হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলা
আপিল করব: আসামিপক্ষের আইনজীবী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় জেএমবির চার সদস্যের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ।
রায় ঘোষণার পর বাইরে এসে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ওই ঘটনার ছয় মাস পর মারা যান ড. হুমায়ুন আজাদ। সেই দায় আসামির ওপর চাপানো হয়েছে। এটা অন্যায়। এ রায় সঠিক না। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
আইনজীবী বলেন, অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ মারা যান জার্মানে। সেটি ঠান্ডার দেশ। যদিও তিনি একজন মুসলিম। কিন্তু ঠান্ডা থেকে জীবন বাঁচাতে তিনি ভোদকা খেয়েছিলেন বলে আমরা মনে করি। কারণ পোস্টমর্টেমে তার পাকস্থলিতে অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছিল। তিনি তো আঘাতে মারা যাননি। তার ডাক্তারের যে রিপোর্ট সেটিও দেখা হয়নি। এ ছাড়া তিনি স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে গেছেন, সেটাও আমরা দিয়েছি। তাই এটি হত্যা মামলা হয় না।
তিনি বলেন, এর আগে মানিকগঞ্জে একটি মামলায় দেখা গেছে, ঘটনার ১১ দিন পর মারা যাওয়ার কারণে সেটি হত্যা মামলা হয়নি। হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছিল।
উল্লেখ্য ড. হুমায়ুন আজাদকে হত্যার দায়ে আজ বুধবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল-মামুন জেএমবির চার সদস্যের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মিনহাজ ও আনোয়ার কারাগারে। সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ পলাতক। এ মামলার অপর আসামি হাফিজ মারা গেছেন।
২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন হুমায়ুন আজাদ। তাকে চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ঘটনার পরদিন তার ভাই মঞ্জুর কবির রাজধানীর রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। ওই হামলার পর ২২ দিন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং ৪৮ দিন থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন হুমায়ুন আজাদ। পরে জার্মানির মিউনিখে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ১২ আগস্ট মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়।
২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে হত্যা এবং বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন, হাফিজ মাহমুদ ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। আসামিদের মধ্যে মিনহাজ ও আনোয়ার কারাগারে। সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ পলাতক। এ ছাড়া হাফিজ মারা গেছেন।
এমএ/এসএন
