সম্রাটের জামিন আবেদন খারিজ

ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের জামিন আবেদন খারিজ করেছেন আদালত। ফলে এখনই মুক্তি মিলছে না তার।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করেন।
সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সম্রাটের বিরুদ্ধে করা চার মামলার মধ্যে এরই মধ্যে তিন মামলার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া ছয় মাসের সাজা অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তবে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায় আজ জামিন মেলেনি তার।’
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মোট চারটি মামলার তিনটিতেই জামিন পেয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অপর একটি মামলায় আজ বুধবার (১৩ এপ্রিল) জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছিল। এ মামলায় জামিন পেলে আজই তিনি মুক্তি পেতে পারতেন বলে জানিয়েছিলেন সম্রাটের আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে থাকা মানি লন্ডারিং মামলায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এবং অস্ত্র মামলায় দ্বিতীয় অতিরিক্ত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালত থেকে জামিন পান। এর পরের দিন মাদক মামলায় ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখারের আদালত থেকে জামিন পান তিনি।
এদিকে বুধবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত মামলায় জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে নিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভেতর থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্য প্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। বন্য প্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই রাতেই পৌনে ৯টার দিকে সম্রাটকে কারাগারে নেওয়া হয়।
এর পরের দিন ৭ অক্টোবর বিকেলে র্যাব-১ এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানায় অস্ত্র ও মাদক মামলা করেন। ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১ এর উপপরিদর্শক শেখর চন্দ্র মল্লিক। ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর মাদক মামলায় সম্রাট ও আরমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১ এর এসআই আ. হালিম।
এর আগের বছর ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এদিন দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযাগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। বুধবার এ মামলায় জামিন শুনানির পাশাপাশি অভিযোগ গঠন শুনানির দিনও ধার্য রয়েছে। এদিকে ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইম বিভাগের ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের সহকারী পরিদর্শক (এসআই) রাশেদুর রহমান বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় সম্রাটের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সম্রাট রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল, পল্টন ও কাকরাইল এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছেন। তার উপার্জিত অবৈধ অর্থের মধ্যে ১৯৫ কোটি টাকা তিনি তার সহযোগী আসামি আরমানের সহায়তায় সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া পাচার করেছেন।
এসএ/
