দুই হাজার কোটি টাকা পাচার: জামিন চান সাবেক মন্ত্রীর ভাই

সাবেক মন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর জামিন চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেছেন। ফরিদপুরের আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় সোমবার (১৬ মে) হাইকোর্টে তার পক্ষে এ আবেদন করেন আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান। ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই বিষয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।
গত ২৪ মার্চ খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন বিচারিক আদালত। ওই দিন একই সঙ্গে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে বিচারক।
তাছাড়া বরকত ও রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে আদালত। ২৪ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে তাদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করে। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে পলাতক থাকায় খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এ এইচ এম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
গত ৩ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের বহিষ্কৃত সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে এ চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস। অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, আসিকুর রহমান ফারহান, খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এ এইচ এম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।
২০২০ সালের ২৬ জুন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে অর্থপাচারের অভিযোগে ঢাকার কাফরুল থানায় বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দুই হাজার কোটি টাকা উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ফরিদপুরের এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হন বরকত ও রুবেল।
এছাড়া তারা মাদক কারবারি ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ করেছেন। এসি ও নন-এসিসহ ২৩টি বাস, ড্রাম ট্রাক, বোল্ডার ও পাজেরো গাড়ির মালিক হয়েছেন। সেই সঙ্গে দুই হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন তারা। প্রথম জীবনে দুই ভাই রাজবাড়ীর এক বিএনপি নেতার সঙ্গী ছিলেন। তখন তাদের সম্পদ বলতে কিছুই ছিল না। ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর ওই এলাকায় এক আইনজীবী খুন হন। ওই হত্যা মামলার আসামি বরকত ও রুবেল।
এমএ/এএজেড
