আইডিআরএ চেয়ারম্যানের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করতে আবেদন

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করতে হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চে বৃহস্পতিবার (২ জুন) এ আবেদন করা হয়। আবেদনে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও চাওয়া হয়েছে।
আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান এ আবেদন করেন। বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিনের পক্ষে এ আবেদন করেন তিনি।
আইনজীবী বলেন, আদালতের আদেশে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে দেখা গেছে ড. এম মোশাররফ হোসেন ৪১ কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। আমরা আজ হাইকোর্টে দাখিল করা আবেদনে তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চেয়েছি। তা ছাড়া তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ ও বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়েছি।
২০২১ সালের ৯ নভেম্বর আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানতে চান হাইকোর্ট। কমিশন ও বিএফআইইউকে ৩০ দিনের মধ্যে তা জানানোর নির্দেশ দেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান ও কারিশমা জাহান।
আইনজীবী কারিশমা জাহান জানিয়েছিলেন, ড. এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ৪ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় রিট দায়ের করেন বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন কোন কর্তৃত্ববলে পদে বহাল আছেন- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদীর জনস্বার্থে করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এ রুল জারি করেন। সেদিন কারিশমা জাহান বলেছিলেন, আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম মোশাররফ হোসেন ২০১৭ সালের ৯ মে ‘লাভস অ্যান্ড লাইভ অর্গানিকস লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি আরজেএসসিতে নিবন্ধন করেন। যার পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজে এবং তার স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়া পরিচালক।
এরপরে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ‘গুলশান ভ্যালি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নামে আরেকটি কোম্পানি নিবন্ধন করেন। এটারও পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিজে এবং স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়াকে পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু আইডিআরএ আইন, ২০১০ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি কোনো কোম্পানির বা সংস্থার পরিচালক বা অন্য কোনো পদে নিযুক্ত থাকলে, তিনি কর্তৃপক্ষের সদস্য বা চেয়ারম্যান হতে পারেন না।
আইনের ধারা ৭(৩)(খ) অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য হওয়ার বা থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি বীমা মধ্যস্থতাকারী বা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো সংস্থার বা ওই ধরনের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী হন বা তিনি কোনো কোম্পানি বা সংস্থার (সরকারি বা বেসরকারি) পরিচালক বা অন্য কোনো পদে নিযুক্ত থাকেন।
দুটি কোম্পানির পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় তথ্য গোপন করে আইডিআরএ আইন ২০২০ এর ৭(৩)(খ) ধারার লঙ্ঘন করে মোশাররফ চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন। এমতবস্থায় তার পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদী।
এমএ/এসএন
