মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা : যুক্তি টেকেনি মেয়র মুক্তির

টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে জামিন দিয়েছিল উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের দেওয়া ওই জামিন স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ সোমবার (১৩ জুন) এই আদেশ দেয়। আদেশে তার জামিন বিষয়ে রুল তিন সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক মেয়র মুক্তিকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে। এখনই মুক্তি মিলছে না তার।
আদালতে মুক্তির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ। গত ২৮ এপ্রিল ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে মামলাটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গত ২৭ এপ্রিল এই মামলায় জামিন আদেশ দেয় হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ মুক্তিকে জামিন দেন। পরে ২৮ ফেব্রুয়ারি তার অন্তর্বর্তী জামিন বাতিল হয়। এরপর হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন মুক্তি।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি নিহত হন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদ। তার গুলিবিদ্ধ লাশ কলেজ পাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এ ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুই জনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে এ দুই আসামির দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যার সঙ্গে জড়িত সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা। তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন এবং ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
পরে অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার অপর তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর হাজতবাসের পর তিনি জামিন পেয়ে মুক্ত আছেন। তাদের অপর দুই ভাই আত্মগোপনে রয়েছেন।
এমএ/এএজেড
