বার কাউন্সিল নির্বাচনের ফল ২৯ মে
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (২৫ মে) আইনজীবীদের সর্বোচ্চ এই নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভোটগ্রহণ করা হয়। আগামী ২৯ মে ভোটের ফল ঘোষণা করা হবে।
কাউন্সিলের ১৪ জন সদস্য নির্বাচনে এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন, দেশের সব জেলা সদরের দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণে একটি করে ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া বাজিতপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, দুর্গাপুর, ভাংগা, চিকন্দি, পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নবীনগর ও পাইকগাছা দেওয়ানি আদালতগুলোর প্রত্যেকটির অঙ্গনে একটি করে ভোটকেন্দ্র রাখা হয়।
কাউন্সিল সচিব মো. রফিকুল ইসলাম জানান, নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। গণনা শেষে ২৯ মে আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনে তিনটি প্যানেল থেকে প্রার্থীরা নির্বাচন করছেন।
উল্লেখ্য প্রতি তিন বছর পর কাউন্সিলের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। গত বছর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন আর হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে গত বছরের আগস্টে এই কাউন্সিলের কার্যক্রম পরিচালনায় অ্যাডহক কাউন্সিল গঠন করা হয়। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত মার্চে নির্বাচনের জন্য ২৫ মে দিন ঠিক করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।
নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত ‘সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাতটি সাধারণ আসনের প্রার্থীরা হলেন- সৈয়দ রেজাউর রহমান, মো. কামরুল ইসলাম, মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান বাদল, শাহ মো. খসরুজ্জামান, মো. রবিউল আলম (বুদু), মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ (রাজা) ও মো.নজরুল ইসলাম খান।
গ্রুপ আসনে ঢাকা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-এ) আবদুল বাতেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ বি) মো.জালাল উদ্দিন খান, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ সি) মোহাম্মদ মুজিবুল হক, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও সিলেট জেলা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ ডি) এ এফ মো. রুহুল আনাম চৌধুরী, বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ ই) আনিছ উদ্দিন আহমেদ সহিদ, বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ এফ) মো.একরামুল হক এবং বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ জি) মো.আব্দুর রহমান।
আর জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত ‘জাতীয়তাবাদী ঐক্য প্যানেলের সাতটি সাধারণ আসনের প্রার্থীরা হলেন- এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো.জসিম উদ্দিন সরকার, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আব্দুল মতিন।
গ্রুপ আসনে ঢাকা জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ-এ) মো. মহসিন মিয়া, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ বি) আ. বাকী মিয়া, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ সি) এ এস এম বদরুল আনোয়ার, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও সিলেট জেলা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ ডি) এটিএম ফয়েজ উদ্দিন, বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ ই) মো.এনায়েত হোসেন বাচ্চু, বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ এফ) মো.মাইনুল আহসান এবং বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ জি) শফিকুল ইসলাম টুকু।
নির্বাচনে বাংলাদেশ আইনজীবী কংগ্রেস মনোনীত সাধারণ আসনের প্রার্থীরা হলেন- অ্যাডভোকেট মো. শফিকুল ইসলাম, মো. মিজানুর রহমান, সুলতান মাহমুদ খাঁন, আব্দুর রউফ খাঁন, অ্যাডভোকেট দেবদাস সরকার, মিলন কুমার ভঞ্জ ও শেখ মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান। এই প্যানেলে আঞ্চলিক আসনে একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি হলেন- গ্রুপ-ই অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল আলম।
প্রতি তিন বছর অন্তর বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একজন ভোটার মোট সাতটি ভোট দিতে পারেন। বার কাউন্সিল ১৫ জন সদস্যের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়। এর মধ্যে রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। বাকি ১৪ জন আইনজীবীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন।
১৪ জনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে একজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সারাদেশে সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীদের ভোটে সাধারণ আসনে সাতজন এবং দেশের সাতটি অঞ্চলের লোকাল আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন করে সাতজন নির্বাচিত হন।
সারাদেশের প্রায় ৫৭ হাজার আইনজীবী তিন বছরের জন্য এ নির্বাচনে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। নির্বাচন সংক্রান্ত আপত্তি শুনানির জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাইব্যুনালও গঠন করা হয়েছে।
এর আগের নির্বাচনে ২০১৮ সালের ১৪ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৪টি আসনের মধ্যে ১২টি আসনে জয়ী হয়েছিল সরকার সমর্থকদের সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ। অপরদিকে বিএনপি জোটের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল পেয়েছিল মাত্র দুটি আসন।
এমএ/এসএন