যুক্তরাষ্ট্রের গোপন সামরিক পরিকল্পনা ফাঁস হলো যেভাবে

ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার গোপন পরিকল্পনা সম্প্রতি ফাঁস হয়ে গেছে, আর এর কারণ ছিল একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে এক গ্রুপ চ্যাটে ভুল করে এক সাংবাদিককে যুক্ত করা হয়েছিল, যা পরে গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসে। এই ঘটনায় মার্কিন প্রশাসন রাজনৈতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
সোমবার, ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে যে, মার্কিন কর্মকর্তারা জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে একটি গ্রুপ চ্যাটে ভুল করে দ্য অ্যাটলান্টিক পত্রিকার সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গকে যুক্ত করেছিলেন। গোল্ডবার্গ প্রথমে ভেবেছিলেন, এটি একটি ভুয়া গ্রুপ চ্যাট, তবে কয়েক ঘণ্টা পরে ইয়েমেনে হুতিদের উপর মার্কিন বিমান হামলার কথা শুনে তিনি বুঝতে পারেন যে এটি আসল।
এই গ্রুপে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার সদস্য, উপরাষ্টপতি জেডি ভান্স এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ উপস্থিত ছিলেন। ১৫ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে হুতিদের উপর আক্রমণ চালায়, যার কয়েক ঘণ্টা আগে গোল্ডবার্গ গ্রুপে মেসেজ পেয়ে হামলার ব্যাপারে জানতে পারেন।
এই ঘটনায় মার্কিন প্রশাসন প্রথমে এর সত্যতা অস্বীকার করার চেষ্টা করলেও, গোল্ডবার্গের মন্তব্যের পর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায়। ট্রাম্প এই বিষয়ে জানেন না বলে জানিয়েছেন, তবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট দাবি করেছেন যে, ট্রাম্পের জাতীয় সুরক্ষা টিমের ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথও জানিয়েছেন, কোনো সামরিক পরিকল্পনা গ্রুপে শেয়ার করা হয়নি এবং গোল্ডবার্গকে 'প্রতারক' হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তবে কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা ঘটনার তদন্ত এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সেনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন এই ঘটনাকে "চরম বেআইনি ও ভয়ংকর" বলে অভিহিত করেছেন এবং জানিয়েছেন যে, এটা বিশ্বাস করা যায় না যে, এক সাংবাদিককে এমন একটি সুরক্ষিত গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যেখানে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা চলছিল।
এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি বড় বিপদের সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ গোপন সামরিক তথ্যের ফাঁস হওয়া একটি রাজনৈতিক ও সামরিক সঙ্কট তৈরি করতে পারে। কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা এখন দাবি করছেন যে, এই ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে তদন্ত করা উচিত।
