চিকিৎসক বুলবুল হত্যা: আদালতে ২ জনের স্বীকারোক্তি
চিকিৎসক বুলবুল। ফাইল ফটো
গরীবের ডাক্তার হিসেবে পরিচিত চিকিৎসক আহমেদ মাহী বুলবুল হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন দুইজন। আরিয়ান ওরফে হাফিজুল ওরফে হৃদয় (৩৯) ও সোলায়মান (২৩) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এই দুই ছিনতাইকারীসহ চারজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তারা পাঁচজন গত ২৬ মার্চ দিবাগত রাত ২টা থেকে ছিনতাই করার উদ্দেশে ঘোরাঘুরি করছিলেন। বুলবুল যখন রিকশায় করে পশ্চিম কাজীপাড়ার নাভানা ফার্নিচারের সামনে আসেন, তখন তার গতিরোধ করেন। দলনেতা রিপনসহ অন্যরা বুলবুলের কাছে যা আছে দিতে বলেন। বুলবুল দিতে রাজি না হলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দিলে রিপন বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় এক পাশ দিয়ে দুটো সিএনজি অটোরিকশা আসতে দেখে তারা পালিয়ে যান।
ডিবি পুলিশের একটি প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ছিনতাইকারীরা বুলবুলের ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে ঊরুতে আঘাত করেন। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি রাস্তায় পড়ে থাকেন। পরে স্থানীয় লোকজনসহ বিহঙ্গ পরিবহনের বাসচালক আশিফ ও চালকের সহকারী সাগর বুলবুলকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। পরে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
গ্রেপ্তার একজনের কাছ থেকে বুলবুলের খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। তাছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি উদ্ধারের কথাও জানিয়েছেন তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা।
গতকাল রবিবার (৩ এপ্রিল) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন গ্রেপ্তাররা। এ ছাড়া তাদের সহযোগী রায়হান ওরফে আপন ওরফে সোহেল (২৭) ও রাসেল হোসেন হাওলাদার (২৫) এখনো পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
গণমাধ্যমকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, বুলবুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার চারজনই ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। তাদের দলনেতা রিপন এখনো পলাতক। এই পাঁচজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রায়হানের কাছ থেকে ওই চিকিৎসকের মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। আর আরিয়ান ও সোলাইমানের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ঘটনার বিস্তারিত উঠে এসেছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শাম্মী আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গত ৩০ মার্চ ওই চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন আদালত তাদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
পুলিশের তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার রাসেলের বিরুদ্ধে মাদক, অপহরণ, হত্যাচেষ্টাসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। আর রায়হানের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির একটি মামলা রয়েছে।
এমএ/আরএ/