ডিআইজি মিজানের জামিন বহাল
তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও পুলিশের বরখাস্তকৃত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের জামিন বাতিল করেনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম সোমবার (১৮ এপ্রিল) এ বিষয়ে আদেশ দেন।
ঘুষ লেনদেনের মামলায় গত ১৩ এপ্রিল তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে ২ মাসের জামিন দেয় হাইকোর্ট। এই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চেম্বার আদালত দুদকের আবেদন গ্রহণ করেনি। ফলে ডিআইজি মিজানের জামিন বহাল রয়েছে বলে জানান আইনজীবীরা।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। আর আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুব শফিক।
গত ৪ এপ্রিল নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেন ডিআইজি মিজানুর রহমান। আপিলে তিনি তিন বছরের সাজা থেকে খালাস চেয়েছেন। ৬ এপ্রিল মিজানুর রহমানের আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। পরে ১৩ এপ্রিল তাকে জামিন দেওয়া হয়।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘুষ লেনদেনের দায়ে দুদকের দায়ের করা মামলায় বরখাস্তকৃত দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে আট বছর এবং ডিআইজি মিজানুর রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম ওই রায় দেন। এর মধ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে মিজানকে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় এবং বাছিরকে দণ্ডবিধির ১৬৫(এ) ধারায় তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর মানি লন্ডারিং আইনের ৪ ধারায় বাছিরকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই টিভি চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান নিজেই এবং এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে মিজান দাবি করেন।
এ প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে দুদক। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।
২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের দলনেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ মানি লন্ডারিং আইনে সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মিজান ও বাছিরের বিরুদ্ধে ৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। একই বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে আছেন। অপরদিকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ডিআইজি মিজানকে এ মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদক পরিচালক ফানাফিল্লাহ।
এমএ/আরএ/