কুষ্টিয়ায় তিন খুন: তিনজনের আমৃত্যু, আটজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানা এলাকায় তিন খুনের ঘটনায় ১৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানা করেছেন আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও তিনজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এদিকে দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় ১১ জনকে খালাস দেন আদালত।
মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করে। রায় ঘোষণার সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত অনেক আসামি অনুপস্থিত ছিলেন।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-কুষ্টিয়া ইবি থানার পুলতাডাঙ্গা গ্রামের মো. আসকর সরদারের ছেলে ফারুক সরদার ওরফে বড় ফারুক, কুষ্টিয়া পশ্চিম আব্দালপুর এলাকার ইছাহক আলী মাস্টারের ছেলে কফিল উদ্দিন ওরফে বুলবুল ওরফে আলী রেজা ওরফে বড় কালু, কুষ্টিয়া পৌর এলাকার আড়ুয়াপাড়া ২ নম্বর মসজিদ গলি লেনের কাল মজনুর ছেলে রোহান (পলাতক)। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-রাজবাড়ী জেলার পাংশা বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত খোরশেদ মন্ডলের ছেলে ফারুক মন্ডল (পলাতক), ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুন্ডু এলাকার জবেদ আলীর ছেলে আলতাফ মেম্বার, কুষ্টিয়া ইবি থানা এলাকার জলিল শেখের ছেলে লিয়াকত হোসেন (পলাতক), কুষ্টিয়া ইবি থানা এলাকার এছেম শেখের ছেলে মনোয়ার হোসেন মনো (পলাতক), কুষ্টিয়া ইবি থানা এলাকার মৃত আনছার শেখেরে ছেলে আকাউদ্দিন ওরফে হিয়া, কুষ্টিয়া ইবি থানার করিমপুর এলাকার মৃত ওয়াহেদ জোয়ার্দ্দারের ছেলে জমির উদ্দিন জোয়ার্দ্দার, কুষ্টিয়া ইবি থানার খোর্দবাখাইল গ্রামের আবু বক্কর মন্ডলের ছেলে নূরান ওরফে নুরুল (পলাতক), কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মাঝপাড়া গ্রামের মৃত ওম্মাদ মন্ডলের ছেলে খাকচার মন্ডল ওরফে ছোট কালু। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন-মোমিন, কাইয়ুম, সজিব, আকতার, ইব্রাহিম, আমিরুল, আছরোপ, শামিম, রফিকুল ইসলাম, বাবলু ওরফে টেরা বাবলু, তুজাম হোসেন ওরফে তুতলা তুজাম।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার সোনাইডাঙগা গ্রামের মুছার পুকুর নামক বিলের মধ্যে কাইয়ুম সাখাওযাতী, আযুব আলী, ও শাসসুজ্জামান ওরফে জোহারসহ তিনজনের মাথাবিহীন দেহ পাওয়া যায়। পরে নিহতদের মাথা কুষ্টিয়া শহরের গণপূর্ত অফিসসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহত কাইয়ুম সাখাওয়াতীর ছোট ভাই আব্দুল হাই কুষ্টিয়া ইবি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এ মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে ১০ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
এসআইএইচ