রাজারবাগ পীর নিয়ে মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন কেন বেআইনি নয়?
রাজারবাগ পীর সিন্ডিকেটের বিষয়ে মানবপাচার মামলা চলমান থাকা অবস্থায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন প্রদান কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) এই রুল জারি করে।
চার সপ্তাহের মধ্যে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, কমিশনের সচিব, পুলিশ প্রধান, চাঁদপুর পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট নয়জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পীরের আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী ইলিয়াস আলী মন্ডল।
আদালত থেকে বের হওয়ার পর আইনজীবী বলেন, রাজারবাগ দরবার শরিফের পীরের বিরুদ্ধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে, সেটি আমরা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করি। রিটের শুনানি নিয়ে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় মানবাধিকার কমিশনের তদন্তকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
আইনজীবী বলেন, রাজারবাগ পীরের বিরুদ্ধে রিটকারী ইকরামুল হক কাঞ্চনের বিরুদ্ধে আমার মক্কেল মোহাম্মদ সোহেল মানবপাচার মামলা করেন। ওই মামলাটি চাঁদপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।
কমিশনের আইন অনুযায়ী মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ওই মামলার বিষয়ে কোনো তদন্ত করা যাবে না। অথচ কমিশন সেই কাজটিই করেছে। তাছাড়া কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রাজারবাগ পীরের প্ররোচনায় আমার মক্কেল নাকি মামলা করেছেন। একটি মামলা চলমান থাকা অবস্থায় কমিশন এমন তদন্ত করতে পারে না। আইনজীবী বলেন, মানবাধিকার কমিশন তার তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে, মানবপাচার মামলার আসামি ইকরামুল আহসান কাঞ্চন ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কমিশনের নিকট তার বক্তব্য দিয়েছেন।
অথচ এই কাঞ্চন ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি মানবপাচার মামলায় কারাগারে যান এবং জামিনে মুক্ত হন ২৫ ফেব্রুয়ারি। এখন প্রশ্ন হলো ২৫ ফেব্রুয়ারি যদি তিনি জামিন পান তাহলে ১৩ ফেব্রুয়ারি কীভাবে মানবাধিকার কমিশনের কাছে বক্তব্য দিলেন। তাই ওই প্রতিবেদন চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেছি।
প্রসঙ্গত রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠানসমূহের নামে যেসব সম্পদ রয়েছে তার তালিকা প্রস্তুত করে আয়ের উৎস ও রাজস্ব দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে- এমন সাত দফা সুপারিশ দিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদন দাখিলের পর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারক) ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ কমিশনের দাখিল করা সুপারিশ বিবেচনায় নেওয়ার নির্দেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও এমাদুল হক বশির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
এমএ/