বিভাগের রুলস ১৯৮৮ তে শীত ও গ্রীষ্মকালে একই ধরনের পোশাক পরিধানের কথা বলা হয়েছে।
বর্তমানে প্রচলিত আইনজীবীদের পোশাকটি মূলত ব্রিটিশ ভাবধারা এবং আবহাওয়া বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয়েছিল। কালের বিবর্তে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন হওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশ একটি গ্রীষ্ম প্রধান দেশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। কিন্তু আইনজীবীদের কল্যাণ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের সুবিবেচনায় পোশাকের কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
ফলে সারাদেশের হাজার হাজার আইনজীবী প্রতি বছরের মার্চ মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত উচ্চমাত্রার গরম আবহাওয়ার কারণে নিদারুণ, অসহনীয়, অবর্ণনীয়, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট সহ্য করে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে লাখো লাখো বিচারপ্রার্থীকে আইনি সেবা দিয়ে আসছেন। একই সঙ্গে নিম্ন এবং উচ্চ আদালতের বিচারকগণ একই ধরনের পোশাক পরিধান করায় অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে যাচ্ছেন।
অতিরিক্ত গরমে নিয়ম অনুযায়ী কালো কোট, গাউন, কলার, ব্যান্ড/ টাই পরিধানের কারণে প্রতিবছর বহু সংখ্যক আইনজীবী হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন এবং অনেক আইনজীবী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তীব্র গরম এবং তাপদাহের কারণে অনেক বয়স্ক আইনজীবী আদালতে যেতে পারেন না। ফলে অনেক আইনজীবী পেশাগত মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
আবেদনে আরও বলা হয়, ইতোপূর্বে করোনা মহামারির সময়ে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা মোতাবেক ড্রেস কোড পরিবর্তন করা হয়েছিল এবং তাতে আদালতের বিচারকার্য বা আইনজীবীদের পেশাগত কোনো অসুবিধা হয়নি।
তাই আইনজীবী, বিচার প্রার্থী, বিচারক এবং বিচার বিভাগের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে আইনজীবীদের প্রচলিত পোশাকের পরিবর্তন আবশ্যক বিধায় বিষয়টি সুবিবেচনায় নিয়ে আইনজীবী এবং বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেস কোড নির্ধারণের আবেদন জানানো হয়।
ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির, ল' অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের পক্ষে ব্যারিস্টার মো. কাউছার ও আইন বায়েজীদ হোসাইন এ আবেদন করেন।
কেএম/এসএন