কোন কোন দেশে টাকা রেখেছেন পি কে হালদার, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

ভারতে গ্রেপ্তার পি কে হালদার কোন কোন দেশে টাকা রেখেছেন তা জানাতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাছাড়া তার মামলা তদন্তের সর্বশেষ অবস্থাও জানাতে বলেছেন উচ্চ আদালত।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার (১৭ মে) এই আদেশ দেন। হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনা সংক্রান্ত রুলের শুনানির জন্য আগামী ১২ জুন দিন ধার্য করেছে বেঞ্চ।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন।
গত সোমবার (১৬ মে) এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারকে ভারতে গ্রেপ্তারের তথ্য আদালতকে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। তাকে গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনা প্রশ্নে দেড় বছর আগে রুল দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। স্বপ্রণোদিত ওই রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনো হয়নি। এর মধ্যেই গত শনিবার (১৪ মে) ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হন হালদার। বাংলাদেশে আর্থিক খাতে আলোচিত এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করার অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রতিবেদনে ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে ওই বছরের ১৯ নভেম্বর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেয়।
রুলে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা-ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না এবং এ ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এ রুল এখন হাইকোর্টে চূড়ান্ত শুনানির জন্য উঠছে।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন বলেন, পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে হাইকোর্টের স্বপ্রণোদিত রুল ছিল। সেই রুলের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি করা ছিল।
‘ইতিমধ্যে মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, পি কে হালদার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিষয়টি আদালতের নলেজে এনেছি। রুল শুনানির জন্য মেনশন করেছি। আগামীকাল (মঙ্গলবার) বিষয়টি কার্যতালিকায় আসবে।’
গত শনিবার (১৪ মে) ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পশ্চিমবঙ্গ থেকে পলাতক পিকে হালদারকে গ্রেপ্তার করে।
ইডির বরাত দিয়ে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, পি কে হালদার রেশন কার্ড, ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র, আয়কর দপ্তরের পরিচয়পত্র পি এ এন (প্যান) ও আধার কার্ডের মতো ভারতীয় বিভিন্ন সরকারি পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে অবস্থান করছিলেন। সেখানে তিনি শিবশঙ্কর হালদার নাম নিয়েছিলেন।
এমএ/আরএ/
