সুপ্রিম কোর্ট বারের কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি
খেয়াল খুশি মতো অর্থ ব্যয়ের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের (এসসিবিএ) কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ‘এসসিবিএ সংবিধান সংরক্ষণ কমিটি’র ব্যানারে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
সভায় আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাজেট প্রণয়ন ছাড়া বারের তহবিল থেকে কোনো খরচ করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং অসাংবিধানিক। বারের সব ক্ষমতার মালিক সাধারণ সদস্যরা। ভোটে নির্বাচিত হয়ে সদস্যদের আস্থা ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে কার্যনির্বাহী কমিটি ট্রাস্টি হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। তবে তা অবশ্যই বারের সংবিধান এবং বিভিন্ন রুলস অনুসরণপূর্বক।
বারবার অনুরোধ করা এবং সব পরিবেশ বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও ‘সভাপতি পদ শূন্য অবস্থায়’ বর্তমানে ১৩ জনের কার্যনির্বাহী কমিটি বাজেট প্রণয়ন না করে বারের তহবিল থেকে খেয়াল-খুশি মতো অর্থ ব্যয় করছে বলেও বক্তারা অভিযোগ করেন।
আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তারা বলেন, তাদের এরূপ কার্যকলাপ বারের সদস্যদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া এবং চরম বিশ্বাসহীনতা সৃষ্টি করেছে। আমরা এই অবস্থার অবসান চাই।
সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহসম্পাদক সৈয়দ মামুন মাহবুবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তারা আরও বলেন, স্বাধীন বারের অন্যতম শর্ত হচ্ছে, বারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে যে কোন ধরনের প্রভাবমুক্ত হয়ে এবং যারা বারের নিয়মিত সদস্য তারা যেন কোনক্রমেই নির্বাচনে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে না পড়েন।
বক্তারা বলেন, বার সমিতির নব-নির্বাচিত সভাপতি আবদুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পর গত ৫ মে বারের সম্পাদক সংবাদ সম্মেলন করে বারকে অবহিত করেছেন যে, সভাপতির পদ শূন্য। সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৪৯ অনুযায়ী বারের বাজেট মিটিং হয়নি, যার ফলে বাজেট ছাড়া বারের তহবিল থেকে ব্যয় হচ্ছে। যার ফলে বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে।
বার সমিতির নির্বাচন প্রসঙ্গে বক্তারা দ্য ইলেকশন রুলস, ২০২১ এর রুল ২ (৩) থেকে বলেন, বারের নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং যে কোনো ধরনের সংগঠনের অংশগ্রহণ তো দূরের কথা, ন্যূনতম কোনো প্রভাব থাকতে পারবে না। তাই বারের নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে রাজনৈতিক দলের সমর্থনপুষ্ঠ আইনজীবী সংগঠনগুলোর নামে মনোনয়ন ক্রয়-বিক্রয়ের প্রক্রিয়া বারের সংবিধান অনুমোদন করে না। এই অসুস্থ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান, বারের সাবেক সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সহসভাপতি কে এম সাইফুদ্দিন, ইউনুছ আলী আকন্দ, রফিকুল ইসলাম মেহেদী, মঈনুদ্দিন আহমেদ, ইয়ারুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন, আপেল মাহমুদ, আমিনুল হক মজুমদার, হুমায়ুন কবির ও নজরুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এই সভা শেষে জানতে চাইলে সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, সভায় সিদ্ধান্ত হয়–আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কমিটিকে সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তারা যেন বাজেট মিটিং করে নেয়। এই আহবানে সাড়া না দিলে এসসিবিএ সংবিধান সংরক্ষণ কমিটি আবারও সভা ডেকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে।
এমএ/এসএ/