যে কারণে ১৫ মের পর আত্মসমর্পণ করবেন হাজী সেলিম
দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম আগামী ১৫ মের পর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। তার আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা ঢাকাপ্রকাশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকাপ্রকাশকে এ আইনজীবী বলেন, সুপ্রিম কোর্টের চলমান অবকাশ ও ঈদের ছুটি মিলিয়ে লম্বা ছুটি শেষ হচ্ছে আগামী ১৫ মে। তারপরের দিন ১৬ মে থেকে সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত কার্যক্রম চলবে। তাই ১৫ মে পর্যন্ত ছুটি শেষ হওয়ার পর যেকোনো দিন আত্মসমর্পণ করবেন আওয়ামী লীগ দলীয় এ সংসদ সদস্য।
হাজী মো. সেলিম আত্মসমর্পণ করবেন নিম্ন আদালত বা বিচারিক আদালতে। সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট খোলা থাকা বা না থাকার হিসাব প্রসঙ্গে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন হাজী মো. সেলিম। তাই এ হিসাব করতে হয়েছে। কারণ আপিল করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন দপ্তরে ঘোরাঘুরি করতে হবে। নিয়মিত আদালত খোলা না থাকলে এটা হবে না। উনি তো ২৫ মে তারিখের মধ্যে আত্মসমর্পণ করলেই হবে। তাই তাড়াহুড়োর কিছু নেই। খোলার পরই নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন তিনি। কারণ এর আগে আত্মসমর্পণ করে আপিল প্রক্রিয়ায় যদি একদিনও সময় বেশি লাগে, কে চায় বাড়তি একদিন জেলে থাকতে?
প্রসঙ্গত, গত পয়লা মে ছিল মে দিবসের (শ্রমিক দিবস) ছুটি, ২ থেকে ৪ মে ইদুল ফিতরের ছুটি, ৫ মে কোর্টের ছুটি, ৬ ও ৭ মে শুক্র – শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি, ৮ থেকে ১২ মে কোর্টের ছুটি, ১৩ ও ১৪ মে শুক্র – শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ও ১৫ মে বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটির পর ১৬ মে থেকে সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত কার্যক্রম চলবে।
উল্লেখ্য দুর্নীতির মামলায় সাজা নিয়ে ঈদুল ফিতরের আগে অনেকটাই চুপিসারে বিদেশে যান সংসদ সদস্য হাজী সেলিম। দেশের বাইরে থেকে ৫ মে দেশে ফিরে আসেন তিনি। হাজী সেলিমের একান্ত সচিব মহিউদ্দিন মাহমুদ বেলাল গণমাধ্যমকে সংসদ সদস্যের দেশে ফেরার তথ্য নিশ্চিত করেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত ২৫ এপ্রিল হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১০ বছর কারাদণ্ড বহালের রায় হাইকোর্ট থেকে নিম্ন আদালতে পাঠানো হয়। আইনি বিধান তুলে ধরে সেদিন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেছিলেন, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পরের বছর ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করে। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।
এমএ/এসএন