দুদকের চাকরি পুনর্বহালের রিটে সম্পূরক তথ্য দিতে সময় পেলেন শরীফ

দুর্নীতি দমন কমিশনের চাকরিচ্যুত (দুদক) উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন চাকরিতে পুনর্বহাল হতে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেছিলেন। এ সংক্রান্ত আবেদনের নথিপত্রসহ রিটে সম্পূরক তথ্য দিতে সময় পেয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্যে আগামী সোমবার (২৩ মে) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে শরীফ উদ্দিনের করা রিটের ওপর শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সময় চাওয়া আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দীন দোলন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলী। আর কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
গত ১৩ মার্চ শরীফের চাকরিতে পুনর্বহাল দাবিতে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক। রিটে দুদকের সচিব ও চেয়ারম্যান এবং আইন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়।
এর আগে চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য কমিশনে রিভিউ আবেদন করেন শরীফ উদ্দিন। ২৭ ফেব্রুয়ারি কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর তিনি এ আবেদন করেন। কিন্তু তার রিভিউ আবেদনটি খারিজ হয়ে যায়।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের ৫৪(২) ধারায় চাকরিচ্যুত করা হয় শরীফ উদ্দিনকে। তখন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহের সই করা আদেশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা- ২০০৮ এর বিধি ৫৪ (২) তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মো. শরীফ উদ্দিন (উপ-সহকারী পরিচালক) দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যক্রম, পটুয়াখালীকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো।
এরপর এ ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শরীফ উদ্দিনের সহকর্মীরা। পরে তারা ৫৪(২) ধারা বাতিলের দাবিতে দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গঠন করেন। এ ছাড়া শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ করায় হাইকোর্টে চিঠি ও রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী।
এর আগে, চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনকালে ২০২১ সালের ১৬ জুন ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্তের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের পরিচালকসহ ইসির চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন শরীফ উদ্দিন।
একই বছর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে সংলগ্ন কলাতলী বাইপাস রোড এলাকায় পিবিআই অফিস তৈরির জন্য এক একর জমি অধিগ্রহণে জালিয়াতির ঘটনা উঠে আসে শরীফ উদ্দিনের তদন্তে।
এ ছাড়া কক্সবাজারের মেগা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জমি অধিগ্রহণের দুর্নীতিতে জড়িত বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে মামলাও করেন শরীফ উদ্দিন। এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তে নামে দুদক। তখন নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ও দুদকের পক্ষে বেশ কয়েকটি মামলা করেছিলেন শরীফ উদ্দিন।
এমএ/এসএন
