‘একজনের ভিটে-বাড়ি নিয়ে যাবে, আমরা চোখ বন্ধ রাখব?’
যাদের মূল ভিটে-বাড়ি, আগে তাদের কথা ভাবতে হবে। একজনের ভিটে-বাড়ি নিয়ে যাবে, আমরা চোখ বন্ধ রাখব, তাহলে দেশে কোর্ট-কাচারি থাকার দরকার কী? এ বিষয়ে আমরা চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না বলে মন্তব্য করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম সমন্বয়ে গঠিত আপিল বেঞ্চ এই কথা বলেন।
রবিবার (৩ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ্য করে এই কথা বলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ কমান্ডারের জায়গা অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে সরকারের অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানিতে আদালত এ মন্তব্য করেন।
আদালতে সরকারের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী। আর রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আওসাফুর রহমান।
শুনানির শুরুতে ১০ বছরেও মামলাটি শুনানির প্রস্তুতি না নেওয়ায় উষ্মা করে বলেন, ১০ বছরেও একটা মামলার প্রস্তুতি নিতে পারেন না, এটা লজ্জার।
শুনানির এক পর্যায়ে আপিল বেঞ্চ বলেন, যাদের মূল ভিটে-বাড়ি, আগে তাদের কথা ভাবতে হবে। একজনের ভিটে-বাড়ি নিয়ে যাবেন, আমরা চোখ বন্ধ রাখব, তাহলে দেশে কোর্ট-কাচারি থাকার দরকার কী? এ বিষয়ে আমরা চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না। পরে আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল (সোমবার) দিন ধার্য করেন।
গণমাধ্যমকে রিটকারীদের আইনজীবী আওসাফুর রহমান বলেন, রাজধানীর মগবাজারের সাড়ে ১৯ শতাংশ জায়গার প্রকৃত মালিক বীরেন্দ্র কুমার নাথ। ১৯৪০ সালে আমলনামা মূলে এই জায়গা সিরাজ কমান্ডারকে দিয়ে তিনি ভারতে চলে যান। সিরাজ কমান্ডার এই জায়গার হোল্ডিং ট্যাক্স, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল পরিশোধ করে তার নামে মিউটেশন করে খারিজ করে নেন। জায়গার খাজনাও পরিশোধ করেন। সেখানে স্ত্রী সন্তানসহ বসবাস করতে থাকেন।
আওসাফুর রহমান আরও বলেন, ২০১০ সালের শেষের দিকে ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশ তাদেরকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে। পরে তারা জানতে পারেন এ জায়গা অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে অধিগ্রহণ করে বিসিএস প্রশাসন কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতিকে দেওয়া হয়েছে। ওই বছরই জায়গা অধিগ্রহণ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সিরাজ কমান্ডারের সন্তানরা। রিটের শুনানি নিয়ে ২০১২ সালে হাইকোর্ট অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণা করে। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে লিভ টু আপিল করে সরকার। সেই লিভ টু আপিল শুনানি চলছে।
এমএ/এমএমএ/