‘প্রধান বিচারপতি পদক’ নীতিমালা প্রণয়নে জাজেস কমিটি গঠন
‘প্রধান বিচারপতি পদক’ বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাছাই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিচারপতিদের সমন্বয়ে একটি জাজেস কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এই তথ্য জানান।
তিনি জানান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারকের সভাপতিত্বে কমিটিতে হাইকোর্ট বিভাগের পাঁচজন বিচারক সদস্য হিসেবে থাকবেন।
কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। সদস্যরা হলেন— বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী, বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, জুডিশিয়ারির অধিকাংশ বিচারক-কর্মকর্তাই সৎ, তবে হাতে গোনা কয়েকজন অসৎ রয়েছেন। এই অসৎ কর্মকর্তাদের কারণে যদি জুডিশিয়ারি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে তাদের ব্যাপারে কোনো আপোষ হবে না। তাছাড়া যারা ভালো করবে তাদের জন্য পুরস্কার থাকবে বলেও জানান তিনি।
রাজধানীতে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত প্রধান বিচারপতিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আসিনুল হক।
অনুষ্ঠানে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি প্রধান বিচারপতি হয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জেনেছি, আমাদের দেশে অধিকাংশ জুডিশিয়াল কর্মকর্তাই সৎ। যদি মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন অসৎ কর্মকর্তার জন্য জন্য জুডিশিয়ারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তাদের শনাক্ত করব। আর তাদের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো আপোষ থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমি একটি কমিটি করে দিয়েছি। যারা ভালো করবে তাদের প্রত্যেক বছর ‘প্রধান বিচারপতি’ পদক দেওয়া হবে। এ জন্য একটা নীতিমালা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিচারকদের পোস্টিংয়ের জন্য সিনিয়রিটি এবং যোগ্যতা দেখে পোস্টিং দেব। এ ক্ষেত্রে আমরা কোনো কমপ্রোমাইজ করব না। জুডিশিয়ারি সঠিক পথে চলছে এবং চলবে।
‘একইভাবে পদায়নের জন্য কোনো সিনিয়রিটি ব্রেক করব না। সিনিয়র কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ বা অসততা না থাকলে আমরা সিরিয়াল ব্রেক করব না। অন্ততপক্ষে আমি যে কয়দিন আছি, এটা মেনের চলার চেষ্টা করব।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন হয়। জজদের লক্ষ্য হবে জনগণের আস্থা অর্জন করা। বিচারপ্রার্থী মানুষকে যাতে দিনের পর দিন আদালতের বারান্দায় ঘুরতে না হয়।’
‘অধিকাংশ বিচারপ্রার্থী হয় জমি বন্দক রেখে, না হয় হালের গরু বিক্রি করে অথবা গোলার ধান বিক্রি করে আইনজীবীকে টাকা দেন। এখন এসব বিচারপ্রার্থী জনগণ যদি দিনের পর দিন আদালতে ঘুরতে থাকেন তাহলে তারা নিঃস্ব হয়ে যাবে। এদের যত দ্রুত মুক্তি দেওয়া যায় ততই ভালো, তাদের জন্য এবং জাতির জন্য।’
তিনি বলেন, ‘যদি প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি থাকে তাহলে আমরা মামলার জট থেকে উত্তরণ করতে পারব ইনশাআল্লাহ।’
এমএ/আরএ/