সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন: সভাপতি, সম্পাদক পদে নাম ঘোষণা
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে মোমতাজ উদ্দিন ফকির এবং সম্পাদক পদে আবদুন নূর দুলালের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সম্পাদক পদের ভোট 'ফ্রেশ কাউন্টিং' করে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বুধবার বিকাল ও রাতে ভোট গণনার পর এই ঘোষণা দেয়া হয়।
ভোটগ্রহণের প্রায় দেড় মাস পর আজ ভোটগণনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি এবং ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকালে ভাঙ্গা কাঁচে অন্তত একজন আইনজীবীকে রক্তাক্ত হতেও দেখা গেছে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ভবনের তৃতীয় তলায় কনফারেন্স কক্ষের সামনে এই ঘটনা ঘটে। পরে সামনে পুলিশ প্রহরা বসিয়ে কক্ষের ভেতরে ভোট গণনা করা হয়। গণনা শেষে বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন আইনজীবী অজি উল্লাহর নেতৃত্বে নির্বাচন উপ কমিটি।
জানতে চাইলে বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে আবদুন নূর দুলাল ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, 'ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। ফলাফলে সিনিয়র আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকিরকে সভাপতি এবং আমাকে সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে। আমি ৪৫ ভোটে জিতেছি।'
প্রসঙ্গত গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয়। ওই নির্বাচন পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী এ ওয়াই মসিউজ্জামানের নেতৃত্বে সাত আইনজীবীর নির্বাচন উপ-কমিটি। পরেরদিন ১৭ মার্চ বিকালে ভোট গণনা শুরু হয়ে চলে রাত পর্যন্ত। এতে সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের প্রার্থী সিনিয়র আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির এগিয়ে ছিলেন। সম্পাদক পদে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস এগিয়ে ছিলেন।
তবে ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে সাদা প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল ফ্রেশ কাউন্টিং চেয়ে নির্বাচন পরিচালনা–সংক্রান্ত আহ্বায়ক কমিটির কাছে আবেদন করেন। এ নিয়ে ওই রাতে দুই পক্ষ বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এ ওয়াই মসিউজ্জামান সমিতির কমিটির কাছে পদত্যাগপত্র দেন। এরপর ভোটের ফলাফল ঘোষণা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
এর মধ্যে মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ সভাপতি মো. অজি উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, ১২ এপ্রিল সমিতির কার্যকরী কমিটির মেয়াদের শেষ এক সভায় তাকে আহ্বায়ক করে সাত আইনজীবীর সমন্বয়ে একটি নির্বাচন উপকমিটি করা হয়েছে।
১৫ এপ্রিল আইনজীবী এ ওয়াই মসিউজ্জামানের কাছে চাবি হস্তান্তরের জন্য চিঠি দেই। তবে তিনি চাবি হস্তান্তর না করায় ১৭ এপ্রিল তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলি। সার্বিক বিবেচনায় ২৭ এপ্রিল বিকেল ৩টায় নির্বাচন–পরবর্তী বাকি কাজ শেষ করা হবে।
এ ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার বিকালে মো. অজি উল্লাহর নেতৃত্বে নির্বাচন পরিচালনা–সংক্রান্ত নতুন উপকমিটি সমিতির তিনতলায় অবস্থিত সম্মেলন কক্ষে ঢুকতে গেলে হইচই ও হট্টগোল শুরু হয়। আগে থেকে সমিতির সম্মেলন কক্ষের অন্য পাশে অবস্থান নিয়ে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা এই উপ কমিটি বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরে সেখানে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা। একপর্যায়ে জানালার কাঁচ ভাঙচুর করা হয়। এর মধ্যে নতুন উপ কমিটি ভোট গণনা শুরু করে। এরপর সমিতি ভবনে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। এর আগে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কুদ্দুস ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভার কোনো আইনি ভিত্তি নেই বলে ওই সভায় গৃহীত যেকোনো সিদ্ধান্ত অবৈধ বলে দাবি করেন।
এমএ/এমএমএ/