সমুদ্র সৈকতে নির্মাণ প্রকল্প: সচিব-প্রকৌশলীকে আইনি নোটিশ
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ঝিলংজা মৌজায় নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্বান্ত বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে একটি আইনি (লিগ্যাল) নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আদালতের রায় অমান্য করার অভিযোগে এই নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশ পাওয়ার পর এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, অন্যথায় আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হবে।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) সভাপতি মনজিল মোরসেদ জনস্বার্থে এই নোটিশ পাঠান। নোটিশে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে ২০১১ সালের ৭ জুন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকায় নির্মিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেন এবং কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার নির্দেশনা দেন আদালত।
এর আগে ১৯৯৯ সালে কক্সবাজার-টেকনাফ সমুদ্র সৈকত এলাকার ঝিলংজা মৌজা এলাকাকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের পর হোটেল মোটেল জোন এলাকার কতিপয় স্থাপনা অপসারণের নির্দেশনা দিলে হোটেল মালিকরা রিট দায়ের করেন। পরে তা খারিজ হয় এবং পাবলিক ট্রাস্ট ঘোষণা করে সমুদ্র সৈকত রক্ষার নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেও আবেদন খারিজ হয় এবং পৃথক তিনটি রিভিউ পিটিশন দায়ের করলে তা-ও খারিজ হয়। আপিল বিভাগ রায়ে ঝিলংজা মৌজায় স্থাপিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেন।
ওই রায় ও নির্দেশনা অনুসারে সমুদ্র সৈকত এলাকায় বা কক্সবাজার ঝিলংজা মৌজার পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ থাকার কথা থাকলেও স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সৈকতে শত কোটি টাকার নির্মাণকাজের প্রকল্প নিয়ে তা কার্যকর করতে যাচ্ছে।
বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে এলে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আইনজীবী মনজিল মোরসেদ কক্সবাজারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামীকে ৭২ ঘণ্টা সময় দিয়ে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক সমুদ্র সৈকত এলাকায় নির্মাণকাজ বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠান।
নোটিশে উল্লেখ করা হয় যে, জনস্বার্থে দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রায়ে সৈকত এলাকার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য বজায় রাখাসহ কয়েকটি নির্দেশনা দেন। একইসঙ্গে কক্সবাজারের হোটেল মালিকদের করা রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই মামলায় আপিল বিভাগ কক্সবাজার ঝিলংজা মৌজার পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় নির্মিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও ওই এলাকায় নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা আদালত অবমাননার সামিল।
আদেশ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এমএ/আরএ/